শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

প্রশ্নঃ-তাবলীগী জামাতের লোকেরা তো ভাল কথাই বলে, দ্বীনের দাওয়াত দেয়, নামাযের দাওয়াত দেয়, তাহলে তাদের মন্দ কেন বলছেন ?

কোন মন্তব্য নেই:

প্রশ্নঃ-তাবলীগী জামাতের লোকেরা তো
ভাল কথাই বলে, দ্বীনের দাওয়াত দেয়,
নামাযের দাওয়াত দেয়, তাহলে
তাদের মন্দ কেন বলছেন ?
.
এই যুক্তি অনেক সাধারণ মুসলিম ভাই
পেশ করেন।এই প্রকার ভাইদের উত্তরে সামান্য
কিছু মন্তব্য তুলে ধরলাম,হয়তঃ অনেকে
বুঝবেন মন্দটা কোথায় ?
.
১- এতে সন্দেহ নেই যে, নবী মুহাম্মদ
(সাঃ) সব চেয়ে বড় ও সত্য মুবাল্লিগ
(তাবলীগকারী)।অতঃপর তাঁর সাহাবাগণ যাঁরা সারা বিশ্বে নবী (সাঃ) এর নিয়মে তাবলীগ করে গেছেন।কিন্তু বর্তমান যুগের তাবলীগী
জামাআত সেই নবীর ও তাঁর সাহাবাদের তাবলীগ ছেড়ে কয়েক দশক পুর্বে ভারতের সাহারানপুরের ইলিয়াস সাহেবের তৈরি করা বরং স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগ নিয়েছেন।
নবী(সাঃ) এবং তাঁর সাহাগণের তাবলীগ কি যথেষ্ট নয়?সেটা কি উত্তম তাবলীগ নয়?
না এই যুগে তা অচল ?
.
২-নবী (সাঃ) এর তাবলীগের মূল কথা
ছিল বরং ইসলামের মূল কথাই হচ্ছে,
তাওহীদ।কিন্তু বর্তমান তাবলীগে তাওহীদের
দাওয়াত নেই।
.
৩-নবী (সাঃ) এর তাবলীগে যে বিষয়
থেকে সবচেয়ে বেশী সতর্ক করাহয়েছে তা হল, শির্ক থেকে সতর্কতা।ইলিয়াসী তাবলীগে শির্কের কথা বলা হয় না; অথচ দেশের আনাচে
কানাচে অহরহ শির্ক ও শির্কের আড্ডা
বিদ্যমান।
.
৪-নবী (সাঃ) এর দাওয়াতের সব চেয়ে
বড় অংশ ছিল, মুশরিকদের ইসলামের
দাওয়াত দেওয়া।কিন্তু বর্তমান তাবলীগী জামাতে তাদের দাওয়াত দেয়া হয় না।
অথচ তাবলীগ জামাতের জনক ইলিয়াস ও
যাকারিয়া সাহেবের দেশ একটি
মুশরিক দেশ।
.
৫-মহান আল্লাহ, পবিত্র কুরআন যদি
আমাদের হেদায়েতের জন্য অবতীর্ণ
করে থাকেন, তাহলে তা বাদ দিয়ে
ফাযায়েলে আমলের শিক্ষা দেয়া হয়
কেন ?অনুরূপ নবী (সাঃ) এর হাদীস কি উত্তম
বাণী নয়, তাহলে এখনও কেন সাধারণ
লোককে বলা হবে, এগুলো তোমরা
বুঝবে না।মানুষ না বুঝলে এসব কার জন্য অবতরণ করা হয়েছে ?
.
৬-ইসলাম কি শুধু ফযীলতের নাম ? সকল
বিধানের সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু ফাযায়েল বর্ণনা কেমন ইসলাম! ধরুন নামায একটি ইসলামের বিধান।এ সম্পর্কে মোটামুটি যা আছে তা হল,নামায কি, নামাযের গুরুত্ব, নামায ছাড়ার বিধান, নামাযের রুকন,
ওয়াজিব ও মুস্তাহাব, নামাযের পদ্ধতি
এবং নামাযের লাভ বা ফযীলত।
এখানে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু
ফযীলত কেন ?
.
৭-যেই তাবলীগের এত প্রসংশা ও ফযীলত বর্ণনা করা হচ্ছে, কিন্তু কখনো চিন্তা করেছেন কি সেই তাবলীগী নেসাবে অযু করা ও নামায পড়ার নিয়ম-পদ্ধতিটাও লেখা নেই।অন্যান্য বিষয়গুলির বর্ণনা তো দূরের কথা।
.
৮-ইসলামের রুকন ৫টি আর ঈমানের ৬য়টি,
যা হাদীসে জিবরীলে বর্ণিত হয়েছে কিন্তু এই রকম একটি মৌলিক বিষয়ের তাবলীগ বাদ দিয়ে ৬য় উসূল আবিষ্কার কোন দলীলের ভিত্তিতে করা হয় ?ইকরামে মুসলিম বা মুসলিমের সম্মানের নামে নীতি তৈরি করা হয়েছে,কিন্তু সত্য হচ্ছে তাবলীগে তাবলীগীদেরই সম্মান করা হয়, অন্যদের
ছায়াটাও তো তারা দেখতে পছন্দ করেন না।
.
৯-তাবলীগের জন্য কুরআন সুন্নাহ কি
যথেষ্ট নয়,শত শত বানোয়াট কেচ্ছা কাহিনীর আশ্রয় নেয়া হয় কেন?তবুও আবার সেই সব কেচ্ছা যাতে আছে সুফীদের কাশফ, কারামত, স্বপ্ন, ইল্কা,ইলহাম ও ফয়েযের কথা।
.
১০-শরীয়ার কোন মাসলায় আমীর
সাহেব সরাসরি কুরআন সুন্না থেকে সমাধান না দিয়ে দেওবন্দে পাঠান কেন ?এমন তো নয় যে, আপনারা তাবলীগের নামে দেওবন্দের প্রচার-প্রসার করছেন!
.
১১- আপনারা ফাযায়েলে আমল বইটি
একাধিক ভাষায় অনুবাদ করেছেন কিন্তু এখনও আরবী ভাষায় তা অনুবাদ করা হচ্ছে না কেন ?আপনাদের মধ্যে আরবী শিক্ষিত
ব্যক্তিত্ব নেই,না গুমর ফাঁস হওয়ার ভয়ে
এই রকম করেন না।
.
১২-মোট কথা নবী (সাঃ) এবং সাহাবাগণের দাওয়াত-তাবলীগই হচ্ছে সহীহ, শুদ্ধ, পূর্ণ ও যথেষ্ট তাবলীগ।আর অন্যান্য তাবলীগের অনেকটাই হছে,ভুল, অশুদ্ধ ও অপূর্ণাঙ্গ এবং নতূন তাবলীগ।তাই আমাদের নিকট সেই মুহাম্মদী তাবলীগই যথেষ্ট।
.
ইলিয়াসী তাবলীগ বনাম রাসূলের তাবলীগ :
.
(ক) তারা নিজেরা কুরআন বুঝে না
অন্যদেরকেও বুঝতে দেয় না।কিন্তু রাসূল(ছাঃ) নিজে কুরআন শিখিয়েছেন এবং তার প্রচারকও ছিলেন।
.
(খ) তাদের দাওয়াতী নিয়ম স্বপ্নে প্রাপ্ত।রাসূলের দাওয়াতী নিয়ম স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত(মায়েদা ৬৭)।
.
(গ) তাদের দাওয়াতের মধ্যে সপ্তাহে ১ দিন, মাসে ৩ দিন, বছরে ১ চিল্লা,কমপক্ষে জীবনে ৩ চিল্লা লাগিয়ে দ্বীনি কাজ শিখতে হবে।
পক্ষান্তরে রাসূলের দাওয়াতী কাজ এগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই।
.
(ঘ) তাদের দাওয়াতের মধ্যে ইসলামের একটি অপরিহার্য বিধান ও আল্লাহর প্রিয় জিহাদ নেই। কিন্তু রাসূলের দাওয়াতে জিহাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
.
(ঙ) তাদের দাওয়াতে কাফের মুশরিকদের
কোন বাধা নেই।রাসূল (ছাঃ) যখন দাওয়াত দিতেন তখন কাফের মুশরিক বাধা দিত।
.
(চ) তাদের দাওয়াতী কাজ শেখার মূল উৎস
হল ‘ফাযায়েলে আমাল’।কুরআনের চেয়েও
তারা ফাযায়িলে আমাল-এর গুরুত্ব বেশী
দেয়।অথচ রাসূলের দাওয়াত শেখার মূল
উৎস হচ্ছে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ।আর
কুরআনের মর্যাদা হচ্ছে সবকিছুর উর্ধ্বে।
.
(ছ) তারা রাষ্ট্রপ্রধান বা ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে না যদিও তারা শিরক করে ও ইসলামের বিরুদ্ধে বলে। রাসূল তৎকালীন রাস্ট্রপ্রধান ও ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, শিরক ও ইসলাম বিরোধী কাজে বাধা দিয়েছেন।
.
(জ) তারা কোন দাওয়াতী কাজ করার সময়
কুরআন হাদীছের দলীল পেশ করে না,নিজেদের মনগড়া কথা বলে। রাসূল নিজে
কোন কিছু বলার বা দাওয়াত দেবার আগে
দলীল পেশ করতেন।
.
(ঝ) তারা কোন মতেই কারো সাথে যুদ্ধ করতে চায় না। রাসূল যুদ্ধ করতে গিয়ে নিজের দাঁতকে শহীদ করেছেন।
.
(ঞ) তারা শুধু দাওয়াত কিভাবে দিবে তা
শেখায় যদিও তা ইসলামী পদ্ধতিতে নয়;
অন্য কোন কিছু তারা শিখায় না। রাসূল
জীবনের প্রতি মুহূর্তে কি করতে হবে,কার সাথে কিভাবে চলতে হবে সবকিছু শিখিয়েছেন।
.
(ট) ইলিয়াসী তাবলীগ বুযুর্গদের সন্তুষ্টির
জন্য করা হয়।রাসূলের তাবলীগ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।(আন‘আম
১৬;বাইয়েনা ৫)
.
(ঠ) ইলিয়াসী তাবলীগের অলিরা গায়েব
জানেন।অথচ রাসূল (ছাঃ) গায়েব
জানতেন না।(আন‘আম ৫০; ‘আরাফ ১৮৮)।
.
(ড) ইলিয়াস ছাহেবের আক্বীদায় রাসূল(ছাঃ) জীবিত।কিন্তু নবী (ছাঃ)ইন্তেকাল করেছেন (যুমার ৩০)।
.
(ঢ) বুযুর্গরা জান্নাত-জাহান্নাম দুনিয়াতে দেখেন।জান্নাত এমন যে,না কোন চোখ দেখেছে, না কোন কান শুনেছে এবং না কোন হৃদয় কল্পনা করেছে।
.
(ণ) ইলিয়াসী তাবলীগে বুযুর্গদের মৃত্যুকে
অস্বীকার করা হয়েছে।রাসূল (ছাঃ)-এর তাবলীগের প্রত্যেকের মৃত্যু সত্য(আল-
ইমরান ১৮৫)।
.
(ত) পর্যবেক্ষক ফেরেশতারা আল্লাহ ও
বান্দার গোপন যিকির সম্পর্কে জানতে
পারে না।ফেরেশতাগণ পর্যবেক্ষণ
হিসাবে রয়েছেন এবং আমরা যা করি
তারা সে সব জানেন(ইনফিতার ১০ ও ১২)।
.
(থ) ইলিয়াসী তাবলীগের কেন্দ্রস্থল
ভরতের নিযামুদ্দীন মসজিদের ভিতরে
মাওলানা ইলিয়াস ছাহেব ও তার পুত্রের
কবর রয়েছে।নবী (ছাঃ) কবরের দিকে
ছালাত পড়তে ও কবরকে পাকা নিষেধ
করেছেন।
.
(দ) মাওলানা মুহাম্মাদ ইলিয়াস ছাহেবের
ইন্তিকালের পর আল্লাহর সাথে মিশে
গেছেন।নবী করীম (ছাঃ) বলেন,
আল্লাহর সমতুল্য কেউ নেই, তার সাথে
কেউ মিশতে পারে না।(ইখলাস ৪; শূরা
১১)।
:
:
(এক) তাবলীগ জামা‘য়াতের প্রতিষ্ঠাতা
মাওলানা ইলিয়াস (রহঃ)-এর নির্দেশে
মাওলানা যাকারিয়াহ্ ফাযায়েলে
তাবলীগ বইটি লেখেন। ঐ বইয়ের ভূমিকায়
তিনি বলেন, ইসলামী মুজাদ্দিদের এক
উজ্জ্বল রত্ন এবং উলামা ও মাশায়েখদের
এক চাকচিক্যময় মুক্তার নির্দেশ যে,
তাবলীগে দ্বীনের প্রয়োজন
সংক্ষিপ্তভাবে কতিপয় আয়াত ও হাদীস
লিখে পেশ করি। আমার মত গুনাহগারের
জন্য এরূপ ব্যক্তিদের সন্তুষ্টিই নাজাতের
ওয়াসিলা বইটি পেশ করলাম।
অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন, আপনি বলুন!
আমার ছালাত, আমার কুরবাণী এবং
আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব প্রতিপালক
আল্লাহরই জন্য(আল্লাহর সন্তুষ্টির
জন্য) আন‘আম ১৬২।
এবার বুঝুন আল্লাহর সন্তুষ্টি বাদ দিয়ে মাওলানা যাকারিয়াহ্ ইলিয়াস ছাহেবের সন্তুষ্টির অর্জন করতে চাইছে।
.
(দুই) ক্ষুধার্ত এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ)-এর কবরের পার্শ্বে গিয়ে খাদ্যের
আবেদন করে ঘুমিয়ে পড়লেন। সেই
অবস্থায় তার নিকট রুটি আসল, ঘুমন্ত
অবস্থায় অর্ধেক রুটি খাওয়ার পর জাগ্রত
হয়ে অবশিষ্ট রুটি খেলেন।
.
(তিন) জনৈকা মহিলা ৩ জন খাদেম কর্তৃক
মার খাওয়ার পর রাসূলের কবরের পার্শেব
গিয়ে বিচার প্রার্থনা করলে, আওয়াজ
আসল ধৈর্য ধর, ফল পাবে। এর পরেই
অত্যাচারী খাদেমগণ মারা গেল।
.
(চার) অর্থাভবে বিপন্ন ব্যক্তি রাসূলের
কবরের পার্শ্বে হাযির হয়ে সাহায্য
প্রার্থনা করায় তা মঞ্জুর হল। লোকটি ঘুম
থেকে জাগ্রত হয়ে দেখতে পেল যে, তার
হাতে অনেকগুলো দিরহাম।
.
(পাঁচ)  মদীনায় মসজিদে আযান দেওয়া
অবস্থায় এক খাদেম মুয়াযিযনকে প্রহার
করায় রাসূলের কবরে মুয়াযিযন কর্তৃক
বিচার প্রার্থনা। প্রর্থনার ৩ দিন পরেই ঐ
খাদেমের মৃত্যু হয়।
.
(ছয়) জনৈক অসুস্থ ব্যক্তি চিকিৎসায়
ব্যর্থ হওয়ায় ঐ ব্যক্তির আত্মীয়,
‘করডোভার এক মন্ত্রী ‘আরোগ্যের আরয
করে রাসূলের কবরে পাঠ করার জন্য অসুস্থ
ব্যক্তিকে পত্রসহ মদীনায় প্রেরণ। কবরের
পার্শেব পত্র পাঠ করার পরেই রোগীর
আরোগ্য লাভ।
.
(সাত) কোন ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর
রওযায় আরয করায় রওযা হতে হস্ত মুবারক
বের হয়ে আসলে উহা চুম্বন করে সে ধন্য
হল। নববই হাযার লোক তা দেখতে পেল।
মাহবুবে সোবহানী আব্দুল কাদের
জিলানীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
.
(আট) হে আল্লাহর পেয়ারা নবী (ছাঃ)!
মেহেরবানী পূর্বক আপনি একটু দয়া ও
রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন।
.
(নয়) আপনি সারা বিশ্বের জন্য রহমত
স্বরূপ, কাজেই আমাদের মত দুর্ভাগা হতে
আপনি কী করে গাফেল থাকতে পারেন।
.
(দশ) আপনি সৌন্দর্য ও সৌরভের সারা
জাহানকে সঞ্জীবিত করিয়া তুলুন এবং
ঘুমন্ত নারগিছ ফুলের মত জাগ্রত হইয়া
সারা বিশ্ববসীকে উদ্ভাসিত করুন।
.
(এগার ) আমাদের চিন্তাযুক্ত
রাত্রিসমূহকে আপনি দিন বানাইয়া দিন
এবং আপনার বিশ্বসুন্দর চেহারার ঝলকে
আমাদের দ্বীনকে কামিয়াব করিয়া
দিবেন।
.
(বার) দুর্বল ও অসহায়দের সাহায্য করুন আর
খাঁটি প্রেমিকদের অন্তরে সান্তবনা দান
করুন।
.
(তের ) আমি আপন অহংকারী নাফছে
আম্মারার ধোকায় ভীষণ দুর্বল হইয়া
পড়িয়াছি। এমন অসহায় দুর্বলদের প্রতি
করুণার দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন।
.
(চৌদ্দ) যদি আপনার করুণার দৃষ্টি আমার
সাহায্যকারী না হয় তবে আমার অঙ্গ
প্রত্যঙ্গ বেকার ও অবশ হইয়া পড়িবে।
.
(পনের) কয়েকজন যুবক নামায পড়তে পড়তে
কঠোর সাধনা করে ইহলোক ত্যাগ করে
আল্লাহর দরবারে চলে যাওয়ার গল্প।
.
(ষোল) কোন বুজুর্গের এশার অযু দ্বারা
একাধারে ৪০ বছর পর্যন্ত ফজর নামাজ
পড়ার কল্প-কাহিনী।
.
(সতের) জনৈক ব্যক্তি একই অজু দ্বারা ১২
দিন নামায পড়েছেন।
.
(আঠার) আদম (আঃ) দুনিয়াতে এসে ৪০
বছর যাবৎ ক্রন্দন করেও ক্ষমা পাননি,
সর্বশেষে জান্নাতে খোদিত মুহাম্মাদ
(ছাঃ) এর নামের অসীলায় দো‘আ করে
ক্ষমা প্রাপ্ত হয়েছেন।
.
(ঊনিশ) হে মুহাম্মাদ (ছাঃ) আপনাকে
সৃষ্টি না করলে বিশ্বজাহানের কিছুই
সৃষ্টি করতাম না।এটি লোক মুখে
হাদীছে কুদসী হিসাবে যথেষ্ট প্রসিদ্ধ।
অথচ হাদীছ বিশেষজ্ঞগণ এ ব্যাপারে
একমত যে, এটি একটি ভিত্তিহীন
রেওয়ায়াত, মিথ্যুকদের বাননো কথা।
রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছের সাথে এর
সামান্যতম মিল নেই। ইমাম ছাগানি,
আল্লামা পাটনী, মোল্লা আলী কারী,
শায়খ আজলুনী, আল্লামা কাউকজী, ইমাম
শওকানী, মুহাদ্দিস ‘আব্দুল্লাহ ইবনু
সিদ্দিক আল-গুমারী এবং শাহ ‘আব্দুল
‘আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী (রহঃ) প্রমুখ
মুহাদ্দিসীনে কিরাম এটিকে জাল
বলেছেন।
.
(বিশ) রাসূূূল (ছাঃ) এর মলমূত্র পাক-পবিত্র
ছিল ও রক্ত হালাল ছিল এবং সাহাবায়ে
কেরামদের দুইজন তা খেয়ে জান্নাতের
নিশ্চয়তা পেয়েছেন স্বয়ং রাসূল (ছাঃ)
থেকে।
অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন,
আপনি বলে দিন, যা কিছু বিধান ওহীর
মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে
আমি কোন হারাম খাদ্য পাইনা কোন
ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে;
কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা
শুকরের মাংস এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ;
যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের
নামে উৎসর্গ করা হয়। অতঃপর যে ক্ষুধায়
কাতর হয়ে পড়ে এমতবস্থায় যে অবাধ্যতা
করে না এবং সীমালঙ্ঘন করে না, নিশ্চয়
আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু
(আন‘আম ৬/১৪৫)
.
.
.
ইলিয়াসী তাবলীগ বনাম রাসূলের
তাবলীগ :
.
(১) তারা নিজেরা কুরআন বুঝে না
অন্যদেরকেও বুঝতে দেয় না।
কিন্তু রাসূল (ছাঃ) নিজে কুরআন
শিখিয়েছেন এবং তার প্রচারকও
ছিলেন।
.
(২) তাদের দাওয়াতী নিয়ম স্বপ্নে
প্রাপ্ত।(মালফূযাতে মাওলানা মুহাম্মাদ
ইলিয়াস, পৃঃ ৫১ ।)রাসূলের দাওয়াতী নিয়ম স্বয়ং আল্লাহ প্রদত্ত(মায়েদা ৬৭) ।
.
(৩) তাদের দাওয়াতের মধ্যে সপ্তাহে ১
দিন, মাসে ৩ দিন, বছরে ১ চিল্লা,
কমপক্ষে জীবনে ৩ চিল্লা লাগিয়ে দ্বীনি কাজ শিখতে হবে। (মালফূযাতে মাওলানা মুহাম্মাদ
ইলিয়াস, পৃঃ ৫১ ।) পক্ষান্তরে রাসূলের দাওয়াতী কাজ এগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই।
.
(৪) তাদের দাওয়াতের মধ্যে ইসলামের
একটি অপরিহার্য বিধান ও আল্লাহর
প্রিয় জিহাদ নেই। কিন্তু রাসূলের দাওয়াতে
জিহাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
.
(৫) তাদের দাওয়াতে কাফের
মুশরিকদের কোন বাধা নেই। আপনি ধরম নিরপেক্ষ হোন,আওমীলীগ হোন,তাগুতের অনুসারী হোন,পীরের মুরিদ হোন,বিদাতী হোন তাতে তাদের কোন সমস্যা নাই।শুধু আপনি চিল্লা লাগান।
.
রাসূল (ছাঃ) যখন
দাওয়াত দিতেন তখন কাফের মুশরিক বাধা
দিত।উনি আগে মানুষের কাছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা তাওহীদের দাওয়াত দিতেন।
.
(৬) তাদের দাওয়াতী কাজ শেখার মূল
উৎস হল ‘ফাযায়েলে আমাল’। কুরআনের
চেয়েও তারা ফাযায়িলে আমাল-এর
গুরুত্ব বেশী দেয়। অথচ রাসূলের দাওয়াত
শেখার মূল উৎস হচ্ছে কুরআন ও ছহীহ
হাদীছ।আর কুরআনের
মর্যাদা হচ্ছে সবকিছুর উর্ধ্বে।
.
(৭) তারা রাষ্ট্রপ্রধান বা
ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে,ত্বাগুতের বিরুদ্ধে,মানবরচিত বিধানের বিরুদ্ধে কোন কথা বলে না।তারা এমন কিছু বলেনা যাতে কুফফাররা অখুশি হই,এইজন্য তাদের ইস্তেমা করতে দেয়া হই,তাদের উপর কোন মামলা-হামলা হইনা।
.
রাসূল তৎকালীন রাষ্টপ্রধান
ও ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে কথা
বলেছিলেন, শিরক ও ইসলাম
বিরোধী কাজে বাধা দিয়েছেন।নবীজি যখন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর দাওয়াত দেন তখনকার আবু জাহেল,আবু লাহাবরা মারতে উঠেছিল।
.
(৮) তারা কোন দাওয়াতী কাজ করার
সময় কুরআন হাদীছের দলীল পেশ করে না,
নিজেদের মনগড়া কথা বলে। রাসূল
নিজে কোন কিছু বলার বা দাওয়াত দেবার
আগে দলীল পেশ করতেন।
.
(৯) তারা কোন মতেই কারো সাথে যুদ্ধ
করতে চায় না। রাসূল যুদ্ধ
করতে গিয়ে নিজের দাঁতকে শহীদ
করেছেন।
.
(১০) তারা শুধু দাওয়াত কিভাবে দিবে
তা শেখায় যদিও তা ইসলামী পদ্ধতিতে নয়; অন্য কোন কিছু তারা শিখায় না।
.
রাসূল (সা)নামাজ,রোজা,হ্বজ্জ,যাকাত, কুফুরী, নিফাক,শিরক,বিদাত,ঈমান,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ,ঈমান ভংগের কারন,তাকফীর,তাকদ্বীর,ত্বাগুতের সাথে কুফুরি,জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ,ক্বিতাল ফী সাবিলিল্লাহ সবকিছু শিখিয়েছেন।
.
(১১) ইলিয়াসী তাবলীগ বুযুর্গদের
সন্তুষ্টির জন্য করা হয়। (ফাযায়েলে আমাল,
ভূমিকা,১ম পৃষ্ঠা ।)রাসূলের তাবলীগ একমাত্র
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য
(আন‘আম ১৬;বাইয়েনা ৫) ।
.
(১২) ইলিয়াসী তাবলীগের অলিরা
গায়েব জানেন। (যাকারিয়া সাহারানপুরী,
অনুবাদ
:
মোহাম্মাদ সাখাওাত উল্লাহ,
ফাযায়েলে ছাদাকাত,(তাবলিগী কুতুবখানা ১৪২৬ হিজরী) ২য় খন্ড,পৃষ্ঠা : ২৭ ।)অথচ রাসূল (ছাঃ) গায়েব জানতেন না(আন‘আম ৫০; ‘আরাফ ১৮৮) ।
.
(১৩) ইলিয়াস ছাহেবের আক্বীদায়
রাসূল (ছাঃ) জীবিত। (ফাযায়েলে হাজ্জ, পৃঃ
১৩০-১৩১ ।)কিন্তু নবী (ছাঃ) ইন্তেকাল করেছেন
(যুমার ৩০) ।
.
(১৪) বুযুর্গরা জান্নাত-জাহান্নাম
দুনিয়াতে দেখেন। (শায়খুল হাদীছ মাওলানা
মুহাম্মাদ যাকারিয়া ছাহেব কান্ধলভী (রহঃ);
অনুবাদ: মুফতী মুহাম্মাদ উবাইদুল্লাহ,
ফাযায়েলে যিকির, (দারুল কিতাব :
বাংলাবাজার, ঢাকা; অক্টোবর, ২০০১
ইং),পৃঃ ১৩৫ ।)জান্নাত এমন যে, না কোন চোখ
দেখেছে,না কোন কান শুনেছে এবং না কোন হৃদয় কল্পনা করেছে। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ,
মিশকাত হা/৫৬১২ ।)
.
(১৫)তারা শুধু ইসলামের একটা সেক্টর নিয়ে কাজ করে,নবীজি সারা জীবন ইসলামের প্রত্যেক্টা সেক্টর এর উপর কাজ করেছেন
.
(১৬)তারা হই আসমানের উপরের কথা বলবে না হই জমিনের নিচের কথা বলবে
.
(১৭)তারা দাওয়াত দিতে গিয়ে কোথাও বাধা পেয়েছে এইরকরম ঘটনা শুনেছেন কখনো।না শুনেননি।কারন উনারা যে সিস্টেমে দাওয়াত দেন সেটা বোধ হই রাসুলগন জানতেন না।নাউজুবিল্লাহ।কারন যতজন নবী দাওয়াত দিয়েছেন সবাই হই মার খেয়েছেন না হই অনেক অপমানিত হয়েছেন।
.
(১৮)তারা এমন কোন কথা তাদের বয়ানে বলেন না যাতে কুফফাররা অখুশি হই।দুনিয়ার কোন দেশে তাদের কোন বাধা নাই।
.
(১৯)আল্লাহর বিধানের সাথে বিদ্রূপ,রাসুলকে নিয়ে কটুক্তি,আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানবরচিত বিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা,কুফুরী সংবিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা,নারী নেত্রীত্ত দিয়ে দেশ পরিচালনা,আলেমদেরকে বন্ধী-নিরযাতন করা, মাঝার পুজা,পীর পুজা ইত্যাদির বিরুদ্ধে কোন দিন বলতে শুনেছেন?কখনো শুনবেন না ইনশাল্লাহ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top