মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৬

আল্লাহ মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকলে আমরা দায়ী হব কেন। আলাহ যদি লিখেই রাখেন যে আমি চুরি করব, তাহলে আমার দোষ কোথায়??

কোন মন্তব্য নেই:

প্রশ্নঃ আল্লাহ মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকলে আমরা দায়ী হব কেন। আলাহ যদি লিখেই রাখেন যে আমি চুরি করব, তাহলে আমার দোষ কোথায়??

উত্তরঃ
ভাগ্য নিয়ে সংশয় কম বেশি সকলের মধ্যেই আছে। চেষ্টা করছি এটা দূর করার।

আমার জানা মতে কুরআনের কোথাও ‘ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বা নির্দিষ্ট করা হয়েছে’ বলা হয়নি।
তবে অনেক হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ মানুষের সব কর্মকাণ্ড লিখে রেখেছেন। আর কুরআনে বলা হয়েছে- আল্লাহ সব কিছ জানেন, আল্লাহ অদৃশ্য বিষয়সমূহ অবগত আছেন।

**“আল্লাহ সব কিছু জানেন”

[ সূরা বাকারা, সূরা নং-২, আয়াত নং-১১৫, ১২৭ ]
[ সূরা আলে ইমরান, সূরা নং-৩, আয়াত নং-৩৪, ৩৬ ]
[ সূরা নিসা, সূরা নং-৪, আয়াত নং-১২, ২৪, ৯২, ১০৪, ১১১, ১৪৭, ১৭০ ]
[ সূরা আনআম, সূরা নং-৬, আয়াত নং-১৩, ৮৩, ৯৬, ১২৮ ]
[ সূরা তওবা, সূরা নং-৯, আয়াত নং-১৫, ২৮, ১০৬, ১১০ ]
[ সূরা ইউসুফ, সূরা নং-১২, আয়াত নং-৬, ৭৬, ৮৩, ১০০ ]
[ সূরা নাহল, সূরা নং-১৬, আয়াত নং-২৮, ৭০ ]
[ সূরা হাজ্জ, সূরা নং-২২, আয়াত নং-৫৮ ]
[ সূরা নূর, সূরা নং-২৪, আয়াত নং-১৮, ৩২, ৫৮, ৫৯ ]
[ সূরা নামল, সূরা নং-২৭, আয়াত নং-৬, ৭৮ ]
[ সূরা রুম, সূরা নং-৩০, আয়াত নং-৫৪ ]
[ সূরা আহযাব, সূরা নং-৩৩, আয়াত নং-৫১ ]
[ সূরা ফাতির, সূরা নং-৩৫, আয়াত নং-৪৪ ]
[ সূরা ইয়াসীন, সূরা নং-৩৬, আয়াত নং-৩৮, ৮১ ]
[ সূরা হুযুরাত, সূরা নং-৪৯, আয়াত নং-১, ৮, ১৩ ]
[ সূরা মুমতাহিনা, সূরা নং-৬০, আয়াত নং-১০ ]
[ সূরা ইনসান, সূরা নং-৭৬, আয়াত নং-৩০ ]

**” আল্লাহ অদৃশ্য বিষয়সমুহ জানেন ”

[ সূরা আলে ইমরান, সূরা নং-৩, আয়াত নং-৪৪ ]
[ সূরা মায়িদা, সূরা নং-৫, আয়াত নং-১১৬ ]
[ সূরা আনআম, সূরা নং-৬, আয়াত নং-৭৩ ]
[ সূরা তওবা, সূরা নং-৯, আয়াত নং-৭৮, ৯৪, ১০৫ ]
[ সূরা ইউনুস, সূরা নং-১০, আয়াত নং-২০ ]
[ সূরা রা’দ, সূরা নং-১৩, আয়াত নং-৯ ]
[ সূরা নাহল, সূরা নং-১৬, আয়াত নং-৭৭ ]
[ সূরা কাহ’ফ, সূরা নং-১৮, আয়াত নং-২৫ ]
[ সূরা মু’মিনুন, সূরা নং-২৩, আয়াত নং-৯২ ]
[ সূরা সাবা, সূরা নং-৩৪, আয়াত নং-৩, ৪৮ ]
[ সূরা ফাতির, সূরা নং-৩৫, আয়াত নং-৩৮ ]
[ সূরা হুযুরাত, সূরা নং-৪৯, আয়াত নং-১৮ ]
[ সূরা নাজম, সূরা নং-৫৩, আয়াত নং-৩৫ ]
[ সূরা হাশর, সূরা নং-৫৯, আয়াত নং-২২ ]
[ সূরা জুম’আ, সূরা নং-৬২, আয়াত নং-৮ ]
[ সূরা তাগাবুন, সূরা নং-৬৪, আয়াত নং-১৮ ]
[ সূরা জিন, সূরা নং-৭২, আয়াত নং-২৬ ]

সুতরাং এককথায় বলা যায়, আল্লাহ মানবজাতির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সকল কর্মকাণ্ড জানেন এবং তা লিখে রেখেছেন। তবে

তিনি কাউকে কোনকিছু করতে বাধ্য করেন না।
মানুষ তার নিজস্ব মন ও বিবেক অনুযায়ী ইচ্ছামত কাজ করে।

এখন, ‘জানা বা লিখে রাখা এবং করতে বাধ্য করা এক নয়’- সেটা একটু বুঝার চেস্টা করি।

ধরুন, একজন শিক্ষক বললেন যে, অমুক অমুক ছাত্র পাশ করবে এবং অমুক অমুক ছাত্র ফেল করবে। এরপর দেখা গেল, শিক্ষকের কথাই ঠিক হল। ফেল করা ছাত্ররা কি বলবে, আপনি বলেছিলেন বলেই আমরা ফেল করেছি।

একবার নবী(সঃ) হযরত আবু বকর(রাঃ)-কে বলেন, আল্লাহ যা লিখে রেখেছেন তুমি তাই করবে- এমনটি নয়। বরং তুমি যা করবে আল্লাহ তা আগেই লিখে রেখেছেন।

সুতরাং তাকদীর বা ভাগ্য হল- আল্লাহ সবকিছু আগে থেকেই জানেন এবং লিখে রেখেছেন।

আল্লাহ যদি সব কিছু করিয়ে নেন , তাহলে তো পরীক্ষা নেয়া হত না।

আর কিয়ামতের দিন জাহান্নামীরা আল্লাহকে এটা বলবে না যে, ” কেন আমাদের শাস্তি দিচ্ছেন? আপনি লিখে রেখেছিলেন বলেই আমরা পাপ করেছি।“
তারা বলবে, “আমাদেরকে আবার পৃথিবীতে পাঠান।আল্লাহ বলবেন, আর পৃথিবীতে পাঠানো হবে না।“

***
অনেকে হয়ত বলবেন, আল্লাহ তায়ালা যদি আগে থেকেই সব জেনে থাকেন, তাহলে আর পরীক্ষা নেয়ার নাটক করার কী দরকার ?
-আল্লাহ যদি পরীক্ষা না নিয়ে জান্নাত-জাহান্নাম ফয়সালা করতেন, তাহলে জাহান্নামীরা বলত, আমরা তো কোন পাপই করি নি।

ধরুন, একজন শিক্ষক জানেন যে, কে পাশ করবে এবং কে ফেল করবে। এখন তিনি যদি বলেন, কোন পরীক্ষা নেয়া হবে না ; অমুক অমুক পাশ ও অমুক অমুক ফেল। তাহলে ফেল করা ছাত্ররা কখনো মেনে নিবে না।

এজন্য পরীক্ষা নেয়া হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
back to top