রবিবার, ২০ মার্চ, ২০১৬

উস্তাদ আহমেদ ফারুকের বাংলাদেশের জনগনের প্রতি বার্তা

কোন মন্তব্য নেই:

উস্তাদ আহমেদ ফারুকের বাংলাদেশের জনগনের প্রতি বার্তা
.
বিসমিল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ,
ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা
রাসুলিল্লাহি ওয়া বা’দ।
.
বাংলাদেশে বসবাসরত আমার প্রিয়
মুসলমান ভাইয়েরা!
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
.
বাংলাদেশের মুসলমানরা যখন
ইতিহাসের একটি ক্রান্তিকাল
অতিক্রম করছেন, সে সময় আপনাদের
প্রতি এই বার্তা পাঠানোর প্রয়াস
পাচ্ছি। হাজ্বী শরীয়াতুল্লাহ (রঃ),
তিতুমীর (রঃ) এর দেশে এখন কুফর
বনাম ঈমানের, ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম
ইসলামের মধ্যে এক সিদ্ধান্তকর
সংগ্রাম চলছে। বিধর্মীদের
ক্রীড়ানক, এই ধর্মনিরপেক্ষ ও ইসলাম
বিরোধী সরকার যে সকল পদক্ষেপ
নিচ্ছে তা কোন বিশেষ ব্যক্তি
কিংবা দলকে নিষিদ্ধ করার জন্য নয়
বরং সুস্পষ্টভাবে তা আল্লাহর
দ্বীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। ইসলামের
সোনালী ইতিহাস সমৃদ্ধ এই দেশ থেকে
ইসলামের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে ফেলার
একটি জঘন্য পরিকল্পণা চলছিলো যার
চূড়ান্ত পর্ব এখন শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের সরকারব্যবস্থা ও
সরকারী দলের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়
কারো কাছেই অজানা নয়।
স্বাধীনতার পর থেকেই এই হতভাগ্য
গোষ্ঠীটি বাংলার মাটি থেকে ﻗﺎﻝ
ﺍﻟﻠﻪ , ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ এর ধ্বনি মিটিয়ে দেয়ার
ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিশেষতঃ বিগত
কয়েক বছরে সরকারী দল এমন সব
পদক্ষেপ নিয়েছে যাতে মুসলমান
জনগণের সাথে দ্বীনের শেষ
যোগসুত্রটুকুও কেটে দিতে পারে। সকল
পরিচিত জিহাদী দলসমূহকে নিষিদ্ধ
ঘোষণা করে, তাঁদের নেতৃবৃন্দকে বন্দী
করে, ফাঁসি প্রদানের মাধ্যমে এটা শুরু
হয়েছে।
.
দেশের সংবিধান থেকে ‘আল্লাহর
উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ কথাটি
মুছে ফেলা হয়েছে। ইসলামী শরীয়াত
বাস্তবায়নের জন্য যেকোন
কার্যক্রমকে সংবিধানের বিরুদ্ধে
বিদ্রোহ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য
দাবী তোলা হয়েছে। এমনকি যেসকল
ধর্মীয় দল ‘গণতান্ত্রিক খেলায়’
অংশগ্রহণ করে, তাদেরকেও ছাড়া
হয়নি। তাদের নেতৃবৃন্দকে যাবজ্জীবন
কারাদন্ড কিংবা মৃত্যুদন্ড দেয়া
হয়েছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এটা
এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই
ব্যাপারে চিন্তা করলেও গায়ের পশম
দাঁড়িয়ে যায় এবং উচ্চারণ করতে
গেলেও ভয়ে জিহবা আড়ষ্ট হয়ে আসে।
যে দেশে কোটি কোটি মানুষ
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের উপর দুরুদ পাঠ করে,
সেদেশেই লানতপ্রাপ্ত, ঘৃন্য ও নিকৃষ্ট
প্রকৃতির এক ব্যক্তি গজিয়ে উঠে যে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে, হজরত খাদিজাতুল কুবরা
(রাঃ), উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা
সিদ্দিকা (রাঃ) এবং পুত-পবিত্র
সাহাবায়ে কেরামগণকে (রাঃ)
কল্পণাতীত জঘন্য ও নীচু ভাষায়
আক্রমণ করেছে। এই লানতপ্রাপ্ত
ব্লগার আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে অবমাননা করেছে যিনি
আমাদের অন্তরের প্রশান্তি, যিনি
আমাদের চোখের শীতলতা। সে তাঁকে
অবমাননা করেছে, তার কুরুচিপূর্ন
লেখায় তাঁকে মূল চরিত্র হিসেবে তুলে
ধরেছে এবং সকল প্রকার লজ্জা ও
ভদ্রতা ভুলে গিয়ে তার নিজের পাশব
বাসনা ফুটিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কলম
চালিয়েছে। তার উপর আল্লাহর লানত
বর্ষিত হোক এবং ঐ যুবকদের উপর
আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক যারা এই
লানতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে হত্যা করে
মুমিনদের অন্তরকে প্রশান্ত করেছেন।
বাংলাদেশের বসবাসরত আমার প্রিয়
ভাইরা!
.
আল্লাহর কসম, এটা কোন রাজনৈতিক
দ্বন্দ্ব নয়। এটা কুফর ও ইসলামের লড়াই।
আহমেদ রাজীব হায়দারের মতো আরো
অনেক লানতপ্রাপ্তরা এখনো জীবিত
চলাফেরা করছে। তারা কথা ও
লেখনীর মাধ্যমে এখনো আল্লাহর
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ও ইসলামী শরীয়াতের
বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলেছে। পশুর
চেয়েও অধম এ সকল হতভাগ্য সৃষ্টির
বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। এই
শ্রেণীর প্রত্যেককে খুঁজে খুঁজে
আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানো এবং এই
লানতপ্রাপ্ত ব্লগারের মতো
বাকীদেরকেও অলি-গলিতে কতল করা
শরীয়াত আমাদের উপর ওয়াজিব
করেছে।
.
আমার প্রিয় ভাইয়েরা!
এটা ইসলাম ও কুফরের মধ্যে যুদ্ধ।
আপনাদের মাথার উপর চেপে থাকা এই
সরকার কুফরের পক্ষে দাঁড়িয়ে আছে।
এরা ঐ সকল লোককে রক্ষা করে যারা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে হেয়-প্রতিপন্ন করার
দুঃসাহস দেখিয়েছে। এই সরকার ঐ
সকল মিছিলকারীদের গুলি করে বুক
ঝাঝরা করছে যারা রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে ভালোবাসেন। এই নাজুক
পরিস্থিতিতে রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইজ্জত ও
সম্মান রক্ষা করার জন্য দেশের সকল
ইসলামী শক্তিকে সকল প্রকার মতভেদ
ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা
উচিত। সবার উচিত গণআন্দোলনের মুখে
ইসলামের শত্রু এই সরকারকে ক্ষমতা
থেকে হঁটিয়ে দেয়া।
.
দ্বীন ইসলাম ও রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি
ভালোবাসায় পাগল বাংলাদেশের
গায়রতসম্পন্ন জনগণকে আমি আহবান
জানাই, এখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়।
এখন ঘর থেকে বের হয়ে আসার সময়।
এখন নিজ কর্মকান্ডের মাধ্যমে এই
বার্তা দেয়ার সময়ঃ যে জমীন
সাইয়েদ আহমেদ শহীদ (রঃ) এর
আন্দোলনে রক্ত দিয়েছে, যে ভূমির
ওলামায়ে-কেরাম ১৮৫৭ সালে
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছেন,
যে ভূমির জনগণ দুইশত বছর যাবত
ব্রিটিশ বেনিয়াদের জীবনকে অতিষ্ট
করে রেখেছিলেন, যে জমীনে
ফরায়জী আন্দোলন সূচিত হয়েছিলো –
সেই জমীন রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
অবমাননাকারীদের নাপাক অস্তিত্ব
নিজের উপরে কখনো সহ্য করবে না
এবং কখনো এর সোনালী ইসলামী
ঐতিহ্যের বন্ধন ছিন্ন করে
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের
নাস্তিক্যবাদি ও বিপথগামী
আক্বীদা গ্রহণ করবে না।
.
সুতরাং, জেগে উঠুন। দেশব্যাপী
আন্দোলন গড়ে তুলুন! নিজের দ্বীনকে
রক্ষার জন্য বুকে গুলির আঘাত সহ্য
করা ও জেল-জরিমানা মেনে নিতে
প্রস্তুত হোন কিন্তু এই ফিতনা শেষ
হবার আগ পর্যন্ত, রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের
অবমাননাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি
হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন
না। প্রকাশ্যভাবে মানুষকে দ্বীনের
প্রতি আহবান এবং দেশে ইসলামী
শরীয়াত প্রতিষ্টার সকল বাঁধা
অপসারণ করার আগ পর্যন্ত এবং
রাসুলের অবমাননাকারীদের
রক্ষাকারী এই সরকারকে উচ্ছেদের
আগ পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না।
বাংলার মাটি পূর্বেও ইসলামের
ছিলো, এর ভবিষ্যতও হচ্ছে শুধুই ইসলাম।
এই জমীন ও এর জনগণকে অন্য কোন
আদর্শে পরিচালনা করার অপচেষ্টা
আল্লাহর ইচ্ছায় অবশ্যই বিফলে যাবে।
বাংলাদেশের সম্মানিত ওলামায়ে
কেরাম ও দায়ীদের নিকট আবেদন
করবো, তারা যেনো তাদের নেতৃত্বের
আসনে ফিরে আসেন। আলেমরাই
মুসলিম সমাজের প্রকৃত নেতৃত্ব।
ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের সকল
ক্ষেত্রে শরীয়াত মোতাবেক
দিকনির্দেশনা প্রদান করা
আলেমগনের দায়িত্ব। তাই এই দেশের
হক্কানী ওলামায়ে কেরামের উচিত
ইমাম আবু হানিফা (রঃ) ও ইমাম
আহমেদ বিন হাম্বাল (রঃ) এর দৃষ্টান্ত
পুনরূজ্জীবিত করা, হক্ব কথা বলা এবং
এর জন্য কুরবানী দিতে প্রস্তুত থাকা।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের এই অবমাননার পর কি
এখনো চিন্তা-ভাবনা, সময়-ক্ষেপণ,
দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পণা, ইতস্ততঃ
করা কিংবা দুদুল্যমান থাকার কোন
সুযোগ আছে?
.
এখন সময় হলো নিজেদের ঈমানের
প্রমাণ দেয়ার এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি
নিঃশর্ত ভালোবাসা প্রকাশ করার।
আপনারা উঠুন, জুমুআর খুতবাহ ও মসজিদ-
মাদ্রাসায় বয়ানের মাধ্যমে জাতিকে
জাগিয়ে তুলুন। তাদেরকে দ্বীন আঁকড়ে
থাকার এবং কোরআন ও সুন্নাহর সাথে
জুড়ে থাকার শিক্ষা দিন। জেগে উঠুন
এবং জাতিকে প্রজ্ঞা ও দরদের
সাথে এটা বুঝিয়ে দিন যে, দুনিয়া ও
আখেরাতে শান্তি ও মুক্তির জন্য
ইসলামী শরীয়াতের শতভাগ
বাস্তবায়নই হচ্ছে একমাত্র পথ।
ইসলামী শরীয়াতকে ব্যক্তিজীবনে
মেনে চলার সাথে রাস্ট্রীয় জীবনেও
প্রতিষ্টা করার মধ্যেই নিহিত আছে
এই জাতির সকল সমস্যার সমাধান। উঠে
দাঁড়ান এবং ইহুদী-নাসারাদের
এজেন্টদের নিয়ন্ত্রণ থেকে ও
ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ ও আইনের
আধিপত্য থেকে বাংলাদেশকে
স্বাধীন করার জন্য দাওয়াত এবং
আমরে বিল মারুফ ও নাহি আনিল
মুনকারের এক চূড়ান্ত সংগ্রাম শুরু করে
দিন।
.
আল্লাহ আপনাদের রক্ষা করুন ও
সাহায্য করুন। আল্লাহ যেন সমাজের
খালেস মানুষদেরকে আপনাদের
চারপাশে জড়ো করে দেন। আল্লাহ
আপনাদের কাজে বরকত দান করুন।
আমীন।
.
ওয়া সাল্লাল্লাহু আলা নাবিয়্যিনা
মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলিহি ওয়া
আসহাবিহি ওয়া সাল্লাম।
আল-ক্বাদিসিয়াহ মিডিয়া
.
উৎসঃ ইকো অফ জিহাদ মিডিয়া
সেন্টার দ্যা গ্লোবাল ইসলামিক মিডিয়া
ফ্রন্ট মুজাহিদিনদের খবর পর্যবেক্ষন করছে
এবং ঈমানদারদের উৎসাহিত করছে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top