বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬

আমরা বলছি, আম্মু! মাফ করবেন, জিহাদ ফরযে কিফায়া।

কোন মন্তব্য নেই:

ওহে!
দেখ,
উহুদের ময়দানে কোন আহত ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে
আছেন?আমার প্রিয় নবী আহতাবস্থায়
দাঁড়িয়ে আছেন।তাঁর পবিত্র শরীর মোবারক হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।যাও! একটু দেখে আস!
.
কার শরীরের অংশ যমীনে কেটে পড়েছে।
তিনি যে, সায়্যিদেনা হযরত হামজা
(রাযিঃ)-এর আল্লাহর নবীজির চাচা,
সায়্যিদুশশুহাদা টুকরো টুকরো হয়ে
গেছেন।
.
আমি দেখতে পাচ্ছি,
সিদ্দীকে আকবার (রাযিঃ)-এর মত মুমিনকে যুদ্ধের ময়দানে দেখা যাচ্ছে।
.
ফারুকে আযম (রাযিঃ)-এর ন্যায় বাদশাহকে যুদ্ধের ময়দানে দেখা যাচ্ছে।
.
আমি উসমান ইবনে আফ্ফান (রাযিঃ)-এর ন্যায় লাজুক ব্যাক্তিটা কে জিহাদের মাঠে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি আলী মুরতাযার (রাযিঃ)-মত
আলেমকে যুদ্ধের ময়দানে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি হযরত মুঅাবিয়া (রাযিঃ)-এর মত
জ্ঞানী ব্যাক্তিকে জিহাদের ময়দানে
দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি হুসাইন (রাযিঃ)-এর
মত সুদর্শন যুবককে যুদ্ধের ময়দানে দেখতে
পাচ্ছি।
.
আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ
(রাযিঃ)-এর মত ফকীহকে যুদ্ধের ময়দানে
দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি ইবনে আব্বাস (রাযিঃ)-এর ন্যায় মুফাচ্ছির কে যুদ্ধের ময়দানে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি উবাই ইবনে কা'ব (রাযিঃ)-এর ন্যায় ক্বারীকে যুদ্ধের মাঠে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি মাআজ ও মুআওয়াযের মতো বাচ্চাদের জিহাদের ময়দানে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি খানছাও খাওলা (রাযিঃ)-এর ন্যায় বোনদের যুদ্ধের ময়দানে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি আমর বিন জামূহের (রাযিঃ)-ন্যায় পঙ্গু বৃদ্ধকে যুদ্ধের ময়দানে দেখতে পাচ্ছি।
.
আমি আবু আইয়ূব আনসারী (রাযিঃ)-এর মত মেজবান কে যুদ্ধের ময়দানে দেখতে পাচ্ছি।
.
.
.
আমি কি কাশ্মীরের বোনদের দেখব,
যাদের সুখের সংসারকে তছনছ করে দেয়া
হয়েছে?
.
আসামের ঐ সমস্ত বাচ্চাদেরকে
দেখব, যাদেরকে তেলের কড়াইতে ফেলা
হয়েছে?
.
আমি বসনিয়ার কবর সমূহকে দেখব?
না কি আমি আমার ফরযে আইনকে দেখব??
.
জিহাদের ফরযে কিফায়ার কথা এজন্য বলা
হয়েছিলে যে,প্রত্যেক মুসলমান এতই জিহাদ
প্রিয় ছিল যে, কেহই পিঁছিয়ে থাকতে
প্রস্তুত ছিলো না। তাদেরকে বাঁধা দিয়ে
রাখা ছিল কঠিন ব্যাপার।
.
পিছনের সমস্ত সু-শৃঙ্খল কাজগুলো ওলট-পালট হয়ে যেত। দ্বীনি দরসগাহ বন্ধ হয়ে যেত।রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থাপনা বিশৃঙ্খল হয়ে যেত।
রাষ্ট্রপ্রধান, সেনাপ্রধান উলামায়ে কিরামের সামনে এসে হাত জোড় করে বলত যে, মানুষদের কন্ট্রোল করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
.
মা-দের দিকে তাকিয়ে দেখুন!
তারাও বলে আমরা জিহাদে যাব।
.
বোনদের দিকে তাকিয়ে দেখুন!
তারাও বলে আমরা জিহাদে যাব।

বৃদ্ধদের দিকে তাকিয়ে
দেখুন! লাঠিতে ভর দিয়ে এসে বলছে আমরা জিহাদে যাব।
.
বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে
দেখুন!পায়ের পাতার উপর দাঁড়িয়ে
নিজেকে উচুঁ করে বোঝাতে চাচ্ছে যে,
আমরা জিহাদে যাব।
.
প্রত্যেকেই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
আলেমগণ উদ্বিগ্ন, ফকীহগণ অধীক অস্থির, মুহাদ্দিসগণ ব্যাতি-ব্যস্ত।
সবাই বলে আমরা যাব।
তখন বোঝানো হত,ভাই!
এ-তো ফরযে কিফায়া।
কিছু লোক থেকে যাও পরে তোমাদের কে পাঠিয়ে দেব।
.
কিন্তু যখন থেকে অভিশপ্ত কাদিয়ানী
এসেছে আজ অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে,
মাওলানা ইউসুফ সাহেব
(দামাত বারাকাতুহুম) বলছিলেন যে,
.
মুসলিম মহিলারা শিখদের দ্বারা গর্ভধারণ করে বাচ্চা জন্ম দিয়ে ফেলেছে,
আর আমরা বলছি মা! মাফ করবেন,
জিহাদ ফরযে কিফায়া ছিল; নতুবা আমরা
আপনার সাহায্যের জন্য পৌঁছে যেতাম।
.
ফিলিস্তিনের মা নিজের সব কিছু
হারিয়ে বসেছে, সে আশার আঁচল পেতে
মুসলিম উম্মার দিকে তাকিয়ে বলছে-
আল্লাহর ওয়াস্তে সাহায্যের জন্য এগিয়ে
এসো।
আমরা বলছি, আম্মু! মাফ করবেন,
জিহাদ ফরযে কিফায়া।
.
মসজিদে আকসার প্রাঙ্গণে
পড়ে থাকা রক্ত আমাদের করছে, বল! আমার কি অপরাধ??
কি অন্যায় আমি করেছি?
আমরা বলেছি, ক্ষমা কর,
আমরা এখন ফরযে কিফায়ার মধ্যে আছি।
.
কাশ্মীরের মায়েরা প্রশ্ন করছে,
আরে জালেমরা!
কত জানাযা আর আমাদের থেকে উঠাবে? কত গুলী আর আমাদের দিকে বর্ষণ করাবে?
আর কত নির্যাতন, আমরা সহ্য করব??
আমরা উত্তর দিয়েছি, মা আমাদের ক্ষমা করুন এখনও অস্ত্র হাতে নেয়া ফরযে কেফায়া। নতুবা আমরা এসে যেতাম যদি তা ফরযে আইন হয়ে থাকত।
.
সব কিছু বিলীন হয়ে গেল,
সব কিছু বিধ্বস্ত,বিরান হয়ে গেল।
.
কুরআন গুলীর শিকার হল,
কুরআনের পাতা ঢিলা-কুলুপ রুপে ব্যবহার হল।
.
আমার নবীজির সুন্নাতকে মিটিয়ে দেয়া
হল, রাইফেল তাদের হাতে দেয়া হল, যারা
মসজিদে ফায়ারিং করে,যারা উলামাদের জবাহ করে।
.
এ সমস্যার সমাধান কি??
আমরা কতদিন পর্যন্ত লাঞ্ছিত-অপদস্থ
হতে থাকব?
কতদিন পর্যন্ত আঘাত সইতে থাকব?
.
হে মুসলমানেরা!
হে নবীর উম্মতেরা!
লাঞ্ছিত, অপদস্ত হওয়ার জন্য আমার তোমার সৃষ্টি হয়েছিল না।
তখন আমাদের বলা হয়-চুপ
করে বসে,এ-তো ফরযে কেফায়া মাত্র।
.
আমার মুহ্তারাম বন্ধুরা!
জানা নেই,
যে দিন সর্বশেষে মুসলমানের জানাযা নিষ্পন্ন হয়ে যাবে, সে দিন গিয়ে হয়তো জিহাদ ফরয হতে পারে!
.
বলা যায় না যে দিন সর্বশেষে
ইজ্জতটুকুও বিলীন হয়ে যাবে,
কোন নিরাপত্তা বাকি থাকবে না,
সেদিন গিয়ে হয়ত জিহাদ ফরয় হতে পারে??
.
আমার বুঝে আসেনা যে,
একটি ফরযে কিফায়ার জন্য আল্লাহ পাক কুরআনের মধ্যে এত গুলা সূরা
কেন নাযিল করলেন?
.
আর সংখ্যায় কি মুজাহিদরা যথেষ্ট হয়ে গেছে?
.
আমরা কি চেচনিয়ায় যথেষ্ট হয়ে গেছি?
.
হাওয়ার মত.এক বোনকে দেহে বোমা বেঁধে ময়দানে ময়দানে আসতে হয়েছে।
.
কুরআন কে বক্ষে ধারণ করে নিশ্চুপ বসে থাকা বন্ধুগণ!
একটু চিন্তা কর,
বোনের কি প্রয়োজন ছিল ময়দানে আসার? এ কারণেই যে, ভাই মরে গিয়েছিল।
.
ভাই আত্নসম্ভ্রমহীন হয়ে পড়েছিল
.
ভাই ব্যবসায়ী হয়ে পড়েছিল।
.
ভাই ভীতু হয়ে পড়েছিল
.
তখন গিয়ে সে বোন দেহে বোমা বেঁধে ময়দানে এসেছে।
.
ধামাকা করেছে, আর আমরা বলেছি, বোন
তোমাকে শোকরিয়া। বস্তুতঃ আমাদের
লজ্জা হওয়ার প্রয়োজন ছিল। আমরা ছোট
ছোট মাসঅালা নিয়ে বির্তকে লিপ্ত।
.
আমাদের বক্ষে কুরআন রয়েছে, আর সে কুরআন আমাদের উপর অভিশাপ ছুড়ছে।
.
বোন ময়দানে নেমে পড়েছে, আর ভাই নিজগৃহে বসে যমীনের সাথে লেপ্টেবসে রয়েছে। আজ আরো অন্যান্য বোনেরা বলছে, আমরা অাত্নঘাতি বোমা হামলা করার জন্য প্রস্তুত,আমরা জিহাদ করার জন্য প্রস্তুত। আমাদেরকে যুদ্ধের সাজ পড়িয়ে দাও, এ জন্য যে, ভাইয়েরা তো ময়দানে নেমে আসবেনা।
.
জিহাদ তো তাদের উপর এখন ফরযে
কিফায়া, তাদের উপর তো এখনো 'হুসন লি
গাইরীহী" এর ভূত সওয়ার হয়ে আছে। তারা
তো এতটুকু জালেম, নির্দয়, পাষান হয়ে
গেছে যে, নবীজি যখমী অবস্থায় দাঁড়িয়ে
আছেন।
.
জানা নেই হয়ত আসমানও কাঁদছে,
যমীনও কাঁপছে। আমার নবীর দাঁত ভেঙ্গে
পড়েছে, আমার নবীর চেহারা মুবারক হতে
রক্ত ঝরছে। আর আমাদের মুসলমানরা মুখে বার্গার আর পেপসী দিয়ে বলছে -নবীজীতো ছোট জিহাদ করেছিলেন, আর
আমরা বড় জিহাদ করছি।
'
তোমাদের হিম্মতকে মুবারক বাদ জানাই।
.
হে লোকসকল! তোমাদের হিম্মতকে স্বাগতম
জানাই। যে কাজটিতে নবীজির দিন-রাত
অতিক্রম হয়ে গেছে, যে কাজটিতে
নবীজির জীবন বারংবার মৃত্যুর সম্মুক্ষীন
হয়েছিল যার জন্য আমার নবীকে পেটে
পাথর বাঁধতে হয়েছে সে জিহাদ
তোমাদের নিকট ছোট মনে হচ্ছে?
.
একটু হলেও আল্লাহকে ভয় কর।
.
কি ছোটত্ব রয়েছে এর ভেতর?
.
কি কমতি রয়েছে সে ত্যাগ-তিতীক্ষার ভেতর?
.
সাহাবা (রাযিঃ)-তো নবীজি কেও ত্যাগ করেছেন, ঠিকানা বিহীন কোথা-থেকে কোথায় গিয়ে সমাধিস্থ হয়েছেন।
.
বুযুর্গগণ বড় জিহাদ,ছোট-
জিহাদ এ উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন না যে
উদ্দেশ্যে আজ বলা হচ্ছে।
উলামা ও মুজাহিদীনদের মাঝে দূরত্ব করার জন্য ইলম ও জিহাদকে আলগ করার উদ্দেশ্যে এ ভাষা ব্যবহার হয়েছে।
.
নতুবা মোল্লা উমরও (রহঃ) কোন সাধারণ আলেম নন;আফগানিস্তানের ভূমিতে শাহাদাত বরণকারী উলামারাও কোন যেন-তেন আলেম ছিলেন না। আজও যে সমস্ত উলামা মাঠে নেমেছেন তারাও কুরআন হাদীসকে বোঝেন। তাদের দৃষ্টিতে মাদ্রসার ও সম্মান রয়েছে, তাবলীগের ও সম্মান রয়েছে।
'
কিন্তু হে মুসলিম জাতি!
আল্লাহর ওয়াস্তেজিহাদ কে তার যথাযথ অবস্থান দিয়ে দাও।
.
জুলুম আর বে-ইনসাফী আচরণ বন্ধ করুন মুসলমান ভাইয়েরা!
জিহাদের উপর চাবুকাঘাত করা
বন্ধ করুন।
.
হে মুসলিমেরা!
এই জিহাদ প্রভুর নির্দেশ।
এই জিহাদ নবীজির তরীকা, আজ এই
ফরযে আইন,ফরযে কিফায়ার কথাগুলা ঐ সমস্ত লোকদের কে ঘরে বসিয়ে রাখতে পারে যারা প্রভুর সাথে সাক্ষাত করতে চায় না।
.
যারা দ্বীনের নামে উৎসর্গ হতে চায় না।
কিন্তু যে ব্যাক্তি সাজ্জাদ শহীদ (রাহঃ)
এর শরীরে লাগা আঘাত গুলো দেখেছে,যে
আবু জান্দালের মুন্ডানো দাঁড়ি গুলা
দেখেছে,যে নাসরুল্লাহ মানসুরের সে হাঁটু
আর পায়ের নলা দেখেছে, যা আঘাতে
আঘাতে কালো হয়ে পড়েছিল, তাকে এ
কথা গুলা কীভাবে ফিরিয়ে রাখতে
পারে??
.
আমাদের লাশগুলো আমাদের
চোখের সামনে রাখা হয়েছে। আমাদের
শুহাদা, আমাদের শুহাদাদের চেহারা-গুলো
গোলাপের ন্যায়, আর সে চেরাহা সমূহে
লেগে থাকা খুন গুলো আমাদের দৃষ্টির
সামনে রয়েছে। আমরা কি তাদেরকে
ভূলতে পারি?
.
এই কথা গুলো আমাদেরকে
জিহাদ থেকে হটাতে সক্ষম হবে না।
.
আল্লাহর শপথ সে শুহাদাদের পথে চলা ফরয এবং এই ফরয় কে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত পালন করে যাব ইনশাআল্লাহ্ ইনশাআল্লাহ্।
'
( "আমীরুল মুজাহিদীন হযরত মাওলানা মাসউদ আযহার (দামাত বারাকাতুহুম) এর একটি উর্দু বয়ানের সামান্য অংশ,)
.
.
.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top