সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০১৬

চরমনাই পীর কি কাফির?

কোন মন্তব্য নেই:

ওপেন চ্যালেঞ্জ - চরমোনাই পীর কি
মুসলমান?
.
.
.
২১ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৫২
মাওলানা এছহাক চাদপুর জেলার ঊজানী
এলাকার পীর মরহুম ক্বারি ইব্রাহিমের
কাছ থেকে ১৯৪৬ সালে খেলাফত লাভ
করেন॥ মাওলানা এছহাক পরবর্তীতে
কয়েক জন সাগরেদ নিয়ে বরিশাল সদর থানার
উত্তর পুর্বকোনে কীর্তনখোলা নদীর
তীরে চরমোনাই দরবার গড়ে তুলেন।
মাওলানা এছহাকের মৃত্যুর পর (মাওলানা
এছহাকের বড় ছেলে) ফজলুল করিম (৩৬ বছর
বয়সে) পীরের দরবার পরিচালনার
দায়ীত্ব পান। পীর ব্যবসায় আরো
ভালোভাবে প্রতিষ্টিত হন।
১৯৮৭ সালে ১৩ই মার্চ “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন”নামে একটি রাজনৈিতক দল গঠন করেন।
বর্তমান চরমোনাই পীর সৈয়দ মোহাম্মদ
রেজাউল করিম॥
.
(১) চরমোনাই পীর সৈয়দ মোহাম্মাদ
এছহাক তার বই 'আশেক মাশুক বা এস্কে
এলাহী', পৃষ্ঠা নঃ ৯১ (প্রকাশকাল
ফেব্রুয়ারি ২০০৭) এ লিখেছেন -
[ "আমিতো এখন আমাকেই চিনি না,
আমি যে কে তাহাই আমি জানি না,
আমি কি, মুসলমান, না ইহুদী,
না অগ্নিপুজক তাহাও বলিতে পারি না"]
.
পীর সাহেব নিজেই জানেননা যে তিনি,
মুসলিম, নাকি ইহুদি নাকি অগ্নিপুজক!
তাহলে পীর সৈয়দ মোহাম্মাদ এছহাককে
কি কখনই মুসলিম বলা যায়? না কখনোই
বলা যায় না। কারন মুসলিম হলো সেই
ব্যক্তি যে ঈমান আনে আল্লাহর প্রতি,
কিতাবসমুহের প্রতি,পরকালের প্রতি,
রাসুলগনের প্রতি।
"আর এটিই আমার সোজা পথ।
সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর
এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না,
তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ
থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এগুলো তিনি
তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে
তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। (সুরা
আনআ’ম ৬:১৫৩)॥"
.
পীর সাহেব নিজেই জানেন না তিনি
মুসলিম না অগ্নিপুজক,অর্থাৎ তিনি
কাফির।
"কাফির শব্দটির সাধারণভাবে
অবিশ্বাসী অর্থে মুমিন-এর
বিপরীতার্থকরূপে ব্যবহৃত হয়।
আভিধানিকভাবে অর্থ
বিলোপকারী,আবৃতকারী,উহা হইতে
প্রাপ্ত উপকার গোপনকারী অর্থাৎ
অকৃতজ্ঞ। প্রাচীন ‘আরবী কবিতায়ও
শব্দটির এই অর্থ পাওয়া যায়। (আল
কুরআনে) সূরা ২৬:১৯ – তে অকৃতজ্ঞ অর্থে
কাফির ব্যবহৃত হইয়াছে বা আল্লাহর
অনুগ্রহকে গোপনকারী অর্থাৎ আল্লাহর
প্রতি অকৃতজ্ঞ অর্থে ব্যবহৃত
হইয়াছে। [ সুত্র: সংক্ষিপ্ত ইসলামী
বিশ্বকোষ,ইসলামিক ফাউন্ডেশন
বাংলাদেশ,ঢাকা: মে – ২০০৭:
পৃষ্ঠা-২৮০।]"
.
'যে ব্যক্তি কুফরী কাজে কাফির লিপ্ত
তাকে কাফির বলে।'
তারমানে চরমোনাই পীরের কুরআন হাদিস
বিরোধী আকিদা ( কুফরি আকিদা) এবং
যেহেতু তিনি নিজেই লিখেছেন যে তিনি
মুসলমান, না ইহুদী,না অগ্নিপুজক নিজেই
জানেননা, তাই তাকে কাফির বলা যায়॥
.
.
.
(২) "কামেল পীরের আদেশ
পাইলে নাপাক শারাব (মদ) দ্বারাও
জায়নামাজ রঙ্গিন করিয়া তাহাতে
নামাজ পড়। অর্থাৎ শরীয়তের কামেল
পীর সাহেব যদি এমন কোন হুকুম দেন,
যাহা প্রকাশ্যে শরীয়তের খেলাফ হয়,
তবুও তুমি তাহা নিরাপত্তিতে আদায়
করবে। ( আশেক মাশুক,পীর সৈয়দ
মোহাম্মদ এছহাক রচিত,পৃষ্ঠা নং ৩৫)"
.
আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (সা এর
হুকুমের বিরূদ্ধে কারো হুকুম মানার
কোন সুযোগ নেই। আল্লাহ তায়ালা
কুরআনে বলেছেন,
"আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ
দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য
নিজেদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার
করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ
ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই
পথভ্রষ্ট হবে। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত :
৩৬]"
.
হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,"উম্মে হুসাইন (রা)
থেকে বর্ণিত,মুহাম্মদ (সা ইরশাদ
করেছেন: স্রষ্টাকে অমান্য করে সৃষ্টি
জগতের কারো আনুগত্য চলবে
না।" (মুয়াত্তা: হা: ১০,মু’জামূল কাবীর: হা:
৩৮১,মুসনাদে শিহাব: হা: ৮৭৩,আবি শাইবা:
হা: ৩৩৭১৭, কানযুল উম্মাল: হা: ১৪৮৭৫।)
"শরীয়তের খেলাফ বা এ ব্যাপারে শিথিলতা প্রদর্শন করা কবিরা গুনাহ। [মিশকাত:১৮, কিতাবুল কাবাইর:১৪৪-১৪৫] "
.
পীর এসহাকের এই রকম কুরআন হাদিস
বিরোধী কথা লেখার কারনে তাকে
কাফির বলা যায়॥
" কাফির শব্দটির অর্থ সম্পর্কে আমাদের
অনেকের ভুল ধারণা আছে। অবিশ্বাসী
(কাফির) তারাই যারা সত্য জানার পরেও
তা জেনে শুনে অবিশ্বাস করে।
অবিশ্বাসীরা তারা নয় যাদের কাছে
সত্য পৌঁছায়নি; বা যাদের জানার বা
বোঝার ক্ষমতা নেই যে, তারা সত্যকে
অস্বীকার করছে; বা যাদেরকে কেউ সত্য
ঠিকমতো বোঝাতে পারেনি। অমুসলিম
মানেই সে কাফির নয় বরং একজন
অমুসলিম হতে পারে একজন সম্ভাব্য
মুসলিম। যেমন, আপনার প্রতিবেশী
নারায়ন বাবু কাফির নন, কারণ তার কাছে
হয়তো কেউ কোনোদিন কু’রআন নিয়ে গিয়ে ভালো করে বুঝিয়ে আসেনি,তাকে ঠিকমতো
ইসলামের দাওয়াত দেয়নি।
.
যদি তাকে কেউ গিয়ে খুব ভালো করে না
বোঝায়, হিন্দু ধর্মের সমস্যাগুলো কোথায়
এবং ইসলাম কেন সঠিক ধর্ম। যতক্ষণ
পর্যন্ত তারা জেনে বুঝে সত্য উপলব্ধি
করেও তা অস্বীকার না করছে, তারা
কাফির হবে না।( তথ্য সুত্র: নওমান আলি খানের সূরা আল-বাকারাহ এর উপর লেকচার॥
মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
Calling Someone a
Kafir ( suhaibwebb..com))"
যেহুতু পীর এসহাক জেনে শুনে তার বইয়ে
এই রকম কুরআন হাদিস বিরোধী কথা
লিখেছেন তাই তাকে কাফির বলা যায়॥
.
.
.
(৩) "ওগো আমার মাশুক মাওলা!
আপনি আপনার কুদরতি নজরে আমার
দিকে চাহিয়া দেখুন,আমি এখন আমি
নাই,আমি আপনি হইয়াছি,আর আপনি আমি
হইয়াছেন; আমি হইয়াছি তন, আপনি
হয়াছেন জান॥
( সৈয়দ মোহাম্মাদ এছহাক এর রচনাবলী;
আশেক মাশুক, পৃষ্ঠা নঃ ৪১, ফেব্রুয়ারি
২০০৭॥)"
.
‘মানসূর হাল্লাজ’ (৮৫৯-৯১৩ খ্রী এই
জঘন্য শিরকি আক্বিদার গোড়াপত্তণ
করেন। আনাল হক, ‘আমিই আল্লাহ’
বলে যিকির করা শুরু করেন। পীর
চরমোনাই ‘মানসূর হাল্লাজ’ কে আল্লাহর
ওলি বলে এবং তার আকিদা মেনে নিয়ে
চরম শিরক করেছেন॥ কেননা আল্লাহ
হচ্ছেন খালেক বা সৃষ্টিকর্তা। মানুষ
হলো মাখলূক বা সৃষ্টি। আল্লাহ
ও সৃষ্টির মধ্যে একাকার করে দেওয়াটা
বিরাট পাপ॥ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে
শিরক করলো সে গুরুতর পাপে পাপী
হল’ (সুরা নিসা ৪৮) ।
.
"যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক
করে মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে
প্রবেশ করবে (মুসলিম,হাদিস নং ২৬৬৩)।
.
মনসূর হাল্লাজের এই ভ্রান্ত আকিদার
কারণে বাগদাদের তৎকালিন সমস্ত
আলেমদের সর্বসম্মতি ক্রমে তাকে হত্যা
করা হয়। এমতাবস্থায় সমস্ত ওলামায়ে
কেরামদের কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক
সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়া ফাতওয়াকে
উপেক্ষা করে মানসুর হাল্লাজকে
আল্লাহর অলী বলে আক্বিদাহ পোষণ করা
মূলত: ইসলামী শরিয়াহ আলেম ওলামাদের
সর্বসম্মত রায়কে অমান্য করা॥
"মনসূর হাল্লাজ ছিলো
কাফের,মিথ্যাবাদী। (তথ্য সুত্র: ইমাম
ইবনে কাসীর রচিত আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া১১খন্ড,১১৫পৃষ্ঠা।)"
.
.
.
(৪) "কাহারো স্ত্রী যদি খুব সুন্দরী হয়,
আর সে যদি খোজা বা ধ্বজভঙ্গ হয়,তবে
কিছুতেই সে ঐ বিবির সঙ্গে মিলিতে
পারিবে না। ঠিক এইরুপ মনে করিবেন-
যাহার রুহ খোজা বা মরা,অর্থাৎ- মাবুদের
প্রেম হইতে বঞ্চিত,তাহার রুহ কিছুতেই
মাবুদের সাথে মিলিতে পারিবে না"
(সৈয়দ মোহাম্মাদ এছহাক এর রচনাবলী;
ভেদে মারেফত,পৃষ্ঠা নঃ ৬৭ প্রকাশকাল
ফেব্রুয়ারি ২০০৭)"
.
"নিজের স্ত্রীর সঙ্গে মিলিবার সময়
যদি উত্তেজনার সৃষ্টি হইতে পারে,
তবে মাবুদের সঙ্গে রুহ মিলিতে কেন
উত্তেজনার সৃষ্টি হইবে না? ( বই,ভেদে
মারেফত পৃষ্ঠা নঃ ৬৯)"
.
স্বামী-স্ত্রীর মিলন কে বলা হয়, সঙ্গম বা
সহবাস॥ পীর সাহেব বলেছেন, স্ত্রী যদি
খোজা হয় তাহলে স্বামী তার সাথে
মিলিতে পারিবে না বা সঙ্গম, সহবাস
করতে পারবে না॥ ঠিক তেমনি যেই
মানুষের রুহ খোজা সে আল্লাহর
সাথে মিলিতে পারিবে না অর্থাৎ, সঙ্গম
করতে পারিবে না বা সহবাস
করতে পারিবে না॥ কিন্তু যদি রুহ
খোজা না হয় বরং পীর সাহেবের মত রুহ
হয় তাহলে সে আল্লাহর সাথে মিলিতে
পারিবে বা সঙ্গম বা সহবাস করিতে
পারিবে (নাউযুবিল্লাহ)।
.
এতো বড় বেয়াদবী মহান আল্লাহ
তায়ালার সাথে! তাহলে কি সে পীর না
কাফির?
.
.

(৫) ওগো আমাদের মাশুক!
আপনি যদি মেহেরবানীপূর্বক আমার
অন্তরে স্থান লইতেন,তবে আমি আপনাকে
সমরখন্দ ও বোখারা উভয়
রাজ্য দান করিতাম। [আশেক মাশুক
পৃষ্ঠা নঃ ১৫]
.
.
.
(৬) হে আমার মাশুক! আপনার মাথার
চুলগুলি কাকই (চিরুনি)
দ্বারা না আঁচড়াইয়া এলোমেলো রাখিয়া
আমাকে মুসিবতে ফেলিবেন
না। আমার পাগল মনটি শিকল
দ্বারা বাধিয়া রাখার শক্তি আমার নাই।
অতএব আপনি আমাকে সব সময় সুসজ্জিত
বেশে দেখা দিবেন। তখন আমার পাগল
মনটি শান্ত থাকিবে। [আশেক মাশুক -
পৃষ্ঠা নঃ ৫১]
.
কুরআন হাদিস বিরোধী কথা লেখার
কারণে চরমোনাই পীর সৈয়দ এছহাক কে
কাফির বলা যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top