মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ত্বাগুত-১

কোন মন্তব্য নেই:

তাগুত: একটি সরল উপস্থাপনা
মহান আল্লাহ বান্দার উপর ফরয করেছেন
যেন একমাত্র তাঁরই ইবাদত করা হয়, এবং
এটাই হলো সেই তাওহীদ যা ছিল সকল
নবীগণের ( ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ) দাওয়াতের মূল
বিষয়।
.
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:
ﻭَﻣَﺎ ﺧَﻠَﻘْﺖُ ﺍﻟْﺠِﻦَّ ﻭَﺍﻟْﺈِﻧﺲَ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻴَﻌْﺒُﺪُﻭﻥِ
“আমার ইবাদত করার জন্যই আমি জিন ও
মানব জাতি সৃষ্টি করেছি।” (সূরা
যারিয়াত: ৫৬)
.
আর “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” হলো পবিত্র
কালিমা তাওহীদ যার উপর ভিত্তি করে
টিকে থাকে দ্বীন ইসলাম। একথা জানা
প্রয়োজন যে, আল্লাহ তাআলা মানব
জাতির উপর সর্বপ্রথম যা ফরয করেছেন
তা হচ্ছে তাগুতের সাথে কুফরী এবং
আল্লাহর উপর ঈমান।
.
অর্থাৎ,
“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর রুকন বা
ভিত্তি দু’টো:
১। কুফর বিত্ তাগুত
২। ঈমান বিল্লাহ
.
আল্লাহ তাআলা বলেন:
ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﺑَﻌَﺜْﻨَﺎ ﻓِﻲ ﻛُﻞِّ ﺃُﻣَّﺔٍ ﺭَّﺳُﻮﻻً ﺃَﻥِ ﺍﻋْﺒُﺪُﻭﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ
ﻭَﺍﺟْﺘَﻨِﺒُﻮﺍْ ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕَ
“আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল
প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা
আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুতকে
বর্জন করো।” (সূরা নাহল: ৩৬)
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺍﺟْﺘَﻨَﺒُﻮﺍ ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕَ ﺃَﻥ ﻳَﻌْﺒُﺪُﻭﻫَﺎ ﻭَﺃَﻧَﺎﺑُﻮﺍ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺒُﺸْﺮَﻯ ﻓَﺒَﺸِّﺮْ ﻋِﺒَﺎﺩِ
“যারা তাগুতের পূজা-অর্চনা থেকে দূরে
থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের
জন্যে রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, সুসংবাদ
দিন আমার বান্দাদেরকে।” (সূরা যুমার:
১৭)
.
ﻓَﻤَﻦْ ﻳَﻜْﻔُﺮْ ﺑِﺎﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻭَﻳُﺆْﻣِﻦ ﺑِﺎﻟﻠّﻪِ ﻓَﻘَﺪِ ﺍﺳْﺘَﻤْﺴَﻚَ
ﺑِﺎﻟْﻌُﺮْﻭَﺓِ ﺍﻟْﻮُﺛْﻘَﻰَ ﻻَ ﺍﻧﻔِﺼَﺎﻡَ ﻟَﻬَﺎ ﻭَﺍﻟﻠّﻪُ ﺳَﻤِﻴﻊٌ ﻋَﻠِﻴﻢٌ
“সুতরাং যে তাগুতের সাথে কুফরী করে
এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে সে এমন
মজবুত রজ্জুকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে
যার কোন বিভক্তি বা চিড় নেই, আর
আল্লাহ সর্ব শ্রোতা ও সর্ব
জ্ঞানী।” (সূরা বাকারা: ২৫৬)
.
ﺍﻟﻠّﻪُ ﻭَﻟِﻲُّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻳُﺨْﺮِﺟُﻬُﻢ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻈُّﻠُﻤَﺎﺕِ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟﻨُّﻮُﺭِ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺂﺅُﻫُﻢُ ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕُ ﻳُﺨْﺮِﺟُﻮﻧَﻬُﻢ
ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻨُّﻮﺭِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻈُّﻠُﻤَﺎﺕِ ﺃُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻫُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ
ﺧَﺎﻟِﺪُﻭﻥَ
“যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের
অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে
আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে।
আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক
হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো
থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে
যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী,
চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে।” (সূরা
বাকারা: ২৫৭)
.
ﺃَﻟَﻢْ ﺗَﺮَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃُﻭﺗُﻮﺍْ ﻧَﺼِﻴﺒًﺎ ﻣِّﻦَ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ
ﺑِﺎﻟْﺠِﺒْﺖِ ﻭَﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻭَﻳَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ ﻫَﺆُﻻﺀ
ﺃَﻫْﺪَﻯ ﻣِﻦَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺳَﺒِﻴﻼً
“তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা
কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়েছে,
যারা মান্য করে জিবত ও তাগুতকে এবং
কাফেরদেরকে বলে যে, এরা মুসলমানদের
তুলনায় অধিকতর সরল সঠিক পথে
রয়েছে।” (সূরা নিসা: ৫১)
.
ﺃَﻟَﻢْ ﺗَﺮَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺰْﻋُﻤُﻮﻥَ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ
ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻠِﻚَ ﻳُﺮِﻳﺪُﻭﻥَ ﺃَﻥ ﻳَﺘَﺤَﺎﻛَﻤُﻮﺍْ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻭَﻗَﺪْ ﺃُﻣِﺮُﻭﺍْ ﺃَﻥ ﻳَﻜْﻔُﺮُﻭﺍْ ﺑِﻪِ ﻭَﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ
ﺃَﻥ ﻳُﻀِﻠَّﻬُﻢْ ﺿَﻼَﻻً ﺑَﻌِﻴﺪًﺍ
“আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা
দাবী করে যে, আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ
হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ
হয়েছে হয়েছে সে বিষয়ের উপর তারা
ঈমান এনেছে। তারা বিরোধীয় বিষয়কে
তাগুতের দিকে নিয়ে যেতে চায়, অথচ
তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে,
তারা যেন তাকে অস্বীকার করে।
পক্ষান্তরে শয়তান তাদেরকে প্রতারিত
করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।” (সূরা
নিসা: ৬০)
.
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ
ﻳُﻘَﺎﺗِﻠُﻮﻥَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻓَﻘَﺎﺗِﻠُﻮﺍْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ
ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺇِﻥَّ ﻛَﻴْﺪَ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﻛَﺎﻥَ ﺿَﻌِﻴﻔًﺎ
“যারা ঈমানদার তারা যে জিহাদ করে
আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা
কাফের তারা লড়াই করে তাগুতের পক্ষে।
সুতরাং তোমরা জিহাদ করতে থাকো
শয়তানের পক্ষাবলম্বনকারীদের বিরুদ্ধে,
(দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই
দুর্বল।” (সূরা নিসা: ৭৬)
.
তাগুতের সাথে কুফরীর ধরন হলো:
“লা ইলাহা”—“নেই কোন ইলাহ” বাক্যটি
নেতিবাচক; অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য
সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে
বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও
অপছন্দ করা, এবং যারা তা (আল্লাহ
ছাড়া অন্য কোনকিছুর উপাসনা) করবে
তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে
শত্রুতা পোষণ করা।
.
আল্লামা ইদরিস কান্ধলবি আল হানাফী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “হযরত ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ
ﺳﻠﻢ) এর কুফর ও শিরক বিরোধী প্রকাশ্য
ঘোষনা এবং মূর্তি ও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে
ঘৃণার দরুন তাঁর ও তাঁর সাহাবাদের ( ﺭﺿﻲ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻢ ) তীব্র শত্রুতা ও বিরোধীতার
মুখে অটল থাকা এ বিষয়েরই প্রকাশ্য
প্রমাণ যে, ঈমান এবং ইসলামের জন্য
কেবল অন্তরে সত্যায়ন অথবা মৌখিক
স্বীকৃতিই যথেষ্ট নয়, বরং কুফর ও কাফের
এবং শিরকের বৈশিষ্ট্য ও আনুষঙ্গিকতার
বিরোধীতাও জরুরি এবং সেগুলো অপছন্দ
করাও অত্যাবশ্যক।” (সিরাতে মুস্তফা
সাঃ, ১/১৫৫)
.
তিনি ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) আরও বলেন, “মহান
পয়গম্বর ( ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ) গণের সুন্নাহ তথা
আদর্শ তো এটাই যে, যেভাবে তাঁরা
বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর
প্রতি ইমান ও সত্যায়নের আহবান জানান,
ঠিক তেমনিভাবে কুফর, শিরক ও
তাগুতকেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করা ও
অস্বীকারের আহবান জানান।” (সিরাতে
মুস্তফা সাঃ, ১/১৫৬)
.
আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো:
দ্বিতীয় রুকন ‘ইল্লাল্লাহ’ হলো ইতিবাচক।
অর্থাৎ শিরকমুক্ত শুধুমাত্র এক আল্লাহর
ইবাদত প্রতিষ্ঠার অংগীকার।
.
আল্লাহ তাআলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য
ও ইলাহ, অন্য কেউ নয়—একথা বিশ্বাস
করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার সাথে
আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করা যাতে এর
কোন অংশ অন্য কোন উপাস্যের জন্য
নির্দিষ্ট না হয়; আর মুখলিস বা
নিষ্ঠাবানদের ভালবাসা, তাদের সাথে
আনুগত্যের সম্পর্ক স্থাপন করা, মুশরিকদের
ঘৃণা ও অপছন্দ করা, তাদের সাথে শত্রুতা
করা।
.
আর এটাই হলো ইবরাহীম ( ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ) এর
প্রতিষ্ঠিত দ্বীন বা মিল্লাত, যে ব্যক্তি
এর থেকে বিমুখ হবে সে তো স্বয়ং
নিজেকেই বোকা বানাবে, আর এটাই হলো
সে আদর্শ ( ﺃﺳﻮﺓ ) যার কথা আল্লাহ
তাআলা তাঁর বাণীতে বলেছেন:
ﻗَﺪْ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻟَﻜُﻢْ ﺃُﺳْﻮَﺓٌ ﺣَﺴَﻨَﺔٌ ﻓِﻲ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣَﻌَﻪُ
ﺇِﺫْ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻟِﻘَﻮْﻣِﻬِﻢْ ﺇِﻧَّﺎ ﺑُﺮَﺍﺀ ﻣِﻨﻜُﻢْ ﻭَﻣِﻤَّﺎ ﺗَﻌْﺒُﺪُﻭﻥَ ﻣِﻦ
ﺩُﻭﻥِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻛَﻔَﺮْﻧَﺎ ﺑِﻜُﻢْ ﻭَﺑَﺪَﺍ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻜُﻢُ ﺍﻟْﻌَﺪَﺍﻭَﺓُ
ﻭَﺍﻟْﺒَﻐْﻀَﺎﺀ ﺃَﺑَﺪًﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺆْﻣِﻨُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺣْﺪَﻩُ
“তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর
সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে।
তাঁরা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিলেন:
তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর
পরিবর্তে যার ইবাদত করো, তার সাথে
আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা
তোমাদের মানি না। তোমাদের ও
আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা বজায় থাকবে
যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এক আল্লাহর
প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করো।” (সূরা
মুমতাহিনা: ৪)
.
তাগুত এর আভিধানিক সংজ্ঞা:
তাগুত শব্দের অর্থ হচ্ছে সীমালংঘনকারী,
আল্লাহদ্রোহী, বিপথে পরিচালনাকারী।
তাগুত শব্দটি আরবী (তুগইয়ান) শব্দ থেকে
উৎসারিত, যার অর্থ সীমালংঘন করা,
বাড়াবাড়ি করা, স্বেচ্ছাচারিতা।
তাগুত শব্দের শর‘য়ী সংজ্ঞা:
উমর ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) বলেন, “জিবত শব্দের
অর্থ হচ্ছে যাদু এবং তাগুত শব্দের অর্থ
হচ্ছে শয়তান।” (তাফসীরে ইবন
কাসির-২/৪৪৪, সূরা নিসা: ৫১ এর
তাফসীর, তাফসীরে মা‘আরিফুল কুরআন:
২/৪১৩)
.
জাবির ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ) তাগুত সম্পর্কে
জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেন, “তারা ছিলো
যাদুকর এবং তাদের কাছে শয়তান
আসতো।” (তাফসীরে ইবন কাসির-২/৪৪৪,
.
সূরা নিসা: ৫১ এর তাফসীর)
মুজাহিদ ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “তারা হচ্ছে
মানুষরূপী শয়তান। তাদের কাছে মানুষ
তাদের বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হয় এবং
তাদেরকে বিচারক মেনে
নেয়।” (তাফসীরে ইবন কাসির-২/৪৪৪,
সূরা নিসা: ৫১ এর তাফসীর)
.
ইমাম মালেক ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) তাগুতের
সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন:
“আল্লাহ তাআলাকে বাদ দিয়ে যার
ইবাদত করা হয়, এমন প্রত্যেক
জিনিসকেই তাগুত বলা হয়।” (ফতহুল
ক্বাদীর, আল্লামা শওক্বানী)
.
ইমাম ইবনে জারির তাবারি আশ-
শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “আমাদের
মতে সঠিক মত হলো, আল্লাহর উপর
সীমালংঘনকারী মাত্রই তাগুত বলে
চিহ্নিত, যার অধীনস্থ ব্যক্তিরা
চাপের মুখে বা তাকে তোষামোদ
করার জন্য বা তার আনুগত্য প্রকাশ
করার জন্য তার ইবাদত করে। এ (তাগুত)
উপাস্যটি মানুষ কিংবা শয়তান
কিংবা মূর্তি কিংবা প্রতিমা অথবা
অন্য যেকোন কিছুর হতে
পারে।” (তাফসীর আত্ তাবারি,
ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ৫ম
খন্ড, সূরা বাকারা: ২৫৬ নং আয়াতের
তাফসীর)
.
ইমাম ইবন জারির তাবারি আশ-
শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “ঐ সকল
আল্লাহদ্রোহী যারা আল্লাহর
নাফরমানী করে সীমালংঘন করেছে
এবং মানুষ যাদের আনুগত্য করে। সে
মানুষ, জ্বিন, শয়তান, প্রতিমা বা অন্য
কিছুও হতে পারে।” (তাফসীর আত্
তাবারি: ৩/২১)
.
ইমাম নববী আশ-শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ )
বলেন, “আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদাত
করা হয় তারাই তাগুত। এটাই লাইস, আবু
উবাইদা, কেসায়ি এবং বেশীরভাগ
আরবী ভাষাবিদদের অভিমত।” (শরহে
মুসলিম: ৩/১৮)
.
ইমাম কুরতুবি আল-মালেকী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ )
বলেন, “তাগুত হচ্ছে গণক, যাদুকর, শয়তান
এবং পথভ্রষ্ট সকল নেতা।” (আল-জামে
লি আহকামিল কুরআন: ৩/২৮২)
.
ইমাম ইবনে তাইমিয়া আল-হাম্বলী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “আল্লাহ ছাড়া
যাদের ইবাদাত করা হয় তারাই তাগুত,
যদি তারা তাদের এই ইবাদতে অসন্তুষ্ট
না হয়। এ কারণেই আল্লাহর রাসূল
মুহাম্মাদ ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ) মূর্তিকে
তাগুত বলেছেন।” (মাজমাআতুল
ফাতাওয়া: ২৮/২০০)
.
ইমাম ইবনে তাইমিয়া আল-হাম্বলী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “আল্লাহর কিতাব
ছাড়া যার কাছে বিচার ফায়সালা
চাওয়া হয়, তাকেই তাগুত নামে
আখ্যায়িত করা হয়।” (মাজমাআতুল
ফাতাওয়া: ৭০১/৭৮)
.
ইমাম ইবনে কাসীর আশ-শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ
ﺍﻟﻠﻪ) বলেন, “হযরত উমরের ( ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ )
তাগুতের অর্থ শয়তান নেয়া যথার্থই
হয়েছে। কেননা সমস্ত খারাপ কাজই এর
অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেগুলো অজ্ঞতার
যুগের লোকদের মাঝে বিদ্যমান ছিল।
যেমন প্রতিমার পূজা, তাদের কাছে
অভাব-অভিযোগ পেশ করা এবং
বিপদের সময় তাদের কাছে সাহায্য
চাওয়া ইত্যাদি।” (তাফসীর ইবনে
কাসির ১/৭১৪, সূরা বাকারা: ২৫৬ এর
তাফসীর)
.
ইমাম ইবনে কাসীর আশ-শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ
ﺍﻟﻠﻪ) বলেন, “এ আয়াত প্রত্যেক ঐ
ব্যক্তির দুর্নাম ও নিন্দা করছে, যে
কিতাব ও সুন্নাহকে ছেড়ে অন্য কোন
বাতিলের দিকে স্বীয় ফায়সালা
নিয়ে যায়। এখানে এটাই হচ্ছে
তাগুতের ভাবার্থ।” (তাফসীর ইবনে
কাসির ২/৪৬৩, নিসা: ৬০ এর তাফসীর)
.
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-হাম্বলী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “তাগুত হচ্ছে এমন যে
কেউ যার প্রতি বান্দা (আবদ)
সীমালংঘন করে, সেটা কাউকে ইবাদত
করা (মা’বুদিন) বা অনুসরণ করা
(মাতবুইন) বা মান্য করা (মুতাইন) যাই
হোক না কেন।” (ই’লামুল মুওয়াক্কিইন)
.
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-হাম্বলী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “তাগুত হচ্ছে ঐ সকল
মা’বুদ, নেতা, মুরব্বি যাদের আনুগত্য
করতে গিয়ে সীমালঙ্ঘন করা হয়।
আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে বাদ দিয়ে
যাদের কাছে বিচার ফায়সালা চাওয়া
হয়, অথবা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের
ইবাদাত করা হয়, অথবা আল্লাহর পক্ষ
থেকে কোন দলিল-প্রমাণ ছাড়া যাদের
আনুগত্য করা হয় এরাই হলো পৃথিবীর বড়
বড় তাগুত। তুমি যদি এই তাগুতগুলো এবং
মানুষের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য করো
তবে বেশীরভাগ মানুষকেই পাবে যারা
আল্লাহর ইবাদতের পরিবর্তে তাগুতের
ইবাদত করে। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের
কাছে বিচার-ফায়সালা চাওয়ার
পরিবর্তে তাগুতের কাছে বিচার-
ফায়সালা নিয়ে যায়। আল্লাহ এবং
তাঁর রাসূলের আনুগত্য করার পরিবর্তে
তাগুতের আনুগত্য করে।” (ই’লামুল
মুওয়াক্কিইন: ১/৫০)
.
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-হাম্বলী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) তাগুতকে ৫ টি শ্রেণীতে
ভাগ করেছেন,
১. শাইতন বা শয়তান
.
২. যার ইবাদত/উপাসনা/পূজা করা হয় এবং
সে এটি নিয়ে সন্তুষ্ট।
.
৩. যে অপরকে তার ইবাদাত/উপাসনা/পূজা
করতে আহবান করে বা ডাকে।
.
৪. যে গায়েব বা অদৃশ্য-এর জ্ঞান জানার
দাবি করে।
.
৫. যে আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা
ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে শাসন করে।
(মাদারিজুস-সালিকিন )
শাইখুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল
ওয়াহ্হাব আল-হাম্বলী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ )
বলেন, “তাগুত হচ্ছে ঐ সকল মা’বুদ,
নেতা, মুরব্বি, আল্লাহর পরিবর্তে
যাদের আনুগত্য করা হয় এবং তারা এতে
সন্তুষ্ট থাকে।” (মাজমাআতুত-তাওহীদ:৯)
.
শাইখুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল
ওয়াহ্হাব আল-হাম্বলী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ )
তাগুতকে ৫ টি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন,
কিন্তু ৫ম ভাগটিতে পার্থক্য রয়েছে,
১. শাইতন বা শয়তান
.
২. যে আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তা
ব্যতীত অপর কিছু দিয়ে বিচার করে।
.
৩. যে আল্লাহ্র পাশাপাশি গইব বা
অদৃশ্যের জ্ঞানের দাবি করে।
.
৪. যার ‘ইবাদাত/উপাসনা/পূজা করা হয়
এবং সে এটি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে।
.
৫. সেই অত্যাচারী বিচারক, যে আল্লাহ্র
বিচারে পরিবর্তন করে। (আদ-দারার আস-
সুন্নিয়্যাহ, ভলিউম: ০১, পৃষ্ঠা: ১০৯-১১০)
.
আল্লামা শাব্বির আহমাদ উসমানি
আল-হানাফী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “হযরত
শাহ সাহেব [মাওলানা শাহ আব্দুল
কাদির দেহলাবি আল-হানাফী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ
ﺍﻟﻠﻪ)] বলেন, ‘তাগুত হচ্ছে তারা, যারা
ভিত্তিহীনভাবে নের্তৃত্বের দাবি
করে। প্রতিমা, শয়তান, স্বেচ্ছাচারী
শাসক সবই এর অন্তর্ভুক্ত।’” (তাফসীরে
উসমানিঃ২/৫৪৫)
.
মুফতি মুহাম্মাদ শফি আল-হানাফী
( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “তাগুত শব্দের অর্থ
ঔদ্ধত্য প্রকাশকারী। আর প্রচলিত
অর্থে ‘তাগুত’ বলা হয় শয়তানকে। এ
আয়াতে বিরোধীয় বিষয়টিকে কা‘ব
ইবনে আশরাফের কাছে নিয়ে
যাওয়াকে শয়তানের কাছে নিয়ে
যাওয়া সাব্যস্ত করা হয়েছে। তা হয় এই
কারণে যে, কা‘ব নিজেই ছিল শয়তান
কিংবা এই কারণে যে, শরীয়তের
ফায়সালা বর্জন করে শরীয়তবিরোধী
মীমাংসার দিকে ধাবিত হওয়া,
শয়তানেরই শিক্ষা হতে পারে। বস্তুত
যে লোক সেই শিক্ষার অনুসরণ করেছে,
শয়তানের কাছেই সে যেন নিজের
মোকাদ্দমা নিয়ে গেছে।” (তাফসীরে
মা‘আরিফুল কুরআন: ২/৪৩৯-৪৪০)
উস্তাদ সাইয়্যেদ কুতুব শহীদ আশ-
শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “তাগুত
বলতে সেইসব ব্যক্তি ও ব্যবস্থাকে
বোঝায় যেগুলো ঐশী দ্বীন এবং
নৈতিক, সামাজিক ও আইন-শৃঙ্খলাকে
অবমাননা করে এবং আল্লাহ
নির্দেশিত বা তাঁর দেয়া দিক-
নির্দেশনা থেকে উদ্ভূত নয় এমন সব
মূল্যবোধ ও রীতিনীতির ভিত্তিতে
জীবনব্যবস্থা পরিচালনা
করে।” (তাফসীরে ফী যিলালিল
কোরআন)
.
উস্তাদ সাইয়্যেদ কুতুব শহীদ আশ-
শাফেয়ী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “যারা
সত্যকে অমান্য করে, ইবাদতের
ক্ষেত্রে আল্লাহর দেয়া সীমারেখা
অতিক্রম করে, আল্লাহর দেয়া
শরীয়তের কোন তোয়াক্কা করে না,
ইসলামি আক্বীদাহ-বিশ্বাসের কোন
গুরুত্ব রাখে না, যারা ইবাদতের
ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্ধারিত পদ্ধতি
বাদ দিয়ে অথবা আল্লাহর পক্ষ থেকে
অনুমোদন ছাড়া ইবাদতের পদ্ধতি তৈরি
করে, যারা বিশেষ প্রকার ধ্যান করা
অথবা বিশেষ ভঙ্গিমা অথবা কোন
ইবাদতের বিশেষ আদব তৈরি করে
তারা সকলেই তাগুত। এমনিভাবে যারা
বিশেষ কোন ব্যক্তির অন্ধ অনুকরণে
জনসাধারণকে বাধ্য করে তারাও
তাগুত।” (তাফসীরে ফী যিলালিল
কোরআন: ১/২৯২)
.
শাইখ মুহাম্মাদ আমিন শানকিত্বি আল-
মালেকী ( ﺭﺣﻴﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ) বলেন, “আল্লাহ
ছাড়া যাদের ইবাদাত করা হয় তারাই
তাগুত। আর এই গাইরুল্লাহর ইবাদতের বড়
অংশটাই হচ্ছে শয়তানের জন্য। কেননা
শয়তানের আহবানে সাড়া দিয়ে কোন
গাইরুল্লাহর ইবাদাত করা পরোক্ষভাবে
শয়তানেরই ইবাদতের শামিল। এ
কারণেই আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘হে
বনী আদম! আমি কি তোমাদের বলে
রাখিনি যে শয়তানের ইবাদাত
করোনা?’ (সূরা ইয়াসিন:
৬০)” (তাফসীরে আদওয়াউল বয়ান:
১/২২৮)
.
মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক আল-
হানাফী ( ﺩﺍﺑﺖ ﺑﺮﻛﺘﻪ ) বলেন, “‘তাগূতের
অর্থ আল্লাহর ঐ বিদ্রোহী বান্দা, যে
আল্লাহর মোকাবেলায় নিজেকে
বিধানদাতা মনে করে এবং মানুষের
উপর তা কার্যকর করতে চায়।
প্রকৃতপক্ষে কোন তাগুত ব্যক্তি বা
দলের বানানো আইন-কানুন হচ্ছে সত্য
দ্বীন ইসলামের বিপরীতে বিভিন্ন
‘ধর্ম’, যা থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করা
ছাড়া ঈমান সাব্যস্ত হয়না। আল্লাহর
বিরুদ্ধে কিংবা আল্লাহর উপাসনার
পাশাপাশি তাগুতের উপাসনা বা
আনুগত্য করা কিংবা তা বৈধ মনে করা,
তদ্রুপ আল্লাহর দ্বীনের মোকাবেলায়
বা তার সাথে তাগূতের আইন-কানুন
গ্রহণ করা বা গ্রহণ করাকে বৈধ মনে
করা সরাসরি কুফর ও শিরক। তাগূত ও
তার বিধি-বিধান থেকে সম্পর্কচ্ছেদ
ছাড়া ঈমানের দাবি নিফাক ও
মুনাফিকী।” (ঈমান সবার আগে-৩,
মাসিক আল-কাউসার মে-২০১৩)
.
মাওলানা মুহাম্মাদ মাসঊদ আযহার
আল-হানাফী ( ﺩﺍﺑﺖ ﺑﺮﻛﺘﻪ ) বলেন,
১। ইসলাম বিরোধী প্রত্যেক শক্তির নামই
তাগুত।
.
২। তাছাড়া, তাগুত হলো সেইসব ব্যক্তি
যারা মানুষকে সত্য দ্বীন থেকে
বিপথগামী করে-হোক সে মানুষ অথবা
জ্বীন।
.
৩। যারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করে-সেই ধরনের প্রত্যেক ব্যক্তিই
তাগুত।
.
৪। তাগুত হলো সেইসব সিস্টেম বা পদ্ধতি
যার ছত্রছায়ায় কুচক্রী মানুষগুলো
একত্রিত হয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের
বিরুদ্ধে ষরযন্ত্রে লিপ্ত থাকে অথবা যুদ্ধ
করে।
.
৫। আরো, তাগুত হচ্ছে সেইসব প্রতিষ্ঠানের
নাম যেখানে সত্য দ্বীন বিরোধী নিত্য-
নতুন বিভাগ ও ফিরকার উদ্ভব ঘটে।
.
৬। শয়তান এবং মিথ্যা উপাস্যগুলোকে
(হোক মানুষ অথবা জ্বিন) তাগুতের প্রধান
অর্থ বুঝালেও, এর পাশাপাশি তাগুত হচ্ছে
পৃথিবীর সেইসকল ক্ষমতাসীন মানুষ যারা
তাদের সমস্ত বাতিল শক্তির মাধ্যমে
ইসলামের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে,
ইসলামি শরীয়তের আইনের বাস্তবায়নকে
রুদ্ধ করে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে
কাফেরদের সাহায্য করে। (আল্লাহই
ভালো জানেন) (ফাতহুল জাওয়াদ ফী
মা’আরিফ আয়াতুল জিহাদ, পৃ: ৩৭৫-৩৭৬)
.
মনে রাখা দরকার কোন মানুষ তাগুতের
উপর কুফরী ছাড়া ইমানদার হতে পারেনা।
মহান আল্লাহ বলেন:
ﻓَﻤَﻦْ ﻳَﻜْﻔُﺮْ ﺑِﺎﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ ﻭَﻳُﺆْﻣِﻦ ﺑِﺎﻟﻠّﻪِ ﻓَﻘَﺪِ ﺍﺳْﺘَﻤْﺴَﻚَ
ﺑِﺎﻟْﻌُﺮْﻭَﺓِ ﺍﻟْﻮُﺛْﻘَﻰَ ﻻَ ﺍﻧﻔِﺼَﺎﻡَ ﻟَﻬَﺎ ﻭَﺍﻟﻠّﻪُ ﺳَﻤِﻴﻊٌ ﻋَﻠِﻴﻢٌ
“সুতরাং যে তাগুতের সাথে কুফরী করে
এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে সে এমন
মজবুত রজ্জুকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে
যার কোন বিভক্তি বা চিড় নেই, আর
আল্লাহ সর্ব শ্রোতা ও সর্ব
জ্ঞানী।” (সূরা বাকারা: ২৫৬)
.
এ আয়াতের পূর্বাংশে আল্লাহ বলেছেন,
“বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন পথ, ভ্রান্ত-পথ থেকে
স্পষ্ট হয়েছে।” “বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন পথ”
বলতে রাসূল ( ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ) এর
দ্বীনকে, আর “ভ্রান্ত-পথ” বলতে আবু
জাহলের দ্বীনকে বুঝানো হয়েছে, আর এর
পরবর্তী আয়াতের মজবুত রশি বা রজ্জু
দ্বারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আল্লাহ
ছাড়া কোন হক উপাস্য নেই) এর সাক্ষ্য
প্রদানকে বুঝিয়েছেন।
.
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”-এই কালিমা কিছু
জিনিসকে নিষেধ করে, এবং কিছু বস্তুকে
সাব্যস্ত করে; সকল প্রকার ইবাদতকে
আল্লাহর ছাড়া অন্যের জন্য নির্ধারিত
হওয়াকে নিষেধ করে। শুধুমাত্র লা-শরীক
আল্লাহর জন্য সকল প্রকার ইবাদতকে
নির্দিষ্ট করে।
আল্লাহর জন্যই সমস্ত শোকর, যার নেয়ামত
ও অনুগ্রহেই যাবতীয় ভাল কাজ সম্পন্ন
হয়ে থাকে।
.
লিখেছেন, একজন তালেবুল ইল্ম

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top