মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বিবর্তনবাদী গুরুদের প্রতি কিছু চ্যালেঞ্জিং প্রশ্ন::

কোন মন্তব্য নেই:

বিবর্তনবাদী গুরুদের প্রতি কিছু চ্যালেঞ্জিং প্রশ্ন::
.
.
বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী এককোষী একটি
ব্যাকটেরিয়া থেকে এলোমেলো
পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন (Random
mutation and natural selection)-এর মাধ্যমে
কোটি কোটি বছর ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে
উদ্ভিদজগত-সহ পুরো জীবজগত বিবর্তিত
হয়েছে। এই অবস্থায় "বিবর্তনের পথ ধরে"
বইয়ের লেখক বন্যা আহমেদ-সহ বাংলা
অন্তর্জালে যারা দীর্ঘদিন ধরে বিবর্তন
তত্ত্বকে বিজ্ঞানের নামে "প্রতিষ্ঠিত
সত্য" কিংবা এমনকি "গাছ থেকে ভূমিতে
অ্যাপেল পড়ার মতো চাক্ষুস সত্য" দাবি
করে লেখালেখি করছেন তাদের
প্রতি নিচে কিছু চ্যালেঞ্জিং প্রশ্ন
রাখা হলো।
.
প্রশ্নগুলো আসলে বিবর্তনবাদীদের আধুনিক গুরু রিচার্ড ডকিন্স-সহ সারা বিশ্বের বিবর্তনবাদীদের জন্যও প্রযোজ্য।
.
.
১. বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী আজ
থেকে কোটি কোটি বছর আগে বিশেষ
একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে পুরো
জীবজগতের বিবর্তন শুরু হয়েছে।
বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– কোটি কোটি বছর আগে যে
'ব্যাকটেরিয়া' থেকে পুরো জীবজগতের
বিবর্তন শুরু হয়েছে, সেই 'বিশেষ
ব্যাকটেরিয়া'-র অস্তিত্বের পক্ষে
কোনো প্রমাণ আছে কি-না? যদি থেকে
থাকে তাহলে সেই নির্দিষ্ট একটি
ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব কীভাবে প্রমাণ
করা হয়েছে? আর যদি না থাকে তাহলে
বিবর্তনবাদীরা কী করে নিশ্চিত
হয়েছেন যে, ব্যাকটেরিয়া থেকেই পুরো
জীবজগতের বিবর্তন শুরু হয়েছে এবং সেই
ব্যাকটেরিয়ার আগে জীব বলতে কিছুই
ছিল না? নাস্তিকদের দাবি অনুযায়ী
কোনো কিছুর অস্তিত্বের পক্ষে
বৈজ্ঞানিক প্রমাণ না থাকা
মানে সেটি যদি এমনি এমনি 'কাল্পনিক'
হয়ে যায় তাহলে সেই 'বিশেষ
ব্যাকটেরিয়া' কাল্পনিক হবে না
কেন? আর কোনো তত্ত্বের শুরুই যদি হয়
কাল্পনিক কিছু একটা দিয়ে তাহলে
সেটিকে বিজ্ঞান-ভিত্তিক বা
বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নাকি কল্পনা-
ভিত্তিক বা কাল্পনিক তত্ত্ব বলা হবে?
.
(নোট: বর্তমান সময়ের ব্যাকটেরিয়ার
উদাহরণ দিয়ে যে কোনোই লাভ নাই,
সেটা যে কারোরই বুঝার কথা। অন্যথায়
আমার লেখাতে এই প্রশ্ন আসতই না।)
.
– সেই 'বিশেষ ব্যাকটেরিয়া' থেকে
'এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক
নির্বাচন'-এর মাধ্যমে কবে, কোথায়, কেন,
কতদিনে, ও কীভাবে পরের জীব
বিবর্তিত হয়েছিল? এক সাথে একটি
নাকি একাধিক জীব বিবর্তিত হয়েছিল?
প্রথম ব্যাকটেরিয়া ও দ্বিতীয় জীবের
মধ্যে কী কী পার্থক্য ছিল? দ্বিতীয় জীব
দেখতে কেমন ছিল? মধ্যবর্তী ধাপগুলোই
বা কেমন ছিল? দ্বিতীয় জীব বিবর্তিত
হওয়ার পর প্রথম ব্যাকটেরিয়া বেঁচে ছিল
নাকি মারা গিয়েছিল? একটিমাত্র
ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে 'প্রাকৃতিক
নির্বাচন'-ই বা কী করে হয়েছিল?
.
.
২. মানুষ-সহ বড় বড় প্রাণীদের দেহে যে
সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে, ব্যাকটেরিয়ার
দেহে এগুলোর কিছুই নেই। ব্যাকটেরিয়া
মূলত এককোষী আণুবীক্ষণিক জীব। তাহলে
অতিরিক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো কীভাবে
প্রাণীদের দেহে প্রজন্মের পর প্রজন্ম
ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে সংযোজিত (?) বা
বিবর্তিত (?) হলো? অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো কি
যুগপৎভাবে (Simultaneously) নাকি
আলাদা আলাদা করে (Separately)
বিবর্তিত হয়েছে? উল্লেখ্য যে, বর্তমান
প্রাণীদের অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন
যুগপৎভাবে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে পারে
না (কেননা কিছু কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় না থাকলে প্রাণীরা
বাঁচতেই পারবে না), তেমনি
আবার আলাদা আলাদা করেও বিবর্তিত
হওয়া বাস্তবে সম্ভব নয় (কেননা হৃৎপিণ্ড-
বিহীন বা মাথা-বিহীন বা এমনকি হাত-
পা-বিহীন মনুষ্য প্রজাতি বাস্তবে
কখনোই ছিল না)। এর মধ্যে বিশাল
উদ্ভিদজগতের বিবর্তন-ই বা হলো কোথা
থেকে?
.
.
৩. মানব প্রজাতি-সহ অনেক প্রজাতির
প্রাকৃতিকভাবে বংশবৃদ্ধি হয় পুংলিঙ্গ ও
স্ত্রীলিঙ্গ থেকে নির্গত যথাক্রমে
শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের মাধ্যমে। এই
ধরণের প্রাণীদের দেহে স্রেফ শুক্রাণু বা
ডিম্বাণুর কোনো একটি না থাকলে
বংশবৃদ্ধিই হবে না। এমনকি মেডিক্যাল
সায়েন্স অনুযায়ী কিছু শর্ত পূরণ করলেই
তবে একজন পুরুষকে প্রজননে সক্ষম
হিসেবে ধরা হয়। তবে যায়গোট (Zygote)
তৈরীর জন্য যেহেতু একটি শুক্রাণু ও
একটি ডিম্বাণুই যথেষ্ট সেহেতু আমি
সেদিকে যাচ্ছি না। কিন্তু শর্ত হচ্ছে
একটি শুক্রাণু ও একটি ডিম্বাণুকে অবশ্যই
পূর্ণাঙ্গরূপে ও পুরোপুরি কার্যক্ষম
থাকতে হবে, অন্যথায় যায়গোট বা ভ্রুণ
তৈরী হবে না এবং যার ফলে কোনো
প্রজননও হবে না। এবার প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– প্রথম ব্যাকটেরিয়ার দেহে
যেহেতু শুক্রাণু বা ডিম্বাণু বলে কিছু ছিল
না (বর্তমানেও নেই) সেহেতু ঠিক কোন্
প্রাণী থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু
বিবর্তিত হওয়া শুরু করেছে, এবং
কেন? একদম শুরুতেই শুক্রাণু ও ডিম্বাণু
কেমন ছিল? পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় ছিল নাকি
আংশিক অবস্থায় ছিল? পূর্ণাঙ্গ
অবস্থায় থাকলে হঠাৎ করে একটি
প্রাণীর দেহে শুক্রাণু বা ডিম্বাণু এলো
কোথা থেকে? আর যদি আংশিক
অবস্থায় থাকে তাহলে সেই অবস্থায়
যায়গোট বা ভ্রুণ তৈরী হয়েছিল কেমন
করে? তাছাড়া শুক্রাণু ও ডিম্বাণু কী
করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব? এই অবস্থায়
প্রাণীদের বংশবৃদ্ধি হবে কী করে?
অধিকন্তু, প্রাণীদের দেহে
পাশাপাশি বা সমান্তরালে শুক্রাণু ও
ডিম্বাণু বিবর্তিত (?) হলো কীভাবে?
সর্বোপরি, শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ছাড়া
কিংবা আংশিক শুক্রাণু বা ডিম্বাণু
থেকে যদি প্রজনন-ই না হয় তাহলে মানুষ-
সহ বিশাল প্রাণীজগত এলো কোথা থেকে
in the first place?!
.
.
৪. হৃৎপিণ্ড এমন একটি অঙ্গ যেটি পূর্ণাঙ্গ
অবস্থায় ও পুরোপুরি কার্যক্ষম না থাকলে
প্রাণীরা বেঁচে থাকতেই পারবে না,
বংশবৃদ্ধি হওয়া তো পরের কথা।
অন্যদিকে প্রথম ব্যাকটেরিয়ার দেহে
কোনো হৃৎপিণ্ড ছিল না, বর্তমানেও নেই।
এই অবস্থায় প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– প্রথম ব্যাকটেরিয়ার দেহে যেহেতু
কোনো হৃৎপিণ্ড ছিল না সেহেতু ঠিক কোন্
প্রাণীর দেহে সর্বপ্রথম হৃৎপিণ্ড
সংযোজিত (?) বা বিবর্তিত (?) হওয়া শুরু
করেছিল? একদম শুরুতেই হৃৎপিণ্ডটা
কেমন ছিল? সেই হৃৎপিণ্ড প্রজন্মের পর
প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে কী করে
বিবর্তিত হলো, যেখানে বর্তমান
প্রাণীদের দেহে যে হৃৎপিণ্ড আছে
সেটি পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় না
থাকলে প্রাণীরা বাঁচতেই পারবে
না? হৃৎপিণ্ডের মতো জীবন রক্ষাকারী
কোনো মেশিন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হতে থাকলে
প্রাণীরা যদি বেঁচে থাকতেই না
পারে তাহলে এই অবস্থায় আবার
বংশবৃদ্ধি হবে কেমন করে? আংশিক (এক
শতাংশ বা এক দশমাংশ) অথচ পুরোপুরি
কার্যক্ষম হৃৎপিণ্ড বলে বাস্তবে কিছু
আছে কি? প্রাণীদের অন্যান্য অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গ যেমন ফুসফুস, পরিপাকতন্ত্র, যকৃত,
অণ্ডাশয়, মূত্রথলি, অতি সূক্ষ্ম শিরা-
উপশিরা, ইত্যাদির ক্ষেত্রেও অনুরূপ প্রশ্ন
ও যুক্তি প্রযোজ্য।
.
.
৫. সরীসৃপ থেকে যখন পাখির বিবর্তন শুরু
হয়েছিল সেই সময় এই পৃথিবীতে একটি
নাকি অনেক সরীসৃপ ছিল? একটি থেকে
থাকলে সেটি কী ছিল? সেটি এলো
কোথা থেকে? একটির ক্ষেত্রে
প্রাকৃতিক নির্বাচন হয়েছিল কী করে?
আর অনেক থেকে থাকলে ঠিক কোন্
সরীসৃপ থেকে বিবর্তন শুরু হয়েছিল, এবং
কেন? বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে
সরীসৃপ থেকে পাখি বিবর্তিত হওয়ার আর
কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না কেন?
সরীসৃপ থেকে কতগুলো ধাপ অতিক্রম
করার পর পাখি হয়ে আকাশে উড়তে
শিখেছিল? সেটি কোন্ পাখি ছিল? সেই
একটি (?) পাখি থেকে কেমন করে
বংশবৃদ্ধি হয়েছিল? সরীসৃপ ও পাখির
মধ্যবর্তী ধাপগুলোই বা কেমন ছিল?
মধ্যবর্তী ধাপগুলোতে কী করে বংশবৃদ্ধি
হয়েছিল? অতঃপর স্তন্যপায়ী বাদুড়-সহ
অনেক প্রকারের উড়ন্ত প্রজাতি কোথা
থেকে ও কী করে বিবর্তিত হলো?
.
.
৬. বিবর্তন তত্ত্ব সত্য হতে হলে অ-স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে স্তন্যপায়ী প্রাণী বিবর্তিত হতে হবে কি-না? উত্তর যদি "হ্যাঁ" হয় তাহলে ঠিক কোন্ অ-
স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে বিবর্তন শুরু হয়ে
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
ধাপে কোন্ স্তন্যপায়ী প্রাণী বিবর্তিত
হয়েছিল? একটি অ-স্তন্যপায়ী প্রাণী
থেকে বিবর্তন শুরু হয়ে কতগুলো ধাপ
অতিক্রম করার পর একটি পূর্ণাঙ্গ
স্তন্যপায়ী প্রাণী হয়েছিল? মধ্যবর্তী
ধাপগুলো কেমন ছিল? মধ্যবর্তী
ধাপগুলোতে প্রজনন হয়েছিল কীভাবে?
.
.
৭. 'এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক
নির্বাচন'-এর মাধ্যমে কোন্ গাছ থেকে
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র
ধাপে ডালিম গাছ কিংবা আম গাছ
কিংবা তাল গাছ বিবর্তিত হয়েছে? দুটি
গাছের মধ্যবর্তী ধাপগুলো কেমন ছিল?
.
.
৮. এই পোস্টে কিছু জন্তুর ছবি দেখানো
হয়েছে। বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন
হচ্ছে:
.
– বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই
জন্তুগুলো যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক?
উত্তর যদি "অযৌক্তিক" হয় – অর্থাৎ এই
জন্তুগুলোর যদি কোনো অস্তিত্ব থাকা
সম্ভব না হয়, তাহলে কেন সম্ভব নয় তা
সুস্পষ্ট যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে।
.
.
৯. বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী মানুষের পূর্বপুরুষ
এক পর্যায়ে মাছ জাতীয় জলজ প্রাণী
ছিল। অর্থাৎ মাছ জাতীয় জলজ প্রাণী
থেকে ধাপে ধাপে মানুষ বিবর্তিত
হয়েছে। তা-ই যদি হয় তাহলে যেকোনো
যুক্তিবাদী মানুষ স্বীকার করতে বাধ্য
যে, মাছ জাতীয় জলজ প্রাণী থেকে
মানুষের মতো স্থলচর প্রাণীর বিবর্তনের
চেয়ে মৎসকন্যার মতো আরেক জলজ
প্রাণী বিবর্তিত হওয়াটা অধিকতর সহজ ও
যৌক্তিক হওয়ার কথা। বিবর্তনবাদীদের
প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– আজ পর্যন্ত কোনো বিবর্তনবাদীকে
বিশাল মহাসাগরে মৎসকন্যার অনুসন্ধান
করতে দেখা যায়নি কেন? আমি অবশ্য
নিশ্চিত না তারা আসলেই অনুসন্ধান
করেছেন বা করছেন কি-না। যদি না করে
থাকেন তাহলে তারা কোন্ যুক্তিবলে
নিশ্চিত হয়েছেন যে, মৎসকন্যা বলে
বাস্তবে কিছু নাই বা থাকতে পারে না?
.
(পাঠকদের জন্য নোট: বিবর্তনীয়
দৃষ্টিকোণ থেকে বাস্তবে মৎসকন্যার
অস্তিত্ব থাকাটা যৌক্তিক বা
স্বাভাবিক হলেও মৎসকন্যার অনুসন্ধান
করতে গেলে বিবর্তনবাদের কল্পকাহিনী
সাধারণ লোকজনের কাছেও উন্মোচিত
হয়ে যাবে – এই ভয়ে বিবর্তনবাদী গুরুরা
কখনো মৎসকন্যার অনুসন্ধান করবেন বলে
মনে হয় না! এমনকি গোপনে গোপনে
অনুসন্ধান চালানো হলেও তা জনসম্মুখে
প্রকাশ করা হবে না! বিবর্তনবাদীদের
জবাবের জন্য অপেক্ষা করুন।)
.
.
১০. পা-এর উপর ভিত্তি করে প্রকৃতিতে
যেমন পা-বিহীন প্রাণী (সাপ, জোঁক,
কেঁচো) আছে তেমনি আবার
দ্বিপদী প্রাণী (মানুষ, পাখি),
চতুষ্পদী প্রাণী (বাঘ, সিংহ, হাতি,
ঘোড়া, গরু, ছাগল), ষষ্ঠপদী প্রাণী (কীট-
পতঙ্গ), অষ্টপদী প্রাণী (মাকড়সা), এবং
বহুপদী প্রাণীও (বিছা পোকা) আছে।
বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– বর্তমানেই যেখানে অনেক প্রাণীর
কোনো পা নেই, সেখানে ঠিক কী কারণে
অন্যান্য প্রাণীদের দেহে পা গজানোর
দরকার পড়ল? পা-বিহীন কিছু প্রাণীকে
আলাদা করে বিশেষ কোনো পরিবেশে
রেখে দেওয়া হলে তাদের দেহে
'এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক
নির্বাচন'-এর মাধ্যমে পা গজানো শুরু
করবে কি-না? কিংবা পা-ওয়ালা কিছু
প্রাণীকে বিশেষ কোনো পরিবেশে
রেখে দিলে তাদের পা ধীরে ধীরে
বিলুপ্ত হওয়া শুরু করবে কি-না?
বিবর্তনবাদীরা কোথাও এই ধরণের
পরীক্ষা-নিরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন
কি? নিদেনপক্ষে পরীক্ষা শুরু করা না
হয়ে থাকলে কেন শুরু করা হয়নি?
.
– ষষ্ঠপদী প্রাণী থেকে চতুষ্পদী প্রাণী
কিংবা চতুষ্পদী প্রাণী থেকে ষষ্ঠপদী
প্রাণীর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র ধাপে বিবর্তিত হওয়ার পক্ষে
মধ্যবর্তী ধাপগুলো-সহ কিছু প্রমাণ দেওয়া
যাবে কি?
.
১১. বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী
মানুষের আদি পূর্ব-পুরুষ প্রাইমেটরা গাছে
গাছে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য লেজ
ব্যবহার করতো। গাছ থেকে নিচে নেমে
আসার পর লেজের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে
যাওয়ার কারণে লেজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
তাদের এই 'যুক্তি' অনুযায়ী মানুষের আদি
পূর্ব-পুরুষদের প্রথমে লেজ ছিল না। এক
পর্যায়ে বনে-জঙ্গলে যেয়ে গাছে গাছে
বিচরণের ফলে ভারসাম্য রক্ষার জন্য
প্রয়োজনে লেজ গজিয়েছে। গাছ থেকে
নিচে নেমে আসার পর যেহেতু লেজের
প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে সেহেতু লেজ
লোপ পেয়ে মানুষের মতো লেজ-বিহীন
প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে! অর্থাৎ
প্রাণীদের প্রয়োজনেই তাদের দেহে
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গজায়, আবার প্রয়োজন
ফুরালে সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিলুপ্ত হয়ে
যায়! তো গাছে গাছে বিচরণ করলেই যদি
ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনে লেজ-বিহীন
প্রাণীদের দেহে লেজ গজায়, কিংবা
গাছে গাছে বিচরণ না করলেই যদি লেজ-
বিশিষ্ট প্রাণীদের লেজ বিলুপ্ত হয়ে
যায়, তাহলে বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন
হচ্ছে:
.
– তারা কি লেজ-বিহীন কিছু মানুষকে
বনের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে গাছে গাছে
বিচরণ করার জন্য কোনো পরীক্ষা শুরু
করেছেন এটা পর্যবেক্ষণের জন্য যে,
তাদের দেহে সত্যি সত্যি লেজ গজানো
শুরু করে কি-না? কিংবা কিছু লেজ-
বিশিষ্ট প্রাণীকে গাছ-বিহীন জায়গায়
রেখে দিয়ে কোথাও কি কোনো পরীক্ষা
শুরু করা হয়েছে এটা পর্যবেক্ষণের জন্য
যে, তাদের লেজ ধীরে ধীরে বিলুপ্ত
হওয়া শুরু করে কি-না? এই ধরণের কোনো
পরীক্ষা যদি শুরুই করা না হয়ে থাকে
তাহলে এতদিনেও তা শুরু করা হয়নি
কেন? বিজ্ঞানের নিয়ম হচ্ছে পরীক্ষা
আগে শুরু করতে হবে, ফলাফল পরের কথা।
কাজেই পরীক্ষা শুরু না করে কোনো রকম
অজুহাত চলবে না।
.
(পাঠকদের জন্য নোট:
বিবর্তনবাদীরা কিন্তু অনেক
আগে থেকেই আণুবীক্ষণিক জীব
ব্যাকটেরিয়া [ই. কোলাই] নিয়ে পরীক্ষা-
নিরীক্ষা শুরু করেছেন।
ব্যাকটেরিয়া থেকে ভিন্ন কোনো
প্রজাতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে কি-না,
সেটা তারা পর্যবেক্ষণ করছেন। অথচ
তারা বড় কোনো প্রাণী নিয়ে এই ধরণের
পরীক্ষা-নিরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন
না! বুদ্ধিমানদের জন্য নাকি ঈশারাই
যথেষ্ট। তারপরও এর গোপন রহস্য বলে
রাখি। ব্যাকটেরিয়ার মতো অতি ক্ষুদ্র
আণুবীক্ষণিক জীব নিয়ে পরীক্ষা-
নিরীক্ষা করার দাবি করে সাধারণ
মানুষকে যত সহজে ঘোল খাওয়ানো সম্ভব,
বড় কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে
স্বাভাবিকভাবেই তা সম্ভব নয়। কেননা
বড় প্রাণীকে সকলেই খালি চোখে
দেখতে পাবে। অধিকন্তু, বড় প্রাণীদের
নিয়ে পরীক্ষা শুরু করলে দেখা যাবে
তাদের দেহে কোনো পরিবর্তন আসার
আগেই তারা মারা গেছে! কাজেই
বড় প্রাণীদের নিয়ে পরীক্ষা করে কোনো রকম চাপাবাজি করতে গেলে সাধারণ লোকজনের কাছেই হাতেনাতে ধরা খেতে হবে! এই কারণেই
তারা জেনেবুঝে শুধু আণুবীক্ষণিক জীব
ব্যাকটেরিয়া নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা-
পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন!)
.
.
১২. বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী
বিবর্তন একটি চলমান ও অন্ধ প্রক্রিয়া।
বিবর্তনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যও নেই।
তো বিবর্তন যদি একটি চলমান প্রক্রিয়া
হয় এবং বিবর্তনবাদীরা যদি ভিন্ন
কোনো প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে
থাকে, তাহলে তারা নিজেরাও একদিন
বিবর্তিত হয়ে ভিন্ন কোনো প্রজাতিতে
রূপান্তরিত হওয়ার কথা। কোনো
বিবর্তনবাদীই এই সত্যকে অস্বীকার
করতে পারবেন না। কেউ অস্বীকার করলে
যৌক্তিক কারণ দর্শাতে হবে।
বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– তারা আজ থেকে কোটি কোটি বছর পর
বিবর্তিত হয়ে যে ধরণের প্রজাতিতে
রূপান্তরিত হতে পারে, তার সম্ভাব্য
কিছু ছবি দেখাতে পারবেন কি-না?
তাদের দাবি অনুযায়ীই বিবর্তন যেহেতু
একটি লক্ষ্যহীন ও অন্ধ প্রক্রিয়া সেহেতু
তাদের উত্তর-পুরুষদের যে ছবিগুলো
কল্পনা করা হবে, সেগুলোই বাস্তবে রূপ
নিতে পারে। কাজেই বিবর্তনীয়
দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভাব্য বা কাল্পনিক
ছবি দিতে কোনো সমস্যা থাকার কথা
নয়, যেখানে তারা ইতোমধ্যে তাদের পূর্ব-
পুরুষদের অনেক কাল্পনিক ছবি
বানিয়েছেন।
.
(পাঠকদের জন্য নোট: বিভিন্ন অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গের সমন্বয়ে বিবর্তনবাদীদের
বর্তমান যে শারীরিক অবয়ব আছে, তার
চেয়ে কম-বেশি কিছু তারা কল্পনাও
করতে পারবেন না! আর কল্পনা করতে
পারলেও তারা লজ্জায় সেটা দেখাতে
পারবেন না! এ থেকে প্রমাণ হবে যে,
তারা নিজেরাই আসলে বিবর্তনে
বিশ্বাস করে না।)
.
.
১৩. ধরা যাক, বিবর্তনবাদীদের কেউ এক
চোখ কিংবা তিন চোখ কিংবা এক হাত
কিংবা পাঁচ হাত কিংবা এক পা কিংবা
তিন পা কিংবা শিং-ওয়ালা কিংবা
লেজ-ওয়ালা কিংবা সামনে-পেছনে দুই
লিঙ্গ-বিশিষ্ট কিংবা লিঙ্গ-বিহীন
কিংবা সবকিছুর সমন্বয়ে 'অদ্ভুত'
বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন একটি সন্তান প্রসব
করলেন। এই ধরণের সন্তান প্রসবের খবর
তো মাঝে মাঝেই শোনা যায়।
বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সেই শিশু
বাচ্চাটি "স্বাভাবিক" নাকি
"অস্বাভাবিক" হিসেবে গণ্য হবে? যদি
"অস্বাভাবিক" হিসেবে গণ্য হয়
তাহলে ঠিক কোন্ যুক্তি বা স্ট্যান্ডার্ড-
এর ভিত্তিতে সেটিকে "অস্বাভাবিক"
হিসেবে গণ্য করা হবে? বিবর্তন তত্ত্ব
অনুযায়ী স্ট্যান্ডার্ড বা স্বাভাবিক বলে
কিছু আছে কি-না বা থাকতে পারে কি-
না?
.
– বিবর্তনবাদীদের নিজের কিংবা
নবজাত সন্তানের শরীরে এমন
কিছু পরিবর্তনের উদাহরণ দিতে
হবে যেগুলো বিবর্তনের চিহ্ন বা উপসর্গ
হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অর্থাৎ
তারা মানব শরীরে কী ধরণের পরিবর্তন
দেখলে সেটিকে বিবর্তনের চিহ্ন বা
উপসর্গ ধরে নিয়ে ডাক্তারের কাছে না
যেয়ে চুপচাপ থাকবেন, আর কী ধরণের
পরিবর্তন দেখলে সেটিকে "অস্বাভাবিক"
আখ্যা দিয়ে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের
কাছে ছুটবেন – এই বিষয় দুটি কিছু
উদাহরণ-সহ সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে
হবে।
.
.
১৪. বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী
শিম্পাজীরা তাদের রক্তের সম্পর্কের
নিকটতম আত্মীয়। শিম্পাজীদের সাথে
তাদের নাকি তেমন কোনো পার্থক্যই
নাই! তা-ই যদি হয় তাহলে
বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– তারা কি কখনো তাদের নিকটতম
আত্মীয়দের কাছে থেকে বিবর্তন
সম্পর্কে কিছু জানতে চেয়েছেন? অন্তত
চেষ্টা করে দেখেছেন কি? নিদেনপক্ষে
চেষ্টাও যদি না করা হয়ে থাকে তাহলে
কেন করা হয়নি? কিংবা শিম্পাঞ্জীদের
কেউ বিবর্তনবাদীদেরকে বিবর্তন
সম্পর্কে কিছু তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সাহায্য
করেছে কি-না? তাছাড়া বিবর্তনবাদীদের নিকটতম আত্মীয়রা নিজেদের বিবর্তনে বিশ্বাস করে কি-না
.
– এই প্রশ্ন কি তাদেরকে করা হয়েছে?
জিজ্ঞেস না করে নিকটতম
আত্মীয়দেরকে অনৈতিকভাবে 'মিসিং
লিঙ্ক, টিসিং লিঙ্ক' জাতীয় কিছু
বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন?
.
.
১৫. যেখানে মানুষের সাথে
শিম্পাঞ্জীদের খালি চোখে দেখা যায়
এমন অনেক মিল আছে, প্রকৃতপক্ষে
জৈবিক কোনো পার্থক্য নাই বললেই চলে,
সেখানে বিবর্তনবাদীরা ডিএনএ দিয়ে
মানুষের সাথে শিম্পাঞ্জীর সাদৃশ্য
দেখানোর চেষ্টা করছেন কেন? মানুষ ও
শিম্পাঞ্জীর দেহে সহসা দৃশ্যমান এতো
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকতে ডিএনএ নামক অদৃশ্য
কিছুর মধ্যে মাথা গোঁজার কারণ কী?
.
১৬. বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী
তাদের পূর্ব-পুরুষদের এক সময় লেজ ছিল।
পরবর্তীতে সেই লেজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
প্রমাণ হিসেবে তারা কিছু লেজ-ওয়ালা(?)
.
মানব শিশুর উদাহরণ দিয়ে থাকেন।
তাদের এ-ও দাবি যে, মানুষের পেছন
দিকে লেজের গোড়ার হাড় আছে! কিন্তু
প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– যে অঙ্গটি আগে ছিল, এখন সেটি আর
নেই। এখানে বিবর্তন কোথায় হলো?
কীসের বিবর্তন হলো? প্রাণীদের দেহ
থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিলুপ্ত হয়ে
যাওয়াকে কি বিবর্তন বলে?
.
.
১৭. বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী
তাদের পূর্ব-পুরুষরা এক সময়
তৃণভোজী থাকার কারণে
তাদের অ্যাপেনডিক্স কার্যকর ও
উপকারী ছিল। কিন্তু তৃণভোজী থেকে
মাংশাষী হওয়ার পর সেই একই
অ্যাপেনডিক্স কার্যকারীতা হারিয়ে
নিষ্ক্রিয় ও ক্ষতিকর হয়ে গেছে। তাদের
দাবি অনুযায়ী মানবদেহে এরূপ শতাধিক
নিষ্ক্রিয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে যেগুলো
আগে সক্রিয় ছিল। তার মানে যে অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গগুলো আগে সক্রিয় ও
কার্যকর ছিল, সেগুলোই পরবর্তীতে
কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলে নিষ্ক্রিয়
ও ক্ষতিকর হয়ে গেছে। তা-ই যদি হয়
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– একটি ভালো বা কার্যকর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
কোনো কারণে তার কার্যকারীতা
হারিয়ে ফেলে নিষ্ক্রিয় বা ক্ষতিকর
হয়ে গেলে সেটিকে কি বিবর্তন বলা হয়?
এখানে বিবর্তন ঠিক কোথায় হলো? কী
থেকে কী বিবর্তিত হলো?
.
.
১৮. বিবর্তনবাদের সমালোচকদের মধ্যে
কেউ কেউ কৌতুকচ্ছলে কিংবা ধরা যাক
না জেনে বানর থেকে মানুষ বিবর্তিত
হওয়ার কথা বলে হাসি-ঠাট্টা করে
থাকেন। কেউ কেউ আবার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন
এই বলে যে, বানর থেকে যদি মানুষ
বিবর্তিত হয়ে থাকে তাহলে এখনো অনেক
বানর থাকা সত্ত্বেও সেগুলো থেকে মানুষ
বিবর্তিত হওয়ার কোনো আলামত দেখা
যাচ্ছে না কেন? (নোট: আমার লেখার
কোথাও এই ধরণের কথাবার্তা বা প্রশ্ন
পাওয়া যাবে না।) এই কথা শোনার সাথে
সাথে বিবর্তনবাদীরা তেড়ে এসে
প্রশ্নকারীকে 'অজ্ঞ-মূর্খ' আখ্যা দিয়ে
যা বলেন তার অর্থ হচ্ছে: “হেঃ হেঃ
বিবর্তন সম্পর্কে আপনাদের কোনো
ধারণাই নাই! বর্তমান যুগের বানর থেকে
তো মানুষ বিবর্তিত হয়নি! বরঞ্চ মানুষ ও
বানর একটি ‘সাধারণ পূর্ব-পুরুষ’ থেকে
বিবর্তিত হয়েছে।” কিন্তু সেই ‘সাধারণ
পূর্ব-পুরুষ’ কি মানুষ নাকি বানর নাকি অন্য
কিছু ছিল, সেটা কখনোই পরিষ্কার করে
বলা হয় না। যাহোক, বর্তমান যুগের বানর
থেকে মানুষ বিবর্তিত হোক বা অন্য
কিছু থেকে বিবর্তিত হোক – এই
বিষয়টাকে এক পাশে রেখে
বিবর্তনবাদীদের প্রতি প্রশ্ন হচ্ছে:
.
– বিবর্তন তত্ত্বের কোথাও কি লিখা
আছে যে, বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষ
বিবর্তিত হতে পারে না? অন্য কথায়,
বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষের
বিবর্তন কি সম্ভব নয়? যদি সম্ভব না
হয়, তাহলে কেন সম্ভব নয় তা সুস্পষ্ট যুক্তি
দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে।
.
– রিচার্ড ডকিন্স একটি সাক্ষাৎকারে
বলেছেন, “Monkeys and we come from a
common ancestor and that common
ancestor would probably have been called
the monkey.” রিচার্ড ডকিন্সের দাবি
অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে মানুষ আসলে বানর
থেকেই বিবর্তিত হয়েছে – অর্থাৎ
মানুষের পূর্ব-পুরুষ বানরই ছিল। তাহলে
বাংলা অন্তর্জালে যারা এতদিন ধরে এই
বিষয়টা নিয়ে সমালোচকদেরকে
বিভিন্নভাবে হেয় করে আসছে তারা কি
অজ্ঞ না ভণ্ড? তারা এই ধরণের
কথাবার্তা (বানর থেকে মানুষের বিবর্তন) কিংবা প্রশ্ন (বানর থেকে যদি মানুষ বিবর্তিত হয়ে থাকে
তাহলে বর্তমান যুগের বানর থেকে মানুষ
বিবর্তিত হচ্ছে না কেন?) শুনে ক্ষেপে
যায় কেন? তারা কি নিজেদের পূর্ব-
পুরুষকে বানর হিসেবে দেখতে অপমানিত
বোধ করেন? তারা কি তাহলে
বিবর্তনবাদীরূপী ভণ্ড?
.
.
১৯. একটি বনের মধ্যে অনেক বাঘ আর
হরিণ একসাথে রেখে দিলে বাস্তবে কী
ঘটতে পারে?
.
১ম সম্ভাবনা: বাঘ আর হরিণ প্রজাতি
নিজেদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে
বংশবৃদ্ধি করতে থাকবে।
.
২য় সম্ভাবনা: বাঘ প্রজাতি ধীরে ধীরে
হরিণ প্রজাতিকে খেয়ে ফেলার কারণে
এক সময় হরিণ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটবে,
থাকবে শুধু বাঘ প্রজাতি।
.
৩য় সম্ভাবনা: শক্তিশালী বাঘগুলো
দুর্বলদেরকে হত্যা করে খেয়ে কিছুদিন
বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে পারে। তবে
এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় সেই বন
থেকে বাঘ প্রজাতিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
.
৪র্থ সম্ভাবনা (খুবই ক্ষীণ): বাঘ প্রজাতির
মধ্যে কেউ কেউ লতা-পাতা-ফল-মূল খেয়ে
বাঁচার চেষ্টা করতে পারে, যদিও এ'রকম
কোনো প্রমাণ আছে কি-না জানা নেই।
এভাবে যদি কিছু বাঘ বেঁচেও থাকে
তাহলে সেই বাঘগুলো থেকে শুধু বাঘেরই
বংশবিস্তার হবে। তবে খ্যাদ্যাভাস
পরিবর্তনের কারণে তাদের আচার-
আচরণে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।
ক্ষীণ সম্ভাবনা-সহ সবগুলো সম্ভাবনার
কথাই বলে দেওয়া হলো। কিন্তু এ
ব্যাপারে বিবর্তন তত্ত্ব কী বলে? এখানে
থেকে 'এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক
নির্বাচন'-এর মাধ্যমে নতুন প্রজাতির
উদ্ভব হবে কী করে? অকাট্য প্রমাণ-সহ এই
অতি সহজ একটি প্রশ্নের জবাব দেবার
মতো এই দুনিয়াই কোনো বিবর্তনবাদী
আছে কি?
.
.
২০. কোনো যুক্তি-প্রমাণ ছাড়াই
বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী প্রায় (?)
সবগুলো ধর্ম বিশেষ করে আব্রাহামিক
ধর্মের সৃষ্টিতত্ত্ব মিথ বা হাস্যকর রকমের
গাঁজাখুরি কল্পকাহিনী। তাদের প্রতি
চ্যালেঞ্জ হচ্ছে:
.
– সারা বিশ্বের মিথ্যা কল্পকাহিনীগুলোর মধ্যে
তাদের কাছে যেটিকে সবচেয়ে
অযৌক্তিক ও হাস্যকর বলে মনে হয়, সেটি
উল্লেখপূর্বক, সেটি কেন অযৌক্তিক ও
হাস্যকর তার পক্ষে যুক্তি দিতে হবে।
.
(নোট: নির্দিষ্ট একটি মিথ বা
কল্পকাহিনীর নাম উল্লেখ করতে হবে,
এবং সেটি কেন অযৌক্তিক ও হাস্যকর
তার পক্ষে যুক্তি দিতে হবে।)
.
(পাঠকদের জন্য নোট: বিবর্তনবাদীরা
যদি এই চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে পারেন
তাহলে আমি যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে দেব
যে, বিবর্তন তত্ত্ব তার চেয়েও অযৌক্তিক
ও হাস্যকর রকমের কল্পকাহিনী।
বিবর্তনবাদীদের কাপড় রক্ষার্থেই এই
চ্যালেঞ্জের জবাব দেওয়া উচিত। এই
চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে যাওয়া মানে এটা
স্বীকার করে নেওয়া যে, সকল
প্রকার কল্পকাহিনীর মধ্যে বিবর্তনবাদ-ই
সবচেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর রকমের
কল্পকাহিনী। কিন্তু তারা যেহেতু
উল্টোটাই প্রচার করেছে সেহেতু এই
চ্যালেঞ্জের জবাব না দিলে তারা ভণ্ড
ও মিথ্যুক হিসেবে গণ্য হবে।)
.
পাঠক নিশ্চয় বুঝতে পারছেন বিবর্তন
তত্ত্ব নিয়ে অসংখ্য-অগণিত প্রশ্ন করা
সম্ভব। বিবর্তন তত্ত্বের যেকোনো একটি
দিক নিয়েই অনেক প্রশ্ন করা যায়। কিন্তু
অতো কিছু তো আর লিখার মাধ্যমে
প্রকাশ করা সম্ভব নয়, তার দরকারও নাই।
পাতিল ভর্তি ভাতের দু-চারটি টিপলেই বুঝা যায় ভাত রান্না হয়েছে কি-না। এজন্য এখানে কতিপয়
মৌলিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হলো। দেখুন
তারা জবাব দেয় কি-না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top