বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

Democracy বা গনতন্ত্র কেন শির্ক এবং কুফর ???

কোন মন্তব্য নেই:

Democracy বা গনতন্ত্র কেন
শির্ক এবং কুফর ???
.
[আসলে এই ইস্যু নিয়েই
বর্তমানে ইসলামিস্টদের মধ্যে
উত্তপ্ত বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ছে
এবং একে অপরকে খারেজী
কিংবা কুফফারদের দালাল
প্রভৃতি অপছন্দনীয় নামেও
সম্বোধন করা হচ্ছে। আর তাই এই
বিষয়ে দরকার একটি নিরপেক্ষবিশ্লেষণধর্মী পর্যালোচনা]
.
গণতন্ত্র শব্দটি ইংরেজিDemocracy শব্দের বাংলা প্রতিরূপ। Democracy শব্দটি
এসেছে দুটি গীক শব্দ– δῆμος
(dēmos) যার অর্থ হলো জনগণ
এবং κράτος (kratos) যার অর্থ
হলো কর্তৃত্ব, শাসন, আইন বা
বিধান। শাব্দিক দিক থকে
গণতন্ত্র অর্থ মানুষের কর্তৃত্ব বা
মানুষের তৈরি আইন/বিধান।
সাধারণভাবে গণতন্ত্র বলতে
এমন মতবাদ বা ব্যবস্থাকে
বুঝায় যেখানে সমাজ-রাষ্ট্রের
আইন/বিধান প্রণয়নের চূড়ান্ত
ক্ষমতা অর্পন করা হয় জনগনের
উপর বা তাদের নির্বাচিত
প্রতিনিধিদের উপর।
.
গণতন্ত্র কুফরি এবং শির্ক। এর মূল কারণ ৩ টা-
.
(১) গণতন্ত্রের মূল কথা ‘সকল
ক্ষমতার মালিক/উৎস জনগণ’ বা
‘জনগণের সার্বভৌমত্ব’। আর
এগুলো সুস্পষ্ট কুফরি কথা এবং নিঃসন্দেহে শির্ক।
মহান আল্লাহ বলেন-
“তুমি কি জানো না যে
নভোমন্ডল ও ভূমণ্ডলের
সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি
যাহাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন,
যাহাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর
আল্লাহ সবকিছুর উপর
ক্ষমতাবান”। [সূরা মায়িদা :৪০]
.
“যিনি (আল্লাহ) নভোমন্ডল ও
ভূমন্ডলের সার্বভৌমত্বের
অধিকারী; তিনি কোন সন্তান
গ্রহণ করেন নাই; সার্বভৌমত্বে
তাঁহার কোন অংশীদার নেই।
তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করিয়াছেন, অতঃপর
প্রত্যেককে পরিমিত করিয়াছেন যথাযথ
অনুপাতে….”। [সূরা আল ফুরকান :২]
.
গণতন্ত্রকে যারা লঘুভাবে
দেখার পক্ষপাতী তারা যুক্তি
দেখাতে চান, যে ‘জনগণের
সার্বভৌমত্ব’ এর অর্থ এটা নয়
যে ‘জনগণ আল্লাহর উপরেও
ক্ষমতাবান/ কর্তৃত্বশীল’।
এ ব্যপারে বলতে গেলে-
.
a) আসলে সার্বভৌমত্ব শব্দটার
মানেই হচ্ছে চরম চূড়ান্ত ক্ষমতা
(The Ultimate Power), কাজেই
একই সাথে একাধিক সার্বভৌমত্ব থাকতে পারে না,(যেমন আল্লাহর সার্বভৈমত্ব
এবং জণগনের সার্বভৌমত্ব) যদিও শ্রদ্ধেয় শাহ আব্দুল হান্নান সাহেব এমনটি ভাবতে চেয়েছেন।
.
b) রাষ্ট্রের যেকোন বিষয়ে
যখন আল্লাহর কিতাবের উপরে
জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের খেয়াল খুশিকে
প্রাধান্য দেওয়া হয় তখন
কিভাবে এটা দাবী করা যায় যে ‘জনগণের সার্বভৌমত্ব’ এর অর্থ এটা নয় যে জনগণ আল্লাহর উপরেও ক্ষমতাবান/কর্তৃত্বশীল??
.
c) “আনা রব্বুকুমুল আ’লা” অর্থাৎ
“আমি তোমাদের সবচেয়ে বড়
রব” (সূরা নাযিয়াত : ২৪) একথা
বলে ফিরাউন তাগুত ও কাফিরে
পরিণত হয়েছিল। অথচ সে
নিজেকে আসমান জমীনের রব
বলে দাবী করে নি কেননা সে
নিজেই অন্য ইলাহর উপাসনা
করতো। (আলোচনা পরে আসছে)
.
d) যখন সংবিধানের ‘জনগণের
সার্বভৌমত্বের’ অজুহাত
দেখিয়ে ‘আল্লাহর সার্বভৌমত্ব’ বিশিষ্ট একটা
দলের নিবন্ধন বাতিল করা হল
তখন এ ধরনের যুক্তি কতটুকু Valid??
.
[এরই সাথে আরো একটা প্রশ্ন
করে রাখি যারা সংবিধানের
জনগণের সার্বভৌমত্বের
অজুহাত দেখিয়ে আল্লাহর
সার্বভৌমত্বকে বাতিল করার
দুঃসাহস দেখিয়েছে তাদেরকে
এখন তাকফির করতে বাধা
কোথায়??]
.
(২) গণতন্ত্রে আইন-বিধান
তৈরির চূড়ান্ত ক্ষমতা অর্পন
করা হয় জনগনের ভোটে নির্বাচিত MP দের উপর।সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপিরা যেটা বলবে সেটাই হবে দেশের সর্বোচ্চ আইন যার বিরোধিতা করা গণতান্ত্রিক সংবিধান অনুসারে আইনগত অপরাধ।গণতন্ত্রে MP দের সংখ্যাগরিষ্টতাকে কুরআন সুন্নাহর উপরেও স্থান দেওয়া
হয়। সংখ্যাগরিষ্টতার জোরে
তারা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী
আইন তৈরি করতে পারে এমনকি
আল্লাহর আইনকে বাতিলও করতে পারে।
.
[উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৮
বছরের পূর্বে বিয়ে নিষিদ্ধ
করা, ১৬ বছরের পর পারস্পরিক
সম্মতিতে ব্যভিচার করলে তার
বৈধতা দেওয়া, স্বামীর অনুমতিতে স্ত্রী অন্য পুরুষের সাথে ব্যভিচার করলে তার
বৈধতা দেওয়া, পতিতাবৃত্তির
লাইসেন্স দেওয়া এবং এই
কাজে কেউ বাধা দিলে তাকে
উল্টো আইনের কাঠগড়ায় দাড়
করানো, মাদক উৎপাদনের
লাইসেন্স দেওয়া, সমকামিতার
বৈধতা দেওয়া, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ
করা, যাত্রা-সিনেমা হলে প্রকাশ্যে অশ্লীলতার চর্চাকে আইন দিয়ে প্রমোট করা, সুদের
বৈধতা দেওয়া, নাস্তিকতার
চর্চাকে আইনী প্রোটেকশন
দেওয়া, আল্লাহর হুদুদসমূহকে
অকার্যকর করে নিজেরা
নিজেরা আইন তৈরি করা]
এ ধরনের মূলনীতি নিঃসন্দেহে
আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের (ক্ষমতা
ও কর্তৃত্বের) ক্ষেত্রে শির্ক
এবং একটি স্পষ্ট কুফর (কুফরুন বাওয়্যাহ)।
নিচের আয়াতগুলোলক্ষ্য করলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ-
“শুনে রাখ, সৃষ্টি যার, আইন
চলবে তাঁরই।” [সূরা আ’রাফ : ৫৪]
.
( অন্যদিকে গণতন্ত্র বলে আইন
চলবে নগন্য কিছু মানুষের)
“বিধান দেওয়ার অধিকার
কেবলমাত্র আল্লাহরই। আর
তিনি আদেশ দিয়েছেন তিনি
ব্যতিত আর কারও ইবাদাত না
করতে। এটাই সুদৃঢ় সঠিক দ্বীন।
কিন্তু অধিকাংশ লোক তা
জানে না”। [সূরা ইউসুফ : ৪০]
.
“আর আল্লাহ হুকুম (বিধান) দেন,
তাঁর হুকুম পুনর্বিবেনা করার
কেউ নেই। তিনি দ্রুত হিসাব
গ্রহণকারী”। [সূরা রা’দ : ৪১]
.
(অন্যদিকে গণতন্ত্র বলে মেম্বার অব দি পার্লামেন্ট
আল্লাহর হুকুম যাচাই বাছাই করে বাদ দিতে পারে।)
“তাদের কি এমন কতগুলো শরীক
বা দেবতা আছে যারা ওদের
জন্যে বিধান দিয়েছে এমন
দ্বীনের যার অনুমতি আল্লাহ
ওদেরকে দেন নি”? [সূরা শূরা :৪১]
.
(এই আয়াতে যারা আল্লাহকে
বাদ দিয়ে অন্য কারও কাছ
থেকে আইন-বিধান গ্রহণ করে
তাদেরকে আল্লাহ মুশরিক বলে
সাব্যস্ত করেছেন।)
“যারা আল্লাহর বিধান অনুসারে বিধান দেয় না তারাই কাফের”। [সূরা মায়িদা : ৪৪]
.
“তবে কি তারা জাহেলিয়্যাতের বিধি-বিধান
কামনা করে? নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্যে
বিধান দানে আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতর”?? [সূরা মায়িদা :৫০]
.
(৩) গনতন্ত্রে যেকোন বাদানুবাদ/ বিতর্কের চূড়ান্ত
মীমাংসাকারী বানানো হয় সংবিধান ও এর ধারাসমূহ এবং পার্লামেন্টের সংখ্যাধিক্যকে। এটা চূড়ান্ত পর্যায়ের একটি কুফর।
মহান আল্লাহ বলেন-
“যদি তোমাদের মাঝে কোন
বিষয়ে মতভেদ হয়, তাহলে
তোমরা বিষয়টিকে আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে
দাও, যদি তোমরা আল্লাহ ও
পরকালে বিশ্বাসী হও। এটাই
তোমাদের জন্যে মঙ্গলজনক
এবং পরিণতির দিক থেকে
উত্তম”।[সূরা নিসা : ৫৯]
.
* অন্যদিকে পার্লামেন্টারী
গণতন্ত্র বলে –
যদি তোমাদের মাঝে কোন বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা দেয় তাহলে তোমরা বিষয়টা মীমাংসার জন্যে মানব রচিত সংবিধান, তার ধারাসমূহ এবং
সংসদের সংখ্যাধিক্যের কাছে
সমর্পণ কর।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরো বলেন-
“কোন বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর
রাসূল কোন নির্দেশ দিলে সে
বিষয়ে কোন মুমিন পুরষ বা মুমিন
নারীর ভিন্ন সিদ্ধান্তের
অধিকার থাকবে না। যে কেউ
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে সে স্পষ্টরূপে পথভ্রষ্ট হবে”।[সূরা আহযাব : ৩৬]
.
“না, তোমার প্রতিপালকের
শপথ, তারা মুমিন হতে পারবে
না যতক্ষণ না তারা তাদের
পারস্পরিক বিবাদের বিচারভার তোমার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর তোমার
দেওয়া ফায়সালা সম্পর্কে
তাদের মনে কোন সংশয় না
থাকে এবং সর্বান্তকরনে তারা
তা মেনে নেয়”।[সূরা নিসা : ৬৫]
.
আরবাবাম মিন দুনিল্লাহ-
আল্লাহর পরিবর্তে (কাউকে) রব
বানিয়ে নেওয়া আল-কুরআনে আল্লাহ বলেন-
“ইত্তাখাযু আহবারাহুম ওয়া
রুহবানাহুম আরবাবাম মিন
দুনিল্লাহ”
“আর তারা তাদের পন্ডিত
(আলেম) ও সংসার বিরাগী
(দরবেশ) লোকদেরকে আল্লাহর
পরিবর্তে রব বানিয়ে
নিয়েছে”। [সূরা তাওবা : ৩১]
.
এই আয়াতটি একটি দলীল যে
মাঝে মাঝে মানুষ আল্লাহকে
বাদ দিয়ে মানুষকেই তাদের রব
বানিয়ে ফেলে। এটাকেই
কুরআনের ভাষায় বলা হয়েছে
আরবাবাম মিন দুনিল্লাহ। কিন্তু
কিভাবে আল্লাহর পরিবর্তে
মানুষকেই মানুষের রব বানানো
হয়, নিচে আমরা কিছু উদাহরণ
পেশ করবো-
.
ক) আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে
মান্য করা হল এক ধরনের ইবাদত
উপরের আয়াতটি [সূরা তাওবা ৩১]
তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
এই আয়াতের তাফসীরে ইবনে
কাসীর (রহঃ) ইমাম আহমদ,
তিরমিযী ও ইবনে জারীরের
সূত্রে বর্ণনা করেন, আদী ইবনে
হাতেম (রাঃ) থেকে বর্ণিত
আছে, তাঁর কাছে ইসলামের
দাওয়াত আসার পরে প্রথমে
তিনি সিরিয়ায় পালিয়ে
গিয়েছিলেন, পরে যখন রাসূল
(সাঃ) এর কাছে তিনি এলেন,
তখন তার গলায় ক্রুশ ঝুলানো
ছিলো। তখন রাসূল (সাঃ)
উল্লেখিত আয়াতটি (তারা
তাদের আলেম ও দরবেশদেরকে
আল্লাহর পরিবর্তে রব বানিয়ে
নিয়েছে) পড়ছিলেন। তখন আদী
(রাঃ) বলেন, আহলে কিতাবরা
(ইহুদী ও খৃষ্টানরা) তো আলেম/
দরবেশদের ইবাদত/উপাসনা
করতো না! রাসূল (সাঃ) বললেন,
তা সত্য। তবে তারা (আলেম/
দরবেশরা) মন মতো কোনো
কিছুকে বৈধ কিংবা অবৈধ
ঘোষনা করলে জনগণ তা
নির্বিচারে মেনে নিতো। এটাই
হল তাদের পূজা-উপাসনা করা,
এটাই হলো তাদের ইবাদত করা।
.
খ) আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের
(সঃ) সুন্নাহ থেকে মুখ ফিরিয়ে
যারা নিজেদের খেয়াল-খুশি
মত আইন/বিধান প্রণয়ন করে
তারা তাদের কামনা-বাসনাকে
ইলাহ বানিয়ে নেয়, আর সাধারণ
মানুষেরা যখন এইসব মনগড়া
আইন/বিধানকে কবুল করে নেয়,
তখন কিছু সংখ্যক লোকের
কামনা-বাসনাকে গোটা
জাতির রব বানানো হয়।
মহান আল্লাহ বলেন-
“তুমি কি দেখো না তাকে যে
তার কামনা বাসনাকে
ইলাহরূপে গ্রহণ করেছে? তবুও কি
তুমি তার কর্মবিধায়ক হবে? তুমি
কি মনে কর ওদের অধিকাংশ
শুনে ও বুঝে? তারা তো পশুর মত,
বরং তারা অধিক পথভ্রষ্ট”।
[সূরা ফুরকান : ৪৩-৪৪]
.
গ) আল্লাহর আইন ব্যতিত অন্য
কোন আইন বাস্তবায়নের চেষ্টা
করা কিংবা আল্লাহর আইন
ব্যতিত অন্য কারও আইনের
অনুসরণ করা হল শির্ক যা একজন
মানুষকে মুশরিকে পরিণত করে।
প্রমাণ স্বরূপ সেই ঘটনার কথা
উল্লেখ করা যায় যখন একটি মৃত
ছাগলকে নিয়ে আর রাহমানের
বান্দাদের সাথে শয়তানের
বান্দাদের বিতর্ক হয়েছিল।
মুশরিকরা যুক্তি দ্বারা
মুসলিমদেরকে বুঝাতে
চেয়েছিল, যে ছাগলকে জবাই
করা হয় আর যে ছাগল
(প্রাকৃতিকভাবে) মারা যায় এ
দুইয়ের মাঝে কোন পার্থক্য
নেই। তারা দাবী করেছিল যে
মৃত ছাগলটিকে আল্লাহই যবেহ
করেছেন। আর তাই তাদের মতে
উভয়টাই জায়েয। আর এ
প্রেক্ষিতেই আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়া তাআলা মুমিনদের সতর্ক
করে বলেন-
“আর তোমরা যদি তাদের
আনুগত্য/অনুসরণ কর তাহলে
তোমরা অবশ্যই মুশরিক হয়ে
যাবে”। [সূরা আনআম : ১২১]
(বিস্তারিত তাফসীর ইবনে কাছির দ্রষ্টব্য)
.
ঘ) সর্বশেষ আমরা উল্লেখ
করবো ফিরআউনের কথা কেননা
সে হল সেই ব্যক্তি যে নিজেকে
রব বলে দাবি করেছিল-
সে লোকজনকেক জড় করলো আর
উচ্চস্বরে ঘোষণা করলো,
“আমিই তোমাদের সবচেয়ে বড়
রব”। [সূরা আন-নাযিয়াত : ২৩,২৪]
.
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ফিরআউন
এখানে ‘রব’ বলে নিজের জন্যে
কি দাবী করেছিল? সে কি এটা
বলতে চেয়েছিল যে আমি
আসমান যমীন সৃষ্টি করেছি,
মানুষ সৃষ্টি করেছি, কিংবা
আমি বিশ্বজগত পরিচালনা
করছি??
.
না, সে এমনটা দাবী করে নি।
কেননা সে নিজেই অনেক ইলাহ/
রব বা উপাস্যর ইবাদত করতো।
আর তার প্রমাণ মিলে- ফিরআউনের জাতির নেতারা বললো, “আপনি কি মূসা ও তার
দলবলকে রাজ্যে বিপর্যয় সৃষ্টির
সুযোগ দিবেন আর তারা আপনাকে ও আপনার ইলাহদেরকে এভাবে বর্জন করে
চলবে??” [সূরা আ’রাফ : ১২৭]
.
মূলত ফিরআউন নিজেকে
আসমান- যমীনের রব দাবী করে
নি, সে যেটা দাবী করেছিল তা
মিশরের সার্বভৌমত্ব বা চূড়ান্ত
কর্তৃত্ব। সে চেয়েছিল মিশরের
জনগণ সকল প্রকার আইন বিধান
ও কর্তৃত্বের চূড়ান্ত ক্ষমতা তার
উপর অর্পণ করুক, তার খেয়াল
খুশি মত চলুক-“ফিরআউন তার জাতির
উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলো। সে
বললো, মিশরের সার্বভৌমত্ব
কি আমার নয়? তোমরা কি
দেখছো না যে, এই নদীগুলো
আমার (রাজত্বের) অধীনেই বয়ে
চলছে——–??” [সূরা যুখরুফ : ৫১]
.
অতঃপর যারা তার এই অবৈধ
কর্তৃত্ব মেনে নিল এবং মূসা
আঃ আনীত আল্লাহর
সার্বভৌমত্বের দাওয়াতকে
প্রত্যাখ্যান করলো, তাদের
সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া
তাআলা বলেন-
“এসব বলে সে তার জাতিকে
হতবুদ্ধি করে তুললো, (এক
পর্যায়ে) তারা তার কথা
মেনেও নিলো। নিঃসন্দেহে
তারাতো ছিলো এক পাপীষ্ঠ
জাতি”। [সূরা যুখরুফ : ৫৪]
.
আমার মনে হয় আমরা যে
বিষয়ের অবতারণা করেছি তা
প্রমাণের জন্যে এই দলীলগুলোই
যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রেক্ষিত বাংলাদেশঃ
.
বাংলাদেশ সংবিধানের ৭(১)
অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-
“ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার
মালিক জনগণ; এবং জনগণের
পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ
কেবল এই সংবিধানের অধীনে
ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে”।
.
বাংলাদেশ সংবিধানের ৭(২)
অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-
“জনগণের অভিপ্রায়ে পরম
অভিব্যক্তিকরূপে এই সংবিধান
প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন
এবং অন্য কোন আইন যদি এই
সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহা হইলে ঐ আইনের যতখানি
অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততখানি
বাতিল বলে গণ্য হবে।”
.
[কুরআন- সুন্নাহর আইন যদি এই
সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে সেই
আইনও সংবিধানের দাবি মোতাবেক বাতিল বলে গণ্য হবে এবং অলরেডি অনেক ক্ষেত্রে
হয়েছেও]
.
আবার বাংলাদেশ সংবিধানের
পঞ্চম ভাগের শিরোনাম হলো
‘আইন সভা’। সংবিধানের ৬৫(১)
অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-
‘জাতীয় সংসদ’ নামে বাংলাদেশের একটি সংসদ
থাকিবে এবং সংবিধানের বিধানবালীর-সাপেক্ষে
প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত হইবে।
.
*** উপরের আলোচনা থেকে
পরিষ্কারভাবে বোঝা গেল যে
আইনসভা বা Parliament হল
আইন-বিধান তৈরির স্থান, আর
Member of the Parliament হল
আইন-বিধান প্রণয়নকারী।
তাদের উপর এই ক্ষমতা অর্পণ
করা হল আরবা-বাম মিন
দুনিল্লাহ (আল্লাহর পরিবর্তে
রব বানিয়ে নেওয়া) যেটা
স্পষ্টত শির্ক এবং কুফর।
.
সহজ কথায় গণতন্ত্র হল একটি বহু
ঈশ্বরবাদী ধর্ম যেখানে
বিভিন্ন ঈশ্বর নিজেদের
খেয়াল খুশিমত বিভিন্ন মত দেয়,
অতঃপর সংখাধিক্যের
মতামতকে আইন/বিধান হিসাবে
জনগণের উপর নাযিল করা হয়।
.
পোষ্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই
শেয়ার করুন..

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top