সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬

শাসকবরগ রবের আসনে বসে আছে যেভাবে....

কোন মন্তব্য নেই:

#শাসকবরগ রবের আসনে বসে আছে যেভাবে........
.
.
#বরতমান ত্বাগুতি সরকার মদ, জুয়া,লটারী,সুদ,বেপর্দা,
নারী নেতৃত্ব,বেশ্যাবৃত্তি(ব্যভিচার)
এমন আরো অসংখ্য বিষয় রয়েছে,
যেগুলা আল্লাহতায়ালা কঠোরভাবে অবৈধ ঘোষনা করেছেন,পক্ষান্তরে এই ত্বাগুতি সরকার এগুলাকে বৈধতার সার্টিফিকেট দিয়েছে।
.
দন্ডবিধির বিষয়টি দেখুন,
চুরি ও ডাকাতির দন্ড,ব্যভিচারের দন্ড,সন্ত্রাস দমন আইন,বিবাহবিধি সহ আরো অনেক বিষয়ে আল্লাহ তা'আলা যে বিধান আল-কুরানের মাধ্যমে ঘোষনা করেছেন, তা বাদ দিয়ে তারা নিজেদের মনমতো দন্ড বিধি বৈধ করেছে।
.
এই অধিকার তারা পেল কোথা থেকে??????
.
কে দিল তাদেরকে এই অধিকার???
.
যারা এদেরকে সমর্থন, রক্ষনাবেক্ষন, সম্মান ও প্রতিষ্টিত করার জন্য আমরন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য হচ্ছে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর!তোমরা আল্লাহকেকে ভয় কর!তোমরা আল্লাহকে ভয় কর!
.
সেইদিন আসার পুরবেই নিজেদের আমলকে শুধরে নাও,যেদিন কেউ কারো সাহায্য করবেনা এবং প্রত্যেককে তার নিজের করম সম্পরকে জিজ্ঞাসা করা হবে।তওবা করে আল্লাহর মনোনীত জীবন ব্যবস্থা ইসলামে ফিরে এসো।
.
কেননা আল্লাহতায়ালা মুসলিমদেরকে ঈমান আনার পুরবে শরত দিয়েছেন এসব ত্বাগুতী সরকারদের সাথে কুফুরী/অস্বীকার করার এবং এসব শয়তানী মতাদর্শকে ভেংগে চুরমার করে দিয়ে একমাত্র ইসলামকে সেখানে প্রতিষ্টিত করার জন্য।
.
শত শত বৎসর ধরে মুসলমানদের মনে বিরাজমান ধরম সংক্রান্ত বিশ্বাস থেকে এই সত্যটিকে অত্যন্ত সুক্ষ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এমনকি পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত এতদুর এগিয়েছে যে,ইসলামের শত্রুরা তো দুরের কথা, এর উৎসাহী ভক্তরা পর্যন্ত শাসন ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বকে ইসলামি আক্বীদা বিশ্বাস থেকে বিচ্ছিন্ন একটা ব্যাপার বলে মনে করতে আরম্ভ করেছে।
.
ইসলামের খুঁটিনাটি আমলের জন্য তারা যেমন উতলা ও আবেগদীপ্ত হয়,রাস্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্ব এর জন্য কিছুতেই তেমন হয় না।
.
ইসলামের ছোট খাট আমল আখলাক থেকে বিচ্যুতিকে যেমন তারা বিচ্যুতি গন্য করে,ইসলামের রাজনৈতিক, সাংবিধানিক ও রাস্ট্রীয় বিধান থেকে বিচ্যুতিকে সে ধরনের বিচ্যুতি বলে গন্য করেনা।
.
অথচ ইসলাম এমন একটা জীবন বিধান, যার আক্বীদা, আমল আখলাক, চরিত্র ও আইন কানুনে কোন বিভাজন নেই।কিছু কুচক্রী মহল সুপরিকল্পিত পন্থায় শত শত বছর ধরে এর মধ্যে বিভাজন ঢুকানোর চেষ্টা করেছে।এরই ফলে ইসলামের রাস্ট্রীয় ও রাজনৈতিক ক্ষমতা তথা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব সংক্রান্ত এমন মোলিক বিষয়টি এতো তুচ্ছ ও ওইচ্ছিক বিষয়ে পরিনত হয়েছে।শুধু সাধারন মানুষ নয় এমনকি ইসলামের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ ভক্তরাও আজকাল একে কম গুরুত্বপূরন ও ওইচ্ছিক বিষয় ভাবতে শুরু করেছে।
.
যারা মূরতি পুজা করাকে শিরক বলে অভিহিত করে,অথচ আল্লাহদ্রোহী শক্তির শাসন মান্য করাকে শিরক বলে আখ্যায়িত করেনা এবং মূরতি পুজারীকে মোশরেক মনে করে কিন্তু ত্বাগুতি শক্তি তথা মানবরচিত আইনের অনুসারীদের মোশরেক মনে করেনা,তারা আসলে কুরান অধ্যয়ন করেনা এবং ইসলামকে চিনেনা।
রাসুল(সা:) এর ঘটনা বহুল রাজনৈতিক জীবনকে পর্যবেক্ষণ করেনা।তাদের উচিত যেভাবে আল্লাহতায়ালা কুরান নাযিল করেছেন, সেইভাবেই তা পড়া।
.
আরো দু:খজনক ব্যাপার হলো,
ইসলামের এই দরদী ভক্তদের কেউ কেউ প্রচলিত তাগুতী রাস্ট্র ব্যবস্থার কিছু কিছু আইন, পদক্ষেপ ও কথাবারতা সম্পরকে মাঝে মাঝে খুত ধরেন যে,অমুক কাজ ইসলাম বিরোধী।কোথাও কোথাও কিছু ইসলাম বিরোধী আইন বা বিধি ব্যবস্থা দেখে তারা রেগে যান।তাদের ভাব দেখে মনে হয়,যেন ইসলাম তো পুরাপুরি প্রতিস্টিত হয়েই আছে, তাই অমুক অমুক ত্রুটি যেন তার পুরনতার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে আছে।
.
এই সকল দ্বীনদরদী(!) ব্যক্তি তাদের অজান্তেই ইসলামের ক্ষতি সাধন করে থাকেন।তাদের সেই মুল্যবান শক্তিকে তারা এসব অহেতুক কাজে অপচয় করেন,অথচ তা ইসলামের মোলিক আক্বীদা বিশ্বাস প্রতিস্টায় ব্যয় করা যেতো।এসব কাজ দ্বারা তারা আসলে জাহেলী সমাজ রাস্ট্রের পক্ষেই সাফাই গান।কেননা,এর দ্বারা বোঝা যায় যে,ইসলাম তো এখানে কায়েম আছেই,কেবল অমুক অমুক ত্রুটি শুধরালেই তা পুরনতা লাভ করবে।অথচ এখানে সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা অর্থাৎ আইন প্রনয়ন, শাসন ও বিচার ফয়সালার সর্বসময় চূড়ান্ত ক্ষমতা ও এখতিয়ার যতক্ষন মানুষের হাত থেকে পরিপুরনভাবে ছিনিয়ে এনে আল্লাহর হাতে ন্যস্ত না হবে,ততক্ষন ইসলামের অস্তিত্ব বলতেই এখানে কিছু নেই।কারন অন্যের সার্বভৌমত্ব মেনে নেয়া অরথই হলো আল্লাহকে অস্বীকার করা। আর যেখানে আল্লাহকে অস্বীকার করা হয় সেখানে ইসলামের অস্তিত্ব কিভাবে থাকে। এটি কাফের মোশরেকদের এমন এক সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে আল্লাহকে কার্যত অস্বীকার করা সত্ত্বেও সাধারন মানুষ তা বুঝতে পারেনা। আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পারেন,তারা বলেনা তোমরা ইসলাম ছাড়ো,তারা বলে গনতন্ত্র(মানুষের বানানো আইন) গ্রহন কর,কেননা তারা ভালো করেই জানে, গনতন্ত্র গ্রহন অরথই হল ইসলামকে বর্জন করা।
.
মনে রাখতে হবে যে,আল্লাহর সার্বভৌমত্ব বহাল থাকলেই অর্থাৎ আল্লাহকে একমাত্র নিরংকুশ আইনদাতা মানলেই ইসলামের অস্তিত্ব অক্ষুন্ন থাকে।আল্লাহর সার্বভৌমত্ব বজায় না থাকলে সেখানে ইসলামের অস্তিত্ব এক মূহুরতও থাকতে পারে না।বলার অপেক্ষা রাখেনা যে,আজকের পৃথিবীতে ইসলামের একমাত্র সমস্যা এই যে,আল্লাহর যমীনে আল্লাহদ্রোহী ত্বাগুতি শক্তি রাস্ট্র ক্ষমতায় অধিস্টিত হয়ে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও প্রভুত্বের ওপর ভাগ বসাচ্ছে,তা ছিনতাই করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে আর নামাযী,দাড়ি টুপিওয়ালা,
তাসবীহওয়ালা লোকরা তাদেরকে সমর্থন দেয়া থেকে শুরু করে সরকারের অধীনে বিভিন্ন পদ গ্রহন করে তাদের সহায়তা করে বৈষয়িক ফায়দা লুটছে।
.
এই শাসক শ্রেনী তাদের আইন প্রনয়নের ক্ষমতা নিশ্চিত করছে এবং স্বরাস্ট্রনীতি, পররাস্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, পরিবার তথা সাধারন মানুষের জীবন, সহায় সম্পদ ও তাদের মধ্যে বিবাদমান বিষয়ে নিজেদের খেয়ালখুশী মতো বিধি নিষেধ প্রয়োগ করছে।এটাই সেই সমস্যা যার মোকাবেলা করার জন্য কুরান-নাযিল হয়েছে এবং সে আইন প্রনয়ন ও বিধি নিষেধ প্রনয়ন ও প্রয়োগের ক্ষমতাকে দাসত্ব ও প্রভুত্বের সাথে সম্পৃক্ত করেছে এবং স্পষ্ট ভাষায় ঘোষনা করেছে যে,এর আলোকেই সিদ্ধান্ত আসবে কে মুসলিমকে অমুসলিম,কে মু'মিন ও কে কাফির।
.
ইসলাম তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রথম যে লড়াই চালিয়েছে,তা নাস্তিকতার বিরুদ্ধে পরিচালিত লড়াই ছিলনা।এ লড়াই সামাজিক ও নৈতিক উচ্চৃংখলতার বিরুদ্ধেও ছিলনা।কেননা এইসব হচ্ছে ইসলামের অস্তিত্বের লড়াইয়ের পরবরতী লড়াই।বস্তুত: ইসলাম নিজের অস্তিত্ব প্রতিস্টার জন্য সর্বপ্রথম যে লড়াই করেছে, তা ছিল সার্বভৌমত্বের অধিকারী কে হবে সেটা স্থির করার লড়াই।এজন্য ইসলাম মক্কায় থাকা অবস্থাতে এ লড়াইয়ের সূচনা করেছিল। সেখানে সে কেবল আক্বিদা বিশ্বাসের পর্যায়ে এই কাজ করেছিল, রাস্ট্র ও সরকার প্রতিস্টা বা আইন প্রনয়নের চেস্টা  করেনি। তখন কেবল মানুষের মনে এই বিশ্বাস বদ্ধমূল করার চেস্টা করেছে যে,সার্বভৌমত্ব তথা প্রভুত্ব ও সর্বময় ক্ষমতা এবং আইন বা হুকুম জারির ক্ষমতা ও শর্তহীন আনুগত্য লাভের অধিকার একমাত্র আল্লাহর।কোন মুসলমান এই সার্বভৌমত্বের দাবী করতে পারেনা এবং অন্য কেউ দাবী করলে জীবন গেলেও সেই দাবী মেনে নেবে না।মক্কায় অবস্থান কালে মুসলমানদের মনে যখন এই আক্বীদা দৃঢ়ভাবে বদ্ধমূল হলো,তখন আল্লাহ তায়ালার তাদেরকে তা বাস্তবে প্রয়োগের সুযোগ দিলেন মদিনায়।
.
সুতরাং আজকালকার ইসলামের একনিষ্ঠ ও আবেগোদ্দীপ্ত ভক্তরা ভেবে দেখুন,
তারা ইসলামের প্রকৃত মরম উপলব্ধি করেছেন কি না??????????
.
যারা একমাত্র আল্লাহর গোলামি করে এবং মানুষকে 'রব' এর আসনে বসায় না তারাই মুসলমান। এই বৈশিষ্ট্যই তাদেরকে দুনিয়ার সকল জাতি ও গোষ্টির উরধে স্বতন্ত্র মরযাদা দান করে এবং দুনিয়ার সকল জাতির জীবন যাপন পদ্ধতির মধ্য থেকে তাদের জীবন পদ্ধতির স্বকীয়তার নির্দেশ করে।উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে থাকলে তারা মুসলমান, নচেত তারা অমুসলিম, চাই তারা যতই নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করুক না কেন।
.
মানবরচিত সকল জীবন ব্যবস্থায় মানুষ মানুষকেই আল্লাহর আসনে বসায়।
কোন দেশে সরবোচ্চমানের গনতন্ত্র কিংবা সর্বনিম্নমানের স্বৈরতন্ত্র যা-ই থাকুক সর্বত্র এই একই অবস্থা।
প্রভুত্বের সর্বপ্রথম বৈশিষ্ট্য হলো মানুষকে গোলাম বানানোর অধিকার এবং মানুষের জন্য আইন-কানুন,মূল্যবোধ ও মানদন্ড রচনার অধিকার।
পরিমার্জিত পরিশোধ বা অঘোষিতভাবে হোক,মানবরচিত সকল ব্যবস্থায় একটি মানবগোষ্ঠী কোন না কোন আকারে এই অধিকারের দাবীদার।এতে করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্টির লোকেরা অবৈধভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে পড়ে।এই নির্দিষ্ট গোষ্টিকে বাদ বাকী দেশবাসীর দন্ডমূন্ডের করতা হয়ে তাদের জন্য আইন-কানুন,রীতি-নীতি,মুল্যবোধ ও মানদন্ড নির্ধারণ করে।
কুরানের আয়াতে একেই বলা হয়েছে মানুষকে মানুষের 'রব ' বানিয়ে নেয়া।এভাবেই বরতমান বিশ্বের সকল দেশের সাধারন জনগন তাদের শাসক শ্রেনীর ইবাদত/আনুগত্য /গোলামী করে,যদিও তারা তাদের উদ্দেশ্যে রুকু-সিজদা করে না।
.
এই অরথেই ইসলাম আল্লাহ দেয়া একমাত্র জীবন ব্যবস্থা।দুনিয়ার সকল নবী ও রাসুল এই ইসলাম নিয়েই এসেছিলেন। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে তার নিজের দাসত্বের অধীন করার জন্য এবং মানুষকে যুলুম থেকে মুক্ত করে আল্লাহর ন্যায় বিচারের ছায়াতলে আশ্রয় দানের জন্যই নবীদেরকে যুগে যুগে ইসলামি বিধান সহকারে পাঠিয়েছেন।যারা তা অগ্রাহ্য করে,তারা মুসলমান নয়,তা সে যতই সাফাই গেয়ে নিজেকে মুসলমান প্রমান করার চেস্টা করুক না কেন এবং তাদের নাম আব্দুর রহমান, আব্দুর রহিম যাই হোক না কেন।
.
আল্লাহ আমাদের হ্বককে হ্বক্ক হিসেবে চেনার ও তা পালন করার তোফিকি দান করুন এবং বাতিলকে বাতিল হিসেবে চেনার ও তা থেকে দূরে থাকার তোফিক দান করুন। হে আল্লাহ! সমস্ত ত্বাগুতি শক্তিকে ধ্বংস করুন।.......... আমিন।
.
বই:আহবান(পিডিএফ)।
পাতা নং:১০২,১০৩।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top