শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১৬

ওলি আউলিয়া

কোন মন্তব্য নেই:

অলি আউলিয়ার ব্যাপারে মানুষের
ভূল আকিদাহ এবং কোরআনের আলোকে
অলি আউলিয়ার প্রকারভেদ:
.
.
.
আসসালামু আলাইকুম,
সকলের উপর আল্লাহর শান্তি রহমত বরকত
বর্ষিত হোক। শান্তি বর্ষিত হোক সেই
ব্যক্তির উপর যে হেদায়েতের অনুসরণ করে
কাফেরদের মধ্য থেকে, মুশরিকদের
মধ্যথেকে, মুনাফিকদের মধ্যথেকে এবং
নাস্তিকদের মধ্যথেকে।
.
আল্লাহ বলেছেন,
সূরা আল ইমরান-৬৪>এসো সেই কথায় যা
তোমাদের ও আমাদের মধ্যে এক
১। আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করি না।
অর্থ্যাৎ আল্লাহর আইনকানুন মানাও যেমন
আল্লাহর ইবাদত তেমনি আল্লাহর
কোরআনের আইন উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও
মানব রচিত আইন মানা মানুষের ইবাদত।
আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
.
২। তার সাথে কোন কিছু শরীক করি না।
অর্থ্যাৎ তার আদেশ সবার উপরে। তার
আদেশের বা কোন আইন কানুন বিধিবিধান
এর সাথে মানবরচিত আইন কানুন বা বিধি
বিধানকে শরীক করিনা।
.
৩। আমাদের মধ্যে কাউকে আল্লাহ ছাড়া
রব (আদেশদাতা বিধানদাতা ইলাহ
হিসাবে) মানি না।যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলে দাও, তোমরা স্বাক্ষী থাক আমরা মুসলিম(আত্মসমর্পণকারী আল্লাহর কাছে হোক
সেটা নিজের ইচ্ছার পক্ষে হোক বা
বিপক্ষে)।
সূরা বাকারাহ-১৩২> তোমরা মুসলিম না
হইয়া মৃতু্বরণ করো না।
=================================
অনেক মানুষ মনে করে অলি আউলিয়া,
পীরগণ মৃতু্ বরণ করে না।
.
সূরা আল ইমরান-১৮৫> প্রত্যেক প্রাণীই
মৃতু্র স্বাদ ভোগ করবে।
------------------------------------------------------------------
অনেকে বলে অলি আউলিয়া গণ
মরার পরেও মানুষের কথা শুনে যখন মানুষ
কবরের সামনে গিয়ে তাদের পুজা করে
বা তাদের কাছে কিছু চায়।
.
আল্লাহ বলেন-
সূরা নমল-৮০> হে নবী আপনি মৃতুদের
কথা শোনাতে সক্ষম নন।
.
একই কথা সূরা রুম এর ৫২ নং আয়াতেও
বলা হইছে।
------------------------------------------------------------------
অনেকে বলেন অলি আউলিয়াগণ মৃতু্র পর
কথা না শুনলেও কবরে শোয়ানোর পর
এবং মাজার বানানো পর কথা শুনেন।
.
আল্লাহ বলেন-
সূরা ফাতির -২২> হে নবী আপনি "কবরে"
শোয়া ব্যক্তিকে শুনাতে সক্ষম নন।
------------------------------------------------------------------
অনেকে বলে কবরবাসী অলি আউলিয়া
সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে।
.
কবরবাসী সম্পর্কে আল্লাহ বলেন-
সূরা নাহল-২১ > তারা মৃত, প্রাণহীন।
কবে পুনরুত্থিত হবে জানে না।
------------------------------------------------------------------
এই আকিদাহ বা বিশ্বাসগুলো আসে
ফাজায়েলে আমল এবং কিছু রাস্তার
পাশের গল্পের বই থেকে যেগুলোর সাথে
কোরআন ও সহীহ হাদিসের কোন সম্পর্ক
নেই।
------------------------------------------------------------------
মানুষের মধ্যে একটা ভূল আক্বিদাহ
আছে অলি আউলিয়ার ব্যাপারে। এই ভূল
আক্বিদাহর মূলে আছে অজ্ঞতা, বাপ
দাদাদের অনুসরণ এবং অন্ধ বিশ্বাস বা তাকলীদ।
.
অলি এক বচন বহুবচন আউলিয়া।আউলিয়া মানে পরামর্শদাতা,রক্ষাকারী, সাহায্যকারী,
দিকনির্দেশনাদানকারী ইত্যাদি।
------------------------------------------------------------------
=> সূরা আরাফ এর ৩ নং আয়াতে বলা
হইছে
ﺍﺗَّﺒِﻌُﻮﺍْ ﻣَﺎ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻜُﻢ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﺘَّﺒِﻌُﻮﺍْ ﻣِﻦ ﺩُﻭﻧِﻪِ
ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﻗَﻠِﻴﻼً ﻣَّﺎ ﺗَﺬَﻛَّﺮُﻭﻥَ ‏( 3
তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি
পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে
এবং আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে অন্য
আউলিয়াদের অনুসরণ করো না। "
.
তাফসির অনুযায়ী এখানে বহুবচন
আউলিয়া মানে কোরআন হাদিস বাদ
দিয়ে পরামর্শ দানকারী ব্যক্তিকে
বুঝানো হয়েছে।
------------------------------------------------------------------
=> সূরা হামিম আস সিজদা এর ৩১ নং
আয়াতে ফেরেশতারা বলে "নাহনু
আউলিয়া উকুম ফিল ফায়াতিদ দুনিয়া"
অর্থ্যাৎ আমরাই (ফেরেশতারাই)
তোমাদের আউলিয়া দুনিয়াতে এবং
আখিরাতে।
.
এখানে আউলিয়া মানে সাহায্যকারী।
------------------------------------------------------------------
=> সূরা আরাফ এর ৩০ নং আয়াতে বলা
হয়েছে,তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে
আউলিয়া বানিয়ে নিয়েছে।
.
এখানে আউলিয়া মানে বন্ধু।
------------------------------------------------------------------
=> সূরা আনকাবুত এর ৪১ নং আয়াতে
আল্লাহ বলেছেন
"যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কে
আউলিয়ারূপে গ্রহণ করে তাদের দৃষ্টান্ত
মাকড়সা"
.
এখানে আউলিয়া মানে সাহায্যকারী।
-----------------------------------------------------------------
সূরা বাকারা-২৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ
বলেছেন,যারা ঈমান এনেছে তাদের অলি
(অভিভাবক) আল্লাহ। তিনি তাদেরকে
বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর
দিকে। আর যারা কুফুরী করে তাদের
আউলিয়া (অভিভাবক) তাগুত (আল্লাহর
বিদ্রোহী হোক সেটা আদেশের মাধ্যমে
বা আইন কানুন এর মাধ্যমে)। সে তাদের
কে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে
যায়।
.
এখানে আউলিয়া মানে অভিভাবক।
------------------------------------------------------------------
=> সূরা নিসা-৭৫ নং আয়াতে আল্লাহ
বলেছেন, "তোমাদের কি হলো তোমরা
আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করছ না দুর্বল সেই পুরুষ
নারী ও শিশুদের পক্ষে যারা বলে হে
আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এই
জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর, জালিম
জাতি থেকে আমাদের রক্ষা কর।
আমাদের নিকট তুমি তোমার অলি
পাঠাও।
.
এখানে কি বাবে রহমতের পেট মোটা
কোন পীর, বুজুর্গের কথা বলা হচ্ছে নাকি
একে-৪৭ ধারী সেই যুদ্ধার কথা বলা
হচ্ছে।
এখানে অলি আউলিয়া বলতে বলা
হচ্ছে মুজাহিদদের কথা। কোন পেট মোটা
পীর এর কথা না। না শাহজালাল না
শাহপরান। মানুষ যখন সন্ত্রাসীদের কবলে
পড়ে তখন বলে বাঁচাও বাঁচাও মানে যদিও
সে বাঁচতে চায় তবুও সে চায় কোন আইন
শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে রক্ষা
করুক।
.
অর্থ্যাৎ আউলিয়া মানে যারা জিহাদ
করে তারা।
=================================
সর্বশেষ আল্লাহর ওয়ালি বা অলি হতে
হলে যা লাগে তা হল:
.
সূরা ইউনুস-৬২-৬৩> মনে রেখো যারা
আল্লাহর অলি , তাদের না কোন ভয় ভীতি
আছে, না তারা চিন্তিত হবে।
(অলি তারাই) যারা ঈমান এনেছে এবং ভয়
করতে রয়েছে। তাদের জন্য সুসংবাদ
পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে।
সূতরাং আল্লাহর অলী হতে হলে জাস্ট
ঈমান আনতে হবে এবং আল্লাহকে ভয়
করতে হবে। যেই আল্লাহর উপর ঈমান
আনবে এবং আল্লাহ কে ভয় করবে মূলত
তারাই আল্লাহর অলী।
.
এছাড়াও আরো অনেক কিছু আছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top