শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

প্রশ্ন:মক্কাই কেন জিহাদ করেন নি?????

কোন মন্তব্য নেই:

প্রশ্ন:মক্কাই কেন জিহাদ করেন নি?????
.
#প্রথম স্তর:শুধুমাত্র ক্ষমা।
*রাসুল (সা:) যখন মক্কায় তাওহীদের দাওয়াত শুরু করলেন তখন মক্কার কাফেরগন রাসুল(সা:) ও সাহাবায়ে কেরাম(রা:) এর উপর চরমভাবে জুলুম নির্যাতন শুরু করেন।এই অবস্থায় আল্লাহতায়ালা মুসলিমদের সবর করার জন্য এবং আল্লাহর তাওহীদের দাওয়াতের কাজ চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেন।
.
*তখনো কিন্তু যুদ্ধের হুকুম আসেনি।
.
এরপর আল্লাহ আয়াত নাযিল করেন,
*অতএব, আপনি প্রকাশ্যে শুনিয়ে দিন যা আপনার প্রতি আদেশ করা হয় এবং মুশরিকদের পরোয়া করবেন না।
(হিজর-৯৪)।
.
এই আয়াতের উপর আমল যখন শুরু করলেন তখন কুফফারদের জুলুম নির্যাতন শুরু হল।কিন্তু তখনো যুদ্ধ করার অনুমতি দেয়া হইনি।তখন আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাযিল করেন----
*তুমি ক্ষমা প্রদর্শন কর।ভাল কাজের আদেশ দাও।আর মূর্খদের থেকে বিমূখ থাক।
(আরাফ-১৯৯)।
.
এই সময় রাসুল(সা:).এই সময় তার সাহাবীদেরকে বলেছিলেন----
*"আমি ক্ষমার জন্য আদিষ্ট হয়েছি, সুতরাং তোমরা যুদ্ধ করো না।(নাসায়ী-৩০৮৬,বায়হাকী-১৮১৯৭)
.
*আল্লাহর রাসুল মোহাম্মদ(সা:) এর ঘাড়ের উপর উঠের নাড়ি-ভূড়ি সালাতরত অবস্থায় চাপিয়ে দিল আবু জাহেল ও তার সাথীরা।
আল্লাহর রাসুল তাদের জন্য তিন বার বদদোয়া করলেন।
তখনো যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি।
.
*বেলাল(রা:) এর উপর নির্যাতন চালানো শুরু হল।
তিনি বলতেন তখন শুধু,আহাদ!আহাদ!
তখনো যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি।
.
*আম্মার ইবনে ইয়াসির, তার পিতা ইয়াসির ও মাতা সুমাইয়া(রা:) কে সূর‍যের তাপে ফেলে শাস্তি দেয়া হচ্ছে যাতে করে ইসলাম ত্যাগ করে।
কিন্তু তখনো যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি।
.
*আম্মার(রা:) এর পিতা ইয়াসির(রা:) নবীজির কাছে গিয়ে বললেন,ইয়া রাসুলুল্লাহ! যুগ যুগ ধরে কি এভাবেই চলতে থাকবে??আল্লাহর রাসুল বললেন, হে ইয়াসিরের পরিবার তোমরা ধৈর্য ধারন কর।রাসুল (সা:) তখন তাদের পরিবারের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন আল্লাহর কাছে।
কিন্তু তখনো যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি।
(বায়হাকী-১৬৩১,মুসতাদরাকে হাকেম-৫৬৩৬)।
.
*রাসুল(সা:) কাবার ছায়াতলে চাদড় মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় তার কাছে গিয়ে সাহাবীরা অভিযোগ করলেন, আপনি কি আমাদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করবেন না,আমাদের জন্য দোয়া করবেন না??
তখন রাসুল(সা:) বললেন, "তোমাদের পূর্বে এমন ঈমানদারও ছিল যাদের জন্য মাটির গরত খোড়া হত,সেখানে তাকে ফেলা হত, এরপর করাত নিয়ে আসা হত সেটা তার মাথায় রাখা হত, এরপর তাকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলা হত।লোহার চিরুনী দ্বারা তার শরীরের মাংসগুলোকে হাড্ডি থেকে আলাদা করে ফেলা হত। এতো অত্যাচারও তাকে দ্বীন থেকে বিন্দু পরিমানেও সরাতে পারতনা।কিন্তু তোমরা বড় তারাহুড়া করছ"।
কিন্তু তখনো যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়নি।
(বুখারী-৩৬১২,৬৯৪৩,৩৪১৬।
আবু দাউদ-২৬৪৯।নাসাঈ কুবরা-৫৮৯৩)
.
*ইমাম কুরতুবী (রহ:) বলেন,
"মক্কা  থাকাকালীন আল্লাহর রাসুল (সা:) এর জন্য জিহাদের অনুমতি ছিলনা।"
*
*
*
#দ্বিতীয় স্তর:শুধুমাত্র যুদ্ধের অনুমতি।
.
*দ্বিতীয় স্তরে এসে আল্লাহতায়ালা মুসলমানদেরকে জিহাদ করার অনুমতি দিয়েছেন কিন্তু ফরয করেন নি।
.
*এই স্তরে এই আয়াতটি নাযিল হয়,
"যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের উপর আক্রমন করা হচ্ছে এজন্য যে, তাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে।নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে বিজয়দানে সক্ষম।তাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধুমাত্র এই অপরাধে যে,তারা বলে আমাদের রব আল্লাহ।
(সূরা হ্বজ্জ -৪০)
.
*আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করার সম্পরকে এটাই প্রথম আয়াত।এই আয়াতে কেবল অনুমতি দেয়া হয়েছে কিন্তু আদেশ করা হয়নি।
.
*আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী যুদ্ধের অনুমতির আয়াত নাযিল হয় হিজরি প্রথম বৎসরের যিলহ্বজ্জ মাসে।
(তাফসীর ইবনে কাসীর সূরা হ্বজের ৩৯ নং আয়াতের তাফসীর দেখুন)
*
*
*
#তৃতীয় স্তর:আত্মরক্ষামূলক জিহাদের আদেশ।
.
*এই স্তরে এসে আল্লাহতায়ালা জিহাদকে মুসলিমদের উপর ফরয করেছেন কিন্তু আত্মরক্ষামূলক।
যদি কোন শত্রুপক্ষ মুসলিম ভূমির উপর হামলা করে, মুসলিম জাতির জান-মালের ক্ষতি করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ফরয করেছেন এই স্তরে।
.
*"আর যুদ্ধ করর তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর রাস্তায়, যারা যুদ্ধ করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না।
(বাকারা :১৯০)
.
*এই প্রথমবার মুসলিমদের নির্দেশ দেয়া হল,যারা এই ইসলামের দাওয়াতের পথে সশস্ত্র প্রতিরোধ সৃস্টি করছে অস্ত্র দিয়েই তাদের অস্ত্রের জবাব দাও।
.
*এরপরেই অনুষ্টিত হয় বদরের যুদ্ধ।
.
*আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের হুকুমের আয়াত নাযিল হয়েছিল বদর যুদ্ধের কিছু পুরবে।দ্বিতীয় হিজরির রজব বা শাবান মাসে।(তাফসির ইবনে কাসীর)
.
*আর তোমরা সকলে মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ কর যেমনিভাবে তারা সকলে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে।(তাওবা -৩৬)
*
*
*
#চতুর্থ স্তর:দ্বীন কায়েমের জন্য যুদ্ধ করা ফরয।
.
*এই স্তরে এসে ধরম-বরন নির্বিশেষে সকল কাফিরদের বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মক জিহাদ করা ফরয করা হয়।
.
*যেখানেই কাফের বিজয়ী থাকবে তাদের বিরুদ্ধেই জিহাদ করতে হবে।
.
*চাই তারা প্রথমে যুদ্ধ করুক।যতক্ষন পর্যন্ত ইসলাম গ্রহন না করবে অথবা জিযিয়া কর দিয়ে মুসলিম শাসনের আনুগত্য মেনে না নিবে ততক্ষন পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।
.
*এই জিহাদের উদ্দেশ্য হবে,
--কাফিরদের শক্তি,অহংকার,গোরবকে চূর্ণ করে দেওয়া,আল্লাহর দ্বীনের মর্যাদা রক্ষা করা এবং আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাওহীদের বানী সমুন্নত করা।
.
*এখন থেকে শুধু আত্মরক্ষার জন্যই যুদ্ধা
নই।বরং! আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্যই যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
.
*এই স্তরের সূচনা হয়,নবম হিজরীর হ্বজের পর চার মাস অতিক্রম করার পর।
.
*তোমরা যুদ্ধ করো তাদের বিরুদ্ধে, যারা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখেনা,আল্লাহ ও তা রাসুল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহন করেনা সত্য ধরম,যতক্ষন না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।(তাওবা :২৯)
.
*আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করর যতক্ষন না ফিতনার অবসান হয় এবং দ্বীন পুরাপুরিভাবে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়। (আনফাল-৩৯)।
.
*এটাই সর্বশেষ বিধান।
.
*এটাই চূড়ান্ত বিধান।
.
*এটার মাধ্যমেই দ্বীন ইসলাম পূরনতা লাভ করে।প্রতিটি মুসলিমের উচিত এই পরিপূরন ইসলামকে মেনে নেয়া।
.
এই আয়াতগুলো থেকে প্রমানিত হল যে,জিহাদ শুধু আত্মরক্ষামূলক নয় বরং যেখানেই কুফর ও শিরক বিজয়ী থাকবে, আল্লাহর পরিবরতে মানুষের সার্বভৌমত্ব ও মানুষের তৈরি করা আইন-বিধান চলবে এবং বহু রব ও বহু ইলাহের আনুগত্য করবে সেখানেই হামলা করতে হবে।এটাই সর্বশেষ বিধান এবং এটাই চূড়ান্ত এবং আর মাধ্যমেই দ্বীনে ইসলাম পূরনতা লাভ করে।
.
*প্রথম স্তরের ক্ষমার আয়াতগুলা অথবা দ্বিতীয় স্তরের অনুমতির আয়াতগুলো আর তৃতীয় স্তরের আত্মরক্ষামূলক জিহাদের আয়াতগুলার মাধ্যমে মুসলিম জনতাকে ধোকা দিয়ে সর্বশেষ স্তরের আয়াত অনু্যায়ী আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিস্টার জন্য,আল্লাহর কালিমাকে বুলিন্দ করার জন্য,কাফের-মুশরিকদের শক্তি ও বিজয়কে চুরমার করে দেওয়ার জন্য জিহাদের প্রতি মুসলিম জনতাকে উদ্ধুদ্ধ করাই একজন পূরন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
.
.
প্রথমদিকে জিহাদের অনুমতি ছিলনা।
তারপর শুধু অনুমতি দেয়া হয়,
ফরয করা হয় নি।
.
তারপর ফরয করা হয়েছে তবে শুধু আত্মরক্ষামূলক।
.
তারপর চূড়ান্ত ও সর্বশেষ হুকুম নাযিল হয় যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।
.
এখন এক্ষেত্রে কি আমরা সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত বিধানটি মেনে নিব?
.
নাকি আগের গুলো নিয়ে থাকব?
.
যারা সত্যিকার অরথে মু'মিন, কুরান ও সুন্নাহর পূরন আনুগত্যশীল তারা সর্বশেষ বিধানটিই মানবে।
.
আর যাদের মনের মধ্যে মুনাফ্বিকী আছে তারাই কেবলমাত্র জিহাদ থেকে বাচার জন্য বিভিন্ন অজুহাত তালাশ করবে এবং টালবাহানা করবে।
.
.
.
বিভিন্ন ঈমামদের বক্তব্য দেখুন:
.
##ইমাম শাফেয়ী(রহ:) বলেন,
যখন কাফিরদের জুলুম-নিরযাতনে মুসলিমগন অতিষ্ঠ হয়ে পড়লো তখন আল্লাহ (সুব:) তাদেরকে প্রথমে ধৈর্যধারন করা ও অটল থাকার নির্দেশ দিলেন।
.
ইরশাদ হচ্ছে:
"আমি জানি যে আপনি তাদের কথাবার্তায় হতোউদ্দম হয়ে পড়েন।
অতএব, আপনি আপনার রবের প্রশংসা করুন এবং সেজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হোন।
আর মৃত্যু না আসা পর্যন্ত আপনি আপনার রবের ইবাদত করুন।"(হিজর:৯৭-৯৮)।
.
ইমাম শাফেয়ী তার রচিত আহকামুল কুর'আনে উল্লেখ করেন :
"প্রথম পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালা তার রাসুলের (সা:) প্রতি ফরয করেছেন মানুষের প্রতি দ্বীনের দাওয়াত পোছে দেওয়া এবং তার ইবাদত করার জন্য।যুদ্ধ ফরয করেন নি।
যা কুর'আনের বহু আয়াতে উল্লেখ রয়েছে।
.
অত:পর দ্বিতীয় পর্যায়ে তাদেরকে যুদ্ধের অনুমতি দেন।
.
অত:পর যুদ্ধ করাকে ফরয করলেন যদি আগে কাফেররা তাদের উপর আক্রমণ করে।
যেমন আল্লাহ (সুব:) বলেন,"যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে, যাদেরকে আক্রমন করা হচ্ছে.....।"
এবং তাদের জন্য যুদ্ধ করাকে বৈধ করেছেন এর অরথ হচ্ছে যা আল্লাহ স্পস্ট করে দিয়েছেন।
.
তিনি বলেন,"আর যুদ্ধ কর আল্লাহর রাস্তায় তাদের সাথে,যারা যুদ্ধ করে তোমাদের সাথে।"
.
অত:পর হিজরতের কিছুদিন পরে আল্লাহ(সুব:) তার রাসুলের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহে একদল মানুষ তার আনুগত্য করলো ফলে আল্লাহর্ সাহায্যে এই লোকগুলো মাধ্যমে একটি শক্তিশালী বাহিনী তৈরি হয় যা ইতিপূর্বে ছিল না।
.
এরপর আল্লাহ (সুব:) তাদের উপর যুদ্ধ করা ফরয করেছেন যদিও পূর্বেও শুধুমাত্র অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
.
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
"তোমাদের উপর যুদ্ধ করাকে ফরয করা হয়েছে,অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়।"(বাকারা:২১৬)
.
[আহকামুল কুরান লিশশা'ফী ২/৯-১৯]।
.
.
.
##শামসুল আইম্মাহ সারাখসী(রহ:),
'মাসবুত' কিতাবের ১০ম খন্ডের ২য় পৃষ্টায় বলেন:
"প্রথমে রাসুলুল্লাহ (সা:) আদিষ্ট ছিলেন মুশরিকদের ক্ষমা করার এবং তাদের সাথে ভালো আচরন করার এবং তাদের থেকে বিমুখ থাকার।"
.
এই ব্যাপারে আল্লাহ(সুব:) বলেন,
"সুতরাং তুমি সুন্দরভাবে তাদেরকে এড়িয়ে যাও।"(হিজর -৮৫)
.
আল্লাহতায়ালা বলেন,
"আর আপনি মুশরিকিনদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন।"(হিজর -৯৪)।
.
অত:পর আল্লাহ (সুব:) যুদ্ধের অনুমতি দিলেন যখন কাফেরদের পক্ষ থেকে মুসলিমদের উপর প্রথমে আক্রমন হবে তখন।
.
আল্লাহ(সুব:)বলেন,
"যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে, যাদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে...."।
.
অর্থাৎ আল্লাহ তাদেরকে অনুমতি দিলেন প্রতিহত করার জন্য।
.
আল্লাহ (সুব:) বলেন,
"যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে তোমরা তাদের হত্যা কর"।
(বাকারা -১৯১)।
.
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
"আর যদি তারা সন্ধির প্রতি ঝুকে পড়ে,
তাহলে তুমিও তার প্রতি ঝুকে পড়।"
(আনফাল-৬১)।
.
অত:পর সর্বশেষ মুসলিমদেরকে কাফেরদের উপর আক্রমন করার নির্দেশ দিলেন।
.
অর্থাৎ আক্রমনাত্মক জিহাদের নির্দেশ দিলেন।
.
আল্লাহ (সুব:) বলেন,
"আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর যতক্ষন না ফিতনার অবসান হয়....."(আনফাল-৩৯)।
.
আল্লাহ আরো বলেন,
"তোমরা মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে পাও।"(তাওবা-৫)।
.
রাসুল (সা:) বলেন,
"আমাকে আদেশ করা হয়েছে,
তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যতক্ষন পর্যন্ত না  তারা সাক্ষ্য দেয় যে,
আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা:) আল্লাহর রাসুল,সালাত প্রতিস্টা করে এবং যাকাত দেয়,
অত:পর যদি তারা তা করে তবে তাদের রক্ত ও সম্পদ আমার থেকে নিরাপদ।
তবে ইসলামের অন্য কোন বিধানের কারনে যদি তাদের রক্তপাতের আদেশ আসে তাহলে তা ভিন্ন।আর তাদের প্রকৃত হিসাবের দায়িত্ব আল্লাহ(সুব:) এর নিকট।"
(বুখারী হাদিস:
২৫,৩৮৫,১৩৩৫,২৭৮৬,৬৫২৬,৬৮৫৫,
.
মুসলিম হাদিস :১৩৪,১৩৫,১৩৬,১৩৭,১৩৮,
.
তিরমিযী  হাদিস:৩৩৪১
.
নাসাঈ:২৪৪৩,৩০৯০-৩০৯৫,
.
আবু দাউদ:
১৫৫৮,২৬৪২-২৬৪৪,২৬০৬-২৬০৮)
.
.
##ইবনে তাইমিয়া(রহ:)
'আল জওয়াবুস ছহীহ লি মান বাদ্দালা দ্বীনাল মাসীহ' কিতাবের ১ম খন্ডের ৭৪ পৃষ্টায় বলেন:
.
"প্রথমে রাসুল (সা:) আদিষ্ট ছিলেন কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকার, মুসলিমরা দুর্বল হওয়ার কারনে।যখন মদিনায় হিজরত করলেন, তখন তাদের কিছু সাহায্যকারী হল,তখন আল্লাহ(সুব:) তাদেরকে যুদ্ধের অনুমতি দিলেন।অত:পর যখন তাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি পেল তখন তাদের উপর যুদ্ধ করা ফরয করলেন। কিন্তু যারা তাদের উপর আক্রমন করে নি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে ফরয করা হয়নি। কেননা সকল কাফেরদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের যুদ্ধ করার শক্তি ছিলনা। অত:পর যখন আল্লাহ (সুব:) মক্কা বিজয় দান করলেন এবং আরব যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটল এবং আরবের বিভিন্ন গোত্রের লোকেরা মুহাম্মদ সা:) এর নিকট ইসলাম গ্রহনের জন্য আসতে লাগল।তখনই আল্লাহ (সুব:) সকল কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিলেন। তবে যাদের সাথে নির্ধারিত সময়ের চুক্তি ছিল তারা ছাড়া।"
(আল জাওয়াবুস সহীহ লিমান বাদ্দালা দ্বীনাস সহীহ ২য় খন্ড ১২২ পৃষ্টা।)
.
.
##ইমাম ইবনে রুশদ(রহ:) 'বিদায়াতুল মুজতাহিদ ' কিতাবের ১ম খন্ডের ৩৭১ ও ৩৭২ পৃষ্টায় এবং আল্লামা ইবনুল কায়্যিম 'জাদুল মা'আদ' কিতাবের ৩য় খন্ডের ১৬০ পৃষ্টায় এবং আরো অনেক উলামায়ে সলফ জিহাদ ফরয হওয়ার ব্যাপারে উল্লেখিত স্তরসমুহ বরননা করেছেন।
.
.
.
বই:দ্বীন কায়েমের সঠিক পথ।
লেখক:আমার প্রান-প্রিয় শাইখ মুফতি জসীমুদ্দিন রহমানি হাফিযাহুল্লাহ।
পাতা নং:(২৭০-২৮২ ) ও (২৮৬-২৯০)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top