সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

শাইখুল হাদীস মুফতি মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন রহমানির গুরুত্বপূরন বার্তা বা ওসিয়তনামা

কোন মন্তব্য নেই:

হে মুসলিম! তোমার প্রতি বার্তা।
হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে কারন তোমাদেরকে আমি
ভালবাসি।
.
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি
ছাড়া ইবাদতযোগ্য কোন ইলাহ নেই, যিনি
সব দেখেন, সব শুনেন, সব কিছুর খবর
রাখেন, যিনি ফায়সালাকারী,
হিসাবগ্রহনকারী, বিনিময়দাতা এবং
শ্রেষ্ঠ বিচারক। যিনি নির্দেশ
দিয়েছেন-
‘‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর,
তাঁকে যেমন ভয় করা উচিত এবং অবশ্যই
মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’’ আল-
ইমরান ৩: ১০২
.
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
‘‘তোমাকে যেমন আদেতশ করা হয়েছে
(দ্বীনের পথে) অবিচল থাক।’’ (সূরা, হুদ
১১:১১২)
.
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
‘‘হে ঈমানদারগন! তোমাদের নিজেদেরকে
এবং নিজেদের পরিবারবর্গকে আগুন
থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং
পাথর।’’ (সূরা, তাহরীম ৬৬:৬)
.
মহান আল্লাহ সুবহানাহুওয়াতায়ালা আরো
বলেন,
‘‘তোমরা ধাবিত হও সেই পথে (যা নিয়ে
যাবে) তোমাদের সৃষ্টিকর্তার ক্ষমা এবং
জান্নাতের জন্য যা এতই প্রশ্বস্ত যেমন
আসমান এবং যমীনের মত, যা
মুত্তাক্বীদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা
হয়েছে।’’ (সূরা, আলে ইমরান ৩:১৩৩)
তিনি আরও বলেছেন-
‘‘ঈমানদার লোকদের জন্য সে সময় কি
এখনও আসেনি যে, আল্লাহর যিকরে
তাদের অন্তর বিগলিত হবে, তাঁর অবতীর্ন
মহাসত্যের সম্মুখে অবনত হবে? তারা যেন
সে লোকদের মত না হয় যাদেরকে পূর্বে
কিতাব দেয়া হয়েছিল, পরে দীর্ঘকাল
তাদের উপর দিয়ে চলে গেলে তাদের
অন্তর শক্ত হয়ে গিয়েছে।’’ (সূরা, আল
হাদীদ ৫৭ঃ১৬)
.
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
‘‘মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর
সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নিজেকে বিক্রয় করে
থাকে এবং আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি
পূর্ন দয়াশীল।’’ (সূরা, বাক্বারাহ ২ঃ২০৭)
সলাত এবং সালাম নাবী মুহাম্মদ
(সা) এর উপর, যিনি সুসংবাদদাতা এবং
সতর্ককারীরূপে প্রেরিত হয়েছিলেন।

যিনি বলেছেন,
‘‘ইহকাল অবশ্যই সবুজ, মিষ্ট ও আকর্ষণীয়।
আল্লাহ তোমাদেরকে পৃথিবীতে তাঁর
প্রতিনিধি করেছেন, যাতে তিনি দেখে
নেন তোমরা কিরূপ কাজ কর। কাজেই
তোমরা পৃথিবী সম্পর্কে সতর্ক হও এবং
নারীদের থেকে সাবধান থাক। কারণ
বানী ঈসরাঈলের প্রথম ফিতনাহ
নারীদের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছিল।’’
(মুসলিম হাঃ২৭৪২)
.
নাবী মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আরো বলেছেন,
‘‘প্রত্যেক বান্দাহকে ঐ অবস্থায়
পুনর্জীবিত করা হবে, যে অবস্থায় সে
মারা গেছে।’’মুসলিম হাঃ২৮৭৮
.
হে মুসলিম, আল্লাহ তোমার প্রতি রহম
করুন, আল্লাহর আনুগত্য অনুযায়ী তোমার
প্রতি আমার ওয়ালা ( দায়িত্ববোধ)
রয়েছে,আমি আমার নিজের যেরূপ কল্যাণ
চাই, অনুরূপ কল্যাণ তোমারও চাই।আল্লাহর
জন্য তোমাকে বলছি-
.
আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগুতকে
বজর্ন কর। একমাত্র আল্লাহর ইবাদতের
নির্দেশ দাও যার কোন শরীক নেই, এ
বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত কর, যে মেনে
নিবে তার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন কর এবং
যে তা অস্বীকার করবে তাকে কাফের
বলে ঘোষনা দাও। শিরককে পরিত্যাগ কর
এবং আল্লাহর ইবাদতে শিরকের বিষয়ে
ভয় প্রদর্শন কর, এ ব্যাপারে কঠোরতা
আরোপ কর, এ নীতির ভিত্তিতে শত্রুতা
স্থাপন কর এবং যে ব্যক্তি শিরক করে
তাকে কাফির বলে ঘোষনা দাও। এ
বিষয়গুলো তোমার প্রতি ওয়াজিব, এই
দ্বীনের ভিত্তি ও মৌলনীতির অন্তর্ভূক্ত।
.
তুমি তোমার দ্বীনকে, তোমার
আক্বীদাকে প্রকাশ কর, প্রচলিত শিরক-
কুফর-ত্বাগুতের স্বরূপ উন্মোচন কর,
কাফের-মুশরিক-ত্বাগুতের সাথে বারা‘আ
তথা সম্পর্কহীনতা, ঘৃনা-বিদ্বেষ-শত্রুতা
প্রকাশ করে দাও। এগুলো তোমার প্রতি
ওয়াজিব।
.
যদি না পার প্রকাশ করতে তাহলে
তোমার জন্য ওয়াজিব তুমি হিজরত করে
দুনিয়ার এমন জায়গায় চলে যাবে
যেখানে তোমার দ্বীনকে প্রকাশ করতে ও
যথাযথভাবে পালন করতে পারবে। যদি
হিজরত করতে না পার তোমার জন্য আদর্শ
হচ্ছে ছাগপাল নিয়ে পালিয়ে যাবে
পাহাড়ে তোমার দ্বীন নিয়ে।
.
যদি তাও না পার তোমার পরিবার ও
তোমার অসামর্থতার কারনে, তাহলে
কাফের-মুশরিক-ত্বাগুতের থেকে অবশ্যই
দূরে থাকবে, তাদেরকে বন্ধু বানাবে না।
সচেষ্ট থাকবে বাঁধা দূর হবার যেন সুযোগ
পেলেই চলে যেতে পার।
.
তুমি সাবধান হও,কাফেরদের সাথে
আচরন এবং মেলামেশায়, এমন কিছু কাজ
আছে যা করলে তুমি এই দ্বীন থেকে
খারিজ হয়ে কাফের-মুরতাদে পরিণত হবে,
সেগুলো যেমন- কাফেরদের দ্বীনকে
ভালবাসা,গনতন্তের চর্চা করা,গনতন্তের
নির্বাচনে অংশগ্রহন করা, গনতন্ত্রের
লোকদের গনতন্ত্রের জন্য ভালবাসা, আইন
প্রণয়নকারী সংসদ সদস্যদের ভালবাসা,
আধুনিকতাবাদী ও জাতীয়তাবাদীদের
ভালবাসা তাদের উদ্দেশ্য এবং
বিশ্বাসের কারনে, তাদেরকে ইসলামের
উপর বিজয়ী দেখতে আশা করা,
মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য করা,
তাদের দ্বীনের সাথে আপোষ করা
ইত্যাদি।
.
তুমি সাবধান হও!! কাফেরদের সাথে
আচরন এবং মেলামেশায়, এমন কিছু কাজ
আছে যা করলে তোমার ভয়ংকর কবিরাহ
গুনাহ হবে, সেগুলো যেমন- কুফফারদের
মর্যাদা দেয়া, সম্মান করা, অথবা
সমাবেশে অগ্রে স্থান দেয়া, মুসলিমের
বদলে তাদেরকে কাজে নিযুক্ত করা,
কাফেরদের সাথে নরম নরম কথা বলা,
তাদের প্রতি হাসা, তাদের ময়লা
পরিষ্কার করে দেয়া ইত্যাদি।
.
সাবধান হও কাফিরদের উপর সন্তুষ্ট
হইওনা, নির্ভর করো না, সান্নিধ্যের
অন্বেষণ করো না, অন্তরঙ্গ বন্ধু বানিয়ো
না, অনুগত হইও না, ভালবেসো না, কর্তৃত্ব
দিও না, সহযোগিতা করো না, উপদেশ-
পরামর্শ চেয়ো না, কুফরির কোন বিষয়ে
একমত পোষণ করো না, প্রশংসা- প্রশস্তি
করো না, অভিভাবক বানাইও না এমনকি
সে যদি ভাই বা পিতাও হয়। সতর্ক হও
তোমার অজান্তেই না আবার তোমার
দ্বীন ধ্বংস হয়ে যায় কিংবা ভয়কর
কবিরাহ গুনাহ হয়ে যায়।
.
সাবধান, সতর্কতার
নামে বেশী বাড়াবাড়ি করছো না তো যা
তোমার জন্য জরুরী নয়।
.
এই দ্বীনকে প্রচার, প্রসার এবং
কায়েমে সচেষ্ট হও, গাফিলতা পরিত্যাগ
কর, তোমার অবস্থা যেন বানী ইসরাঈলের
মত না হয় যাদের অনেক দিন যাওয়ার পর
অন্তর শক্ত হয়ে গিয়েছিল।
.
আল্লাহর কালিমাকে উচ্চে তুলে ধরার
জিহাদে জান-মাল দিয়ে অংশগ্রহণ কর,
তোমার উপর এটি ফারদুল আইন, ঈমান
আনার পর সবচেয়ে বড় ওয়াজিব, এই
দ্বীনের শীর্ষচুড়া, তোমার সফলতার
চুড়ান্ত পথ।
.
এ থেকে গাফেল থেকে যেন
মুনাফিক্বির শাখায় তোমার মৃত্যূ না হয়,
ফাসিক্ব না হয়ে যাও, আযাব স্পর্শ না
করে, আল্লাহ না আবার তোমাকে
পরিবর্তন করে দেন, সাবধান এই দ্বীনে
ফিরে আস।
.
তোমার পিতা, সন্তান, ভাই, স্ত্রী,
গোত্র-গোষ্ঠী, ধন-সম্পদ, ব্যবসা, বাসস্থান
যেন তোমার কাছে আল্লাহ, আল্লাহর
রাসুল এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের
চেয়ে অধিক প্রিয় না হয়, তাহলে তুমি
ফাসেক্ব হয়ে যাবে, আল্লাহর আযাব
স্পর্শ করবে। ওহে মুসলিম!! সাবধান-
গাফেল থেকো না, ওহে মুসলিম!! সাবধান-
গাফেল থেকো না, নিজেকে পরীক্ষা
করো- এখনই সময়। তুমি এইসব কিছুর চেয়ে
জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কাজকে কম
গুরুত্ব দিচ্ছ না তো, তুমি দুনিয়া বা অন্য
কিছুর পিছে ছুটছো না তো?
.
মুসলিমদের দেশগুলো কুফফাররা দখল
করে নিয়েছে, তাদের দ্বীন-সম্মান
ভুলন্ঠিত করছে, দুনিয়াব্যাপী মুসলিম
নারী-পুরুষ, শিশুদের নির্বিচারে হত্যা
করা হচ্ছে, পঙ্গু করা হচ্ছে, নারীদের
ইজ্জত হনন করা হচ্ছে, তাদের গর্ভ
অপবিত্র শুকর-বানরদের বাচ্চাতে ভরে
যাচ্ছে, কি লজ্জা!! তাদের আরতচিতকার
কি তোমার কানে পৌচছে না, কি জবাব
দেবে আল্লাহকে?। নারীরা বিধবা হয়ে
যাচ্ছে, বাচ্চারা ইয়াতীম হচ্ছে, ভাইদের
বন্দী করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে,
অত্যাচারের স্টীম রোলার চালানো
হচ্ছে, তাদের প্রতি এমনসব অকথ্য
নির্যাতন চালানো হচ্ছে যা বর্ননাতীত
,তাদেরকে লাঞ্চিত করা হচ্ছে,
তাদেরকে বলাৎকার করা হচ্ছে (ইন্না
লিল্লাহি…) তুমি কোথায়, হে খালিদের
উত্তরসুরী!! মুসলিম দেশগুলো কুফফাররা
দখল করে নিয়েছে, আর কোথাওবা রয়েছে
ইয়াহুদী-খ্রিষ্টানদের পা চাটা গোলাম
মুরতাদ শাসকেরা, যারা তাদের প্রভুদের
খুশি করতে মুসলিমদের বন্দী-হত্যা-নিরযাতন এমন কোন কাজ নেই যে তাদের
বাধে, আল্লাহর কালাম কুরআনকে
অবমাননা করা হচ্ছে-প্রিয়তম রাসুলের
ব্যঙ্গচিত্র অংকন করার স্পর্ধা
দেখিয়েছে- ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না
ইলাইহি রাজিউন… তুমি কোথায় হে অমুক
যে নিজেকে মুসলিম দাবী করছ!!! তুমি
কিসের পিছে ছুটছ?? তুমি আল্লাহকে কি
জবাব দেবে?? উম্মাহর রাসুলকে পর্যন্ত
নিয়ে ব্যংঙ্গ করা হচ্ছে- আর কি বাকি
থাকল?? এই অবস্থায় মাটির উপরের চেয়ে
মাটির নীচেই যে উত্তম! আল্লাহর জন্য
জিজ্ঞেস করছি- তুমি জেগে উঠবে কি?
.
আস তোমাকে দেখিয়ে দেই কিভাবে
তুমি সাপোর্ট করবে জিহাদকে- বিশুদ্ধ
নিয়্যাত রাখ জিহাদের, শাহীদ হওয়ার
কামনা কর, জিহাদে মাল দাও, অন্যদের
থেকে মাল সংগ্রহ কর, মুজাহিদদের
ফেমিলি দেখা-শুনা কর, মুজাহিদকে
প্রস্ত্তত করে দাও, জিহাদের জন্য
উৎসাহিত কর, মিডিয়ায় কাজ কর,
মুজাহিদদের হেফাযত কর,তাদের
বিষয়গুলো গোপন রাখ, তাদের জন্য দোয়া
কর, জিহাদের সংবাদ ফলো ও প্রচার কর,
জিহাদের ইলম ও ফিক্বহ শিখ,
মুজাহিদদের জ্ঞানগলো শিক্ষা দাও ও
ছড়িয়ে দাও, জিহাদের জন্য সব ধরনের
প্রস্ত্ততি নাও, মুজাহিদদের সাপোর্ট কর,
আল ওয়ালা ওয়াল বারার আক্বীদাহ
ডেভেলপ কর, মুসলিম বন্দী ও তাদের
পরিবারের দেখাশুনা কর, বিলাসিতা
ত্যাগ কর, জিহাদের বেনিফিট হবে এমন
টেকনিক শিখ, হক স্কলারদের চেনাও,
মুজাহিদদের নাসীহা দাও,
তাদের কল্যান কামনা কর, এই সময়ের
ফিরাওন ও মুনাফিকদের মুখোশ উন্মোচন কর,
জিহাদের নাসীদ বানাও কিংবা প্রচার,
কাফেরদের অর্থনেতিক বয়কট কর, আরবী
শিখ, তাইফাহ আল মানসুরাহকে তা
চেনাও, সরাসরি জিহাদে অংশ নাও। এই
হচ্ছে কিছু ওয়ে জিহাদকে সাপোর্ট
করার, সুতরাং অগ্রগামী হও, যত
বেশীভাবে সম্ভব তোমার সাপোর্ট শুরু
কর।
.
তুমি মুজাহিদিন, আল্লাহর পথে বন্দী
এবং তাদের ফেমিলির খোজ-খবর নিয়েছ
কি? তুমি তোমার সব প্রয়োজন মিটিয়ে
সুখে দিন কাটাচ্ছ, আর তারা
প্রয়োজনগ্রস্থ নয় তো? তোমাকে আল্লাহ
মুক্ত রেখে পরীক্ষা করছেন, তুমি আল্লাহ,
তাঁর রাসুল এবং ঈমানদারদের বন্ধু
হিসেবে নাও কিনা? সাবধান হয়ে যাও
বিপদ-বিপর্যয় তোমাকে স্পর্শ করার
আগে, আরও সাবধান হও যখন আল্লাহ
বলবেন- হে অমুক আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম
তুমি অন্ন দাও নি, আমি অসুস্থ ছিলাম
তুমি দেখতে যাও নি? তুমি আশ্চর্য হয়ে
বলবে- হে আল্লাহ আপনি পবিত্র, আমি
কিভাবে আপনাকে খাওয়াব বা দেখতে
যাব? আল্লাহ বলবেন, হে অমুক আমার অমুক
বান্দা ক্ষুদার্ত ছিল তাকে খাদ্য দিলে
তুমি আমাকে সেখানে পেতে, আমার অমুক
বান্দা অসুস্থ ছিল তাকে দেখতে গেলে
তুমি আমাকে সেখানে পেতে। সচেতন হও
অনেক বেশী দেরি হয়ে যাওয়ার আগে,
তুমি জেনে রেখো, বর্তমানে জিহাদের
জন্য যেমন মানুষ প্রয়োজন, তেমনি
প্রয়োজন মালের। তুমি তোমার ঘরের
অতিরিক্ত ফার্নিচার বা স্ত্রীর গহনা
কিনতে কিংবা অন্য বিলসিতায় যে অর্থ
ব্যয় করো এর অনেক কম মাল হলেই তারা
আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান
পরিচালনা করতে পারে।
.
তুমি কি জান এই সময়ের তাইফাহ আল
মানসুরাহ বা সাহায্যপ্রাপ্ত দল কারা?
যাদের ব্যাপারে উম্মাহর রাসুল
(সা:)
সুসংবাদ দিয়ে গেছেন যারা কিয়ামত
পর্যন্ত থাকবে যাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য
হবে ক্বিতাল বা শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ,
যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা
তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না-
চোখমেলে তাকাও কারা ইসলামের
শত্রুদের বিরুদ্ধে যোদ্ধা তাইফাহ- কারা
সমস্ত দুনিয়ার কাফেরদের সর্দার
আমেরিকা ও তাদের আহযাবের সাথে
অর্থাৎ জোট ও সহযোগীদের সাথে যুদ্ধ
করে যাচ্ছে? কারা মুসলিমদের ভূমিগুলো
থেকে কাফেরদেরকে বের করে দেয়ার
চেষ্টায় রত? কারা মাজলুমদের পাশে
দাড়াচ্ছে? কারা আল্লাহর কালিমাকে
উচ্চে তুলে ধরতে, শরীয়াহকে কায়িম
করতে, খিলাফতকে ফিরিয়ে আনতে
অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছে? কারা
মুসলিমদের উপর ঝেকে বসা মুরতাদদের
পরিবর্তনের জিহাদে রত? কারা মুসলিম
শিশু, মা-বোনদের ইজ্জাহ, বন্দী ভাইদের
রক্ষায় প্রাণ দিচ্ছে? কারা এই উম্মাহর
জন্য সর্বদা চিন্তিত? তুমি যদি অন্ধ-
বোবা ও কালা না হও,তবে নিশ্চয়ই
দেখতে পাচ্ছ কাদের বিরুদ্ধে সমস্ত
দুনিয়ার কুফফাররা একট্টা হয়েও আল্লাহর
পারমিশনে কোন ক্ষতি করতে পারছে না।
আল্লাহর জন্য বলছি, তাদেরকে খুঁজে বের
কর এবং তাদের সাথে লেগে থাকো।
অন্যদেরকে তাদের চিনাও, তাইফাকে
যতসম্ভব সাপোর্টে কর। তাহলে তোমার
জন্য সুসংবাদ হে গোরাবা।
.
আল্লাহর ফরযকৃত বিষয়গুলো পূর্ন
হিফাযত করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন কর,
নফল সমূহের ব্যাপারে অগ্রগামী হও যাতে
তুমি আল্লাহর ভালবাসা পেতে পার।
.
তুমি তোমার সলাতের ব্যাপারে
যত্নবান হও- ইখলাস সাথে, খুশু-খুযু সহকারে,
যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, জীবনের শেষ
সলাতের মত, যথা সময়ে, সুন্নাহ অনুসারে,
জামায়াতের সাথে সলাত আদায় কর।
পরিবার-পরিজনকে এর নির্দেশ দাও।
.
যাকাতের ব্যাপারে যত্নবান হও যদি
তোমার নিসাব পূরন হয়ে থাকে, যাকাত
মুজাহিদিনদের দাও। তবে যাকাত দিয়েই
ক্ষান্ত থেকো না, তোমার মাল দ্বারা
জিহাদ কর। জিহাদের প্রকার দু’টি- একটি
হল জীবন দিয়ে এবং অপরটি হল অর্থ
দিয়ে। সুতরাং জিহাদের কথা বলেই শুধু
ক্ষান্ত থেকো না, এটা তোমার ওজর
হিসেবে যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন হচ্ছে
পকেটে হাত ঢুকানো। সুতরাং পকেট
থেকে ব্যয় করার মাধ্যমে তুমি জিহাদের
অর্ধেক ফারজিয়াত আদায় করতে থাকো
যতক্ষন না শারিরীকভাবে জিহাদে
অংশগ্রহণ করতে পারছ। ইবনে তাইমিয়্যা
(রহ) বলেন, ‘‘যদি কোন ব্যক্তির পক্ষে
শশরীরে জিহাদ করা সম্ভব না হয় এবং সে
অর্থ দ্বারা জিহাদ করতে সক্ষম হয়, তবে
এটা তাদের জন্য ফারদ হয়।’’
.
আমলের ক্ষেত্রে সচেতন হও ইখলাসের
সাথে করার ব্যাপারে, যেন তা রিয়ার
কারনে ধ্বংস না হয়, সাবধান হও কবিরাহ
গুনাহগুলো থেকে যা তোমার
জাহান্নামের কারণ হতে পারে।
.
তুমি সচেতন হও আমর বিল মা’রুফ নাহি
আনিল মুনকারের ব্যাপারে, তুমি যেন এ
থেকে গাফেল থেকে অন্যদের সাথে
নিজেও ধ্বংস না হয়ে যাও, যেমন ধ্বংস
হয়েছিল শনিবারের সীমালংঘনকারীদের
কে বাধা না দান করীরা। জেনে রেখো
সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ
করা তোমার জন্য ফারদ।
.
সাবধান হও ওয়াদা, অংগীকার, চুক্তির
ব্যাপারে, অবশ্যই তা পূরন কর,
মুনাফিক্বদের মত তা ভঙ্গ কর না,
বর্তমানে অধিকাংশের মত হইও না যারা
এসবের মূল্য দেয় না, তুমি এ ব্যাপারে
তোমার রবের কাছে জিজ্ঞাসিত হবে।
ইলম অর্জনে সচেষ্ট হও, তুমি জেনে
রেখো কথা এবং কাজের পূর্বে ইলম,যারা
জানে এবং যারা জানে না তারা সমান
নয়, অন্ধকার এবং আলো সমান নয়,
পথভ্রষ্টতা আর হেদায়াত সমান নয়, সমান
নয় অজ্ঞতা, মুর্খতা আর বাসিরাহ ( স্পষ্ট
জ্ঞান)। তোমার প্রতি ফারদ দ্বীনের
ব্যাপারে জানা। তুমি সচেষ্ট হও তোমার
রব সম্পর্কে, তাঁর নাবী (স) সম্পর্কে,
তাওহীদ-ঈমান-ইসলাম সম্পর্কে জানার
ব্যাপারে। তুমি আরো মনোযোগ দাও
তোমার পরিবার-পরিজন এবং অন্যদেরকে
দ্বীনের ইলম শিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে,
হাক্ক ইলম ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে।
তোমার পরিবার যদি মুর্খ থাকে দ্বীনের
অধিকাংশ ব্যাপারে সে তোমার দ্বীনের
পথে অনেক বড় বাধার কারণ হতে পারে,
যা অভিজ্ঞতা থেকে প্রমানিত। তুমি
নিজেকে এবং আত্মীয়-স্বজনকে
জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও যার
ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর।

.তুমি সাবাধান হও তোমার অবসর সময়,
যৌবন, অর্থ উপার্জন ও ব্যয়, ইলম অনুযায়ী
আমাল করার ব্যাপারে- তুমি জেনে
রেখো এসব বিষয়ে তুমি কিয়ামতে
জিজ্ঞাসিত হবে যার উত্তর দেয়া ব্যতীত
এক পা ও নাড়াতে পারবে না। আবার
জিজ্ঞেস করি এগুলো তুমি আল্লাহর
সন্তুষ্টির পথে কাজে লাগাচ্ছো তো?
.
একটা সময় যখন তুমি দ্বীন বুঝেছিলে
তখন তোমার যে অগ্রগামিতা ছিল তা কি
স্তিমিত হয়ে গেছে? তুমি কি গাফিলতি,
অলসতা, অধিকাংশ সময় তোমার
নিজেকে নিয়ে কিংবা এই দুনিয়া ও
চাকরি, ব্যবসা বা এই জাতীয় কিছুর
পিছে ছুটছ?
.
তুমি প্রত্যহ কিছু সময় কুরআন বুঝা ও
চিন্তা- গবেষনার কাজে ব্যয় কর, যা
তোমার জন্য রহমত, হিদয়াত এবং অন্তর
রোগের ঔষধ হবে।
.
ওহে কু প্রবৃত্তির অনুসরন থেকে সাবধান
হও, তোমার মন যা চায় তা করো না,
আল্লাহ যা চান তা করো। তোমার অবসর
সময়কে যথাযথ কাজে লাগাও।
.
আল্লাহকে ভয় কর! আল্লাহকে ভয় কর!!
আল্লাহকে ভয় কর!!! ওহে মুসলিম,
তোমাকে আল্লাহর সামনে দাড়াতে হবে,
তোমার হিসাব নেয়ার জন্য আআল্লাহই
যথেষ্ট, যিনি সব জানেন তুমি যা গোপন
কর ও প্রকাশ কর। তোমাকে অবশ্যই
মৃত্যুবরন করতে হবে, যখন তুমি দুনিয়ার সব
সব ছেড়ে চলে যাবে শুধু তুমি আখিরাতের
জন্য যা সঞ্চয় করেছ তা নিয়ে, সাবধান
হও তোমার শেষ আমালের ব্যাপারে, তুমি
জাননা কখন তোমার শেষ মুহুর্ত, তুমি কি
প্রস্ত্তত মৃত্যুর জন্য? তুমি কি প্রস্ত্তত
কবরের সাওয়াল-জাওয়াবের জন্য? তুমি
কি প্রস্ত্তত ভয়াবহ কিয়ামতের জন্য?
হাশরের ময়দানের জন্য? হিসাব নিকাশের
জন্য? আল্লাহকে জবাব দেয়ার জন্য?
মিযানের জন্য? তুমি কি প্রস্ত্তত চুলের
চাইতে সুক্ষ-তরবারীর চাইতে ধারালো
পুলসিরাত কে পারি দেয়ার জন্য?
.
তুমি ভয়ংকর জাহান্নামের আগুন থেকে
আত্মরক্ষার জন্য কাজ করছ তো? যার ইন্ধন
মানুষ এবং পাথর, যার আগুন ভয়কর উত্তাপ
সম্পন্ন কালো বর্নের, যা হৃদয় পর্যন্ত
জ্বালিয়ে দেবে, এমন উত্তপ্ত পানি যা
নাড়ি-ভুড়িকে বের করে দিবে, রয়েছে
খাবার হিসেবে জাক্কুম ও গলিত পুঁজ,
জাহান্নাম অসম্ভব গভীর, ভয়াল জায়গা,
কঠোর হৃদয় ফিরিশতারা নিযুক্ত, যেখানে
শাস্তির মাত্রা বৃদ্ধির জন্য শরীরকে
অনেক বড় করে দেয়া হবে, চামড়াগুলো
জ্বলে যাবে, বের হতে চাইবে বের হতে
পারবে না, মৃতুকে ডাকবে মৃতু আসবে না-
ভয়ংকর শাস্তি যা অনন্তকাল ব্যাপী
চলতে থাকবে।
.
তুমি অগ্রগামী হও সেই চিরস্থায়ী
জান্নাতের দিকে যেখানে রয়েছে
চিরত্মন সুখ, যা মন চাইবে তাই পাবে, যা
আদেশ করবে তাই দেয়া হবে, জেনে
রেখো দুনিয়া চাওয়া পাওয়ার পূর্নতার
স্থান নয়, জান্নাতই হচ্ছে এমন জায়গা যা
তোমার সব আকাঙ্খাকে পূর্ন করবে। চির
কিশোর সেবকগন, চির যৌবনা সঙ্গিনিগন,
ফলমুল, গোশত, দুধের-মধুর-শরাবের নহর,
উত্তম বাসস্থান ও বিছানা, চির আরাম,
চির যৌবন, চির সুখ। অসংখ্য নেয়ামতের
মাঝে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হবে তুমি
আলস্নাহকে দেখবে। শুধু তোমাকে এটা
বলাই যথেষ্ট মনে করছি- সবচেয়ে কম
মর্যাদার যে জান্নাত লাভ করবে তা হবে
দুনিয়ার দশটির সমান!!!
.
সুতরাং হে মুসলিম, আল্লাহ তোমার
প্রতি রহম করুন, এই বার্তা তোমার কাছে
পৌছার পর আশা করি তা তোমার
পরিবর্তন এবং সংশোধনে যথেষ্ট হবে,
গতানুগতিক চিঠি হিসেবে নিও না যা
পড়ে ফেলে দেয়া হয়-আল্লাহর জন্য বলছি
এর দ্বারা নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা
কর। আর তোমার অবস্থা যদি উত্তম হয় এর
চেয়ে যা উল্লেখ করলাম-আল্লাহর কাছে
কামনা করি তোমাকে তিনি দৃঢ় রাখুন-
মাওত পর্যন্ত লেগে থাকো উত্তম ঈমান
সহ।
.
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যার নিয়ামতে
ভাল কাজ সংঘটিত হয়ে থাকে। সলাত
এবং সালাম নাবী সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর পরিবার-
পরিজনের উপর। আপনার দোয়ায় আল্লাহর
এ ক্ষুদ্র বান্দাহকে ভুলবেন না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top