বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

কেন আমাদের ভূমিতে জিহাদ তথা কিতাল আমাদের নিকট অধিক প্রাধান্যযোগ্য ?

কোন মন্তব্য নেই:

কেন আমাদের ভূমিতে জিহাদ তথা কিতাল
আমাদের নিকট অধিক প্রাধান্যযোগ্য ?
.
সমস্ত প্রশংসা মহাবিশ্বের প্রতিপালক
আমাদের রব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া
তা’আলার জন্য যার সার্বভৌমত্ব
প্রতিষ্ঠার জন্য মুজাহিদরা যুদ্ধ করে যুগে
যুগে, সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক
আল্লাহর দূত রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর যার
সারা জীবন ছিল মানুষকে মানুষের দাসত্ব
থেকে মুক্ত করে শুধু আল্লাহর দাসত্বে
নিয়ে যাওয়ার জন্য নিবেদিত।
.
আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় – কেন
আমাদের জন্য আফগানিস্তান বা ইরাকে
জিহাদ/ কিতাল করার চাইতে এই ভূমিতে
অর্থাৎ বাংলাদেশে জিহাদ/ কিতাল
অধিক প্রাধান্যযোগ্য।
.
আমি লেখাটিকে দুইটি ভাগে ভাগ করছি-
১) শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে এবং
২) কৌশলগত দৃষ্টিকোণ তথা বাস্তবতা
থেকে
শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে
আমাদের সময় জিহাদ বলতে কিছু সংখ্যক
আলিম শুধু ইহুদী-নাসারার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
বোঝাতে চান, অথচ হাদীসে মুরতাদ
শাসকের বিরুদ্ধে জিহাদেরও তাগিদ
আছে বরং ফকীহগণ মুসলিমদের ভূমিতে যে
মুরতাদ শাসক ক্ষমতায় থাকে তার বিরুদ্ধে
জিহাদকে ফরযে আইন বলেছেন। শাসক
যখন সুষ্পষ্ট কুফরী করে তখন যাদের শক্তি
আছে, তাদের উপর এটা ফরজে আইন হয়ে
যায় যে, ঐ শাসককে প্রতিস্থাপন করা। এ
ব্যাপারে আলিমদের ইজমা রয়েছে।
উবাদা বিন সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত
হাদিসে বলা হয়েছেঃ “তাদের
(শাসকদের) সাথে যুদ্ধ করবে না, যতক্ষণ
না তাদের মধ্যে সুষ্পষ্ট কুফর (কুফরুন
বাওয়াহ) দেখতে পাও”। (সহীহ বুখারী) ।
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রঃ)
‘শারহ সাহীহ মুসলিম’ কিতাবে এবং ইমাম
ইবনে হাজার আসক্বালানী (রঃ) ফাতহুল
বারীতে শাসক কুফর বাওয়াহ করলে
সামর্থবানদের উপরে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করা ওয়াজিব হবার উপর আলিমদের
ইজমার কথা উল্লেখ করেছেন।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বলেছেন, “এমন
প্রত্যেক দল যারা কোন সুষ্পষ্ট ইসলামী
আইনের বিরোধিতা করে, তাদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করা মুসলমানদের ইমামদের ইজমা
মতে ওয়াজিব যদিও তারা (কালেমা)
শাহাদাহ পাঠ করে”। (মাজমু আল
ফাতাওয়া, ২৮/৫১০)
.
অনেকে উবাদা বিন সামিত (রাঃ) এর
হাদীসটি এভাবে বোঝাতে চান যে –
এখানে যে এখানে যে শাসকদের কথা
বলা হচ্ছে তারা এমন শাসক যারা
ইসলামী হুকুমাতকে সরিয়ে ইসলাম
বিরোধী হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করেছে।
তাদের যুক্তি বাংলাদেশ বা এর
আশেপাশের অঞ্চলে কখনই ইসলামী
হুকুমাত ছিলনা। তাদের অবগতির জন্য –
আমাদের এই যমীনে পূর্ণভাবে ইসলামী
হুকুমাত ছিল সর্বশেষ মুঘল বাদশাহ
আলমগীর এর সময়ে। তার পূর্বেও বিভিন্ন
সময়ে এ অঞ্চলে ইসলামী হুকুমাত
প্রতিষ্ঠিত ছিল। এই যমীনে সর্বপ্রথম
ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠিত হয় ১২০৩
ঈসায়ী সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন
বখতিয়ার খিলজীর আমলে। তিনি ছিলেন
গজনীর সুলতান ঘুরির গভর্নর কুতুবুদ্দিন
আইবেকের সেনাপতি। সেই ইসলামী
হুকুমাতের পুরোপুরি বিলুপ্তি ঘটে
ইংরেজদের আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে। সেই
ব্রিটিশদের দেওয়া হুকুমাত দিয়ে আজও
আমাদের দেশ শাসিত। কাজেই এই ফরযে
আইন জিহাদ কোন নতুন বিষয় না; এটি
ফরযে আইন হয়েছে আজ থেকে আড়াইশ
বছর আগে। আজ পর্যন্ত ব্রিটিশদের
দেওয়া এই নোংরা আইনকে সরিয়ে
এখানে ইসলামী হুকুমাত পুনঃপ্রতিষ্ঠা
করতে পারিনি। ব্রিটিশরা চলে গিয়েছে
ঠিকই কিন্তু যাওয়ার আগে তারা নিশ্চিত
করে গেছে এবং এখনও করছে যেন তাদের
এজেন্ট এই দেশীয় মুরতাদরাই এদেশের
ক্ষমতায় থাকে এবং তাদের দেওয়া
পন্থায় এই দেশ শাসন করে।
.
আরেকটা ব্যাপার হলো যে সব ভাইরা
এদেশে জিহাদকে কম গুরুত্ব দিয়ে
সরাসরি আফগানিস্থান, ইরাকে গিয়ে
জিহাদে শরীক হবার কথা বলেন, তাদের
যুক্তি হলো, সেখানে সরাসরি কাফিররা
আক্রমণ করেছে – তাই সেখানে জিহাদ
ফরজে আইন। কিন্তু এই ভাইরা খেয়াল
রাখতে ভুলে যান যে, এটা তখন হবে যখন
সেই সব জিহাদে পর্যাপ্ত সংখ্যক
মানুষের অভাব হবে। আলহামদুলিল্লাহ,
সেসব জায়গায় মানুষের অভাব নেই বরং
সেখানে বিভিন্ন দেশের জন্য নির্দিষ্ট
কোটা বরাদ্দ করা আছে – এর চেয়ে
বেশী সংখ্যক মুজাহিদীন তারা নিচ্ছেন
না। এ থেকেই সেই সব জায়গায় জিহাদ
ফরজে আইন থেকে ফরজে কিফায়া হয়ে
যায়। কারন আমরা সবাই চাইলেও সেখানে
নেওয়া হবে না।
.
এই দেশে জিহাদ বেশী গুরুত্ব পাবে
কেন?
.
এখন যদি মনে হয়, দুটোই ফরজে আইন,
তাহলে দুই ফরজে আইনের মধ্যে এই দেশে
জিহাদ বেশী গুরুত্ব পাবে।
.
কারণ –
১। এসব মুরতাদ শাসকরা এবং ইহুদী-
নাসারারা উভয়েই কাফির। বরং
মুরতাদরা আস্লী-কাফিরদের চেয়ে বেশি
খারাপ। তাই এদের বিরুদ্ধে জিহাদ
অগ্রগন্য। এরাও ইহুদী-নাসারাদের মতই
মুসলমানদের ভূমিকে নিজেদের দখলে
রেখেছে এবং এর সম্পদকে লুটপাট করছে।
মুসলমানদের জানমাল তছনছ করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অবস্থা
দেখলে এটা আরও সুস্পষ্ট হয়ে যায়।
.
২। এসব মুরতাদরা আমাদের নিকটবর্তী
এবং আমাদের বর্ণের। আল্লাহ
আমাদেরকে নিকটবর্তী কাফিরদের
বিরুদ্ধে কিতালের তাগিদ করেছেন।
আল্লাহ বলেন – ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻗَﺎﺗِﻠُﻮﺍْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ
ﻳَﻠُﻮﻧَﻜُﻢ ﻣِّﻦَ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭِ ﻭَﻟِﻴَﺠِﺪُﻭﺍْ ﻓِﻴﻜُﻢْ ﻏِﻠْﻈَﺔً ﻭَﺍﻋْﻠَﻤُﻮﺍْ ﺃَﻥَّ
ﺍﻟﻠّﻪَ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ
হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী
কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং
তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব
করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ
মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন। (সূরা আত
তাওবা ৯ :১২৩)
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর সীরাতের মাঝেও আমরা
একই পদ্ধতি পাব। উনি নিজের বংশের
কুরাইশ কাফিরদের সাথেই আগে কিতাল
করেছেন এবং পরবর্তীতে রোম-পারস্যের
সাথে কিতালে অগ্রসর হয়েছেন।
.
৩। ঐ ফরযে আইন পালন করার জন্যই এই
ফরযে আইন পালন জরুরী।
কারণ, এই দেশের মুরতাদ শাসকরা কক্ষনই
আমাদের কাশ্মীর, আফগানিস্তান বা
আরাকানে কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ
করতে দিবেনা। বরং তারা যদি টের পায়
আপনি এসব করতে চাচ্ছেন, আপনাকে যত
তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের কারাগারে
প্রেরন করবে। এদের আচরণ আমাদেরকে
আল্লাহর ঐ কথাকেই স্মরণ করিয়ে দেয় –
ﻭَﺍﻟَّﺬﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺑَﻌْﺾٍ ﺇِﻻَّ ﺗَﻔْﻌَﻠُﻮﻩُ ﺗَﻜُﻦ
ﻓِﺘْﻨَﺔٌ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﻭَﻓَﺴَﺎﺩٌ ﻛَﺒِﻴﺮٌ
আর যারা কাফের তারা পারস্পরিক
সহযোগী, বন্ধু। তোমরা যদি এমন ব্যবস্থা
না কর, তবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বিস্তার
লাভ করবে এবং দেশময় বড়ই অকল্যাণ
হবে। (আল আনফাল ৮ :৭৩)
কাজেই ঐসব ভূমিকে জিহাদের
সহযোগিতার জন্যই আমাদের এই দেশে
জিহাদ করা উচিত যাতে বেশী সংখক
মুজাহিদ অংশ নিয়ে কাফিরদের আরও
ভিত করতে পারে এবং তাদের
মনোযোগকে শুধু আমাদের ঐসব ভাইয়ের
দিক থেকে সরিয়ে আরও বিক্ষিপ্ত করতে
পারে।
.
৪। এই দেশে জিহাদের জন্য উমারাদের
নির্দেশনা।
মুজাহিদ উমারাদের পক্ষ থেকে
আফগানিস্তান বা ইরাকের সকল
জিহাদের ময়দান থেকেই ট্রেনিং নিয়ে
আবার নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ
রয়েছে। সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস
করার জন্য মুজাহিদীনদেরকে অনুমতি
দেয়া হয় না। কারণ, জিহাদের নেতৃত্ব
চাচ্ছেন, যাতে সকল দেশে জিহাদ ছড়িয়ে
যায়। আমরা এই বিষয়ে শায়খ উসামা বিন
লাদেন (তোরাবোরা পর্বতের সেই যুদ্ধের
পরপর) এবং শায়খ মুস্তাফা আবু ইয়াজিদ
(আল্লাহ এই দুইজনের শাহাদাত কবুল করুন)
এর সরাসরি বক্তব্য দেখেছি যেখানে
উনারা বলেছেন, তাঁরা এই জিহাদের
ময়দানকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে
চান, যাতে কুফফারদের এই যুদ্ধ সামাল
দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া,
শায়খ মুস্তাফা আবু ইয়াজিদের
“পাকিস্তানের জনগণের প্রতি বার্তা” এই
লেখায় আমরা দেখতে পাআরক উনি
বাংলাদেশের কথাও নিয়ে এসেছেন।
কারণ এই ভূখণ্ড হিন্দুস্থান থেকে পৃথক
হওয়ার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ছিল দ্বিজাতি
তত্ত্ব যার মূল আসলে আল্লাহর জন্য
ভালবাসা আল্লাহর জন্য ঘৃণা এবং
শরীয়ত। পাকিস্তান দ্বারা বুঝানো হত
ভারতবর্ষের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধতা হোক
সে বাংলাদেশী, পাঞ্জাবী,পাশ্তুন,সিন্ধী, বালুচী। এই লেখায় উনি সেই পাকিস্তান যা ভারত থেকে আলাদা হয়েছিল “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর
বাস্তবায়নের জন্য সেই লক্ষ্যের কথা
স্মরণ করিয়ে দিয়ে এই ভূমিতে মুরতাদ
শাসকদের বিরুদ্ধে জিহাদের আহবান
জানান।
.
এই ভূমিতে জিহাদের ফযীলতের হাদিস
কি অনুপস্থিত?
.
অনেকে আবার এই কথা বলে এই দেশ
নিয়ে আমাদের নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে কোন
ভবিষ্যতবাণী নাই। এই প্রসঙ্গে দু’টি কথা
বলতে চাই –
.
প্রথমত, কোন জায়গা সম্পর্কে যদি
ভবিষ্যতবাণী না থাকে তার মানে কি
সেখানে কাজ করার কোন গুরুত্ব নেই
নাকি ভবিষ্যতবাণীর মাধ্যমে তাকদীর
সম্পর্কে আমরা অবহিত হই? যদি
ভবিষ্যতবাণীর অনুপস্থিতি ফরযিয়াতের
অনুপস্থিতি বোঝায় তাহলে আলজিরিয়া,
মালি, সুদান, সোমালিয়ার ভাইরা ভুলের
মধ্যে আছেন – বিষয়টা কি এইরকম?
নাউযুবিল্লাহ! উনারা অবশ্যই ফরয
খেদমতের মাঝে আছেন।
.
দ্বিতীয়ত, আমাদের এই ভারতবর্ষের যুদ্ধ
অভিযান সম্পর্কে নাবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী আমরা
ভুলে যাই –
4382 – ﺃﻧﺒﺄ ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﺣﻜﻴﻢ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ
ﺯﻛﺮﻳﺎ ﺑﻦ ﻋﺪﻱ ﻗﺎﻝ ﺃﻧﺒﺄ ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﻋﻦ ﺯﻳﺪ
ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺃﻧﻴﺴﺔ ﻋﻦ ﺳﻴﺎﺭ ﻗﺎﻝ ﺯﻛﺮﻳﺎ ﻭﺃﻧﺒﺎ ﺑﻪ ﻫﺸﻴﻢ
ﻋﻦ ﺳﻴﺎﺭ ﻋﻦ ﺟﺒﻴﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﻴﺪﺓ ﻭﻗﺎﻝ ﻋﺒﻴﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ
ﺟﺒﻴﺮ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻗﺎﻝ : ﻭﻋﺪﻧﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻏﺰﻭﺓ ﺍﻟﻬﻨﺪ ﻓﺈﻥ ﺃﺩﺭﻛﻬﺎ ﺃﻧﻔﺬ ﻓﻴﻬﺎ
ﻧﻔﺴﻲ ﻭﻣﺎﻟﻲ ﻓﺈﻥ ﺃﻗﺘﻞ ﻛﻨﺖ ﻣﻦ ﺃﻓﻀﻞ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ
ﻭﺇﻥ ﺃﺭﺟﻊ ﻓﺄﻧﺎ ﺃﺑﻮ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺍﻟﻤﺤﺮﺭ
‏[ﺳﻨﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ]
– আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদেরকে হিন্দুস্থানে অভিযানের
ওয়াদা করিয়েছিলেন। যদি আমার
জীবদ্দশায় তা ঘটে তবে যেন আমার জান
ও মাল এতে ব্যয় করি। যদি আমি এই যুদ্ধে
নিহত হই তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদ
হিসেবে পরিগণিত হবো। আর যদি জীবিত
অবস্থায় ফিরে আসি তাহলে আমি
জাহান্নাম থেকে মুক্ত আবু হুরাইরা হয়ে
যাব।
22396 – ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺍﻟﻨَّﻀْﺮِ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺑَﻘِﻴَّﺔُ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﺒْﺪُ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﺳَﺎﻟِﻢٍ ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮِ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﻮَﻟِﻴﺪِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺪِﻱُّ ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ
ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻮَﻟِﻴﺪِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺪِﻱِّ ﻋَﻦْ ﻟُﻘْﻤَﺎﻥَ ﺑْﻦِ ﻋَﺎﻣِﺮٍ ﺍﻟْﻮُﺻَﺎﺑِﻲِّ ﻋَﻦْ
ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟْﺄَﻋْﻠَﻰ ﺑْﻦِ ﻋَﺪِﻱٍّ ﺍﻟْﺒَﻬْﺮَﺍﻧِﻲِّ ﻋَﻦْ ﺛَﻮْﺑَﺎﻥَ ﻣَﻮْﻟَﻰ
ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﻋِﺼَﺎﺑَﺘَﺎﻥِ ﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺃَﺣْﺮَﺯَﻫُﻢْ
ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻋِﺼَﺎﺑَﺔٌ ﺗَﻐْﺰُﻭ ﺍﻟْﻬِﻨْﺪَ ﻭَﻋِﺼَﺎﺑَﺔٌ ﺗَﻜُﻮﻥُ ﻣَﻊَ
ﻋِﻴﺴَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻣَﺮْﻳَﻢَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡ
‏( ﻣﺴﻨﺪ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ )
– রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) এর আযাদকৃত দাস সাওবান (রা)
থেকে বর্ণিত রাসুল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার
উম্মতের দু’টি সেনাদলকে আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন জাহান্নামের আগুন থেকে
রক্ষা করবেন- একটি সেনাদল যারা
হিন্দুস্থানে (ভারত উপমহাদেশ) অভিযান
করবে অপর দলটি ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ)
এর সাথে থাকবে। (মসনদে আহমাদ)
অনেক ভাই আবার বলেন, এই অভিযান তো
হয়েই গেছে অনেক আগে। তাদের কাছে
আমাদের প্রশ্ন তারা এই নিশ্চয়তা কোথা
থেকে পেল? আমরা জানি, লাইলাতুল
কদরের ফযীলত অনেক যাকে বলা হয়েছে
হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এই রাতের
কিছু লক্ষণও হাদিসে এসেছে; যেমন অল্প
বৃষ্টি, সূর্যের তাপের প্রখরতার
অনুপ্সথিতি, ইত্যাদি। এখন কেউ যদি এসব
দেখে বলে আমি তো লাইলাতুল কদর
পেয়ে গেছি কাজেই আর রমযানের শেষ
দশ দিনের অন্য রাতগুলিতে আমি আর একে
খোঁজ করবনা; তাহলে কি আমরা কেউ এই
ব্যক্তিকে বুদ্ধিমান বলব? একইভাবে কেউ
যদি বলে ভারতবর্ষে জিহাদী অভিযান
শেষ আমরা এখন আর এখানে কিছুই করবনা
সেটাও একই রকম বোকামি হবে। বরং
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলির
সময়কে উহ্য রেখে মানুষ যেন সব সময় এই
আমলগুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকে সেই
ব্যবস্থাই করে গেছেন। এছাড়াও কোন
কোন দুর্বল হাদিসে এসেছে, এই দুই
সেনাবাহিনী (যারা ঈসা (আ) এর সাথে
থাকবে এবং যারা ভারতবর্ষে জিহাদী
অভিযানে অংশ নিবে) তাঁরা পরস্পর
মিলিত হবে।
.
এই দেশে যদি বাংলাদেশের
মুজাহিদীনরা দ্বীন কায়েমের জন্য
মুর্তাদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে তবে কি
বাইরের কোন দেশ থেকে হিজরত করে
মুজাহিদীনরা এসে এখানে জিহাদী
অভিযান করবে? আপনার এলাকায়,
আপনার গ্রামের বাড়িতে, জেলায়, শহরে
জিহাদ করার জন্য আপনার চেয়ে যোগ্য
কে আছে? অপরিচিত কেউ এসে কি
আপনার চেয়ে উত্তমভাবে এখানে জিহাদ
করতে পারবে? কক্ষনো না।
কৌশলগত দৃষ্টিকোণ তথা বাস্তবতা
থেকে
.
• আমরা যদি সারা বিশ্বে মারেকার
সংখ্যা দেখি ১০ বছর আগে কতটি ছিল
আর এখন কতটি আছে তাহলেই আমাদের
কাছে সূর্যের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে
যাবে বর্তমান জিহাদের মানহাজ কি। ১০
বছর আগে যেখানে মারেকা ছিল বড়জোর
দুইটি এখন বিশ্বে মারেকা ১০-১২ টি।
আমাদের অনেক ভাই এখন আবার
সিরিয়াতে/মালিতে হিজরতের স্বপ্ন
দেখছেন। তাদের কাছে প্রশ্ন তাদের
এখানে এই মারেকা কিভাবে সৃষ্টি হল?
সেখানেও তো মুসলমানদের উপর যে
কাফির/মুরতাদ শাসক ছিল তাদের
বিরুদ্ধে জিহাদের মাধ্যমেই এই ফসল
এসেছে। সেখানে তো প্রথমেই কোন ইহুদী-
নাসারারা আক্রমণ করেনাই। আমরা কি
শুধু তাহলে ফলবান বৃক্ষ থেকে ফল পেতে
চাই? নাকি আমরা নিজেরাও গাছের
চারা লাগিয়ে ফল পর্যন্ত গাছের যত্ন
নিয়ে সেই ফল পেতে চাই?
.
• সবগুলো মারেকা/যুদ্ধক্ষেত্রের ধারণ
ক্ষমতা আছে। জিহাদের ময়দানে একই
সাথে অনেক মুজাহিদকে যেতে দেয়া
হচ্ছে না। বরং মুজাহিদীনদের ইমারাতের
পক্ষ থেকে দেশ ভিত্তিক কোটা
নির্ধারণ করে দেয়া আছে। এর বেশী
মুজাহিদ একই সময় জিহাদের ময়দানে
যেতে পারবেন না। এদেশের কতজন
মুসলমানের জন্য সম্ভব হিজরত করে
আফগানিস্তান কিংবা ইরাক চলে
যাওয়া? যদি হাতে গুনা ১০০ / ১৫০ জন ভাই
যেতেও পারেন, বাকী শত-শত ভাইদের কি
হবে? তারা কি ঘরে বসে থাকবেন?
উদাহরন স্বরুপ পাকিস্তান এর
ওয়াজিরিস্থানে এখন মুজাহিদীনরা
শক্তি সহ অবস্থান করছেন। কিন্তু
পাকিস্থানের শহরের মুজাহিদ ভাইরা কি
করছেন? তারা কি দল বেধে সবাই
ওয়াজিরিস্থানে চলে গেছেন। না বরং
তারা বিভিন্ন শহরে কিভাবে জিহাদকে
ছড়য়ে দেয়া যায় সে প্রচেষ্টা করছেন।
ঠিক তেমনি জিহাদকে ছড়িয়ে দেয়ার
জন্য আমাদেরকে যার যার এলাকায় কাজ
করতে হবে।
.
• অন্যান্য মহাদেশের বিভিন্ন জিহাদের
ময়দানে গেলে সেই জায়গার আমিররা
যার যার আশেপাশের জিহাদের ময়দানে
যেতে বলেন। যেমনঃ কেউ যদি এই দেশ
থেকে জিহাদ করতে ইয়েমেনে যায়, তবে
তাকে এশিয়াতে অর্থাৎ পাকিস্থান
কিংবা আফগানিস্থানের ময়দানে যেতে
বলা হয়। যাতে সেখান থেকে এই এলাকার
উপযোগী জিহাদ শিখে তিনি আবার নিজ
দেশে কাজ করতে পারেন। নিজের
এলাকায় আপনি যত ভালভাবে জিহাদের
কাজ করতে পারবেন অন্য জায়গায় তা এত
সহজে কখনই পারবেননা। ভাষা,
খাদ্যাভ্যাস, জলবায়ু থেকে শুরু করে
অস্ত্র সরবরাহের জন্য বিকল্প রাস্তা,
মুজাহিদদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য উপযুক্ত
জায়গা, দ্বীনে আনসার তৈরি – এসব
কাজের জন্যই নিজের দেশেই সর্বচ্চো
জিহাদের খেদমত সম্ভব। আর অন্য জায়গায়
গেলে ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, জলবায়ু –
এগুলোর সাথে খাপ খাওয়ানোই একটা
কঠিন ব্যাপার। কিছু নেতৃস্থানীয় ভাইদের
পক্ষেই সম্ভব এসব জায়গায় গিয়ে
ট্রেনিং নিয়ে নিজ দেশে এসে
একইভাবে মারেকা প্রস্তুতির জন্য কাজ
করা। সবার পক্ষে আবু মুসা’ব আল
জারকাবী হওয়া সম্ভব নয়। তিনি সেই
মর্যাদাবান মুজাহিদ যিনি
আফগানিস্তানে জিহাদের খেদমত দিয়ে
পরবর্তীতে আবার ইরাকে যেয়ে
জিহাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
.
• আমাদেরকে ভয় দেখানো হয় এই দেশ
ভারত দিয়ে পরিবেষ্টিত। এখানে কোন
কাজ করা সম্ভব নয়। আসলে হিন্দুদের
গোলামরাই আমাদের মাথায় এই ভয়
ঢুকাতে চায় যেন তাদের দাদারা আরামে
থাকে। মুলতঃ এই ভূমি কৌশলগত দিক
থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যদি
সিরিয়ার মত হলেও একটা এলাকায়
হুকুমাত প্রতিষ্ঠা করা যায় – আসাম,
আরাকান, পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুসলমানরা
এখানে হিজরত করতে আসতে পারবেন। আর
সাথে সাথে যা হবে পূর্ব ভারতের সাতটি
অঙ্গ রাজ্যেও ভারতবিরোধী বিদ্রোহ
অত্যন্ত চাঙ্গা হবে। বর্তমান পরিবর্তিত
বিশ্বের অন্যতম হারবী কুফফার ভারতের
জন্য হবে এটি বিশাল আঘাত। এই
পৌত্তলিক মুশরিকরাও এটা ভাল মতই বুঝে
তাই এরা সবসময় এই মুরতাদ শাসকগুলোকে
নিয়ন্ত্রণ করে, ট্রানশিপমেন্ট চায়,
এখানে মুসলমানদের উপর এখন অবর্ণনীয়
নির্যাতনের ইন্ধন যোগায়। এরা কাশ্মীরে
তো মুসলমানদের রক্ত, জান-মালের ক্ষতি
করছেই; সাথে আফগানিস্তান, মালি এসব
জায়গায় আর্থিক অনুদানও দিয়ে আসছে।
কাজেই, এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর
জন্য আমাদের উচিত নিজের জানমাল
দিয়ে এই ভূমিতে জিহাদে যোগ দেওয়া।
ﻭﺃﺧﺮ ﺩﻋﻮﺍﻧﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ ﺭﺏ ﺍﻟﻌﺎﻟﻤﻴﻦ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top