বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬

মোল্লা মুহাম্মাদ ওমর [রাহিমাহুল্লাহ] ও একজন তালেবে ইলম ছিলেন, যার জন্য তিনি আজ আইডিয়েলের পদমর্যাদার অধিকারী হয়ে ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

মোল্লা মুহাম্মাদ ওমর [রাহিমাহুল্লাহ] ও একজন তালেবে ইলম ছিলেন,
যার জন্য তিনি আজ আইডিয়েলের পদমর্যাদার অধিকারী হয়ে ছিলেন।
আজ আমাদের প্রত্যেককেই মোল্লা উমর হতে হবে। আমাদের প্রত্যেককেই মোল্লা উমরের পদাঙ্ক অনুস্বরণ করে চলতে হবে।
.
নিজের ভেতরে মোল্লা উমরের ন্যায় অমুখাপেক্ষীতার মন-মেজায সৃষ্টি করতে হবে। কাল পর্যন্ত যার চক্ষু যুদ্ধের ময়দানে শহীদ হয়ে গেছে, যিনি নিজের ঘরে শুকনো রুটি খেয়েছিলেন, আজ সমস্ত পৃথিবী তার সামনে আবনত পরিলক্ষিত হয়েছে।
.
কফি আনাম বলে,
জাতিসংঘের কর্তৃত্ব সবার ওপরেই চলে কিন্তু মোল্লা উমরের উপর চলেনা।
:
বড় বড় অপশক্তি ও বিদ্রোহীরা বলে যে, আমাদের সবাইকে বাঁকা করে ছাড়ে,
কিন্তু মোল্লা উমরের কিছু করতে পারে না।
.
আমি বলি-আল্লাহর শপথ!
মাদ্রাসার চাটায়ের মধ্যে এমনই প্রভাব রয়েছে যে, যে ব্যক্তি এর ওপর সঠিক ভাবে বসে যায়, তাকে কেউ পদানত করতে পারেনা। তবে এটি আমাদের দুর্বলতা যে, আমরা এই চাটায়ের মূল্যায়ন করা ছেড়ে দিয়েছি। আমরা এর কদর করতে ভূলে গেছি। নতুবা আল্লাহর নিকট এর বহু মূল্য রয়েছে, কেউ বলেছিল যে, মাদ্রসাওয়ালারা ছাত্রদেরকে বেকার করে দিয়েছে সেলোয়ার গুলা টাখনোর ওপরে, মাথায় টুপি, কোন অফিসের কালেক্টারীতেও লাগেনা।
:
আমি বলি, হ্যাঁ!!
আমরা কালেক্টারীর পদে নিয়োযিত হওয়ার জন্য সৃষ্টি হয়নি। আজ আমাদের মাদ্রসা পড়ুয়া লোক আমীরুল মুমিনীন পদে নিয়োযিত হয়েছেন। কাকে কাকে বাধা দিয়ে রাখবে!?
সৈনিকদের কাছে যাবে?
আর্মির চীফ মোল্লা এবং কমান্ডারও মোল্লা। যদি যাও ব্যবসা-বাণিজ্যের ময়দানে তবে সেখানের নেতৃত্বদানকারীরাও মৌলভী।
সব দিকে শুধু মৌলভী আর মৌলভী দেখা যাচ্ছে।যাদেরকে তোমরা স্বপ্নের মধ্যে ভয় পেতে।অমুক মৌলভী কে মেরে ফেল।
অমুক মৌলভীর ওপর কমান্ডো লেলিয়ে দাও।
.
এখন কাকে রুখবে?
আফগানিস্তানের মাদ্রসায় এক লক্ষ পঁচিশ হাজার মৌলভী তৈরী হচ্ছে।দুনিয়ার এমন বহু জায়গায় লক্ষ লক্ষ মৌলভী তৈরী হয়েছে, সেগুলোই তোমরা কন্ট্রোল করতে পারছনা। অন্যদের কিভাবে কন্ট্রোল করবে?
:
কিন্তু আমার আফসোস!!
মৌলভীরা নিজেরা এই চাটায়ের মূল্যে বোঝেনা।বেচারা বসে বসে আক্ষেপের সাথে দেখে টাইট প্যান্ট পরা লোকদের এই যে, টেডি যাচ্ছে। তোমরা এ সমস্ত টেডিদের দেখে কেন পেরেশান হচ্ছো??
:
নিজেদের চাটায়ের মূল্যে দিতে শেখ।
এই চাটাই যমীনের ওপর বিছানো।
আর এর আলোচনা হয়ে থাকে আরশে।
যে চাটাইয়ে বসে তোমরা পড়া-শোনা কর, সে চাটাইকে ফেরেস্তারা নিজেদের বেষ্টনীতে নিয়ে নেয়। আর এই সমস্ত মানুষদের দেখে তোমরা হীনষ্মন্যতার শিকার হয়ে যাও। তোমাদের টুপি পেছনের দিকে চলে যায়। কখনো কখনো দাঁড়ি গুলো ভেতরের দিকে নিতে চেষ্টা কর যাতে কেউ না দেখে।
.
আল্লাহর শপথ!
এই দাড়ির কী মূল্য বোঝতে চেষ্টা কর।
এই টুপি ও পাগড়ীর মূল্য কি জানতে জানতে চেষ্টা কর।মরে যাবে, কিন্তু পাগড়ী শির থেকে আলাদা হবে না।মরে যাবে দাঁড়ি চেহারা থেকে ভেতরে লুকাবেনা কারণ, আল্লাহ তা'য়ালা এসমস্ত বস্তুকে এমন সম্মান দান করেছেন যে, এগুলো ছাড়া বেঁচে থাকাই অসম্ভব।
.
আজ দুনিয়া মোল্লা মুহাম্মাদ উমরের সম্মানের কথা স্বীকার করেছে। বড় সুদর্শন লোকেরা লাইনে দাড়িয়ে থাকতো যে, যদি একটু সাক্ষাতের সুযোগ হয়ে যেত। গুরুত্বপূর্ণ জামাতের ছাত্ররাও অপেক্ষমান থাকে। মোল্লা উমরের সাথে একটু সাক্ষাত হয় কিনা।
:
আমার সাথীরা,
তালেবে ইলমরা!
একটু ভেবে দেখ,
শেষ পর্যন্ত আমাদের এসব মাদ্রসা থেকে মোল্লা উমর কেন দাড়াচ্ছেনা?
.
বহু খারাপী আমাদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে।
.
এক খারাপী হল এই যে,
আমরা দৃঢ় সংকল্প নেই।
দ্বিতীয় খারাপী হল,
আমরা হীনষ্মন্যতার শিকার।
তৃতীয় খারাপী হল,
আমরা একে অপরে প্রতি হিংসায় লিপ্ত, এক অপরের ক্ষতির চিন্তায় নিমগ্ন।
.
এই তিন ধরনের রোগ থেকে মুক্ত হয়ে প্রত্যেক তালেবে ইলম এ চিন্তা করবে যে, আল্লাহ আমাকে কুরআনের জ্ঞান দান করেছেন। ঐ কুরআন যার সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছেঃ (  لوانزلنا هذا القران من خشية الله ) আর এত বড় কিতাবের ইলম আমার বক্ষে রয়েছে।
.
হে আমার প্রভু!
আমি এই কিতাবের সম্মানের হক আদায় অবশ্যই করবো। যদি প্রত্যেক তালেবে ইলম এই দৃঢ় সংকল্প করে যে, আমি মোল্লা উমর হবো, তবে পৃথিবীর কোন শক্তি তাকে মোল্লা উমর হওয়া থেকে রুখতে পারবে না। কিন্তু কীভাবে সংকল্প করবে??
:
ভয় হয় যে, চাঁদা দেবে কে?
টাকা-পয়সা আসবে কোত্থেকে।
অমুকের তো সম্পর্ক ছিল।
তাই তার সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে।
আমাদের তো কেউ গাধাও দিবে না,
তবে আমরা কাজ করবো কীভাবে?
যে কাজ আল্লাহর জিম্মায়, তা নিয়ে আমরা ভাবতে থাকি।প্রথম থেকেই কম হিম্মতের শিকার হয়ে যাই। সরাঞ্জামাদী যোগানো আমাদের কাজ না কি আল্লাহর কাজ??
গাড়ী, হেলীকপ্টর, মিজাইলের ব্যবস্থা করা আল্লাহর কাজ, নাকী আমাদের কাজ? আমাদের দ্বারা কাজ নেয়া এটা আল্লাহর কাজ, না-কী আমাদের কাজ? আমাদের কাজ তো ছিল নিয়ত করা, ইস্পাত কঠিন সংকল্প করা।
.
আমাদের মধ্য হতে সকলের একথা বলা যে, পুরো দুনিয়ার কুফরের সঙ্গে আমি একাই লড়বো, ইনশাআল্লাহু তা'য়ালা।
.
আমার প্রত্যেক তালেবে ইলম সাথীরা, এবং নওজোয়ান বন্ধুরা, সকলেই এই প্রতিজ্ঞা করেন যে, আমি মোল্লা উমর হব ইনশাআল্লাহ্।
.
সবাই এখলাছের সাথে নিয়ত করি ভাই খুশি খুশি বলি ভাগ্যবান মৃত্যুর জন্য আমি তৈয়্যার হয়ে যাই ইনশাআল্লাহ্।
:
#আমার প্রান-প্রিয় শাইখ মাসঊদ আযহারের বয়ান

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top