মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৬

--হুজুর! এট্টু পানি পড়া আর উগ্যা তাবিজ দেন।

কোন মন্তব্য নেই:

--হুজুর!
এট্টু পানি পড়া আর উগ্যা তাবিজ দেন।
.
--কেনো, কি সমস্যা?
.
--পোলাডা কথা হুনেনা হুজুর! আমগো
খেদমতও করতো চায়না।এত্তো কস্ট কইরা লেহাপরা হিকাইছি।বিয়াও করাইছি। কিন্তু হে এখন আমাগো ঠিকমতো খোজ খবর লয়না। কয়দিন আগে জরগা কইরা বউ লইয়্যা আলাদা অই গ্যাছে।
.
--হুম...আপনার ছেলের নাম কি?
কি কাজ করে?
.
--জে, পোলার নাম সুমন মিয়া।
ঢাকা একঠা কমফানিত ছাকরি করে।
অনেক ট্যাহা বেতন পায়।
.
--বুঝলাম, আপনার অভিযোগ ছেলেকে
লালন পালন করে বড় করেছেন, অনেক টাকা-
পয়সা খরচ করে লেখা পড়া শিখিয়েছেন।
আর সে এখন মোটা বেতনে চাকরি
পেয়ে বিয়ে করে বাপ মাকে অর্থাৎ আপনাদের
ছেড়ে আলাদা হয়ে গেছে, এই তো?
.
-- জে জে হুজুর একদম ঠিক কইছেন!
আমরা তো বুড়া অই গেছি কিন্তু পোলা আমাগো কোন হকই আদায় করতাছে না।
টেহা পয়সাও দেয়না।
.
--হুম, আপনারা আগে ছেলের হক
ঠিকমতো আদায় করেছেন তো!
.
--কি কন হুজুর! সবই তো করছি!
.
--হুম...আচ্ছা একটা কথা বলুন তো মুরুব্বী!
আপনার ছেলের জন্মের পর তার ডান
কানে আযান বাম কানে একামত দিয়েছেন?
কিংবা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন?
.
--না...তা তো দেইনাই হুজুর!
.
--আচ্ছা, আপনার ছেলের নাম যে সুমন
রাখছেন এটা কি কোন মুসলমানের নাম নাকি
হিন্দুদের নাম সেটা যাঁচাই করে রাখছেন?
.
--(মাথা চুলকে)না... তা তো জানিনা
হুজুর!
.
--আচ্ছা, আপনার ছেলেকে কি সাত বছর
বয়সে নামায শিক্ষা, কুরআন শিক্ষা
দিয়েছিলেন?
.
--স্কুলের পড়া লইয়া বেস্ত থাকতো হুজুর!
প্রাইভেট, কুচিন (কোচিং)এই গুলার
লাইগা ঠিকমতো শিখবার টাইম পায়নাই, তয়
মক্তবে গিয়া এট্টু হিকছে।কোনরহম পড়তে পারে।তয় এহন আর পড়ে টরে না।
.
--ভাল কথা, আচ্ছা বলুন তো দশ বছর
বয়সের পর নামায না পড়ার কারনে কয়দিন শাষন করেছেন?কয়দিন প্রহার করেছেন?
.
--কন কি হুজুর! নামাজের লাইগা
পিডামু!?পোলারে কুনদিন একটা চড় পর্যন্ত
মারিনাই হুজুর!বড় আদরের পোলা আছিলো!
.
--হুম...ছেলেকে যেই মেয়ে বিয়ে করিয়েছেন
সে মেয়ে কি পর্দা করে? নামায পড়ে?
.
--এই মোটামুটি পর্দা করে আরকি!
নামাজ মাঝে মাঝে পড়ে।তয় টিভি দেখার
অভ্যেস খুব বেশি হুজুর!
ইসটার জলছা নামে কি যেন একটা ছেনেল আছে,ওইডা দেহে দিনরাইত।
.
--হুম...আশ্চর্য!আপনি দেখি তেতুল গাছ লাগিয়ে
আংগুর ফল খাওয়ার আশায় আছেন!
.
--ঠিক বোঝলাম না হুজুর!
.
--আপনারা বাপ মা ই তো সন্তানের হক
নষ্ট করেছেন আগে!
.
--কি রকম হুজুর!
.
--তাইলে শোনেন,সন্তান জন্মের পর তার ডান কানে আযান, বাম কানে ইকামত দেয়া সন্তানের হক।একটা সুন্দর ইসলামী নাম রাখা
সন্তানের হক ছিলো।কুরআন শিক্ষা সহ ধর্মীয় ফরয দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়া সন্তানের প্রাপ্য হক ছিলো।সন্তানকে নামায শিখানো ও তাতে
অভ্যস্ত করা আপনাদের উপর কর্তব্য ছিল।
দ্বীনদার পাত্রী বিয়ে করানো
আপনাদের দায়িত্ব ছিলো।এইগুলার কোন হকটা আপনি সঠিকভাবে আদায়
করেছেন?কোন দায়িত্ব ও কর্তব্যটা সঠিকভাবে
পালন করেছেন?
.
--এমন কইরা তো কুনসুম ভাইবা দেহি নাই
হুজুর!
.
--হুম...সন্তানের এসব প্রাপ্য হক যখন আদায়
করেন নাই বরং বন্চিত করেছেন,
এখন সন্তানও আপনাদের হক আদায় করবে
না,এটাই তো স্বাভাবিক।
কাজেই এখন আর পানি পড়া আর তাবিজ
নিয়া কি লাভ!! আমি এইসব দেই না।
কথায় আছে -
"কাঁচা থাকতে না নোয়ালে বাঁশ
পাকলে করে ঠাস ঠাস!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top