রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬

আল জিহাদ, উম্মতের যুবকদের ব্র্যান্ড!

কোন মন্তব্য নেই:

আল জিহাদ, উম্মতের যুবকদের ব্র্যান্ড!
--------------------------------------

    সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্* সুবহানাহু ওতায়ালার জন্য! দরুদ এবং সালাম বর্ষিত হোক রাসুল (সাঃ) এবং তার পরিবার বর্গের উপর

    জিহাদ হচ্ছে উম্মতের সম্মান! জিহাদ হচ্ছে উম্মতের ইজ্জতের বর্ম। জিহাদের মাধ্যমে আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়াতালা দুনিয়ার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাবস্থা করে রেখেছেন। আপনি পরিসংখ্যান দেখেন ইতিহাস দেখেন.. উম্মতের মাঝে যখন জিহাদ ছিলো তখন কতজন মুসলিম মারা গেছিলো? আর আজ জিহাদ ছেড়ে দিয়ে অস্ত্র নামিয়ে রাখার পর কত জন মুসলিম মারা যায়? যখন উম্মতের মাঝে জিহাদ ছিলো তখন কতজন উম্মতের মা আর উম্মতের বোন ধর্ষিত হয়েছিলো আর আজ জিহাদের অনুপস্থিতিতে কতজন উম্মতের মা এবং বোনেরা ধর্ষিত হচ্ছেন? জিহাদ যখন জারি ছিলো তখন উম্মতের বিস্তার কেমন ছিলো? আর আজ জিহাদের অনুপস্থিতিতে উম্মতের কি হাল! জিহাদ যখন উম্মতের ঘোড়ার পিঠে আর তরবারির আগায় আর বর্শার ফলায় ঝিলিক মেরেছে তখনি কাফির রা আর তাদের পা চাটা দাসেরা উম্মতের সামনে মাথা তুলে দাড়ানোর ও সাহস পায়নি! আর আজ!

    আজ আমার আর আপনার পরিবারের আপন কাউকে যদি আইফোন ৭ এর ঝকঝকে একটা প্যাকেট উপহার দেয়া হয় তাহলে তাদের অনুভুতি কেমন হবে? আর যদি সিম্ফনি ডি ৫৫ দেয়া তাহলে তাদের অনুভূতি কেমন হবে? দুই অনুভূতি কি এক হতে পারে? প্রশ্ন হচ্ছে আইফোন ৭ এর মধ্যে কি আছে যা আমাদের অনুভুতিকে নাড়া দেয়? উত্তর হচ্ছে আইফোন ৭ হচ্ছে ব্র্যান্ড!

    ব্র্যান্ড! হ্যাঁ আজ আমি এই ব্র্যান্ড নিয়েই কথা বলতে চাই ইনশাআল্লাহ্*। আপল, স্যামসাং, গুচি, নাইক, এডিডাস এই ব্রান্ড গুলো কে না চেনে? মানুষ এগুলোর পিছনে ছুটে।নিজের ঘাম নিজের সমস্ত মেধা ব্যায় করে আইফোন এর জন্য, ম্যাকবুকের জন্য। নিজের শরিরে একটা দুইটা ব্র্যান্ড এর গেজেট লাগাতে পারলে ধন্য হয়ে যায়! আইফোন টা একবার এ হাতে নেয় একবার ঐ হাতে নেয়! এক শাইখ যথার্থই বলেছিলেন, তোমার পায়ে নাইক আছে তাই আমি তোমাকে রেস্পেক্ট করবো? ইয়েস তোমার দাম ঐ জুতার দামের সমানই, কাওরন ঐ জুতা টা খুলে নিলে তোমার আর কোন দাম নাই!

    কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন ব্র্যান্ড কিভাবে ব্র্যান্ড হয়? ব্র্যান্ড হয় মার্কেটিং এর মাধ্যমে, প্রচারের মাধ্যমে, কথা বলার মাধ্যমে, অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে, সেটাকে অর্জন করার জন্য প্রচেষ্টার মাধ্যমে, সেটার জন্য লাইনে রাত ভর দাঁড়িয়ে থাকার মাধ্যমে.. ব্র্যান্ড হয়ে কোন কিছু সৃষ্টি হয়না, ব্র্যান্ড কে আমরাই ব্র্যান্ড বানাই। হয়তো ভাবছেন আসলে আমি বলতে চাই কি?

    আমি বলতে চাই,

    আসেন এবার আমরা জিহাদ কে ব্র্যান্ড বানাই! আসলে কথাট ঠিক হলোনা, আমি বলবো আসেন জিহাদ নামের ব্র্যান্ড কে আমরা আবার রিভাইভ করি, আবার এই ব্র্যান্ড কে আমাদের জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। কারন আল্লাহর হুকুমে রাসুল (সাঃ) বহু আগেই জিহাদ কে আমাদের জন্য ব্র্যান্ড বানিয়ে দিয়ে গেছেন। নিজেদের অবহেলায় আমরা সেই ব্র্যান্ড কে হারিয়ে ফেলেছি। সময় হয়েছে সেই ব্র্যান্ড কে রিভাইভ করার।

    জিহাদ! এই উম্মতের ব্র্যান্ড! রক্ত ফুটতে থাকা উম্মতের যুবকদের ব্র্যান্ড এই জিহাদ! এই ব্র্যান্ড আল্লাহ্*র পক্ষ থেকে আমাদের জন্য! আর এই ব্র্যান্ড কারা ব্যাবহার করেছেন? কোন কোন সেলিব্রেটি এই ব্র্যান্ডের জন্য পাগল ছিলেন?
    সবার আগে.. মুহাম্মাদ (সাঃ)! মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজে এই ব্র্যান্ডের জন্য পাগল ছিলেন। আজ যদি আমরা জানতে পারতাম আর রাসুল (সাঃ) কোন ব্র্যান্ডের আতর ব্যাবহার করতেন তাহলে সেই ব্র্যান্ডের আতর কেনার হিড়িক পড়ে যেত। আর যদি জানা যেত যে সেই আতর আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ), উমর (রাঃ), উসমান (রাঃ), আলী (রাঃ), হামযা (রাঃ), খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ (রাঃ), তালহা ইবনু জুবাইর (রাঃ), আবু দুজানা (রাঃ) সহ সমস্ত সাহাবী গণ এবং তাদের সালফে সালেহিন গণ পাগলের মত ভালবেসেছেন তবে এবার চিন্তা করেন!

    চিন্তার খোরাক! চিন্তা করে দেখেন তো পৃথিবীর আর কোন ব্র্যান্ড এর পিছনে এভাবে মানুষ পাগল হয়েছেন এক জেনারেশন এর পর আরেক জেনারেশন? কোন ব্র্যান্ড এভাবে হাজার বছর পরেও যুবক দের বুকের রক্ত কে গরম করে তুলেছে! সর্বোপরি দুনিয়ার আর কোন ব্র্যান্ড কে আল্লাহ্* মনোনীত করেছেন আর রাসুল (সাঃ) নিজের রক্ত ঝরিয়ে আমাদের জন্য সেই ব্র্যান্ড কে পছন্দ বানিয়ে দিয়ে গেছেন!

    চিন্তার খোরাক ভাই। আমি এমন এক ব্র্যান্ডের কথা বলছি যা আল্লাহ্*র পক্ষ থেকে, যার জন্য রাসুল (সাঃ) সহ সমস্ত সাহাবা পাগল ছিলেন, পুরুষ মহিলা, যুবক বৃদ্ধ কেউই এর ব্যাতিক্রম ছিলেন না। শুধু তাই নয় এই ব্র্যান্ডের অনুসারীদের সাহায্য করার জন্য সর্বদা একদল ফেরেশতা প্রস্তুত থাকেন! একদল ফেরেশতা ডেডিকেটেড ফর অনলি দিস ব্র্যান্ড! সুবহানাল্লাহ!

    এখন সময় হয়েছে সেই ব্র্যান্ড কে রিভাইভ করার। জিহাদ নিয়ে কথা বলেন, জিহাদ নিয়ে লেখেন, জিহাদ নিয়ে প্রেজেন্টেশন করেন, দাওয়াহ দেন, যা সম্ভব সবই করেন। স্ত্রীর সাথে আলোচনা করেন সন্তানের সাথে কথা বলেন, বাবা মার সাথে গল্প করেন। দিল খুলে দেন, মন খুলে দেন.. আর কথা বলতে থাকেন। একসময়ে একটা জেনারেশন এই জিহাদ নিয়ে কথা বলা ছেড়ে দিয়েছিলো আর সেটার মাশুল আজ উম্মত নিজের রক্ত দিয়ে আর ইজ্জর দিয়ে পরিশোধ করছে!

    কেন আমাদের পরিবার জিহাদ কে ভয় পাবে? জিহাদ কি ভয় পাবার কিছু? জিহাদ তো জান্নাতের সুগন্ধ আর ফিরদাউসের চাবি! জিহাদ তো আল্লাহ্*র সন্তুষ্টি! এমন জিহাদ কে কেন আমাদের পরিবার ভয় পাবে? কারন তাদের মধ্যে এই জিহাদের চর্চা হয়না, কথা হয় না আমল হয়না, তারা কাউকে দেখেনা যে আইফোন ৭ এর মত জিহাদ কে ভালোবাসে। এছাড়া বাতিল মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা তো আছেই! এভাবেই আজ তাদের দিলে জিহাদের ব্যাপারে ভয় ঢুকে গেছে।

    আর ভয় কাটানোর জন্য আমাদের বেশি জিহাদ নিয়ে কথা বলতে হবে। খানা খেতে বসেছেন জিহাদের ফজিলত আলোচনা করেন, বৃষ্টি হচ্ছে বাসায় সুন্দর খাবারের খুশবু আসছে, সাহাবিদের জিহাদী জীবনের গল্প শোনান, বিকালে চায়ের কাপে চুমুকের সাথে জিহাদ এর মর্যাদা বর্ণনা করেন, রাতে ঘুমাতে যাবার আগে বাচ্চারা গল্প শুনতে চায়, তাদের কে জিহাদের গল্প শোনান, ব্যাটমান এর ছবি ওয়ালা ব্যাগ না কিনে দিয়ে উমর (রাঃ) কিংবা আবু দুজানা (রাঃ), কিংবা তালহা ইবনু জুবাইর (রাঃ) এর মত সাহাবীদের জীবনী কিনে দেন। জিহাদ জিহাদ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যান। এমন ভাবে জিহাদ নিয়ে কথা বলেন যেন মানুষ অবাক হয়ে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে! একদিন তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করবে, "জিহাদের মধ্যে কি আছে?" সেই সময়ে আপনি বলেন, "জিহাদের মধ্যে কি নাই?"

    আপনি বলেন, শহীদের প্রথম রক্ত ফোটা বের হবার আগেই তার পাপ মাফ হয়ে যায়, তার কবরের আজাব নাই, তার কোন হিসাব নাই, তার কবরে কোন সোয়াল জওয়াব নাই, সে ঘুরে বেড়াবে জান্নাতের বাগানে বাগানে, তার জন্য জান্নাতুল ফিরদাউস বরাদ্দ, সে তার সাথে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে আরও ৭০ অজন পরিবারের সদস্য কে! আপনি তাদের কাছে শাহাদাত এর মর্যাদা তুলে ধরেন। আপনি তাদের কে সেই ঘটনার কথা শুনিয়ে দেন, "উহুদ প্রান্তরে সাহাবারা যখন উহুদ পাহাড় থেকে জান্নাতের সুগন্ধ পাচ্ছিলেন আর সেই সুগন্ধ তাদের পাগল করে তুলেছিলো"

    এভাবে ধীরে ধীরে তার বুঝবে ইনশাআল্লাহ্*, জিহাদ কি! একই সাথে তাদের মনের খোরাক এর জন্য কিতাব দিতে থাকেন, কুরআন খুলে আয়াত গুলো পড়ে পড়ে শোনান। আর দুয়া করতে থাকেন।

    আপনার কাজের জন্য আল্লাহ্* যদি একজন কেও মুজাহিদ হিসাবে কবুল করে নেন! একবার চিন্তা করেন। আর আল্লাহ্* যদি এই কাজের জন্য আমাকে কিংবা আপনাকে জিহাদের কাজের জন্য কবুল করে নেন! এত দিন যেই শাহাদাতের মর্যাদা আপনি বলে আসছিলেন সেই কাজ যদি আল্লাহর পছন্দ হয় আর যদি আমাকে আর আপনাকে আল্লাহ্* শাহাদত এর জন্য কবুল করে নেন! একবার চিন্তা করেন!

    আমাদের যুবকদের আর সন্তানদের বুঝাতে হবে, জিহাদ এর সৌন্দর্য এর সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। কথা না বলার জন্য, আমল না করার জন্য যে জিহাদ হারিয়ে গিয়েছিলো কথা এবং আমল দিয়ে আবার সেই জিহাদ কে ফিরিয়ে আনার চেস্টা করতে হবে ইনশাআল্লাহ্*।

    এমন দিন আসবে ইনশাআল্লাহ্* যেদিন দলে দলে মানুষ জিহাদের কাতারে শামিল হবে, কিন্তু এই আজকের কাজের পুরষ্কার আর সেই দিনের কাজের পুরষ্কার এর মধ্যে আসামান আর জমিন এর চেয়েও বেশি ফারাক।

    ইয়া আল্লাহ্*, আপনি আমাদের পরিশুদ্ধ করে দিন আর আমাদের কবুল করে নিন।
    আমীন

- সংগৃহীত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top