বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ইসলামের আলোকে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের ’ করণীয়

কোন মন্তব্য নেই:

ইসলামের আলোকে ‘বাংলাদেশ ইসলামী
ছাত্র শিবিরের ’ করণীয়
.
১। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির
একটি ইসলামী দল যারা এদেশে ইসলামী
শরীয়াত কায়েম করতে চায়।
আলহামদুলিল্ললাহ তারা ও যুবকদেরকে
বিভিন্ন ইসলামী বই পড়াচ্ছেন, কোরআন-
হাদিস পড়াচ্ছেন, নামাজ-রোযার একটা
অভ্যাস তৈরী করে দিচ্ছেন। তারা
তাদের সাথে জড়িতদের মাঝে ছোটবেলা
থেকেই দ্বীন কায়েমের একটা স্পৃহা
জাগিয়ে তুলছেন।
.
কিন্তু ইসলামী শরীয়াতকে বিজয়ী করার
জন্য তাদের গৃহীত কাফিরদের আবিস্কৃত
গণতান্ত্রিক নির্বাচন পদ্ধতি সঠিক নয়।
আমরা এই পদ্ধতিকে সঠিক পদ্ধতি মনে
করি না। আমাদের মতে সেটা সম্পূর্ণ
হারাম ও বিদয়াত।
.
২। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু
হলোঃ ইসলামী ছাত্র শিবিরের বর্তমান
আন্দোলন নিয়ে, যা বিগত
কিছুদিন থেকে এদেশে চলছে। আমাদের মতেঃ
– তারা বর্তমানে যে আন্দোলন করছেন
তার উদ্দেশ্য সঠিক। বর্তমান মুরতাদ ও
জালেম শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার
তাদের নেতৃবৃন্দকে জুলুম করে আটকে
রেখেছে। এরা তাদের ক্ষেত্রে বিচারের
নামে প্রহসন করছে বলেই চক্ষুস্মান
সকলেই বুঝতে পারছেন। আমরাও মনে করি
উনারা যদি ইসলামী শরীয়াত না চাইতেন,
তাহলে এই মুরতাদ সরকার তাদেরকে
এইভাবে ফাসি দেয়ার চেষ্টা করতো না।
.
– পাকিস্থানের মুরতাদ সরকার একসময়
কাদিয়ানী বিরোধী আন্দোলনের কারণে
মাওলানা মওদুদীকে ফাসি দেয়ার চেষ্টা
করেছিলো। মাওলানা মওদুদীর আদর্শের
সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও তৎকালীন
সকল আলেম-ওলামা এই ফাসির হুকুমের
বিরোধিতা করেছিলেন। বাংলাদেশ
জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ ও ইসলাম
বিজয়ী করণ পদ্ধতির সাথে সম্পূর্ণ দ্বিমত
পোষণ করলেও, সেই পদ্ধতিকে হারাম ও
কুফরী পদ্ধতি মনে করলেও, আমরা তাদের
বিরুদ্ধে চলমান এই প্রহসনের বিচারকে
অন্যায্য ও জুলুম মনে করি।
.
৩। ইসলামী ছাত্র শিবিরের এই
আন্দোলনের উদ্দেশ্য ন্যায্য হলেও যে
পদ্ধতিতে তারা এই আন্দোলন করছেন,
সেটাকে আমরা সঠিক মনে করি না। বরং
সেটা অনেক ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে
ইসলামী শরীয়াতের লংঘন, হারাম ও
কবিরা গুনাহ। যেমনঃ
ক) তারা বিভিন্ন সময় হরতাল করছেনঃ
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত;
রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা রাস্তার উপর
বসা থেকে বিরত থাক”। সাহাবাগন বলেন,
“হে আল্লাহর রাসুল! রাস্তায় বসা ছাড়া
তো আমাদের কোন উপায় নেই। আমরা
সেখানে বসে পারস্পরিক প্রয়োজন
সম্পর্কিত আলাপ-আলোচনা করে থাকি”।
রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেনঃ “তোমরা যখন
রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাকতে
অস্বীকার করছ, তাহলে রাস্তার অধিকার
আদায় কর”। তারা বলেন, “হে আল্লাহর
রাসূল! রাস্তার অধিকার আবার কি?”
তিনি বলেনঃ “রাস্তার অধিকার হল, দৃষ্টি
সংযত রাখা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু
দূর করা, সালামের জবাব দেয়া, সৎ
কাজের নির্দেশ দেয়া এবং অন্যায় কাজ
থেকে বিরত রাখা”। [বুখারী ও মুসলিম]
.
যদি রাস্তা থেকে কষ্টকর বস্তু সরানো
রাস্তার হক্ব হয়ে থাকে, তাহলে জনগণের
জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেয়া, রাস্তা
অবরোধ করে রাখা কিভাবে ইসলামে
অনুমোদিত হতে পারে?
.
-হরতালের দিনে গরীব রিকশাওয়ালা,
দিন-মজুররা কিভাবে তাদের রুজী
জোগাড় করবেন? সেদিন অনেক দিন মজুর
হয়তো অর্ধাহারে – অনাহারে দিন
কাটান। তারা তাদের পেটের ভাত
কিভাবে জোগাড় করবেন? এই দায়িত্ব
যারা হরতাল পালন করেন তাদেরকে
নিতে হবে। এটা মস্ত বড় জুলুম। নিজেদের
নেতাদের মুক্তির জন্য ইসলামী শরীয়াত
সম্মত পন্থা বাদ দিয়ে সাধারণ দুর্বল
মুসলমানদেরকে চাপে ফেলা কোন ক্রমেই
জায়েজ নয়।
হরতাল-অবরোধ ইত্যাদি এর মুল লক্ষ্যই
হলো সাধারণ জন-জীবন ব্যাহত করে
সরকারকে নিজের দাবী মানতে বাধ্য
করা। এটা কিভাবে ইসলামে অনুমোদিত
হতে পারে। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন
বলেছেনঃ
ﻭَﻻَ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না।
এটাই শরীয়াতের একটা উসুল যে, একজনের
অপরাধের জন্য অন্যজনকে শাস্তি প্রদান
করা যাবে না। তাহলে মুরতাদ সরকার
কিংবা রামপন্থী-বামপন্থীদের জুলুম ও
অপরাধের কারণে কিভাবে সাধারণ
মুসলমানদেরকে কষ্টে ফেলা অনুমোদিত
হয়?
আর এই পদক্ষেপের ফলে মুল অপরাধীরা
সবসময় অন্ধকারে আড়ালে চলে যায়। এটা
ন্যায় বিচার ও ইনসাফের খেলাফ।
.
খ) মুসলমান মহিলাদেরকে আন্দোলনের
নামে রাস্তায় নামিয়ে দেয়াঃ
ঘরে অবস্থা করাই মুসলমান মহিলাদের মুল
কর্মক্ষেত্র। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনে
কিংবা সাহাবী, তাবেয়ীন, তাবে-
তাবেয়ী ও সলফে সালেহীনদের জীবনে
কখনো এমন অবস্থা পাওয়া যায় না যে,
তারা দুশমনের সামনে মহিলাদেরকে
ঠেলে দিয়েছেন।
এটা কোনভাবেই সাহসী ও সংগ্রামী
মুজাহিদ মুসলিম জাতির চরিত্রের সাথে
খাপ খায় না।
.
– তারা মুরতাদ পুলিশের সামনে নিজ
দলের মহিলাদেরকে মিছিলে ঠেলে
দিচ্ছেন আর ঐ মুসলিম মা-বোনরা মুরতাদ
পুলিশ বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছেন।
এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটা কোন মুসলমান
পুরুষের আচরণ হতে পারে না। তারা এই মা-
বোনদেরকে প্রেস ক্লাবে তাদের পক্ষে
সংবাদ সম্মেলন করতে পাঠাচ্ছেন আর
মুরতাদ পুলিশ বাহিনী তাদেরকে আটক
করে, বেপর্দা করে আদালতে নিয়ে
যাচ্ছে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী ঐ
সকল লোক যারা এই দুর্বল মহিলাদেরকে
অসভ্য-বর্বর মুরতাদ পুলিশ বাহিনীর সহজ
শিকারে পরিণত করেছেন। আফসোস
যেখানে রাসুল (সাঃ) একজন মুসলিম
মহিলার হিযাব খুলে ফেলায় পুরো এক
ইহুদী গোত্রকে মদীনা ছাড়তে বাধ্য
করেছেন, সেখানে তাঁর অনুসারীরা আজ
নিজ ইচ্ছায় নিজের ঘরের মহিলাদেরকে
মুরতাদ জালেম বাহিনীর দিকে পাঠিয়ে
দিচ্ছেন। এটা কোন ধরনের ইসলামী
আন্দোলন? এটা কোন ধরনের পুরুষত্ব?
.
– আমরা এটাকে সম্পূর্ণ হারাম ও বিদয়াত
মনে করি। জুলুম বন্ধ করার জন্য ইসলাম
নির্দিষ্ট পথ ও পদ্ধতি উল্লেখ করেছে,
সেটা বাদ দিয়ে কুফফার আবিস্কৃত এ রকম
পদ্ধতি গ্রহণ করা কখনোই মুসলমানদের
জন্য জায়েজ নয়। অন্যান্য কুফরীপন্থী দল
হরতাল করে, মিছিল করে ইত্যাদি
যুক্তিতে ইসলামী ছাত্রশিবির কিংবা
জামায়াতে ইসলামীর জন্য এসব
কার্যক্রমে জড়িত হবার কোন অবকাশ
নেই। ইসলামী শরীয়াত এই অনুমতি দেয়
না। এসব জুলুম বন্ধে ইসলামী পদ্ধতি
সম্পর্কে আলোচনা একটু পরেই করছি
ইনশাআল্লাহ।
.
মুরতাদ হাসিনা সরকার কিংবা তাদের
গোলাম মুরতাদ পুলিশ বাহিনীর দোষের
কথা আমরা এই আলোচনায় আনছি না
কারণ যারা আল্লাহর দ্বীনের সাথে
কুফরী করছে, যারা দ্বীন থেকে মুরতাদ
হয়ে বেরিয়ে গেছে, তাদের কাছ থেকে
ভালো আচরণ, কোমল আচরণ, ইনসাফের
আশা কেবল বোকারাই করতে পারে।
এটাইতো তাদের হাকীকত। আমাদেরকে
এই গোষ্টীর যথাযথ ঔষধ প্রয়োগ করতে
হবে। সেটা হচ্ছে জিহাদ ও কিতাল। কিন্তু
সেটা নিজের মা-বোনকে তাদের সামনে
ঠেলে দিয়ে নয়।
.
গ) জ্বালাও-পোড়াও পিকেটিং
ইত্যাদিঃ
সাধারণ মুসলমানদের গাড়ী, দোকান
ইত্যাদি জ্বালিয়ে দেয়া কখনো
ইসলামসম্মত কোন প্রতিবাদের ভাষা হতে
পারে না। বরং এটা শরীয়াতের মুল
মাকসাদের পরিপন্থী। ইসলামী
শরীয়াতের অন্যতম একটা লক্ষ্য হলোঃ
সাধারণ মুসলমানদের জান-মালের
হেফাজত করা। এখন দ্বীন ইসলাম কায়েম
করার আন্দোলনে কিভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে
সাধারণ মুসলমানদের ধন-সম্পদ বিনষ্ট করা
হবে? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বের
ভাষণে বলেছেনঃ
আজকের এই দিন, এই মাস ও এই শহর যেমন
সম্মানার্হ, তোমাদের রক্ত, সম্পদ ও ইজ্জত
তেমনি সম্মানার্হ।
তাহলে হরতাল করে সাধারণ মুসলমানদের
দোকান, গাড়ী ইত্যাদি পুড়িয়ে কি তারা
রাসুল (সাঃ) এর বিদায় হজ্জ্বের ভাষনের
বিপরীত আমল করছেন না?
.
ঘ) কাফিরদের কাছে এর জন্য বিচার
চাওয়া।
তাদের বর্তমান আন্দোলনে আরেকটি
হারাম কাজ হলোঃ আমেরিকাতে লবিষ্ট
নিয়োগ কিংবা জাতিসংঘ, ‘ব্রিটিশ
হাউজ অব ল’ ইত্যাদির সামনে প্লে-কার্ড
প্রদর্শন। এখানে প্লে-কার্ড প্রদর্শনী
মানে তো এটাই যে,
‘হে কাফির পাশ্চাত্য সভ্যতা, তোমরা
দেখো আমাদের দেশে আমাদের উপর কি
পরিমাণ নির্যাতন করা হচ্ছে। পারলে
তোমরা আমাদেরকে কিছু সাহায্য করো,
এই জুলুম বন্ধ করো।’ ইত্যাদি।
আর এভাবে কাফিরদের বন্ধু, অভিভাবক
হিসেবে নেয়া, তাদের কাছে বিচার
চাওয়া হচ্ছে তাদেরকে আউলিয়া
বানানো কুফরী। আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﺍﻟْﻴَﻬُﻮﺩَ ﻭَﺍﻟﻨَّﺼَﺎﺭَﻯ
ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺑَﻌْﺾٍ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻮَﻟَّﻬُﻢ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ
ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻻَ ﻳَﻬْﺪِﻱ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡَ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ
“হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও
খ্রীষ্টানদেরকে আউলিয়া (বন্ধু,
অভিভাবক, রক্ষক) হিসাবে গ্রহণ করো না।
তারা একে অপরের আউলিয়া। তোমাদের
মধ্যে যে তাদেরকে আউলিয়া হিসেবে
নিবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ
জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন
না।” (সূরা আল মায়িদাহ, আয়াতঃ ৫১)
.
ঙ) দ্বিমূখী নীতি।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী
ছাত্রশিবিরের ভাইরা আমেরিকান
দুতাবাসের গাড়ি পুড়ানোর জন্য
কাফিরদের কাছে মুহুর্তের মধ্যে নিঃশর্ত
ক্ষমা চেয়েছেন, ক্ষতিপূরণ দিতে
চেয়েছেন। কিন্তু এদেশের সাধারণ
মুসলমানদের গাড়ি কিংবা দোকান ধ্বংশ
করার কারণে তাদের কাছে মৌখিকভাবে
মাফও চাইতে পারেন নি। দেখা যাচ্ছে
তারা কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কোমল
আচরণ করেছেন আর সাধারণ মুসলমানদের
সাথে কঠোর আচরণ করছেন। অথচ করার
কথা ছিলো উল্টো। আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন বলেছেনঃ
ﻣُﺤَﻤَّﺪٌ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣَﻌَﻪُ ﺃَﺷِﺪَّﺍﺀُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭِ
ﺭُﺣَﻤَﺎﺀُ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ
মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, যারা তার
সাথে আছে তারা কাফিরদের ব্যাপারে
কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে কোমল। (সূরা
ফাতহ, আয়াতঃ ২৯)
.
যদি তাদের আন্দোলনের কারণে ভুলক্রমে
কোন মুসলমানের জান-মালের ক্ষতি হয়ে
থাকে, তাহলে তাদের কাছে ক্ষমা
চাওয়াই ছিলো তাদের প্রতি কোমল
আচরণের দাবী। কিন্তু বাস্তবে আমরা
দেখলাম উল্টো।
যদিও মৌখিক এই মাফ চাইলেই তারা
মাফ পেয়ে যাবেন এমন কোন কথা নেই।
ভুক্তভোগী ঐ মুসলমান যদি তাদেরকে
মাফ না করে দেন, তাহলে কিয়ামতের
দিন তাদেরকে এর জন্য জবাবদিহী করতে
হবে।
.
চ) মূলের সমস্যার প্রতি লক্ষ্য না রাখা।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাইরা তাদের
নেতৃবৃন্দকে এই প্রহসনের বিচার থেকে
মুক্তি দেয়ার জন্য অনেক কথা বলেছেন,
অনেক আন্দোলন করছেন কিন্তু এই বিচার
যে মানবরচিত কুফরী আইনে হচ্ছে এই
ব্যাপারে তারা একটি কথাও বলেন নি।
মনে হচ্ছে যেন তাদের গুটিকয়েক
নেতৃত্বের ফাসির তুলনায় এটা কোন
বিষয়ই নয়। উদাহরণ স্বরুপঃ একজন লোক
দিনের বেলায় ধর্ষণ করলো। এখন কোন
প্রতিবাদকারী যদি শুধু এই কথার
প্রতিবাদ জানায় যে, দিনের বেলা কেন
ধর্ষণ করা হলো?
.
যদি এটাই তার প্রতিবাদের মুল কারণ হয়
কিন্তুকে মুল ধর্ষণ নিয়ে কোন কথা না
বলে, তাহলে তা কেমন আচরণ হবে?
ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই আন্দোলনের
অবস্থা হচ্ছে অনেকটা এই রকম। তারা এই
বিচারের ক্ষেত্রে প্রহসনকে খুবই
খারাপভাবে দেখছেন, একে জুলুম মনে
করছেন তাই এই বিচার বন্ধ করতে বলছেন।
কিন্তু আহকামুল হাকিমীন আল্লাহর দেয়া
আইন, শরীয়াত বাদ দিয়ে যে এই বিচার
কার্য পরিচালনা হচ্ছে, গোটা
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা যে একই
কুফরী-শিরকী আইন দিয়ে চালিত হচ্ছে এই
ব্যাপারে তাদের মুখে টু শব্দ পাওয়া
যাচ্ছে না। অথচ আল্লাহ বলেছেনঃ
ﺃَﻓَﺤُﻜْﻢَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﻳَﺒْﻐُﻮﻥَ ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠّﻪِ ﺣُﻜْﻤًﺎ
ﻟِّﻘَﻮْﻡٍ ﻳُﻮﻗِﻨُﻮﻥَ
“তারা কি জাহেলিয়াতের বিচার-
ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা
বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী
কে?” (সূরা আল মায়িদাহ, আয়াতঃ ৫০)
তিনি আরো বলেছেনঃ
ﺃَﻟَﻢْ ﺗَﺮَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺰْﻋُﻤُﻮﻥَ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ
ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻠِﻚَ ﻳُﺮِﻳﺪُﻭﻥَ ﺃَﻥ ﻳَﺘَﺤَﺎﻛَﻤُﻮﺍْ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟﻄَّﺎﻏُﻮﺕِ
“আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা
দাবী করে যে, যা আপনার প্রতি
অবর্তীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা
অবর্তীণ হয়েছে আমরা সে বিষয়ের উপর
ঈমান এনেছি। (কিন্তু) তারা বিরোধীয়
বিষয়কে তাগুতের দিকে নিয়ে যেতে
চায়।” (সূরা আন নিসা, আয়াতঃ ৬০)
.
তাহলে আল্লাহর দেয়া বিচার-ব্যবস্থার
প্রতিষ্ঠাকামীদের থেকে এটা কি
যথাযত আচরণ হলো? একজন মুসলমানের
আচরণে এ রকম বৈপরিত্ব কি মানায়?
.
ছ) জিহাদের অপব্যাখ্যাঃ
ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভাইরা তাদের
চলমান এই আন্দোলন, হরতাল, জ্বালাও-
পোড়াও, পুলিশের দিকে ইটপাটকেল
নিক্ষেপ, মিছিল-মিটিং ইত্যাদিকে
জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ মনে করছেন।
অথচ ইসলামী শরীয়াতে জিহাদের একটা
নির্ধারিত সংজ্ঞা আছে।
.
জিহাদ ফি সাবিলিল্লার ব্যাপারে
ব্যাখ্যা স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহীহ
হাদিসের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ
ﻗﻴﻞ ﻭﻣﺎ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﻗﺎﻝ ﺃﻥ ﺗﻘﺎﺗﻞ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﺇﺫﺍ ﻟﻘﻴﺘﻬﻢ
ﻗﻴﻞ ﻓﺄﻯ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﺃﻓﻀﻞ ﻗﺎﻝ ﻣﻦ ﻋﻘﺮ ﺟﻮﺍﺩﻩ ﻭﺃﻫﺮﻳﻖ
ﺩﻣﻪ – ﺧﺮﺟﻪ ﺃﺣﻤﺪ . ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺃﻳﻀًﺎ : ﻋﺒﺪ ﺑﻦ ،
ﻭﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻰ ﻭﻏﻴﺮﻩ ، ﻭﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻰ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻬﻴﺜﻤﻰ
‏( 1/59 ‏) : ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ ، ﻭﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻰ ﻓﻰ ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ ﺑﻨﺤﻮﻩ
، ﻭﺭﺟﺎﻟﻪ ﺛﻘﺎﺕ .
অর্থাৎ, বলা হলোঃ জিহাদ কি? তিনি
বললেন, কাফিরদের সাথে লড়াই করা যখন
তাদের সাথে সাক্ষাত হয়। বলা হলোঃ
কোন জিহাদ সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ
যার ঘোড়া নিহত হয় ও রক্ত প্রবাহিত হয়।
(মুসনাদে আহমাদ, সুনান বাইহাকী,
তাবারানী। সনদ সহীহ)
.
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস বুখারী শরীফের আরবী
ভাষ্যকার ইমাম কাসতালানী (রঃ) বলেন,
ﻗﺘﺎﻝ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭﻟﻨﺼﺮﺓ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﻭﻹﻋﻼﺀ ﻛﻠﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ
“জিহাদ হলোঃ দ্বীন ইসলামকে সাহায্য
করার জন্য ও আল্লাহর কালিমাকে সমুন্নত
করার জন্য কাফিরদের সাথে কিতাল
করা।”
.
ইমাম ইবনে হুমাম (রঃ) বলেন,
ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ : ﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺪﻳﻦ ﺍﻟﺤﻖ ﻭﻗﺘﺎﻟﻬﻢ ﺇﻥ ﻟﻢ
ﻳﻘﺒﻠﻮﺍ
“জিহাদ হচ্ছে কাফিরদেরকে সত্য দ্বীন
ইসলামের প্রতি আহবান করা এবং যদি
তারা ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে তাদের
সাথে কিতাল করা।” (ফাতহুল ক্বাদীর
৫/১৮৭)
.
আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রঃ) বলেনঃ
ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺸﺮﻉ ﺑﺬﻝ ﺍﻟﺠﻬﺪ ﻓﻰ ﻗﺘﺎﻝ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﻹﻋﻼﺀ ﻛﻠﻤﺔ
ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ
“শরীয়াতের পরিভাষায় জিহাদ হলোঃ
আল্লাহর কালেমাকে সমুন্নত করার জন্য
কাফেরদের বিরুদ্ধে কিতাল করতে গিয়ে
সর্বশক্তি ব্যয় করা”। (উমদাতুল ক্বারী,
১৪/১১৫)
.
ইবনে হাজার (রঃ) এর মতেঃ
ﻭﺷﺮﻋﺎ ﺑﺬﻝ ﺍﻟﺠﻬﺪ ﻓﻲ ﻗﺘﺎﻝ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ
“শরয়ী দৃষ্টিতে এর অর্থ হলো কাফিরদের
বিরুদ্ধে কিতালে এ ত্যাগ স্বীকারমূলক
সংগ্রাম”। (ফাতহুল বারী ৬/৩)
.
অর্থাৎ জিহাদ হচ্ছেঃ কিতাল ফি
সাবিল্লাহ এর জন্য যত কাজ আঞ্জাম
দেয়া হয় তার সব। ইসলামী ছাত্র
শিবিরের ভাইরা কি এদেশের মুরতাদ
সরকার ও তাদের মুরতাদ নিরাপত্তা
বাহিনীর সাথে কিতাল করার ইচ্ছা
পোষণ করেন? যদি তারা করতেন, কখনো
তারা
‘শিবির – পুলিশ ভাই ভাই’ জাতীয় কোন
স্লোগান দিতেন না।
বরং তারা অস্ত্র-গোলাবারুদ নিয়ে,
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে, পরিকল্পণা
মাফিক এদেশীয় তাগুত নিরাপত্তা
বাহিনীর উপর হামলা করতেন। এটা তারা
বাস্তবে করছেন না, তারা এর দাবীও
করেন না।
যদি কিতাল করার কোন লক্ষ্য না থাকে,
তাহলে এসব মিছিল-মিটিং, দাওয়াত, বই
বিতরণ ইত্যাদি কাজ কোন ক্রমেই জিহাদ
বলে গণ্য হবে না। ঠিক যেমনঃ সাধারণ
দান-সদকা জিহাদ বলে গণ্য হয় না, কিন্তু
কিতালের জন্য অস্ত্র ক্রয়ের জন্য অর্থ
ব্যয় জিহাদ বলে গণ্য হবে।
আর যদি তারা এটাকে জিহাদ মনে করে
থাকেন, তাহলে পুলিশের সংখ্যা
দ্বিগুনের চেয়ে বেশী না হলে কখনো সেই
সংঘর্ষ থেকে পলায়ন করা তাদের জন্য
উচিত হবে না। কারণ জিহাদের ময়দান
থেকে পলায়ন করা হারাম ও একটি
কবিরা গুনাহ। আর মিছিল কারীদের
সংখ্যাতো খুব কমই পুলিশের অর্ধেক হয়।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ
ﻭَﻣَﻦ ﻳُﻮَﻟِّﻬِﻢْ ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﺩُﺑُﺮَﻩُ ﺇِﻻَّ ﻣُﺘَﺤَﺮِّﻓﺎً ﻟِّﻘِﺘَﺎﻝٍ ﺃَﻭْ ﻣُﺘَﺤَﻴِّﺰﺍً
ﺇِﻟَﻰ ﻓِﺌَﺔٍ ﻓَﻘَﺪْ ﺑَﺎﺀ ﺑِﻐَﻀَﺐٍ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻭَﻣَﺄْﻭَﺍﻩُ ﺟَﻬَﻨَّﻢُ
ﻭَﺑِﺌْﺲَ ﺍﻟْﻤَﺼِﻴﺮُ
যে ব্যক্তি লড়াই এর কৌশল পরিবর্তনের
জন্য অথবা মুল দলের সাথে মিলিত হবার
উদ্দেশ্য ছাড়া শত্রুর মোকাবেলা ছেড়ে
পালাবে, সে আল্লাহর কোপানলে পতিত
হবে তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর তা
বড়ই নিকৃষ্টতর স্হান। (সুরা আনফাল,
আয়াতঃ ১৬)
.
হযরত আবু হোরায়রা রাঃ বর্ণিত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম যে সাতটি সর্বনাশা কবীরা
গুনাহ থেকে আত্মরক্ষা করতে বলেছেন,
যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা তার
মধ্যে অন্যতম। (বোখারী ও মুসলিম)
উপরুক্ত আলোচনাথেকে এটাই প্রতীয়মান
হয় যে, তাদের চলমান আন্দোলনকে জিহাদ
ফি সাবিলিল্লাহ মনে করা নিজের পায়ে
কুড়াল মারার মতো একটা বোকামী ছাড়া
কিছুই না।
.
জ) মুরতাদ পুলিশ বাহিনীর উপর আক্রমণঃ
তাদের বর্তমান আন্দোলনের মধ্যে তারা
মুরতাদ পুলিশ বাহিনীর উপর তারা যে
আক্রমণ করছেন, সেটা ইসলামী
শরীয়াতের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ জায়েজ।
কারণ এরা জালেম বাহিনী, এদের স্থান
জাহান্নামে। কারণ হাদিসে এসেছে
জুলুমকারীর সাহায্যকারীরা তাদের
স্থান জাহান্নামে পাবে। এছাড়াও
এগুলো হচ্ছে মুরতাদ বাহিনী। কারণ
বর্তমান তাগুত-মুরতাদ সরকারের রক্ষা
করাই এদের মুল কাজ। মুরতাদ সরকারের এই
বাহিনীই তো মাঠ পর্যায়ে জালেম
হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকে কার্যক্রম
পরিচালনা করে। আল্লাহ বলেনঃ
ﺃُﺫِﻥَ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻘَﺎﺗَﻠُﻮﻥَ ﺑِﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﻇُﻠِﻤُﻮﺍ ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠَﻰ
ﻧَﺼْﺮِﻫِﻢْ ﻟَﻘَﺪِﻳﺮٌ
যুদ্ধে অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের
সাথে কাফেররা যুদ্ধ করে; কারণ তাদের
প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ
তাদেরকে সাহায্য করতে অবশ্যই সক্ষম।
(সূরা হজ্জ্ব, আয়াতঃ ৩৯)
.
কিন্তু তারা মুরতাদ পুলিশ বাহিনীর সাথে
আল্লাহ প্রদত্ত জিহাদ-কিতাল ছেড়ে
দিয়ে, কুফফার আবিস্কৃত তথাকথিত
গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে বিনা
অস্ত্রে সংঘর্ষ করে নিহত হচ্ছেন। এটা
শরীয়াতের কাম্য নয়। বরং তাদের উচিত
পরিকল্পণা মাফিক পর্যাপ্ত অস্ত্র-
গোলাবারুদ জোগাড় করে এই মুরতাদ
সরকার ও তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর
সাথে যুদ্ধে নামা। আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻭَﺃَﻋِﺪُّﻭﺍ ﻟَﻬُﻢْ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺘُﻢْ ﻣِﻦْ ﻗُﻮَّﺓٍ ﻭَﻣِﻦْ ﺭِﺑَﺎﻁِ ﺍﻟْﺨَﻴْﻞِ
“আর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সামর্থ
অনুযায়ী সংগ্রহ করো শক্তি-সামর্থ্য ও
পালিত ঘোড়া …” (সূরা আল আনফাল,
আয়াতঃ ৬০)
তাই যুদ্ধের আগে প্রস্তুতি নেয়া জরুরী।
.
ঝ) তারা যদি এই জালেম সরকারকে
মুরতাদ মনে না করেন, শুধু জালেম মনে
করেন তাহলে করণীয়।
যদি ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভাইরা এই
মুরতাদ সরকারকে কাফির-মুরতাদ মনে না
করেন, বরং তাদেরকে যদি এখনো মুসলমান
মনে করেন, তাহলে কোন অবস্থায়ই এই
সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করা শরীয়াতে
অনুমতি নেই। কারণ মুসলমান শাসক জালেম
হলেও তার অনুগত্য করার কথা বলা আছে,
সে জুলুম করে নিজের ধন-সম্পদ নিয়ে
গেলেও তার বিরুদ্ধচারন করতে রাসুল
(সাঃ) নিষেধ করেছেন।
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ সুদিনে
ও দুর্দিনে, সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি এবং
তোমার অধিকার খর্ব হওয়ার ক্ষেত্রেও
(বা তোমার উপর অন্যকে অগ্রাধিকার
দেয়া হলেও, শাসকের নির্দেশ) শ্রবণ করা
ও আনুগত্য করা তোমার জন্য অপরিহার্য।
(মুসলিম)
.
আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)
বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা অধিকার
হরণ ও বহু অপছন্দনীয় জিনিসের সম্মুখীন
হবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর
রাসূল! আমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এরূপ
পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে তার জন্য
আপনার নির্দেশ কি? তিনি বলেনঃ এরূপ
অবস্থায় তোমরা তোমাদের নিকট প্রাপ্য
যথারীতি পরিশোধ করবে এবং তোমাদের
প্রাপ্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করবে।
(বুখারী, মুসলিম)
.
এই সময়ের ইসলামী শরীয়াত অনুযায়ী
ইসলামী ছাত্রশিবিরের যা করণীয়
ছিলোঃ
.
এদেশের গণতান্ত্রিক মুরতাদ সরকারসমূহ এ
দেশে যুগ যুগ ধরে কুফরী শাসন ব্যবস্থা
দ্বারা দেশ পরিচালনা করেছে, এই দেশে
আল্লাহর শরীয়াতকে হারাম করে দিয়ে
মানব রচিত কুফরী শাসন ব্যবস্থা দিয়ে
এদেশকে পরিচালনা করেছে। পুরো
অর্থনীতি পরিচালনা করছে সুদের
ভিত্তিতে যে সুদের বিরুদ্ধে আল্লাহ যুদ্ধ
ঘোষণা করেছেন। এদের মুরতাদ হবার
ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে শাইখ আবু
মুহাম্মদ মাকদিসি (দাঃ বাঃ) রচিত
‘মুসলিম দেশের শাসক বর্গ ও তাদের শাসন’
বইটি আপনারা পড়তে পারেন।
.
তাই এরকম মুর্তাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করা সামর্থবান প্রতিটি মুসলমানের উপর
ফরজ। এ ব্যাপারে আলেমদের ইজমা
রয়েছে। ইবনে হাজার (রঃ) বর্ণনা
করেছেন যে এ ব্যাপারে ইবনে বাত্তাল,
ইবনে তীন, দাউদী প্রমুখও ইজমা উল্লেখ
করেছেন। সহীহ বুখারীর অনবদ্য
ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘ফাতহুল বারী’ প্রণেতা
ইবনে হাজার (রঃ) বলেন,
ﻭﻣﻠﺨﺼﻪ ﺃﻧﻪ ﻳﻨﻌﺰﻝ ﺑﺎﻟﻜﻔﺮ ﺇﺟﻤﺎﻋﺎ ” ﻓﻴﺠﺐ ﻋﻠﻰ
ﻛﻞ ﻣﺴﻠﻢ ﺍﻟﻘﻴﺎﻡ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ، ﻓﻤﻦ ﻗﻮﻱ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﻓﻠﻪ
ﺍﻟﺜﻮﺍﺏ، ﻭﻣﻦ ﺩﺍﻫﻦ ﻓﻌﻠﻴﻪ ﺍﻹﺛﻢ، ﻭﻣﻦ ﻋﺠﺰ ﻭﺟﺒﺖ
ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﻬﺠﺮﺓ ﻣﻦ ﺗﻠﻚ ﺍﻷﺭﺽ .
“আর এ ব্যাপারে ইজমার সারমর্ম হলো
তাকে তার কুফরীর কারণে অপসারণ
করতে হবে। সুতরাং প্রতিটি মুসলমানের
জন্য এই উদ্দেশ্যে রুখে দাঁড়ানো
ওয়াজিব, যার এই কাজ করার শক্তি আছে
তার জন্য রয়েছে সওয়াব, যে এটা
অবহেলা করবে সে গুনাহগার হবে, আর যে
এতে অসমর্থ তার জন্য ওয়াজিব হবে ঐ
এলাকা থেকে হিজরত করা।” (ফাতহুল
বারী, কিতাবুল ফিতান, ১৩/১২৩)
.
দীর্ঘমেয়াদী করণীয়ঃ
.
তাদের বর্তমান সমস্যার মূল কারণকে বুঝা
ও সেই কারণকে দূরীভূত করা। আর এটা
দ্বীন ইসলামের একটা গুরুত্বপূর্ণ উসুল।
কারণ ইসলাম যে কোন সমস্যার মূলে গিয়ে
এর সমাধান করতে চায়। তাদের উপর এত
জুলুম-নির্যাতন ও প্রহসনের এই বিচারের
সুযোগ সৃষ্টি হয়েছেঃ মানব রচিত
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই দেশ শাসন
হচ্ছে বলে। তাই তাদেরকে এই মুরতাদ
সরকার ব্যবস্থাকে মূলৎপাটন করতে হবে।
এতেই শুধু সম্ভব তাদের নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য
সকল মুসলমানদেরকে এই রকম প্রহসনের
বিচার থেকে মুক্তি দেয়া।
এই পথে সাময়িক মুক্তি বিলম্বিত হলেও
তাদের অনেকেরই হুসাইন (রাঃ) এর মতো
জান্নাতের নেতৃত্ব ও শাহাদের মৃত্যু নসীব
হয়ে যেতো।
এর জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে এই মুরতাদ
সরকার ও তাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে
পরাজিত করে ইসলামের পতাকা সুউচ্চ
করতে হবে।
.
স্বল্পমেয়াদী করণীয়ঃ
.
ক) সশস্ত্র প্রস্তুতি নিয়ে মুরতাদ বাহিনীর
সাথে যুদ্ধ করে জেল থেকে তাদের
নেতাদেরকে বের করে আনা।
এ ব্যাপারে আলেমদের ইজমা রয়েছে।
যদি কোন মুসলমানকে কাফিররা বন্দী
করে তবে তাকে যে কোন মূল্যে মুক্ত করে
আনতে হবে। হয় বন্দী বিনিময় অথবা যুদ্ধ
করে তাকে মুক্ত করে আনা সবার উপর
ফরজ। শুধু এই কারণেই এখন আমাদের
সামর্থ্য থাকলে আমরা এই মজলুম
বৃদ্ধদেরকে বের করে আনতাম। রাসুল
(সাঃ) বলেছেনঃ
‘‘তোমরা বন্দীকে মুক্ত কর, ক্ষুধার্তকে
আহার দান কর এবং রুগীর সেবা-শুশ্রুষা
করো।’’ (সহীহ বুখারী)
.
যখন মক্কার কাফিররা উসমান (রাঃ) কে
বন্দী করে ফেলে তখন রাসুল (সাঃ) ও
উপস্থিত সকল সাহাবা উসমানকে (রাঃ)
মুক্ত করার জন্য একটা বাইয়াত নেন। এটাই
হচ্ছে বাইয়াতে রিদওয়ান। এ ব্যাপারে
আল্লাহ আয়াত নাযিল করেছেন যে,
আল্লাহ তাদের উপর খুশী হয়ে গেছেন
এবং তাদের হাতের উপর ছিলো আল্লাহর
হাত। সবাই শপথ নেন যে, হয় উসমান (রাঃ)
কে মুক্ত করে আনবেন অথবা সকলেই শহীদ
হয়ে যাবেন। কেউ বন্দী হলে তাকে মুক্ত
করার এই শিক্ষা আমরা সীরাত থেকে
শিখতে পারি।
আপনারাও সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ)
মতো ঐ একই প্রতিজ্ঞা নিন।
.
খ) তাদের এক নেতাকে হত্যা করা হলে এর
বদলে ইসলামী ছাত্র শিবির কয়েকশত
মুরতাদ আওয়ামী ও বামপন্থী মুরতাদ
নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার ঘোষণা দিতে
পারেন। এমনিতেই এসব মুরতাদ
নেতাদেরকে হত্যা করা জায়েজ বরং
ওয়াজিব। আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻓﻘﺎﺗﻠﻮﺍ ﺃﺋﻤﺔ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﺇﻧﻬﻢ ﻻ ﺃﻳﻤﺎﻥ ﻟﻬﻢ ﻟﻌﻠﻬﻢ ﻳﻨﺘﻬﻮﻥ
তোমরা কাফির নেতৃবৃন্দকে কতল করো,
যাতে তারা ফিরে আসে কারণ তাদের
কোন ঈমান নেই। (সূরা তওবা, আয়াতঃ ১২)
.
শিবিরের মধ্যে কি এই মানের মর্দে
মুজাহিদ নেই – এটা আমরা বিশ্বাস করি
না।
.
গ) প্রতি এলাকা থেকে আট-দশজন শিবির
এর ভাই একত্রিত হলেই দুই / তিনটা
আওয়ামী ও বামপন্থী নেতাকে কতল করা
যায়। এটা করা তাদের জন্য আল্লাহর
ইচ্ছায় খুবই সহজ। আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻳﺎﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺁﻣﻨﻮﺍ ﺧﺬﻭﺍ ﺣﺬﺭﻛﻢ ﻓﺎﻧﻔﺮﻭﺍ ﺛﺒﺎﺕ ﺃﻭ
ﺍﻧﻔﺮﻭﺍ ﺟﻤﻴﻌﺎ
হে ঈমানদারগণ! নিজেদের সতর্কতা গ্রহণ
করো এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা
সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়। (সূরা
নিসা, আয়াতঃ ৭১)
.
সাধারণ মানুষকে হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি
তথাকথিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়রানি
না করে, মুল শত্রুদেরকে আপনারা কতল
করেন, সাধারণ মুসলমানগণ আপনাদেরকে
সমর্থন দিবেন ইনশাআল্লাহ। আর আপনারা
আপনাদের দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে থাকুন,
কতজন আপনাদের সমর্থন করলো আর কতজন
করলো না, সেটা এত গুরুত্বপূর্ণ হবে না।
আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻓَﻘَﺎﺗِﻞْ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻻَ ﺗُﻜَﻠَّﻒُ ﺇِﻻَّ ﻧَﻔْﺴَﻚَ ﻭَﺣَﺮِّﺽِ
ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻋَﺴَﻰ ﺍﻟﻠّﻪُ ﺃَﻥ ﻳَﻜُﻒَّ ﺑَﺄْﺱَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍْ
ﻭَﺍﻟﻠّﻪُ ﺃَﺷَﺪُّ ﺑَﺄْﺳًﺎ ﻭَﺃَﺷَﺪُّ ﺗَﻨﻜِﻴﻼً
আল্লাহর পথে কিতাল করতে থাকুন,
আপনি নিজের উপর ব্যতীত অন্য কারো
জন্য যিম্মাদার নন! আর আপনি
মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন।
শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ
খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-
সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং
কঠিন শাস্তিদাতা। (সূরা নিসা, আয়াতঃ
৮৪)
.
আপনারা যদি কিতাল করে এই মুরতাদ
সরকার ব্যবস্থা খতম করে ইসলামী হুকুমত
জারি করতে চাইতেন এবং আপনাদের
নেতাদেরকে বের করে আনার জন্য
সরাসরি মুরতাদ বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে
তাদেরকে মুক্ত করার চেষ্টা করতেন
তাহলে আপনাদেরকে সাহায্য করা
প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব হয়ে
যেতো কারণ জালেমের বিরুদ্ধে
মজলুমদের সাহায্য করা ফরজ। এটা
ইসলামী শরীয়াতের দাবী। কিন্তু হারাম
পন্থায় কোন কাজে এক মুসলমান আরেক
মুসলমানকে সাহায্য করতে পারে না।
আল্লাহ বলেনঃ
ﻭَﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺒِﺮِّ ﻭَﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺈِﺛْﻢِ
ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ
সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের
সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের
ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।
(সূরা মায়েদা, আয়াতঃ ২)
.
সন্দেহ-সংশয় দূরীকরণঃ
.
ক) মুরতাদ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন
জায়েজ কিনা?
তথাকথিত গণতান্ত্রিক ধাচে মগজ
ধোলাইয়ের কারণে ‘সশস্ত্র’ শব্দটিকে
একটা অপরাধ হিসেবে দেখতে শুরু
করেছেন। এতে কুফফাররা শতভাগ সফল
হয়েছে। তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে
সশস্ত্র যুদ্ধ করছে অনেক মুসলিম দেশে
কিন্তু তারা মুসলমানদেরকে নিরস্ত্র
রাখতে চায়। আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻭَﺩَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻟَﻮْ ﺗَﻐْﻔُﻠُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﺃَﺳْﻠِﺤَﺘِﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻣْﺘِﻌَﺘِﻜُﻢْ
ﻓَﻴَﻤِﻴﻠُﻮﻥَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻣَﻴْﻠَﺔً ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً
কাফেররা চায় যে, তোমরা তোমাদের
অস্ত্রে ও সরঞ্জামের ব্যাপারে অসতর্ক
থাকো, যাতে তারা একযোগে
তোমাদেরকে আক্রমণ করতে পারে। (সূরা
নিসা, আয়াতঃ ১০২)
.
তদপুরি আল্লাহ যেখানে দুইটি বিবাদমান
মুসলমান দলের মধ্যে সমাধান কল্পে
প্রয়োজনে কিতাল করতে বলেছেন,
সেখানে মুরতাদ শাসকের বিরুদ্ধে সশস্ত্র
জিহাদের ব্যাপারে সন্দেহ আসে
কিভাবে? আল্লাহ বলেছেনঃ
ﻭَﺇِﻥْ ﻃَﺎﺋِﻔَﺘَﺎﻥِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﺍﻗْﺘَﺘَﻠُﻮﺍ ﻓَﺄَﺻْﻠِﺤُﻮﺍ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ
ﻓَﺈِﻥْ ﺑَﻐَﺖْ ﺇِﺣْﺪَﺍﻫُﻤَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺄُﺧْﺮَﻯ ﻓَﻘَﺎﺗِﻠُﻮﺍ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺗَﺒْﻐِﻲ
ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻔِﻲﺀَ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﻣْﺮِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে
পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে
মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি
তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়,
তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর
নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। (সূরা
হুজুরাতঃ ৯)
.
খ) সশস্ত্র পদ্ধতিতে দ্বীন কায়েমের
চেষ্টা ইসলাম অনুমোদন করে কি না?
ﻭَﻗَﺎﺗِﻠُﻮﻫُﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻟَﺎ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﻓِﺘْﻨَﺔٌ ﻭَﻳَﻜُﻮﻥَ ﺍﻟﺪِّﻳﻦُ ﻟِﻠَّﻪِ
আল্লাহ বলেছেনঃ তাদের সাথে কিতাল
করতে থাকো যে পর্যন্ত না ফিতনা
দূরীভূত হয়ে যায় ও দ্বীন শুধুমাত্র আল্লাহর
জন্য নির্ধারিত হয়ে যায়। (সূরা বাকারা,
আয়াতঃ ১৯৩)
.
সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, রাস্ট্রীয়
ব্যবস্থা কুফরী পদ্ধতির উপর প্রতিষ্টিত
থাকলে, যা বর্তমানে আমাদের দেশে
আছে, এর থেকে বড় ফিতনা কি কিছু হতে
পারে? আল্লাহ আমাদের অপর ফরজ
করেছেন এই কুফরী ব্যবস্থা খতম করে
দ্বীন শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য হবার আগ
পর্যন্ত কিতাল করে যেতে। আর কিতাল
যে সশস্ত্র পদ্ধতি – সেটা আশা করি
কাউকে বুঝিয়ে দিতে হবে না।
উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) বর্ণিত
হাদীসে এসেছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
বলেছেনঃ
ﺩَﻋَﺎﻧَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺒَﺎﻳَﻌْﻨَﺎﻩُ
ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺃَﺧَﺬَ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺃَﻥْ ﺑَﺎﻳَﻌَﻨَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺴَّﻤْﻊِ ﻭَﺍﻟﻄَّﺎﻋَﺔِ
ﻓِﻲ ﻣَﻨْﺸَﻄِﻨَﺎ ﻭَﻣَﻜْﺮَﻫِﻨَﺎ ﻭَﻋُﺴْﺮِﻧَﺎ ﻭَﻳُﺴْﺮِﻧَﺎ ﻭَﺃَﺛَﺮَﺓٍ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ
ﻭَﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻧُﻨَﺎﺯِﻉَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺃَﻫْﻠَﻪُ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﺗَﺮَﻭْﺍ ﻛُﻔْﺮًﺍ ﺑَﻮَﺍﺣًﺎ
ﻋِﻨْﺪَﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓِﻴﻪِ ﺑُﺮْﻫَﺎﻥٌ
অর্থাৎ, “রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে
ডাকলেন এবং আমরা বাইয়াত হলাম।
তিনি তখন আমাদেরকে যে শপথ গ্রহণ
করান তার মধ্যে ছিল – ‘আমরা শুনবো ও
মানবো, আমাদের অনুরাগে ও বিরাগে,
আমাদের সংকটে ও স্বাচ্ছন্দ্যে এবং
আমাদের উপর অন্যকে প্রাধান্য দিলেও
যোগ্য ব্যক্তির সাথে আমরা নেতৃত্ব নিয়ে
কোন্দল করবো না।’ তিনি বলেন, যে যাবৎ
না তোমরা তার মধ্যে প্রকাশ্য কুফর
দেখতে পাবে এবং তোমাদের কাছে এ
ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে আল্লাহর সুস্পষ্ট
দলীল থাকবে।’” (মুত্তাফাকুন আলাইহি;
সহীহ মুসলিম ইস. ফাউ. হাদীস নং ৪৬১৯)
.
সুতরাং উপরুক্ত হাদিস অনুযায়ী প্রকাশ্য
কুফরী দেখা গেলে তার বিরুদ্ধাচারন
করা যাবে। এ ব্যাপারে ইজমা উল্লেখ
করে বুখারী শরীফের ভাষ্যকার আল্লামা
বদরুদ্দীন আইনী (রঃ) বলেছেনঃ
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﺪﺍﻭﺩﻱ ﺍﻟﺬﻱ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻓﻲ ﺃﻣﺮﺍﺀ ﺍﻟﺠﻮﺭ
ﺃﻧﻪ ﺇﻥ ﻗﺪﺭ ﻋﻠﻰ ﺧﻠﻌﻪ ﺑﻐﻴﺮ ﻓﺘﻨﺔ ﻭﻻ ﻇﻠﻢ ﻭﺟﺐ
ﻭﺇﻻ ﻓﺎﻟﻮﺍﺟﺐ ﺍﻟﺼﺒﺮ ﻭﻋﻦ ﺑﻌﻀﻬﻢ ﻻ ﻳﺠﻮﺯ ﻋﻘﺪ
ﺍﻟﻮﻻﻳﺔ ﻟﻔﺎﺳﻖ ﺍﺑﺘﺪﺍﺀ ﻓﺈﻥ ﺃﺣﺪﺙ ﺟﻮﺭﺍ ﺑﻌﺪ ﺃﻥ ﻛﺎﻥ
ﻋﺪﻻ ﺍﺧﺘﻠﻔﻮﺍ ﻓﻲ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﺨﺮﻭﺝ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺍﻟﺼﺤﻴﺢ
ﺍﻟﻤﻨﻊ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻜﻔﺮ ﻓﻴﺠﺐ ﺍﻟﺨﺮﻭﺝ ﻋﻠﻴﻪ
দাউদী (রঃ) বলেছেন, আলেমরা এ
ব্যাপারে একমত যে, শাসক জালেম হলে
যদি ফিতনা ও জুলুম ছাড়া তাকে অপসারণ
করার সামর্থ থাকে, তাহলে তা ওয়াজিব।
তা না হলে ধৈর্য্য ধরা ওয়াজিব। অন্যরা
বলেছেন, ফাসিক ও বিদয়াতীর কাছে
নেতৃত্ব দেয়া যাবে না। যদি সে প্রথমে
ন্যায়পরায়ণ থাকে ও পরে বিদয়াত ও জুলুম
করে তবে তার অপসারণ ও বিরুদ্ধাচারণের
ব্যাপারে মতভেদ হয়েছে। সঠিক মত হচ্ছে,
তা না করা যতক্ষণ না সে কুফরী করে।
যখন সে কুফরী করে তখন তাকে অপসারণ ও
তার বিরুদ্ধাচারণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
(উমদাতুল ক্বারী শরহে সহীহ আল বুখারী,
কিতাবুল ফিতান, ৩০/১১০)
.
গ) এই যুগে যে পদ্ধতি চলছে প্রতিবাদ-
আন্দোলনের জন্য সেই পদ্ধতিই অনুসরণ
করা কি কোন হিকমাহ?
.
আমাদের মনে রাখার প্রয়োজনঃ
আল্লাহর হুকুম পালনের নাম হলো হিকমাহ।
আল্লাহর হুকুম পরিত্যাগ করা হিকমাহ হয়
কিভাবে?
.
যেখানে আল্লাহর হুকুম ছিলো, ফরজ
ছিলো এসব শাসকের বিরুদ্ধে রুখে
দাঁড়ানো, তাদেরকে অপসারণ করা,
যেখানে এ ব্যাপারে সলফে
সালেহীনদের মাঝে ইজমা রয়েছে,
সেখানে সেই ফরজ কাজ পরিত্যাগ করা
হিকমাহ হয় কিভাবে?
.
তদপুরি, এসব আন্দোলনে রয়েছে বিভিন্ন
ধরনের হারাম কার্যক্রম যা আমরা উপরে
উল্লেখ করেছি।
.
তাছাড়া, হিকমাহ হলো সুন্নাহ, যা
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজেও আমল করেছেন।
আর হারাম কোন কাজ কখনো হিকমাহ হতে
পারে না। কারণ আল্লাহ নিজে রাসুল
(সাঃ) কে হিকমাহ শিক্ষা দিয়েছেন।
আল্লাহ কি কখণ তাঁর রাসুলকে (সাঃ)
হারাম কাজ করতে নির্দশ দিতে পারেন?
সুতরাং হিকমাহ এর নামে কখনো ইসলামী
শরীয়াতের বিপরীত কাজ করা যাবে না।
আর আমরা যে পদ্ধতির কথা বললাম তা
ইসলামী শরীয়াতে এর অবস্থা কোথায়।
আল্লাহ আমাদেরকে হক্বকে হক্ব হিসেবে
চেনার এবং তা অনুসরণ করার তৌফুক দান
করুন।
.
আমাদের আহবানঃ
হে ইসলামী ছাত্র শিবিরের ভাইরা,
হারাম ও কুফরের পথ পরিহার করুন।
.
আসুন
ইসলামী শরীয়াত বর্ণিত পথে।
.
আসুন
মুক্তির আংগিনায়।
.
আসুন
বীর মুজাহিদ, শহীদ ও গাজীদের পথে।
.
ছেড়ে দিন ঐ কুফফার আবিস্কৃত
মানবরচিত সকল পথ ও পদ্ধতি।
অনুসরণ করুন আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের
(রাঃ), হুসাইন (রাঃ), ইবনে তাইমিয়া (রঃ)
সহ ইসলামের বীরপুরুষদের। কলমের জিহাদ
সাথে সাথে আসুন তারবারীর জিহাদে।
মিছিলের জিহাদ আর কতকাল চলবে হে
আমার ভাই?
.
সভা-সমিতির জিহাদ আর কতকাল চলবে
হে আমার ভাই?
.
বিএনপির জন্য ভোট চাওয়ার জিহাদ আর
কতকাল চলবে হে আমার ভাই?
.
কলেজ-ক্যাম্পাসে পোষ্টার লাগানোর
জিহাদ আর কতকাল চলবে হে আমার ভাই?
যেখানে ইসলামে সরাসরি যুদ্ধের অনুমতি
দেয়া আছে, সেখানে আর কতকাল চলবে
অকারণে মুরতাদ পুলিশ বাহিনীর হাতে
নিহত হওয়া?
.
যেখানে ইসলামে সরাসরি যুদ্ধের অনুমতি
দেয়া আছে, সেখানে আর কতকাল চলবে
মিছিল করতে গিয়ে মুরতাদ পুলিশের
হাতে আটক হওয়া?
.
যেখানে ইসলামে সরাসরি যুদ্ধের অনুমতি
দেয়া আছে, সেখানে আর কতকাল চলবে
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হাতে নিহত
হওয়া?
.
আপনারা কি বুঝতে পারছেন না
আপনারা কি সত্য উপলব্ধি করতে পারছেন
না?
.
আপনারা কি দূর্গন্ধযুক্ত মানবরচিত
রাজনৈতিক পথ ছেড়ে আসবেন না
ইসলামের সোনালী পথে?
.
হে যুবক, ইসলাম তোমাকে আহবান করছে।
আসুন জিহাদের পথে। আসুন কিতালের
পথে। আসুন সবাই মিলে মুরতাদ শেখ
হাসিনা, তার সাঙ্গপাঙ্গ, ও মুরতাদ
নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে আমরা এ
দেশে ইসলামী শাসনের সোনালী সূর্যকে
নিয়ে আসি।
.
আল্লাহ আপনাদেরকে দ্বীনের সঠিক
উপলব্ধি দান করুন।
.
আপনারা শরীয়াতসম্মত পথে চলে আসুন।
হরতাল-মিছিল-সাধারণ মুসলমানদের ধন-
সম্পদ জ্বালাও পোড়াও বন্ধ করে জিহাদ
ও কিতালের পথে, ইসলামী শরীয়াতের
দেখানো পথে ফিরে আসুন। আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁَﻣَﻨُﻮﺍ ﻫَﻞْ ﺃَﺩُﻟُّﻜُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓٍ ﺗُﻨﺠِﻴﻜُﻢ
ﻣِّﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏٍ ﺃَﻟِﻴﻢٍ – ﺗُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ ﻭَﺗُﺠَﺎﻫِﺪُﻭﻥَ
ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑِﺄَﻣْﻮَﺍﻟِﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧﻔُﺴِﻜُﻢْ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَّﻜُﻢْ ﺇِﻥ
ﻛُﻨﺘُﻢْ ﺗَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ .
“হে ঈমানদারগণ, আমি কি তোমাদেরকে
এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা
তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি
থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা
আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস
স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে
নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে
জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে
উত্তম; যদি তোমরা জানো।” (সূরা ছফ,
আয়াতঃ ১০-১১)
.
ইনশাআল্লাহ আপনাদের আশেপাশে
অনেক সাহায্যকারী পাবেন যারা শুধু
আল্লাহর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত, যারা
এই মুরতাদ সরকারকে হটিয়ে বাংলার
জমীনে ইসলামের কালো পতাকা উড্ডীন
করার জন্য কাজ করতে ইচ্ছুক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top