রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬

আমি আমার এই লেখাটি প্রতিটি ভাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি...

কোন মন্তব্য নেই:

আমি আমার এই লেখাটি প্রতিটি ভাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি...

"২০০৭ সালের ৩০ মার্চ শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলামসহ ছয় শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হয়। শায়খ আবদুর রহমানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে কুমিল্লা কারাগারে। সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই ও আবদুল আওয়ালকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহ কারাগারে।" - সুত্র, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

জামা'আতুল মুজাহিদীনের (জেএমবি) শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির খবর জানানো হয়নি তাদের আত্মীয়স্বজনকে, জানতে পারেনি মিডিয়ার লোকজনও।
জামাত-বি এন পি'র জালিমদের অবস্থা দেখুন - এই জালিমগুলো ফাঁসির আগে এই শায়খ ও ভাইদেরকে তাদের পরিবারের সাথেও দেখা করতে দেয়নি।

অথচ আমাদের আলিম-উলামারা বলে থাকে এরা নাকি আওয়ামীলীগের চেয়েও ভালো... এরা নাকি মন্দের ভালো! নাস্তাগফিরুল্লাহ!

গোলাম আজম মতিউর রহমান নিজামি, সালাহ-উদ্দিন কাদের, আলি আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবস্থানের ফলশ্রুতিতেই উপরোক্ত ছয়জনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়। নাহসাবুহু ওয়া হাসিবু...

জালিমের জুলুম তো জালিমকেই ঘিরে রাখে...
আজকে মাত্র ২০১৬ সালের মে মাস... মাত্র ৯বছরের মাথায় একই কায়দায় মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেছে নিজামী, সালাহ-উদ্দিন, কাদের মোল্লা, আলি আহসান, কামারুজ্জামান। জেলের অভ্যন্তরে নিঃসঙ্গ মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গন ঘটেছে গোলাম আজম সাহেবের।

কিন্তু ! দেখুন ! সফল কারা...

জামা'আতুল মুজাহিদিনের উলামা-উমারাগণ নিহত হয়েছেন আল্লাহ্‌ তা'আলার রাস্তায় সংগ্রামের জন্য... ইসলামের জন্য।

অপরপক্ষে জামাত-বি এন পি'র এই নেতাগুলো নিহত হয়েছে আব্রাহাম লিংকন প্রণীত গনতন্ত্রের জন্য...

সুবহান'আল্লাহ ! কাফির-মুশরিকদের সন্তুষ্টি অর্জনে মুসলিম ভাইদের রক্ত ঝরানো সত্ত্বেও এই ব্যাক্তিগুলো পার পেল না! কারণ, আল্লাহ্‌ তা'আলা সজাগ দৃষ্টি রাখেন...

এই জামাত-বি এন পি মাত্র কয়েকজন কাফিরকে হত্যার জন্য গণহারে গ্রেফতার-ক্রসফায়ার-ফাঁসির সম্মুখীন করেছে মুসলমানদের।

জামাতের নেতারা প্রাণভিক্ষা না চাওয়ায় তাদের অনেকেই উৎফুল্ল... যে তারা আল্লাহ্‌ তা'আলার একনিষ্ঠ বান্দা...।

কিন্তু এই জালিম জামাতিগুলো কাউকে জানতে দিতে চায়না যে, জে এম বি'র মুজাহিদিনরা আপিল পর্যন্ত করেনি...
ভাই আতাউর রাহমান সানি রাহিমাহুল্লাহ স্পষ্টাক্ষরে বলেছেন, "আপিল করলে ইসলামী জুরি বোর্ডে করব। মুসলমানরা তাগুতের কাছে বিচার চায় না।"  

"ফাঁসি কার্যকর করার সময় ছয় জঙ্গির সবাই ছিল নির্লিপ্ত, ভাবলেশহীন। পবিত্র কালেমা ও কোরআনের আয়াত পড়তে পড়তে তারা ফাঁসির মঞ্চে ওঠেন।" - বাংলাদেশ প্রতিদিন

আল্লাহু আকবার!!

খেয়াল করুন, জামাত-শিবির হরতালের সময় এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শারিয়াহ'র তোয়াক্কা না করে যে পরিমাণ হত্যা করেছে, জে এম বি তার কতটুকুই করেছে??

এছাড়াও আতাউর রাহমান সানি (রাহ) পরিষ্কার করেছেন, ১৭ই আগস্টের নিরাপদ জায়গায় কয়েকশ লিফলেট রেখে তাঁর পাশে নিম্নমানের শব্দ উৎপাদনকারী বোমা উনারা ফাটিয়েছিলেন শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের কাছে উনাদের লিফলেটগুলো পৌঁছানোর জন্যই। 

জে এম বি'র ভাইদের কৌশলগত কিছু ভুলের সুযোগ নিয়ে জামাতের লোকদের আমেরিকান পলিসির প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সাধারণের ভেতর ঘৃণা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়। শত-সহস্র আলিমকে বাধ্য করে তাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিতে। ফরিদ-উদ্দিন মাস'উদের চেয়েও জঘন্য কাজের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তারা করতে সক্ষম হয় শুধুমাত্র তাদের 'ইসলামি' লেবাস ধারণ করে...

সুতরাং, জে এম বি'র মাজলুমদের প্রতি ভয় এবং ঘৃণার সঞ্চারনে নির্লজ্জ জামাতিরা শাহবাগিদের চেয়েও এগিয়ে... নিম্নরুচিসম্পন্ন মিথ্যাবাদী জামাতিরা আজ তাদের রান্না করা তরকারির স্বাদগ্রহণ করছে... নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তা'আলা উত্তম ফয়সালাকারী। 

অবশ্যই আমরা তৎকালীন জে এম বি'র কিছু ভুলকে চিহ্নিত করি কিন্তু উনাদেরকে দোষারোপ করি না... শায়খ আবদুর রাহমান (রাহ)'র ফিকহি চিন্তাধারার সাথেও আমরা একমত রাখি না কিন্তু উনাকে গোমরাহ বলি না... আমরা তৎকালীন সকল কাজ সমর্থন না করলেও উনাদের খাওয়ারিজ মনে করি না... আমরা যেমন আই এসের জঘন্য কাজের দায় শায়খ জারকাউয়ি (রহ), আবু হামজা আল মুহাজির (রহ) দের উপর চাপাই না তেমনি বর্তমানের জে এম বি'র উত্তরসূরীদের ভুলের দায়ভার উনাদের উপর চাপিয়ে দেই না।

আমরা ইনসাফ করব। ইনশা'আল্লাহ...

আবু আনওয়ার ভাইয়ের নিম্নোক্ত কথা গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেষ করছি,

"যদি কেউ এ তথ্য যাচাই করে দেখতে চান তারা ইউটিউবে খুজুন, “Worship Allah, Avoid Taghoot”। এই সুস্পষ্ট তাওহীদের দাওয়াহ নিয়েই জেএমবি এসেছিল এবং এই দাওয়াহর কারনেই এই ভুমির ত্বগুত সরকার তাদের বিরোধিতা করেছিল। জেএমবি কৌশলের, তাদের পদ্ধতির বিরোধিতা আমরা করতে পারি, হাজারবার করতে পারি, লক্ষ-কোটি বার করতে পারি।

কিন্তু এই দাওয়াহর বিরোধিতা কোন মুসলিম করতে পারে না। আল্লাহ শায়খ আবদুর রাহমান এবং তার ছাত্রদের উপর রহম করুন, তাদের উত্তম প্রতিদান দিক, নিশ্চয় এ ভূমির মুসলিমরা, এভূমির শাবাবরা,এ ভূমির ’আলিমরা তাদের প্রতি যুলুম করেছিলেন। নিশ্চয় তাদের ক্বওম তাদের উপর যুলুম করেছিল।

জেএমবির পদ্ধতি নয় বরং তাদের এই দাওয়াহ এবং ইসলামী হুকুমাত কায়েম, ত্বগুত বর্জন, আল ওয়ালা ওয়াল বারার এই আদর্শের জন্যি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবতীর্ন হয়েছিল।এই প্রেক্ষাপটেই ইসলাম ও জঙ্গিবাদ বইটী লেখা।

এক দিকে ছিল একটি দল যারা আল্লাহর ইবাদাত ও ত্বগুতকে বর্জনের দিকে আহবান করছিল, আরেক দিকে একটি দল আহবান করছিল আলাহর ইবাদাত তথা আনুগত্য বর্জন, এবং ত্বগুতের আনগুত্যের প্রতি। এ হল এমন দুটি সাঙ্ঘর্ষিক আদর্শ যার মধ্যে কখনোই সমন্বয় সম্ভব নয়। আর তাই তারা একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ন হল।
এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা সম্পর্কে বিতর্ক করে। [আল হাজ্জ, ১৯]

জামাত-বিএনপি দ্বারা নবগঠিত র‍্যাবের উপর দেওয়া হয় জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব। রাষ্ট্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তাওহীদের দিকে আহবানকারী এই দলের বিরুদ্ধে, কুফরকে টিকিয়ে রাখার জন্য। ত্বগুতের রাহে। আর মুওয়াহিদুন যুদ্ধে অবতীর্ন হয় আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টায়।

"যারা ঈমানদার তারা যে, জিহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফির তারা লড়াই করে ত্বগুতের পক্ষে সুতরাং তোমরা জিহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।" [আন-নিসা, ৭৬]

আমি আবারো বলছি জেএমবির পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি থাকতেই পারে। কিন্তু তাদের যে দাবি তা নিয়ে মতবিরোধের কোন অবকাশ ছিল না। তাদের দাওয়াহ ছিল সুস্পষ্ট এবং প্রকাশ্য। শায়খ আবদুর রাহমান রাহিমাহুল্লাহ কোন অপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন না। শায়খ আবদুর রাহমানের পরিবার কোন অপরিচিত পরিবার ছিল না।

বিশেষ করে বাংলাদেশের তথা উপমহাদেশের আহলে হাদীসদের মধ্যে এবং যারা বাংলাদেশ থেকে বিলাদুল হারামাইনে পড়াশুনা করেছেন এমন ‘আলিমদের মধ্যে।"

নিঃসন্দেহে! সমস্ত প্রশংসা কেবল মাত্র আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার জন্যই...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top