রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬

প্রশ্ন:খলিফার বায়াতের হাদিস কিভাবে ছিনতাই হয়েছে????

কোন মন্তব্য নেই:

প্রশ্ন:খলিফার বায়াতের হাদিস কিভাবে ছিনতাই হয়েছে????
.
মুসলিমদের খলিফা হবেন একজন।
একজন খলিফা থাকা অবস্থায় যদি আরেকজন খলিফা গজায় তাহলে আল্লাহর রাসুলের নির্দেশ হচ্ছে তার গর্দান আলাদা করে ফেলতে হবে দেহ থেকে।
সে যতবড় ব্যক্তিই হোক না কেন।
.
এই কারনেই মুসলিম জাতির ইতিহাস পরলে দেখা যায়,
যখনই দুই খলিফা বায়াত নেয়া শুরু করে তখনই এই হাদীসগুলোর উপর আমল করার জন্য উভয় গ্রুপ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করেছে।
.
এদেশের পীর সাহেবগন মুরিদ বানাতে গিয়ে সাধারন মুসলিমদের থেকে যে বাইয়াত নেন এবং পীরের কাছে মুরিদ হওয়া ফরয বলেন, সে জন্য তারা কুরান ও হাদিসের ওই দলিলগুলোই পেশ করেন যা আমরা কিছুক্ষন আগে মুসলিমদের রাস্ট্রীয় নেতা খলীফাতুল মুসলিমীনের জন্য পেশ করেছি।
.
এখন আমাদের প্রশ্ন হল যদি ত্বরিকার পীর সাহেবগন কুরান-হাদিসের ওই দলিলগুলো পীর মুরিদির জন্য ব্যবহার করেন তাহলে আমাদের জিজ্ঞাসা হল যে,
একাধিক খলীফা হলে যে রাসুলুল্লাহ (সা:) প্রথম খলীফাকে বাদ দিয়ে বাকীদের হত্যা করতে বলেছেন এগুলোও কি তারা পীর সাহেবদের বেলায় প্রয়োগ করবেন???
.
তাহলে আসুন!
এদেশের সকল পীর সাহেবদেরকে কোন এক মাঠে একত্র করি, তারপর এদের মধ্যে যে সর্বপ্রথম পীর হয়েছে তাকে বহাল রেখে অবশিষ্ট সকলের উপর রাসুলুল্লাহ (সা:) এর হাদিস কার্যকর করার জন্য তরবারি দ্বারা তাদের গর্দানগুলো উড়িয়ে দেই।
.
তখন হয়ত পীর সাহেবগন ও তাদের সমর্থক মুহাদ্দিসগন বলবেন যে,না এই হত্যার নির্দেশ যে খলীফার জন্য দেওয়া হয়েছে সেটা আমাদের পীর সাহেবদের খলিফার কথা বলা হয়নি বরং ওটা মুসলিমদের রাস্ট্রীয় খলীফার জন্য প্রযোজ্য।
.
ওহ!
তাহলে হত্যা দেখলে বাই'আতের হাদীস চলে যায় রাস্ট্রীয় খলিফার জন্য।
আর হালুয়া-রুটি ও গদি দেখলে তখন বাই'আতের হাদিস চলে যায় পীর সাহেবদের জন্য।
.
আফসোস তাদের ইলমের জন্য।
.
আফসোস তাদের হাদিস বিকৃতির জন্য।
.
আফসোস তাদের তাদের মুসলিম জাতির খিলাফাত ব্যবস্থাকে চিনতাই করার জন্য।
.
মূলত:মুসলিম জাতির একক নেতৃত্বের প্রতীক খিলাফাত ব্যবস্থাকে ইহুদি-খৃস্টানরা ধ্বংস করে দিয়ে নিজেরা পোপতন্ত্র চালু করেছে, এখন দুনিয়ার সকল খৃস্টানরা একজন পোপের নেতৃত্বে চলে।
.
কিন্তু ওরা দেখল যে,
তারা যদিও খিলাফাত ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে কিন্তু খিলাফাত-বাই'আত সম্পর্কীয় যে আয়াত ও হাদীস রয়েছে তা তো মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি।
.
তাই যদি মুসলিমরা ওই আয়াত ও হাদিসগুলোর প্রতি উদ্ধুদ্ধ হয়ে আবার খিলাফাত ব্যবস্থা পুন:বহাল করে গোটা মুসলিম জাতিকে এক খলীফার অধীনে ওইক্যবদ্ধ হয়ে "ঈমাম ঢাল স্বরুপ,
তার অধীনে মুসলিমরা যুদ্ধ করবে" এই হাদিসের উপর আমল করা শুরু করে তাহলে দুনিয়ার কাফির-মুশরিক,হিন্দু-বোদ্ধ,ইহুদি-খৃস্টানরা পালানোর জায়গা খুজে পাবেনা।
.
সে জন্য কুরান-হাদিসে বরনিত খিলাফাত-বাই'আতকে পীর সাহেবদের ভিতর ঢুকিয়ে দিয়ে খিলাফাত প্রতিস্টার পথকে চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত করা হয়েছে।
.
আর সেই চক্রান্ত বাস্তবায়ন করেছেন ত্বরিকার পীর -সাহেবগন।
.
তাই তো দেখি, যখন তরিকতপন্থী মুহাদ্দিসগন বাই'আতের হাদীসগুলো পড়ান তখন তারা ছাত্রদেরকে উপদেশ প্রদান করেন যে,"তোমরা ফারেগ হয়ে(লেখাপড়া শেষ করে)  কোন হক্কানী পীরের হাতে হাত দিয়ে বাই'আত দিবা।"
.
এইভাবে একটা বিভ্রান্তির রংগীন গ্লাস চোখে লাগিয়ে দেয়া হয় এরপরে ওই ছাত্ররা আবার যখন শিক্ষক হয় তখন তাদের ছাত্রদেরকে একইভাবে বিভ্রান্তির রংগীন গ্লাস পরিধান করিয়ে দেয়।
.
খিলাফাত-বাই'আতের আয়াত ও হাদিসগুলোকে এভাবে ছিনতাই করা হয়েছে।
.
.
.
#বই:দ্বীন কায়মের সঠিক পথ।
লেখক:মুফতি জসীমুদ্দিন রহমানি হাফিযাহুল্লাহ।
পাতা নং:১৭৯-১৮০।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top