শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

#আহলে হাদিসের এক আলেমের সাথে কথাকপোথন চলছিল............ . আলেম:উমাইয়ের, তুমি তো নিজেকে অনেক ভাব দেখিয়ে চলাফেরা কর।তোমার কাছে একটা প্রশ্ন করি,দেখি তোমার বাহাদুরি কৈ যায়? . আমি:সিরাজ ভাই।আমি ছোট মানুষ। ওয়াজ শুনতে শুনতে আর আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে আল্লাহর রহমতে যা শিখছি তাই-ই। তারপরেও বলেন অন্তত প্রশ্নটা হলেও শুনি। . আলেম:গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পরিচালনাকারীরা গনতন্ত্রকে ইসলামের বিপরীত মনে করেনা, বরং তাদের আসল ঈমান তো কুরানের উপর-ই গনতন্ত্রকে শুধু একটা শাসন-ব্যবস্থা হিসেবে অবলম্বন করছে। সুতরাং, এটা কুফরে আকবার(বড় কুফর) নই,এটা কুফরে আসগার(ছোট কুফর)। এখন তোমার কোন দ্বী-মত আছে কি? . .

কোন মন্তব্য নেই:

#আহলে হাদিসের এক আলেমের সাথে কথাকপোথন চলছিল............
.
আলেম:উমাইয়ের, তুমি তো নিজেকে অনেক ভাব দেখিয়ে চলাফেরা কর।তোমার কাছে একটা প্রশ্ন করি,দেখি তোমার বাহাদুরি কৈ যায়?
.
আমি:সিরাজ ভাই।আমি ছোট মানুষ। ওয়াজ শুনতে শুনতে আর আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে আল্লাহর রহমতে যা শিখছি তাই-ই।
তারপরেও বলেন অন্তত প্রশ্নটা হলেও শুনি।
.
আলেম:গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পরিচালনাকারীরা গনতন্ত্রকে ইসলামের বিপরীত মনে করেনা,
বরং তাদের আসল ঈমান তো কুরানের উপর-ই গনতন্ত্রকে শুধু একটা শাসন-ব্যবস্থা হিসেবে অবলম্বন করছে।
সুতরাং, এটা কুফরে আকবার(বড় কুফর) নই,এটা কুফরে আসগার(ছোট কুফর)।
এখন তোমার কোন দ্বী-মত আছে কি?
.
.
.
আমি:আচ্ছা আমিও মেনে নিলাম এই দাবি।
দেখা যাক,এ শাসক শ্রেনীর কুরানের উপর কেমন ঈমান আছে এবং এই ধরনের ঈমানের ব্যাপারে মুহাম্মদ (সা:) এর শরীয়ত কি বলে?
.
যেই সকল লোকদের গনতান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যাপারে এই বিশ্বাস আছে যে,
যেই আইন এই গনতান্ত্রিক পদ্ধতির অধীনে বানানো হবে তাই দেশে চলার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে এবং আল্লাহর বান্দারা সেই আইনের অধীনেই নিজেদের জীবন পরিচালনা করবে। প্রত্যেক নাগরিকের ওপর আবশ্যক হলো, সে এই আইনের সংরক্ষন করবে ও সহযোগিতা করবে।এ ছাড়া কেউ যদি অন্য কোন আইনের সংরক্ষন করে বা সেই অনুযায়ী ফয়সালা করে কিংবা করায় অথবা নিজেদের লেনদেন কুরান মোতাবেক পরিচালনার চেস্টা করে তাহলে এমন ব্যক্তি বা এলাকাকে এই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিদ্রোহী বলা হয়ে থাকে।
আর এমনটি করা এই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার চোখে হালাল এবং আইন-সম্মত ও ফরয-কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। যে পুলিশ বা সেনা সদস্য এই তথাকথিত 'কল্যানকর' কাজে অংশগ্রহণ করে তাকে পুরস্কৃত করা হয়।অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করা হয়।আর যে ব্যক্তি এই বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করবে তাকে শিক্ষনীয় বস্তুতে পরিনত করা হবে।
.
আলেম:জি।কথা তো সত্যি।
.
আমি:আরো শুনুন।
.
আলেম:বলুন ভাই,বলুন।
.
আমি:
*যদি কেউ কুরান জ্বালিয়ে দেয় তাহলে রাগ আসেনা,
কিন্তু যদি কেউ গনতন্ত্রের পতাকা জ্বালিয়ে দেয় তাহলে তারা রাগে গজগজ করতে শুরু করে।
.
*যদি কেউ রহমাতুল্লিল আলামীন মুহাম্মদ(সা:) কে অপমান করে,কটুক্তি করে,গালি দেয় তাহলে তাকে নিরাপত্তা দিয়ে শান্তি ও ওইক্যের সবক দেয়া হয়।
কিন্তু যদি এই মানবরচিত গনতান্ত্রিক আদালতের অবমাননা করা হয় তাহলে পুরা রাস্ট্রযন্ত্র নড়েচড়ে উঠে।
.
*যদি কেউ আল্লাহর অবতীর্ণ কানুনকে বরবর, মধ্যযুগীয় ও বন্য বলে তবুও সে ব্যক্তি পার্লামেন্ট এ বসতে পারে।
কিন্তু যদি কেউ এই গনতান্ত্রিক শয়তানী আইনের সাথে বেয়াদবি করে তাহলে তাকে শুধু পার্লামেন্ট থেকেই নয়,বরং দুনিয়া থেকেই বিদায় করা হয়।
.
*পার্লামেন্টের বেশীরভাগ সদস্য যদি শরীয়তকে প্রত্যাখ্যান করে তাহলে তাদের কোন সাজা নেই,
কিন্তু এই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কোন মুসলমান প্রত্যাখ্যান করে তাহলে তাকে জামিয়া হাফসা ও সোয়াত বানিয়ে দেয়া হয়।
.
*মুসলমানদের স্বার্থ এর বিরুদ্ধে কুফফারদেরকে সহযোগিতা করা গনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোন অপরাধ নয়।
পক্ষান্তরে কালিমার ভিত্তিতে দুনিয়ার যে কোন প্রান্তে মুসলমানদের পক্ষে কাফেরদের পক্ষে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা তাদের ভাষায় সন্ত্রাস।
.
*ফিলিস্থিনের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইয়াহুদীদের সাপোর্ট দেয়ার জন্য সেনা বাহিনী যদি জাতিসংগে যায়,ফিলিস্থিনে যায়,তাহলে তারা পুরস্কারের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
কিন্তু যদি কোন মুজাহিদ নির্যাতিত ফিলিস্থিনিদের সাহায্যের জন্য যায় তাহলে তাকে জেলে যেতে হয়।
.
*খিলাফতের বিরুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে লড়াই করা আইনসম্মত,
কিন্তু খিলাফাত প্রতিস্টার জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হারাম ও বে-আইনী।
.
*পাইকারিভাবে মুসলিমদেরকে হত্যা করার জন্য আমেরিকা যদি এখানে আসে তাহলে তাদেরকে হেফাযত করা এই গনতান্ত্রিক আইনের করমকরতাদের ওপর আবশ্যক হয়ে যায়।
কিন্তু নিজের মুসলিম ভাইদের সাহায্যের জন্য রাসুল (সা:) এর বংশধররা মক্কা থেকে,মদিনা থেকে যদি এখানে আসে তখন তাদের টার্গেট করে করে নিধন করা হয়।
.
*কাশ্মীর আমাদের কিন্তু সেখানে আমাদেরকে পাইকারীভাবে হত্যা করা হলেও সেই হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে এইসকল শাসকদের অনুমতি ছাড়া যখন জিহাদ করতে চাই তখন তাদের উপর চুক্তি ভংগের অপবাদ লাগানো হয়।
.
.
অতএব,শরীয়ত তাদের অন্তর চিড়ে দেখার অনুমতি বা হুকুম দেয়না।
বরং শরীয়ত তাদের জাহেরি কথা ও কাজের উপরই হুকুম আরোপ করবে।
এই সকল শাসকদের কুফুরী কর্মের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের সু্যোগ নেই ইনশাল্লাহ।
.
সুতরাং যদি আপনি এটাকে কুফরে-জুহুদ-(অস্বীকারমূলক কুফুরী) নাও বলেন তো এটাকে কুফুরে-ইনাদ-(হঠকারিতার কারনে কুফুরী) বলতে সমস্যা কোথাই??????????????
.
তাদের কথা ও কাজই এই কথা প্রমান করে যে,
কুরান ও সুন্নাহ ওয়ালা আইন-কানুনের প্রতি, শরয়ী ব্যবস্থাপনার প্রতি, শরীয়ত প্রতিস্টার প্রতি
তাদের বিদ্ধেষ ও ক্রোধ রয়েছে।
আর এই 'কুফরে ইনাদ' বা বিদ্বেষমূলক কুফুর 'মুখরিজ আনিল মিল্লাত'  বা ইসলাম থেকেই বের করে দেয়।
কেননা, ইসলামের কোন একটা হুকুমের সাথে ক্রোধ ও বিদ্ধেষ রাখা,অপছন্দ করা, তা মানার ক্ষেত্রে কোন ওযর ছাড়া টালবাহানা করা বা তার বিরোধিতা করা সবই কুফুরী।
.
যদি নরম সূরে বলি, তাহলেও এতটুকু তো অবশ্যই বলতে হবে যে,"তারা শরীয়ত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে" অর্থাৎ শরীয়তের হুকুম-বিধান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে টালবাহানা করছে।
আর এটাও কুফুরে আকবারেরই (বড় কুফুরী) একটি প্রকার।
.
আলেম:ভাই,উমাইয়ের। জাজাকাল্লাহ। আমার চোখ খুলে গেছে আল্লাহর রহমতে।
আমি এতদিন ভুলের মধ্যে ছিলাম।এতদিন শুধু রাফে-ইয়াদিন করতেই হবে, বুকে হাত উঠাতেই হবে, পায়ের সাথে পা লাগাতেই হবে এইগুলা নিয়েই ছিলাম।
কিন্তু এত বড় কুফুরী জীবন-ব্যবস্থাকে নিয়ে ভাবার সময় পাইনি।আল্লাহু আকবার।আজ আমার চোখ খুলে গিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। জাজাকাল্লাহ। অনেক শুকরিয়া ভাই।
.
আমি:সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
যিনি আমাকে বলার তোফিক দিয়েছেন আর আপনাকে বুঝার তোফিক দিয়েছেন।আলহামদুলিল্লাহ।
.
.
.
#ইসলাম ও গনতন্ত্র(দুটি জীবন-ব্যবস্থার লড়াই)।
লেখক:মাওলানা আসেম ওমর।
পাতা নং:১৭৭-১৮০।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top