মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০১৬

#আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারক (রহ:) একজন বড় মুহাদ্দিস ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

#আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারক (রহ:) একজন বড় মুহাদ্দিস ছিলেন।
.
তিনি যখন যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করছিলেন উনার কোন ছাত্র বলেছিল হুজুর আপনি কেন যুদ্ধের ময়দানে কষ্ট করছেন আপনিও তো পারেন ওই সময়কার সবচেয়ে বড় বুজুর্গ ফোজাইল ইবনে আয়াস মক্কাই থাকতেন।
মক্কাই থাকার যে কত বড় ফযিলতের বিষয় জানতেন।
এক রাকাত নামাজ পড়লে লক্ষ রাকাত নামাজের সওয়াব পাওয়া যাই,জমজমের পানি খাওয়া যাই,বায়তুল্লাহ তওয়াফ করা যাই, হাজরে আসদ চুমা দেয়া যাই,মুলতাদানকে জড়িয়ে ধরা যাই,কমপক্ষে আল্লাহর নবী যে জমিনে হাটাহাটি করেছেন সেই জমিনে হাটা যাই।
এতবড় ফযিলত এর কাজ আপনিও তো করতে পারেন।
কেন আপনি যুদ্ধের ময়দানে কাজ করছেন??
.
সেই সময় আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারক (রহ:) ওই বুজুর্গ ফোজাইল ইবনে আয়াস কে উদ্দেশ্য করে একটি পত্র লেখলেন।
.
তিনি বলেছেন,ওহে মক্কা মদীনার ইবাদতকারী, আবেদুল হারামাইন,ওহে মক্কা মদীনার আবেদ তুমি নিসচয় বড় ইবাদত করছ কিন্তু জেনে রাখ,তুমি যদি আমাদের ইবাদত দেখতে তাহলে আমাদের ইবাদতের তুলনায় তোমার ইবাদতকে খেলনা ছলনা ছাড়া কিছুই মনে করতে না।
.
কারন তুমি মক্কায় বসে ইবাদত করছ আর গোটা দুনিয়া থেকে ইসলাম বিদায় হচ্ছে। আল্লাহর নবী মক্কা ত্যাগ করেছিলেন, সাহাবায়ে কেরাম মক্কা ত্যাগ করেছিলেন।
তারাওতো ফযিলত জানতেন,তারা ত্যাগ করে দুনিয়ার ওহুদে,বদরে,খন্দকে লড়াই করেছেন।
.
আজকে তুমি মক্কাই বসে ইবাদত করছ, লক্ষ রাকাতের সওয়াব বুঝতে পারলা,সাহাবায়ে কেরাম সেটা বুঝেন নাই তারা ময়দানে চলে গিয়েছিল।কাজেই জেনে রাখ,তুমি যে ইবাদত করছ তা আমাদের ইবাদত এর তুলনায় তা খেলনা ছলনা মাত্র।
.
এরপর তিনি এই পরযন্তই লেখে খান্ত হন নি,আরো লেখলেন,
.
তুমি যখন ইবাদত করতে করতে জজবা চলে আসে, তখন তোমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যায়,গাল ভিজে যায়,জামা ভিজে যায় তোমার চোখের পানি দিয়ে।ভাল কথা চোখের পানি ভাল।কিন্তু জেনে রাখ আমরা যখন ইবাদত করতে করতে জজবায় চলে আসি, আমরা যখন যুদ্ধের ময়দানে দুশমনদেরকে কতল করতে করতে জজবায় চলে আসি,তখন আমাদের চোখের পানি নই,আমাদের রক্ত দিয়ে, আমাদের মাথা ভেংগে, আমাদের গাল ভেংগে, দাত ভেংগে, শরীর যখম হয়ে তার রক্ত দিয়ে আমাদের গাল ভিজে যায়,জামা ছিড়ে যায়।
.
তুমি যখন ইবাদত করতে বস,
দামি আতর লাগিয়ে,সুগন্ধিযুক্ত আতর লাগিয়ে তুমি বস।
ভাল কথা তোমার আতরের সুগন্ধির ভাল মর্যাদা আছে।নবীজি আতর ব্যবহার করেছেন।কিন্ত জান্নাত এর কোন গ্যারান্টি নেই।আর আমাদের আতর হচ্ছে কি শুন। আমাদের আতর হচ্ছে যুদ্ধের ময়দানের ধুলা বালু এবং আমাদের রক্ত এইসব মিলে ওইখানে আতর তোইরি হয়ে যায়। আর জেনে রাখ,তোমার আতরের জন্য জান্নাতের গ্যারান্টি  না হলেও আমার আতরের জন্য জান্নাতের গ্যারান্টি আছে।আল্লাহর নবী (সা:) বলেছেন,এক ব্যক্তির নাকের মধ্যে আল্লাহর রাস্তার ধুলা বালু আর জাহান্নামের আগুনের ধোয়া একত্র হবে না।
.
জেনে রাখ,তোমাদের ঘোড়াগুলো তুমি বুজুর্গ মানুষ তোমার হাদিয়া তওফা টানতে টানতে ক্লান্ত হয়ে যায়,আর আমাদের ঘোড়াগুলো আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যায়।
.
জেনে রাখ,তুমি যত বড় বুজুর্গই হও,তুমি যখন মারা যাবে তখন তোমার শরীর থেকে কাপড় গুলো খুলে ফেলা হবে,তোমাকে লেংটা করা হবে,নতুন কাপড় দেয়া হবে।আর আমি যদি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করতে করতে  শহীদ হইয়ে যাই, আমার সেই রক্তমাখা জামাকাপড় আমার পুরাতন লুংগি আমার কাপড় চোপড় অবস্থাই আমাকে কবর দেয়া হবে।আমার কাপড় চোপড় খুলা হবেনা।রক্তগুলো ধুয়া হবেনা। কারন কেয়ামত এর মাঠে আমি যখন উঠব আমার যখমগুলো তাজা হয়ে যাবে।আল্লাহর হাবীব বলেছেন, এই যখম তাজা হবে, রংটা হবে রক্তের রং,ঘ্রানটা হবে কিসের???
মিস্কম্বর এর ঘ্রান।
.
এরপর তিনি লিখেছেন,তোমার জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষ হাজির হবে,কারন তুমি জগতবিখ্যাত পীর ও বুজুর্গ।কিন্তু জেনে রাখ,তোমার জানাযায় লক্ষ লক্ষ লোকের প্রয়োজন আছে, আমার জানাযায় লোক হবেনা।কারন যেকোন মুহুরতে হামলা আসতে পারে।জেনে রাখ,তোমার জানাজায় লোকের প্রয়োজন আছে কারন তুমি মরে যাবে।আমার জানাযায় লোকের প্রয়োজন নাই কারন আমি জীবিত।
আল্লাহ কুরানে বলেছেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় জীবন দেয়, আল্লাহর রাস্তাই শহীদ হই তোমরা তাদের মরে গেছে বল না।
বরং তারা চিরঞ্জীব হয়ে আছে।
.
সুতরাং আমি বলতে চাই,
বাংলাদেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ হল ওই সময়ে যারা যুদ্ধ করেছে নিজেদের দেশের জন্য,নিজেদের ভুমির জন্য তারা যদি বীর মুক্তিযুদ্ধা হতে পারে,ভাল সন্তান হয়ে থাকে, তাহলে একিরকম,
.
আফগানিস্থানে যারা নিজের দেশ রক্ষার জন্য,নিজের ধরম রক্ষার জন্য,
.
কাশ্মীরে যারা নিজের দেশ রক্ষার জন্য,নিজের ধরম রক্ষার জন্য,
.
ইরাকে যারা নিজের দেশ রক্ষার জন্য,নিজের ধরম রক্ষার জন্য,
.
ফিলিস্তিনে যারা নিজের দেশ রক্ষার জন্য,নিজের ধরম রক্ষার জন্য লড়াই করছে তারা এইযুগের বীর মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবেনা কেন????????????????
.
তোমার দেশের জন্য যুদ্ধ করলে যদি মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে,আজকে যারা আফগানিস্তানে,কাস্মীরে,ফিলিস্থিনে যারা যুদ্ধ করছে,তারা এই যুগের সবচেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ঠিক কি না???
.
আজকে তাদেরকে আমার দেশের সাংবাদিকরা লেখে এরা জংগীবাদি।যখন আমেরিকান সোইন্য মারা যায়,তখন লেখে আমেরিকান সোইনিক মারা গেছে।আর যখন কোন মুজাহিদ মারা যায় তখন বলে কয়েকজন সন্ত্রাসী, জংগী মারা গেছে!!!
.
ওহ আমার জাতি!
ইহুদী খ্রিস্টানেরা মুসলমানদের কুরানের ভাষা কে,হাদিসের পরিভাষা কে পরিবরতন করে দিয়েছে। এখন তারা জিহাদের তরজমা করছে জংগীবাদি দিয়ে।সেজন্য আমাদেরকে মনে রাখতে হবে,এই কুরানকে, এই বুখারীকে আজকে বুখারী শরিফ যে দেশে বসে লেখা হয়েছিল সেখানে ইসলাম নেই।আমাদেরকে এজন্য আবার তোইরি হতে হবে।
.
.
.
#আমার প্রান-প্রিয় শাইখ মুফতি জসীমুদ্দিন রহমানি হাফিযাহুল্লাহর বয়ান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top