সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬

সিরিয়া সম্পর্কে শায়খ আরিফীর জ্বালাময়ী ভাষণ

কোন মন্তব্য নেই:

সিরিয়া সম্পর্কে শায়খ আরিফীর জ্বালাময়ী ভাষণ …
=========================

(শায়খ আরিফী, নাম মুহাম্মদ বিন আব্দুর
রাহমান আল-আরিফী,
.
তিনি বংশের দিক দিয়ে হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদের বংশধর ।
.
১৯৭০ সালে সৌদী আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন ।
.
তিনি একজন বিজ্ঞ আলেম , বাগ্মিময় বক্তা সুলেখক ।
.
এই বক্তব্যটি তিনি মুরসির শেষ সময়ে মিসরের আমর বিন আস রাযি. মসজিদে জুমআর পুর্বে দেন …দীর্ঘ বক্তব্যের চুম্বকাংশের অনুবাদ তুলে ধরা হল)
.
.
.
শাম হচ্ছে ওই পবিত্রভুমি ,
যার সম্পর্কে এই উম্মতের সব আলেমগণ একমত ,
যে মক্কা-মদীনার পর যে ভুমির সবচেয়ে ফজীলত বর্ণিত হয়েছে সেটি শাম দেশ।
.
শাম হচ্ছে ওই ভুমি যেখানে হাশরের মানুষকে একট্টা করা হবে।
.
শাম হচ্ছে ওই দেশ যেখানে মুসলিম বনাম কাফিরদের মধ্যখানে প্রলয়ংকারী "মালহামা"( শেষ যুগের ভয়াবহ যুদ্ধ ) অনুষ্ঠিত হবে !

নবীজী সা. বলেছেন , ভয়াবহ মালহামার সময় গুতা শহরে মুসলমানদের একটি ঘাটি হবে সেখানে একটি শহর আছে যার নাম দামেস্ক !!
.
হে শাম, তোমার জন্যে কতই কল্যাণ !
.
হে শাম,তোমার জন্যে কতই কল্যাণ !!
.
হে শাম, তোমার জন্যে কতই কল্যাণ !!!
.
এভাবে আমাদের নবী সা. বলেছেন ,
তখন সাহাবী রাযি. জিজ্ঞেস করলেন ,
কেনো ?
তখন নবীজী সা. বলেন , শামের ভুমিতে রাহমানের ফেরেস্তারা ডানা মেলিয়ে আছেন !
.
শামকে জিজ্ঞেস করো, ইসলামের মহান বীর খালিদ বিন ওয়ালিদ রাযি. সম্পর্কে।
.
হিমসের মাটিকে জিজ্ঞেস করো খালিদের বড়ত্ব সম্পর্কে।
.
জিজ্ঞেস করো ,
খালিদকে যখন তিনি কবরে শায়িত অবস্থায় দেখছেন,তার সন্তানদের উপর যে বর্বরতা চলছে ,তা সম্পর্কে ?
.
জিজ্ঞেস করো, তার কন্যাদের উপর যা ঘটছে তা সম্পর্কে ।
.
দেখবে, তিনি কবরে ক্রোধান্বিত হয়ে কম্পন শুরু করেছেন ।
.
শামকে জিজ্ঞেস করো উবাদা বিন সামিত রাযি. সম্পর্কে !যিনি সাহাবাদেরকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন !
.
শামকে জিজ্ঞেস করো ইসলামের মুআয বিন বিলাল রাযি. সম্পর্কে !
.
বরং শামকে জিজ্ঞেস করো তিন শতাধিক সাহাবী সম্পর্কে , যারা সিরিয়ায় প্রবেশ করেছেন , অথবা বসতি গেড়েছেন ,
অথবা জিহাদের জন্যে গিয়েছেন ।
অথবা কখনো সেখানে দাফন হয়েছেন ।
.
হে লোক সকল !
যে সব শিশুরা আজ সিরিয়ায় জবাই হচ্ছে, তারা হচ্ছে এদের সন্তান , যেসব নারীরা সেখানে ধর্ষিতা হচ্ছে, তারা হচ্ছে খালিদের সন্তান , উবাদার সন্তান , তারা হচ্ছে এইসব সাহাবাদের সন্তানাদি ।
.
আর যেসব যুবকরা সেখানে অস্ত্র হাতে নিয়েছে, তারা হচ্ছে এইসব বীরপুরুষদের সন্তানাদি ।এই হচ্ছে শামদেশ।
.
হে লোক সকল!
আমি দেখতে পাচ্ছি যে সানাআ (ইয়ামেনের) তুফান দামেস্কের দরজায় করাঘাত করছে ।
.
হে মুসলমানগণ , আমি আজ , বরং বিগত তিন বছর ধরে এমন দৃশ্য দেখছি , যা বলতে জিহ্বা অক্ষম ,চক্ষু যার দিকে দৃষ্টি স্থির রাখতে অপারগ !!
.
এক যুবতী, তাকে রাস্তার মধ্যখানে ফেলে রাখা হয়েছে , অতঃপর তার শরীর থেকে সব ধরনের কাপড় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে , অথচ সে হচ্ছে মুসলিম সচ্চরিত্রবান পর্দানিশীন।
.
এরপর প্রায় একশ (কসাই) বাশারের কুলাঙ্গার তার সম্ভ্রম লুন্ঠনে ধেয়ে আসছে । মানুষ তখন আতঙ্কে দেয়ালের পিছনে লুকায়িত , কিন্তু যখুনি কোনো লোক আড়াল থেকে বের হয়ে এই যুবতীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে। তাকে উঠিয়ে কিছুদুর নিয়ে যায় , তখন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এভাবে একের পর এক কয়েক যুবক এই যুবতীকে উদ্ধারে শহীদ হয়েছে !!!
.
আরেক ব্যক্তি , তাকে বলা হয়েছে , বল , বাশার ছাড়া কোনো ইলাহ নেই !
কিন্তু সে এই ঘৃণিত ঈমানবিধ্বংসী কথা বলেনি।
.
সে বলেছে ,আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই ।
অতএব তাকে জীবন্তাবস্থায় মাটিতে গর্ত খুড়ে দাফন দিয়েছে !!! সে জানে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাওলা নেই। আল্লাহই আমাদের মাওলা , তিনিই আমাদের রব !তিনিই এর বদলা নিবেন।
এভাবে তারা (কসাই বাশশারের বাহিনী ) নির্যাতন চালাচ্ছে ।
.
তারা শিশুদেরকে এক ঘরে একত্রিত করে , তারপর তাদেরকে ছুরি দ্বারা জবাই করে ফেলে ! অথচ এই শিশুদের বয়েস এক থেকে তিন বছর !
.
নারীরা তাদের সন্তানদের সামনে সম্ভ্রমহারা হচ্ছে !
.
পুরুষদেরকে জবাই করা হচ্ছে তাদের সন্তান এবং স্ত্রীদের সামনে !
.
এমন কোনো ভাষা আছে কি যা এসব দৃশ্যকে চিত্রায়িত করবে ?
.
তারপরেও তুমি কি গর্জে ওঠবে না , গর্জে ওঠো ,গর্জে ওঠো ...!
.
এইসব শিশুদের দেখে তুমি গর্জে ওঠো ,
.
এইসব মজলুমদের পক্ষে গর্জে ওঠো ,
.
হিমসের নারীদের জন্যে গর্জে ওঠো!
.
অসহায় ক্ষুধার্তদের জন্যে গর্জে ওঠো,
.
কেননা গর্জনকারীদের সামনে মাটি নত হয়। পৃথিবীকে গর্জনই বেচে রেখেছে ...
.
জেনে রাখো , যেসব ছুরি দ্বারা সিরিয়ার শিশুদেরকে জবাই করা হচ্ছে ,
ওইসব ছুরিরা পথে আছে আমাদের গর্দন কাটার জন্যে !
.
সফবীরা (শীয়া রাফেজিরা ) মনে করে , আমাদেরকে হত্যা করা ,
আমাদেরকে জবাই করা আমাদের শরীরকে টুকরা টুকরা করা পুণ্যের কাজ। এর দ্বারা সওয়াব অর্জন করবে !
.
আমরা এমন এক নিষ্ঠুর শত্রুদের সামনে অবস্থিত ,যারা পরস্পরে আমাদেরকে হত্যা করার জন্যে সহযোগিতা করছে !
.
তোমাদের ভায়েরা তোমাদের কাছে আর্তনাদ করছে , মসজিদসমুহ বিলাপ করছে , যেসব মিনার আল্লাহর নাম উচ্চারণের জন্যে নির্ধারিত ছিলো ,
সেগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে ।
.
তারপর এতে এমন এক পতাকা টানানো হচ্ছে ,যাতে লেখা 'ইয়া হোসাইন'…!
এগুলো দেখে কে সহ্য করতে পারে ? এরপরও কি আমরা নীরব থাকবো ?
গর্জে উঠবো না ?
.
হে বিত্তশালীরা ,
শামের সুপুরুষরা ,
খালিদ বিন ওয়ালিদের সন্তানেরা ,
তোমাদের কাছে সাহায্যের জন্যে চিতকার করছে ... আমি শপথ করে বলতে পারি !
.
আমি শপথ করে বলতে পারি !!
আমি শপথ করে বলতে পারি !!!
যদি সফবীরা (শীয়া রাফেজিরা) আজ সিরিয়া যুদ্ধে অর্জন করতে পারে ,
তাহলে অচিরেই তারা অন্য মুসলিম দেশসমুহে হাত বাড়াবে !
.
গতকাল ( জুলাই-২০১৩ মাসে) মিসরে একত্রিত হয়েছেন কয়েকশ আলেম এবং মুজাহিদ ,
তারা প্রায় পঞ্চাশটি দেশ থেকে সেখানে জড় হয়েছেন ,
তারা সিরিয়া নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করেছেন ,
তারা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন, যে সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্যে জিহাদ ওয়াজিব !!!
.
জিহাদ ছাড়া এই উম্মতের কোনো জীবন নাই
.
জিহাদ ব্যতীত আমাদের কোনো জীবন নাই ,
.
আল্লাহর কসম ! জিহাদ ব্যতীত আমরা অপমানের শৃংখল চূর্ণ করে শান্তিতে রূপ দিতে পারবো না ,
.
যখুনি এই উম্মাহ জিহাদ ত্যাগ করেছে তখুনি লাঞ্ছনা তাদের উপর চেপে বসেছে এবং কাফির ও নিকৃষ্ট গোষ্ঠিরা আমাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়েছে !!!!
.
বক্তব্য দেওয়ার পরের অবস্থা -
বক্তব্য শোনার পর নামাযের পর পরই মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরেই শ্লোগান দেওয়া শুরু করে, তাদের শ্লোগান ছিল - লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ -- বাশশার আদুউল্লাহ
(আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নাই , বাশার আল্লাহর শত্রু )
.
এরপর বাশার আল-আসাদ শায়খ আরিফীকে হত্যার হুমকি দেয় ।
ইরানের শীয়া মিডিয়া ও ধর্মযাজকরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় ।
.
কিছুদিন পর তিনি মিসরের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কথা বলেন । তখন সৌদী দালাল রাজপরিবার তাকে কারাগারে পাঠায় ।
.
কিছুদিন পর মিসরের রাজনৈতিক বিষয়ে কথা না বলার শর্তে মুক্তি দেয় ।
আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top