একজন লীডার আছেন, ইরাকে ক্রুসেডর মার্কিনদের বিরুদ্ধে লড়েছেন... এখন শামে লড়ছেন... একসাথে কয়েক রকম শত্রুর বিরুদ্ধে... কোন কিছুই তাকে টলাতে পারছে না, না ভিতরের ষড়যন্ত্র আর না বাহিরের আক্রমণ...
.
আরেকজন লীডার ছিলেন... যাকে না দেখেও তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে মানুষকে কাঁদতে দেখেছি। যিনি নিজের হাতে সাজানো স্বপ্নের ইসলামী রাষ্ট্রকে বাজি লাগিয়ে দিয়েছিলেন কুফফারের বিরুদ্ধে আরেকজন মুসলিম ভাইয়ের পক্ষ নিতে গিয়ে... অনেকে ভালোবেসে তাকে তৃতীয় উমার বলে ডাকে।
.
আরেকজন লীডারের কথা বলছি। ইনাকে মরুর সিংহ ডাকা হয়... ইনি প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় নন... ইনি হচ্ছে ওয়ান এন্ড অনলি উমার মুখতার। শুধু তার নাম শুনলেই যেন ইতালিয়ান ক্রুসেডারদের অন্তরে কাঁপাকাঁপি শুরু হত। কোন রকম ধোঁকাই যাকে টলাতে পারে নি, কোন রকম প্রলোভনই যাকে থামাতে পারে নি, মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন আল্লাহর বান্দা আর তাগুতের ত্রাস... উমার মুখতার।
.
ইযযউদ্দীন আল-কাসসাম... আহ কি রকম লীডারই না তিনি ছিলেন... খিলাফাতের পতন কালেও যিনি ছিলেন জ্বলন্ত একটি তারকা... রনে ভঙ্গ দেন নি... জীবনের শেষ রক্তব বিন্দু দিয়ে লড়েছিলেন। তাদের রক্তের উপর দাড়িয়েই কুফফাররা আজ মুসলিমদের রক্ত নিয়ে হলি খেলছে।
.
সবাই ইয়াসির আরাফাতকে চিনে... কারণ কাফিরেরা তাকে অনেক প্রমোট করত... তাকে নোবেল দেয়া হয়েছিল... কিন্তু আহমাদ ইয়াসিনকে কেউ চিনে না... কারণ তিনি তো নোবেল পান নি... কাফিরেরা তো তাকে প্রমোট দেয় নি। অথচ তিনি ছিলেন একজন লীডার... যেই লীড তার মৃত্যুর পরও যায়ানিস্টদের ঘুম হারাম করে রেখেছে।
.
আরবের এক যুবা সিংহ ছিল... আমীর খাত্তাব ডাকা হত। যে সিংহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গর্জন করে বেড়িয়েছেন আফগানের রুক্ষ পাথুরে ভূমিতে আর পাহাড়ে, যিনি গর্জন করে বেড়িয়েছেন চেচনিয়ার কোমল বরফরাশিতে ঢাকা ভূমি, সুউচ্চ পর্বতে, কিন্তু কুফফারদের কখনোই দেন নি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে।
.
আর কতজনের নাম বলবো? শাইখ আযযাম... হাসান আল-বান্না? এই রকম লীডার তো মনে হয় শতাব্দীতে একবার মিলে। তবুও আল্লাহ আমাদের এতএত যোগ্য লীডারদের থেকে বঞ্চিত করছেন না। যে কয়জনের নাম নিলাম, তারা প্রত্যেকেই এই শতাব্দীর... তাদের মধ্যে এমনও আছে যারা পৃথিবীর এক অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করছেন অথচ লীড দিয়েছেন আরেক অঞ্চলের মানুষদের। তাদের অধীনে লোকেরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়ে নিজেদেরই ক্ষতি করত না। বরং তারা তো মত বিরোধপূর্ণ লোকদের একটি কাতারে শামিল করতেন...
.
এইরকম একজন লীডার ছিলেন যার সম্মানেই কয়েকটি মুখ দেখাদেখি না করা গোত্রের গোত্র পতিরা পর্যন্ত এক টেবিলে আলোচনায় বসত। তারপরও কেউ যদি বলে মুসলিমদের লীডিং দেয়ার ক্ষমতা নেই, তাহলে কেমন হয়?! আমি তো সাহাবাদের কথা বলি নি, সালাফদের কথা বলি নি, বলি নি খালাফদের কথাও... শুধুমাত্র গত ১০০ বছরের মধ্যে কয়েকজন লীডারের কথা বলেছি, যতজনের না বলেছি, তার চেয়ে আরো বেশি জনের নাম বাদ দিয়েছি, যাদের অনেকে এনাদের চেয়েও বেশি জ্ঞানীগুনী ছিলেন। তিতুমীর, শরীয়াতুল্লাহ, দেহলাওয়ী থেকে শুরু করলে শেষ হবে না... শাহজালাল.. আলামগীর... তুঘলক... শুধুমাত্র উপমহাদেশেই তো গত ৫০০ বছরের দক্ষ মুসলিম লীডারের নাম বলতে গেলে শেষ হবার নয়। অথচ কি কলিকাল আসল যে তাদের উত্তরসুরিদের অবস্থা এমন হয়েছে যে যেনতেন লোক এসে বলে যে তাদের লীডিং কিভাবে দিতে হয় সেটা শেখাবে!!
.
#KnowYourHeroes
.
[রাহিমাহুমুল্লাহ ওয়া হাফিযাহুমুল্লাহু ওয়া তা'আলা...]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন