মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৬

শায়খ Abdullah Shahed Al-madani (হাফি)'র সাথে কথোপকথন।

কোন মন্তব্য নেই:

শায়খ Abdullah Shahed Al-madani (হাফি)'র সাথে কথোপকথন।
============================================
শায়খ হাফিজাহুল্লাহ উনার এক স্ট্যটাসে* প্রকৃত সালাফি আলিমদের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। এর বিপরীতে মতানৈক্য তুলে ধরলে তিনি ফেইসবুকে কল দেন (আলহামদুলিল্লাহ)।

*স্ট্যটাস লিঙ্ক - https://www.facebook.com/abdullahshahed.almadani/posts/897324500385418?pnref=story

**পুরোটা সময় আদব বজায় রেখে কথা বলার চেস্টা করেছি, কিন্তু ১০লক্ষাধিক মুসলিম ও হক্কানি আলিম-উলামাদের রক্তের ব্যাপারে শায়খের উদাসীনতা দেখে হয়তো কিছুটা উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। আশা করি, শায়খ কিছু মনে করেন নি। এই পোস্টে শায়খের বক্তব্যের খন্ডন করা হয়নি, শুধুমাত্র কথোপকথনটি তুলে ধরা হয়েছে। নিম্নে উল্লেখিত হলো -

=> শুরুতেই শায়খ আমার কাছে সৌদি শাসকগোষ্ঠীর বৈধতা সম্পর্কে বয়ান করলেন।

তিনি বললেন, "শেষ জমানায় মদিনাতে আবার ইলম ফিরে আসবে। যেমনটি রাসুল(সাঃ)বলেছেন।"

এজন্য শায়খ ও উনার সমমনারা মদিনার উলামাদের ফতোয়ার উপর আমল করেন এবং সৌদি শাসককে বৈধ করেন এবং তাদেরকে ইসলামের খাদেম মনে করেন।

অধম জানতে চাইল, "মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে সাহায্যকারী শাসকের শরিয়তে হুকুম কি?"

তিনি আমাকে বললেন, "এ ব্যাপারে ইবন তাইমিয়া(রঃ)ও ইবনুল কাইয়ুম(রঃ) বলেছেন,বড় ক্ষতিকে এড়ানোর জন্য ছোট ক্ষতি স্বীকার করে নেয়া যায়।
যেমন হুসি কাফিরদের দমন করার জন্য সৌদি সরকার কাফিরদের সাহায্য নিতে পারে।না হলে হুসি কাফিররা মক্কা মদিনা দখল করে ফেলবে।"

অধম তখন ইরাকের ব্যাপারে জানতে চাইল।

শায়খ জানালেন,"সাদ্দাম রাশিয়াকে ডেকে এনে সৌদি দখল করতে চাইল। তাই তখন সৌদি সরকার আমেরিকা থেকে সাহায্য নিল।"

(যদিও তিনি এই কথার কোন প্রমাণ উপস্থিত করতে পারলেন না! আশা করি এই বক্তব্যের স্বপক্ষে তিনি কোনো না কোনো প্রমাণ হাজির করবেন।)

যাই হোক!

অধম জানতে চাইল, "যদি সাদ্দামকে অপসারণ করার জন্যই সৌদি সরকার আমেরিকা থেকে সাহায্য নিয়ে থাকে তবে কেন ২০০৩ সালে সাদ্দাম সরে যাওয়ার পরে সৌদি সরকার কেন আম্রিকাকে বের করে দিল না!"

শায়খ বললেন,"সেখানে এখন আর কোন আম্রিকান সৈন্য নেই!"
(লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।)

অধম হাল ছাড়ল না! জানতে চাইলাম, "দাম্মাম, জেদ্দায় আমরা যে এখনও আম্রিকান সৈন্যদের দেখি তাদের কাজটা কি তাহলে শুনি!"

শায়খ বললেন, "আমেরিকান সৈন্যরা সেখানে সৌদি সৈন্যদের সাথে পরস্পর মত-বিনিময়ের কাজে ব্যাস্ত। তারা পরস্পরকে সহযোগিতা করে,প্রশিক্ষণ নেয়। আর এটা বিশ্বের যেকোন দেশে জায়েজ আছে।" (পরস্পরবিরোধী বক্তব্য; উনি একটু আগেই বলেছিলেন যে, সৌদিতে কোনো মার্কিন সৈন্য নেই)

অধম জানতে চাইল, "ইরাকের ১০-১৫ লক্ষ মুসলিমকে শহিদ করে দেয়া হল সৌদির ভূমি ও আকাশ ব্যাবহার করে। শরিয়তে এ ধরনের শাসকের হুকুম কি?"

শায়খ রেগে গিয়ে বললেন,"past is past!" (ইন্না লিল্লাহি ওয়া লিল্লাহি রাজিউন)

অধম বলল,"সুবহানআল্লাহ! আপনি একজন আলেম হয়ে এসব কথা কিভাবে বলেন? আপনি তো ইলমের খিয়ানত করলেন।"

শায়খ রাগত স্বরে জানতে চাইলেন, "রাফেজি,হুসিরা যে নিরীহ সুন্নি হত্যা করে তা আপনাদের চোখে পড়ে না?"

অধম বলল, "অবশ্যই আমরা রাফেজি,হুসিদের বিরোধিতা করি এবং কেউ যদি ইসলামের জন্য মুসলিমদের সুরক্ষার জন্য তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তবে আমরা তা সমর্থন করি। কিন্তু এর মানে এই না যে,হুসিদের দমন করার নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হবে। নিরীহ সুন্নি হত্যা করা হবে!"

জানতে চাইলাম, "সৌদির ভূমিতে অবস্থিত CIA'র ড্রোন ঘাটি ব্যাবহার করে এখন ইয়েমেনে আলেমদের হত্যা করা হচ্ছে! সুন্নিদের হত্যা করা হচ্ছে। শরিয়তে এর হুকুম কি?"

শায়খ জানালেন, "আলেমদের হত্যা করা হচ্ছে না। আওলাকিকে হত্যা করা হয়েছে। সে কোন আলেম না। সে আল-কায়েদার নেতা।  সে কোন মাদ্রাসায় পড়েছে?" (না জেনেই শায়খ এই বক্তব্য করেছেন। শায়খ আওলাকি (রহ)'র আলিম কি না, এ ব্যাপারে আলাদা পোস্ট আসছে ইনশা'আল্লাহ)

অধম বলল,"ও আচ্ছা! মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়লে বুঝি সে আলেম না! আর আল-কায়েদার নেতা হলেই তাকে এভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ না দিয়ে, কোন রকম শারিয়াহ কোর্টে বিষয়টি না তুলে  হত্যা করা যাবে শরিয়তের কোথায় এমনটি বলা আছে? আর এছাড়াও আমরা দেখতে পাচ্ছি, সুন্নিদের এক বিয়ের প্রোগ্রামে হামলা চালিয়ে ১৩০ জন আহলে সুন্নাহর সদস্যদের হত্যা করা হল।

শায়খ বললেন, "এরা সবাই আল-কায়েদার! এরা সবাই আল-কায়েদার!"

শায়খ বললেন,"সৌদি সরকার যা করছে আলেমদের ফতওয়া নিয়েই করছে।"

অধম বলল, "ইয়া শায়খ! তাহলে নিরীহ মানুষদেরকে কেন হত্যা করছে!"

শায়খ বললেন,"এটা হল ভুল-বশত হত্যা।"

আমি জানতে চাইলাম, "এখন সৌদি সরকার কেন সন্ত্রাসী হবে না?"

শায়খ বললেন," সৌদি 'মুজাহিদরা' এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করে নি।"

অধম শায়খকে জিজ্ঞাসা করল, "শেষ জমানার যে হাদিসটা তিনি বললেন(মদিনায় আবার ইলম ফিরে আসবে) সেখানে খাসভাবে যে আমাদের আজকের সময়টার কথা বলা হচ্ছে তা আপনি কিভাবে বললেন? কেননা এটা নবিজি(সাঃ) ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। এটাতো ৫০ বছর পরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।"

শায়খ বললেন,"এটা সব সময়ের জন্য প্রযোজ্য।"

অধম বলল,"ও আচ্ছা! তাহলে মদিনার আলিমরা শরিয়ত বিরোধী কোন ফতওয়া দিলেও তার উপর আমল করতে হবে?"

শায়খ থতমত খেয়ে বললেন,"না! তা কেন হবে?"
 
এরপর এক পর্যায়ে তিনি রেগে-মেগে বলেন,"ঠিক আছে।আরেকদিন কথা হবে!"

আমি বললাম, "ইনশা'আল্লাহ! ঠিক আছে,আরেকদিন কথা হবে!"

=======
*মূলত! সৌদি সরকারের বৈধতা প্রদানেই আলোচনাটি হয়। তবে শায়খ এখানে ছোট্ট একটা ভুল করেছেন।

উনি ঢালাওভাবে আল-কায়দার নামে মৃত্যু-পরোয়ানা জারি করে দিচ্ছেন, কিন্তু আল-কায়দাকে তখনই খাওয়ারিজ প্রমাণের প্রসঙ্গ আসবে যখন শায়খ প্রথমে সৌদি সরকারকে বৈধ মুসলিম শাসক হিসেবে প্রমাণ করতে পারবেন।

সুতরাং, আগে সৌদি সরকারকে ন্যায়পরায়ণ শাসক প্রমাণ না করেই আল-কায়দার নামে মুসলিমদের রক্ত হালাল করার মত ভয়ংকর কাজ থেকে দূরে থাকা সমীচীন ছিল হয়তোবা।

এছাড়াও শায়খ আওলাকি (রহ)'র ১৬ বছরের ছেলে আব্দুর রাহমান কে টার্গেট কিলিং এর ব্যপারে শায়খের বক্তব্য জানতে পারলে ভালো লাগত।

সময় ও সুযোগ পেলে সাদ্দামকে সরিয়ে রাফেজি নুরি আল মালিকিকে ইরাকের ক্ষমতা দেয়ার পেছনে সৌদির ভূমিকা কেন বৈধ তা নিয়েও আলোচনা করতে পারেন তিনি।

*ইনশা'আল্লাহ পরবর্তীতে এবিষয়ে আরও বিস্তারিত আসবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top